আজকের পত্রিকা ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য আলু। হাজার হাজার বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ অঞ্চলে এই শস্যের প্রথম চাষ শুরু হয়। এরপর ১৬০০ শতাব্দী থেকে এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এত দিন আলুর বিবর্তন ও উৎপত্তি ঘিরে ছিল রহস্য। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানালেন, আলুর উৎপত্তি হয়েছিল টমেটো ও আলুর মতো দেখতে এক বন্য গাছের প্রাকৃতিক সংকরায়ণ থেকে।
চীনের কৃষিবিজ্ঞানী ও বায়োজেনেটিক বিশেষজ্ঞ সানওয়েন হুয়াংয়ের নেতৃত্বে একদল গবেষক এই গবেষণা করেন। গবেষকেরা ৪৫০টি চাষকৃত আলু এবং ৫৬টি বন্য আলু প্রজাতির জিনোম বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁরা আবিষ্কার করেছেন, প্রায় ৯০ লাখ বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকায় এক প্রাকৃতিক হাইব্রিডাইজেশন বা সংকরায়ণ ঘটেছিল, যেখানে বন্য টমেটো ও আলুর মতো এক প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্য থেকে আলুর পূর্বপুরুষের উৎপত্তি হয়।
এই প্রজননের ফলে আলুর উদ্ভিদে ‘টিউবার’ বা গোড়ার অংশে পুষ্টি জমিয়ে রাখার ক্ষমতা গড়ে ওঠে। টমেটোর ক্ষেত্রে খাবারযোগ্য অংশ হচ্ছে ফল, আর আলুর ক্ষেত্রে তা টিউবার। গবেষকেরা টিউবার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ দুটি জিন শনাক্ত করেছেন।
আধুনিক আলুর বৈজ্ঞানিক নাম সোলানাম টিউবেরোসাম। গবেষণায় দেখা গেছে, এর দুটি ‘অভিভাবক’ প্রজাতি হলো—পেরুর ইটিউবেরোসাম নামে আলুর মতো বন্য এক প্রজাতি এবং টমেটো। তবে ইটিউবেরোসাম টিউবার তৈরি করতে পারে না।
এ দুই প্রজাতির সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ বছর আগে। এরপর সময়ের সঙ্গে তারা ধীরে ধীরে আলাদা প্রজাতিতে বিভক্ত হয়ে যায় (বিভিন্ন রকম গাছ হয়ে ওঠে)। প্রায় ৫০ লাখ বছর পর তারা প্রাকৃতিকভাবে মিলিত হয়ে আলুর পূর্বপুরুষের জন্ম দেয়।
ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের বোটানিস্ট সান্দ্রা ন্যাপ বলেন, ‘এই মিলনের ফলে জিনের পুনর্বিন্যাস হয়। এর নতুন প্রজাতিটি টিউবার উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়।
এই সংকরায়ণের সময়কাল আন্দিস পর্বতমালার মতো উঁচু হওয়ার সময়ের সঙ্গে মিলে যায়। টিউবার গঠনের ফলে আলুগাছ পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং পর্বতমালার প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিকে থাকতে ও ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম হয়।’
হুয়াং বলেন, টিউবার পুষ্টি জমা রাখে, ঠান্ডার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয় এবং শীতল পরিবেশে প্রজনন হ্রাসের সমস্যার সমাধান করে। এতে আলু দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
গবেষণার ফলাফল ভবিষ্যতে উন্নত আলু চাষে সাহায্য করবে, যা বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৫ হাজার আলুর জাত রয়েছে। পেরুভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, আলু বিশ্বের তৃতীয় প্রধান খাদ্যশস্য, চাল ও গমের পরে। চীন বিশ্বের শীর্ষ আলু উৎপাদক।
হুয়াং উল্লেখ করেন, ‘আলুর জিনোম থেকে ক্ষতিকর জিন মুছে ফেলা কঠিন। এই গবেষণা টমেটো ব্যবহার করে আলুতে সুশৃঙ্খল জিন নিয়ন্ত্রণের নতুন পথ খুলে দিতে পারে।’
চীনা এক গবেষক ঝিয়াং জিহুয়াং বলেন, ‘এ গবেষণায় এমন একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যেখানে একটি উদ্ভিদে ওপরের দিকে টমেটোর ফল আর নিচের দিকে আলুর টিউবার জন্মানো সম্ভব হতে পারে।’
আলু ও টমেটো একই সোলানেসি পরিবারের উদ্ভিদ। এই পরিবারে তামাক ও মরিচও আছে। গবেষণায় দক্ষিণ আমেরিকার অন্য টিউবারজাতীয় শাকসবজি যেমন মিষ্টি আলু ও ইউকাস উৎস অনুসন্ধান করা হয়নি, যেগুলো আলু ও টমেটো পরিবারের বাইরে।
ন্যাপ বলেন, ‘আমরা আলুর টিউবার, টমেটোতে ফল খাই। তবে ফুল, পাতা ও গঠন অনেকটা একই রকম। আপনি যদি আলুর গাছে ফল পেতে পারেন, তা দেখতে ছোট সবুজ টমেটোর মতো। তবে খাওয়া ঠিক নয়, কারণ সেগুলো বেশ খারাপ স্বাদের।’
তথ্যসূত্র: রয়টার্স
