অনলাইন ডেস্ক
পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থিত মহাকাশযান ভয়েজার-১ ও ভয়েজার-২-এর বৈজ্ঞানিক যন্ত্রগুলো বন্ধ করতে যাচ্ছে নাসা। এর মাধ্যমে মহাকাশযানগুলো শক্তি সঞ্চয় করবে এবং আরও দীর্ঘদিন মিশন চালিয়ে যেতে পারবে। মহাকাশযান দুটি প্রায় ৪৭ বছর আগে পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ করে নাসা।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভয়েজার-১-এর কসমিক রে সাব সিস্টেম পরীক্ষা বন্ধ করার নির্দেশ পাঠিয়েছেন নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) প্রকৌশলীরা। অন্যদিকে, ২৪ মার্চ ভয়েজার-২-এর লো-এনার্জি চার্জড পার্টিকল যন্ত্র বন্ধ করা হবে। এর ফলে প্রতিটি মহাকাশযানে এখন তিনটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র কার্যকর থাকবে।
১৯৭৭ সালে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ভয়েজার মহাকাশযান দুটি উৎক্ষেপণ করা হয়। দুটি মহাকাশযান একসঙ্গে ১০ বৈজ্ঞানিক যন্ত্র বহন করছিল। তবে, সময়ের সঙ্গে তাদের শক্তি সরবরাহ ধীরে ধীরে কমে গেছে। ভয়েজার মহাকাশযান দুটি প্লুটোনিয়ামের তাপশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করত এবং প্রতিবছর ৪ ওয়াট বিদ্যুৎশক্তি খরচ করছে।
ভয়েজার প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুজান ডড নাসা বলেন, ‘ভয়েজাররা উৎক্ষেপণের পর থেকে মহাকাশের এক অপ্রতিরোধ্য নক্ষত্র হয়ে উঠেছে এবং আমরা চাই যেন এটি যতটা সম্ভব চলতে থাকে। তবে, বিদ্যুৎ শক্তির সরবরাহ কমে যাচ্ছে। যদি এখনই কোনো যন্ত্র বন্ধ না করা হয়, তাহলে হয়তো কয়েক মাসের মধ্যেই মিশন শেষ ঘোষণা করতে হবে।’
অজানা মহাকাশের অনুসন্ধান
ভয়েজার-১ বর্তমানে পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়ন মাইল (২৫ বিলিয়ন কিলোমিটার) দূরে এবং ভয়েজার-২ ১৩ বিলিয়ন মাইল (২১ বিলিয়ন কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করছে। তারা বর্তমানে সোলার হেলিওস্ফিয়ারি (সূর্যের পারিপার্শ্বিক চুম্বকক্ষেত্র ও কণার বলয়) থেকে বাইরে মহাশূন্যের অন্যান্য অঞ্চলে অনুসন্ধান করছে।
১৯৮০-র দশকে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহগুলোর কাছে গিয়ে মিশনের প্রথম লক্ষ্য পূর্ণ করার পর ভয়েজার যন্ত্রগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে বিজ্ঞানীরা তাদের অজানা মহাশূন্যের পরিসরে তথ্য সংগ্রহ চালিয়ে যাচ্ছে।
২০১২ সালে ইন্টারস্টেলার স্পেস বা আন্তনক্ষত্রীয় স্থানে প্রবেশ করে ভয়েজার-১। ২০১৮ সালে একই কাজ করে ভয়েজার-২। তবে দুটি মহাকাশযানের যাত্রাপথ আলাদা ছিল। মহাকাশযান দুটি ভিন্ন পথে থাকায় এগুলো মহাশূন্যের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের অনুসন্ধানে করেছে, যা সৌরজগতের বাইরের অজানা বিশ্ব সম্পর্কে আরও মূল্যবান তথ্য প্রদান করে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভয়েজার প্রকল্পের দল একে একে যন্ত্রগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, যাতে মহাকাশযানগুলোর যাত্রা চলতে থাকে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে নাসা ভয়েজার-২-এর প্লাজমা সায়েন্স যন্ত্র বন্ধ করে দিয়েছে। এই যন্ত্র মহাশূন্যে চার্জড পরমাণুর সংখ্যা পরিমাপ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। তবে মূলত এর অবস্থানের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর আউটপুট ডেটা সীমিত হয়ে গেছে। অপরদিকে, ভয়েজার-১-এর অভিন্ন যন্ত্রটি বহু বছর ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ তার কার্যক্ষমতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পেয়েছে।
গত সপ্তাহে, ভয়েজার-১-এর কসমিক রে সাবসিস্টেম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা তিনটি টেলিস্কোপের সমন্বয়ে তৈরি একটি যন্ত্র ছিল। এই টেলিস্কোপগুলো মহাশূন্যে অত্যন্ত শক্তিশালী মহাজাগতিক বিকিরণ পরিমাপ এবং পর্যবেক্ষণ করত। এসব বিকিরণ আমাদের সৌরজগৎ ও সূর্য থেকে নির্গত হয়।
ভয়েজার প্রকল্পের দল এই যন্ত্রের মাধ্যমে মহাকাশযানটির তথ্য সংগ্রহ করেছিল এবং এর সাহায্যে তারা নির্দিষ্টভাবে জানতে পেরেছিল কখন এবং কোথায় ভয়েজার-১ হেলিওস্ফিয়ার (সূর্যের চুম্বকীয় বলয়) অতিক্রম করে ইন্টারস্টেলার স্পেস বা আন্তনক্ষত্রীয় স্থানে প্রবেশ করেছে।
এ মাসের শেষে ভয়েজার-২-এর লো-এনার্জি চার্জড পার্টিকল যন্ত্র বন্ধ করে দেওয়া হবে, যা সৌরজগৎ ও আমাদের গ্যালাক্সিতে আয়ন, ইলেকট্রন এবং কসমিক রে পরিমাপ করে। এই যন্ত্রের বিভিন্ন সিস্টেমে একটি টেলিস্কোপ ও ম্যাগনেটোস্ফেরিক পার্টিকল অ্যানালাইজার (চুম্বকীয় কণা পর্যবেক্ষণকারী) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ রয়েছে এবং একটি ঘূর্ণনশীল প্ল্যাটফর্ম স্টেপার মোটরের মাধ্যমে চলে।
পৃথিবীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এই মোটর ৫ লাখ ধাপ পার করে। এই পরীক্ষা নিশ্চিত করেছিল যে, ১৯৮০ সালে শনি গ্রহের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় ভয়েজার-২ সফলভাবে কাজ করবে। এখন, যখন এটি বন্ধ হবে, মোটরটি ৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ধাপেরও বেশি সম্পন্ন করবে।
ভয়েজার প্রকল্পের বিজ্ঞানী লিন্ডা স্পিলকার বলেন, প্রতিটি মহাকাশযান এখনো অনন্য ডেটা সংগ্রহ করতে থাকবে। তবে, একটি বড় পরিবর্তন আসছে, কারণ তারা ইন্টারস্টেলার স্পেসে (আন্তনক্ষত্রীয় মহাশূন্য) দুটি ভিন্ন স্থানে একসঙ্গে একই ধরনের কণার পরিমাপ করতে পারবে না।
যতই ভয়েজার মহাকাশযানগুলোর বয়স বাড়ছে, ততই প্রকল্পের প্রকৌশলীরা নতুন এবং অপ্রত্যাশিত সমস্যাগুলোর সমাধানে আরও সৃজনশীল হয়ে উঠছেন। যেমন: যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং অনন্য ত্রুটিগুলো মোকাবিলা করা। মহাশূন্যে বিশাল দূরত্বের কারণে এসব সমস্যার সমাধান খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। তবে প্রকৌশলীরা নতুন প্রযুক্তি ও নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে তাঁদের কার্যক্ষমতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন।
দুটি যন্ত্র বন্ধ করার পর উভয় ভয়েজার মহাকাশযান আরও একটি বছর পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম হবে। এরপর, প্রতি মহাকাশযানে একটি করে অতিরিক্ত যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। ২০২৬ সালে, ভয়েজার-১-এর লো-এনার্জি চার্জড পার্টিকল যন্ত্র এবং ভয়েজার-২-এর কসমিক রে সাবসিস্টেম বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তবে ভয়েজার-১ ও ভয়েজার-২ তাদের যাত্রা চালিয়ে যাবে। কারণ তাদের প্লাজমা ওয়েভ সাবসিস্টেম এবং ম্যাগনেটোমিটার যন্ত্র চালু থাকবে। প্লাজমা ওয়েভ সাবসিস্টেম মহাশূন্যের প্লাজমা ক্ষেত্রের মধ্যে তরঙ্গ পরিমাপ করে এবং ম্যাগনেটোমিটার চুম্বকীয় ক্ষেত্রের পরিবর্তন পরিমাপ করে।
ভয়েজার প্রকল্পের বিজ্ঞানী লিন্ডা স্পিলকার বলেন, ‘উভয় ভয়েজারই কসমিক রে (মহাজাগতিক বিকিরণ), আন্তনক্ষত্রীয় প্লাজমা, আন্তনক্ষত্রীয় চুম্বকীয় ক্ষেত্র এবং আন্তনক্ষত্রীয় মাধ্যমের রেডিও তরঙ্গ সম্পর্কে অনন্য তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবে, যার মধ্যে সূর্য থেকে ছড়ানো প্রভাবও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
নাসার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মহাকাশযানগুলো যথেষ্ট শক্তি সংরক্ষণ করতে পারবে, যাতে ২০৩০–এর দশক পর্যন্ত কমপক্ষে একটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র চালু রাখা সম্ভব হবে। তবে তারা জানেন যে, যেকোনো নতুন চ্যালেঞ্জ বা সমস্যা আসতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত ভয়েজার মহাকাশযানগুলোর যাত্রার অবসান ঘটাতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন ও নাসা
পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থিত মহাকাশযান ভয়েজার-১ ও ভয়েজার-২-এর বৈজ্ঞানিক যন্ত্রগুলো বন্ধ করতে যাচ্ছে নাসা। এর মাধ্যমে মহাকাশযানগুলো শক্তি সঞ্চয় করবে এবং আরও দীর্ঘদিন মিশন চালিয়ে যেতে পারবে। মহাকাশযান দুটি প্রায় ৪৭ বছর আগে পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ করে নাসা।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভয়েজার-১-এর কসমিক রে সাব সিস্টেম পরীক্ষা বন্ধ করার নির্দেশ পাঠিয়েছেন নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) প্রকৌশলীরা। অন্যদিকে, ২৪ মার্চ ভয়েজার-২-এর লো-এনার্জি চার্জড পার্টিকল যন্ত্র বন্ধ করা হবে। এর ফলে প্রতিটি মহাকাশযানে এখন তিনটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র কার্যকর থাকবে।
১৯৭৭ সালে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ভয়েজার মহাকাশযান দুটি উৎক্ষেপণ করা হয়। দুটি মহাকাশযান একসঙ্গে ১০ বৈজ্ঞানিক যন্ত্র বহন করছিল। তবে, সময়ের সঙ্গে তাদের শক্তি সরবরাহ ধীরে ধীরে কমে গেছে। ভয়েজার মহাকাশযান দুটি প্লুটোনিয়ামের তাপশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করত এবং প্রতিবছর ৪ ওয়াট বিদ্যুৎশক্তি খরচ করছে।
ভয়েজার প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুজান ডড নাসা বলেন, ‘ভয়েজাররা উৎক্ষেপণের পর থেকে মহাকাশের এক অপ্রতিরোধ্য নক্ষত্র হয়ে উঠেছে এবং আমরা চাই যেন এটি যতটা সম্ভব চলতে থাকে। তবে, বিদ্যুৎ শক্তির সরবরাহ কমে যাচ্ছে। যদি এখনই কোনো যন্ত্র বন্ধ না করা হয়, তাহলে হয়তো কয়েক মাসের মধ্যেই মিশন শেষ ঘোষণা করতে হবে।’
অজানা মহাকাশের অনুসন্ধান
ভয়েজার-১ বর্তমানে পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়ন মাইল (২৫ বিলিয়ন কিলোমিটার) দূরে এবং ভয়েজার-২ ১৩ বিলিয়ন মাইল (২১ বিলিয়ন কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করছে। তারা বর্তমানে সোলার হেলিওস্ফিয়ারি (সূর্যের পারিপার্শ্বিক চুম্বকক্ষেত্র ও কণার বলয়) থেকে বাইরে মহাশূন্যের অন্যান্য অঞ্চলে অনুসন্ধান করছে।
১৯৮০-র দশকে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহগুলোর কাছে গিয়ে মিশনের প্রথম লক্ষ্য পূর্ণ করার পর ভয়েজার যন্ত্রগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে বিজ্ঞানীরা তাদের অজানা মহাশূন্যের পরিসরে তথ্য সংগ্রহ চালিয়ে যাচ্ছে।
২০১২ সালে ইন্টারস্টেলার স্পেস বা আন্তনক্ষত্রীয় স্থানে প্রবেশ করে ভয়েজার-১। ২০১৮ সালে একই কাজ করে ভয়েজার-২। তবে দুটি মহাকাশযানের যাত্রাপথ আলাদা ছিল। মহাকাশযান দুটি ভিন্ন পথে থাকায় এগুলো মহাশূন্যের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের অনুসন্ধানে করেছে, যা সৌরজগতের বাইরের অজানা বিশ্ব সম্পর্কে আরও মূল্যবান তথ্য প্রদান করে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভয়েজার প্রকল্পের দল একে একে যন্ত্রগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, যাতে মহাকাশযানগুলোর যাত্রা চলতে থাকে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে নাসা ভয়েজার-২-এর প্লাজমা সায়েন্স যন্ত্র বন্ধ করে দিয়েছে। এই যন্ত্র মহাশূন্যে চার্জড পরমাণুর সংখ্যা পরিমাপ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। তবে মূলত এর অবস্থানের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর আউটপুট ডেটা সীমিত হয়ে গেছে। অপরদিকে, ভয়েজার-১-এর অভিন্ন যন্ত্রটি বহু বছর ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ তার কার্যক্ষমতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পেয়েছে।
গত সপ্তাহে, ভয়েজার-১-এর কসমিক রে সাবসিস্টেম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা তিনটি টেলিস্কোপের সমন্বয়ে তৈরি একটি যন্ত্র ছিল। এই টেলিস্কোপগুলো মহাশূন্যে অত্যন্ত শক্তিশালী মহাজাগতিক বিকিরণ পরিমাপ এবং পর্যবেক্ষণ করত। এসব বিকিরণ আমাদের সৌরজগৎ ও সূর্য থেকে নির্গত হয়।
ভয়েজার প্রকল্পের দল এই যন্ত্রের মাধ্যমে মহাকাশযানটির তথ্য সংগ্রহ করেছিল এবং এর সাহায্যে তারা নির্দিষ্টভাবে জানতে পেরেছিল কখন এবং কোথায় ভয়েজার-১ হেলিওস্ফিয়ার (সূর্যের চুম্বকীয় বলয়) অতিক্রম করে ইন্টারস্টেলার স্পেস বা আন্তনক্ষত্রীয় স্থানে প্রবেশ করেছে।
এ মাসের শেষে ভয়েজার-২-এর লো-এনার্জি চার্জড পার্টিকল যন্ত্র বন্ধ করে দেওয়া হবে, যা সৌরজগৎ ও আমাদের গ্যালাক্সিতে আয়ন, ইলেকট্রন এবং কসমিক রে পরিমাপ করে। এই যন্ত্রের বিভিন্ন সিস্টেমে একটি টেলিস্কোপ ও ম্যাগনেটোস্ফেরিক পার্টিকল অ্যানালাইজার (চুম্বকীয় কণা পর্যবেক্ষণকারী) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ রয়েছে এবং একটি ঘূর্ণনশীল প্ল্যাটফর্ম স্টেপার মোটরের মাধ্যমে চলে।
পৃথিবীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এই মোটর ৫ লাখ ধাপ পার করে। এই পরীক্ষা নিশ্চিত করেছিল যে, ১৯৮০ সালে শনি গ্রহের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় ভয়েজার-২ সফলভাবে কাজ করবে। এখন, যখন এটি বন্ধ হবে, মোটরটি ৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ধাপেরও বেশি সম্পন্ন করবে।
ভয়েজার প্রকল্পের বিজ্ঞানী লিন্ডা স্পিলকার বলেন, প্রতিটি মহাকাশযান এখনো অনন্য ডেটা সংগ্রহ করতে থাকবে। তবে, একটি বড় পরিবর্তন আসছে, কারণ তারা ইন্টারস্টেলার স্পেসে (আন্তনক্ষত্রীয় মহাশূন্য) দুটি ভিন্ন স্থানে একসঙ্গে একই ধরনের কণার পরিমাপ করতে পারবে না।
যতই ভয়েজার মহাকাশযানগুলোর বয়স বাড়ছে, ততই প্রকল্পের প্রকৌশলীরা নতুন এবং অপ্রত্যাশিত সমস্যাগুলোর সমাধানে আরও সৃজনশীল হয়ে উঠছেন। যেমন: যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং অনন্য ত্রুটিগুলো মোকাবিলা করা। মহাশূন্যে বিশাল দূরত্বের কারণে এসব সমস্যার সমাধান খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। তবে প্রকৌশলীরা নতুন প্রযুক্তি ও নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে তাঁদের কার্যক্ষমতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন।
দুটি যন্ত্র বন্ধ করার পর উভয় ভয়েজার মহাকাশযান আরও একটি বছর পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম হবে। এরপর, প্রতি মহাকাশযানে একটি করে অতিরিক্ত যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। ২০২৬ সালে, ভয়েজার-১-এর লো-এনার্জি চার্জড পার্টিকল যন্ত্র এবং ভয়েজার-২-এর কসমিক রে সাবসিস্টেম বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তবে ভয়েজার-১ ও ভয়েজার-২ তাদের যাত্রা চালিয়ে যাবে। কারণ তাদের প্লাজমা ওয়েভ সাবসিস্টেম এবং ম্যাগনেটোমিটার যন্ত্র চালু থাকবে। প্লাজমা ওয়েভ সাবসিস্টেম মহাশূন্যের প্লাজমা ক্ষেত্রের মধ্যে তরঙ্গ পরিমাপ করে এবং ম্যাগনেটোমিটার চুম্বকীয় ক্ষেত্রের পরিবর্তন পরিমাপ করে।
ভয়েজার প্রকল্পের বিজ্ঞানী লিন্ডা স্পিলকার বলেন, ‘উভয় ভয়েজারই কসমিক রে (মহাজাগতিক বিকিরণ), আন্তনক্ষত্রীয় প্লাজমা, আন্তনক্ষত্রীয় চুম্বকীয় ক্ষেত্র এবং আন্তনক্ষত্রীয় মাধ্যমের রেডিও তরঙ্গ সম্পর্কে অনন্য তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবে, যার মধ্যে সূর্য থেকে ছড়ানো প্রভাবও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
নাসার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মহাকাশযানগুলো যথেষ্ট শক্তি সংরক্ষণ করতে পারবে, যাতে ২০৩০–এর দশক পর্যন্ত কমপক্ষে একটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র চালু রাখা সম্ভব হবে। তবে তারা জানেন যে, যেকোনো নতুন চ্যালেঞ্জ বা সমস্যা আসতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত ভয়েজার মহাকাশযানগুলোর যাত্রার অবসান ঘটাতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন ও নাসা
মহাকাশের ৪৫ কোটি গ্যালাক্সির (ছায়াপথ) মানচিত্র তৈরি করতে কক্ষপথে ‘স্ফিয়ারএক্স’ নামে নতুন টেলিস্কোপ পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সির গঠন এবং বিবর্তন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন। সেই সঙ্গে মহাবিশ্বের উৎপত্তির দিকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি পাবে।
১ দিন আগেকোনো প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেলে সাধারণত তা চিরতরে হারিয়ে যায়। তবে উলি ম্যামথের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কিছুটা শিথিল হতে চলেছে। প্রায় ৪ হাজার বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া বিশাল এই হাতির মতো প্রাণীর কিছু জিনগত বৈশিষ্ট্য এখন পরীক্ষাগারে তৈরি ছোট্ট ইঁদুরের শরীরে নতুন করে ফিরে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস
২ দিন আগেবিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এটি এক মুহূর্তও দূরে থাকলে অস্বস্তি বোধ করেন অনেকেই। বর্তমানে স্মার্টফোন নিকোটিন বা অ্যালকোহলের মতোই আসক্তি তৈরি করে। নতুন গবেষণায় এমনই তথ্য পেয়েছেন গবেষকেরা।
২ দিন আগেসূর্যগ্রহণের সময় চাঁদে কী হয়, তা দেখতে ও দেখাতে পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো চাঁদে অবতরণ করেছে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের একটি মহাকাশযান। আজ রোববার মার্কিন সময় রাত ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে (স্থানীয়) চাঁদের মাটি স্পর্শ করে টেক্সাসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেসের চন্দ্রযান ব্লু ঘোস্ট।
৪ দিন আগে