বিশ্বজুড়ে অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য আলু। হাজার হাজার বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ অঞ্চলে এই শস্যের প্রথম চাষ শুরু হয়। এরপর ১৬০০ শতাব্দী থেকে এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এত দিন আলুর বিবর্তন ও উৎপত্তি ঘিরে ছিল রহস্য। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানালেন, আলুর উৎপত্তি হয়েছিল টমেটো ও আলুর মতো দেখতে এক বন্য গাছের প্রাকৃতিক সংকরায়ণ থেকে।
চীনের কৃষিবিজ্ঞানী ও বায়োজেনেটিক বিশেষজ্ঞ সানওয়েন হুয়াংয়ের নেতৃত্বে একদল গবেষক এই গবেষণা করেন। গবেষকেরা ৪৫০টি চাষকৃত আলু এবং ৫৬টি বন্য আলু প্রজাতির জিনোম বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁরা আবিষ্কার করেছেন, প্রায় ৯০ লাখ বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকায় এক প্রাকৃতিক হাইব্রিডাইজেশন বা সংকরায়ণ ঘটেছিল, যেখানে বন্য টমেটো ও আলুর মতো এক প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্য থেকে আলুর পূর্বপুরুষের উৎপত্তি হয়।
এই প্রজননের ফলে আলুর উদ্ভিদে ‘টিউবার’ বা গোড়ার অংশে পুষ্টি জমিয়ে রাখার ক্ষমতা গড়ে ওঠে। টমেটোর ক্ষেত্রে খাবারযোগ্য অংশ হচ্ছে ফল, আর আলুর ক্ষেত্রে তা টিউবার। গবেষকেরা টিউবার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ দুটি জিন শনাক্ত করেছেন।
আধুনিক আলুর বৈজ্ঞানিক নাম সোলানাম টিউবেরোসাম। গবেষণায় দেখা গেছে, এর দুটি ‘অভিভাবক’ প্রজাতি হলো—পেরুর ইটিউবেরোসাম নামে আলুর মতো বন্য এক প্রজাতি এবং টমেটো। তবে ইটিউবেরোসাম টিউবার তৈরি করতে পারে না।
এ দুই প্রজাতির সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ বছর আগে। এরপর সময়ের সঙ্গে তারা ধীরে ধীরে আলাদা প্রজাতিতে বিভক্ত হয়ে যায় (বিভিন্ন রকম গাছ হয়ে ওঠে)। প্রায় ৫০ লাখ বছর পর তারা প্রাকৃতিকভাবে মিলিত হয়ে আলুর পূর্বপুরুষের জন্ম দেয়।
ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের বোটানিস্ট সান্দ্রা ন্যাপ বলেন, ‘এই মিলনের ফলে জিনের পুনর্বিন্যাস হয়। এর নতুন প্রজাতিটি টিউবার উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়।
এই সংকরায়ণের সময়কাল আন্দিস পর্বতমালার মতো উঁচু হওয়ার সময়ের সঙ্গে মিলে যায়। টিউবার গঠনের ফলে আলুগাছ পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং পর্বতমালার প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিকে থাকতে ও ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম হয়।’
হুয়াং বলেন, টিউবার পুষ্টি জমা রাখে, ঠান্ডার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয় এবং শীতল পরিবেশে প্রজনন হ্রাসের সমস্যার সমাধান করে। এতে আলু দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
গবেষণার ফলাফল ভবিষ্যতে উন্নত আলু চাষে সাহায্য করবে, যা বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৫ হাজার আলুর জাত রয়েছে। পেরুভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, আলু বিশ্বের তৃতীয় প্রধান খাদ্যশস্য, চাল ও গমের পরে। চীন বিশ্বের শীর্ষ আলু উৎপাদক।
হুয়াং উল্লেখ করেন, ‘আলুর জিনোম থেকে ক্ষতিকর জিন মুছে ফেলা কঠিন। এই গবেষণা টমেটো ব্যবহার করে আলুতে সুশৃঙ্খল জিন নিয়ন্ত্রণের নতুন পথ খুলে দিতে পারে।’
চীনা এক গবেষক ঝিয়াং জিহুয়াং বলেন, ‘এ গবেষণায় এমন একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যেখানে একটি উদ্ভিদে ওপরের দিকে টমেটোর ফল আর নিচের দিকে আলুর টিউবার জন্মানো সম্ভব হতে পারে।’
আলু ও টমেটো একই সোলানেসি পরিবারের উদ্ভিদ। এই পরিবারে তামাক ও মরিচও আছে। গবেষণায় দক্ষিণ আমেরিকার অন্য টিউবারজাতীয় শাকসবজি যেমন মিষ্টি আলু ও ইউকাস উৎস অনুসন্ধান করা হয়নি, যেগুলো আলু ও টমেটো পরিবারের বাইরে।
ন্যাপ বলেন, ‘আমরা আলুর টিউবার, টমেটোতে ফল খাই। তবে ফুল, পাতা ও গঠন অনেকটা একই রকম। আপনি যদি আলুর গাছে ফল পেতে পারেন, তা দেখতে ছোট সবুজ টমেটোর মতো। তবে খাওয়া ঠিক নয়, কারণ সেগুলো বেশ খারাপ স্বাদের।’
তথ্যসূত্র: রয়টার্স
‘ইভেন্টউড’ নামে একটি মার্কিন কোম্পানি এমন এক ধরনের কাঠ তৈরি করেছে, যার শক্তি ইস্পাতের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি এবং ওজন ছয় গুণ কম। এই কাঠের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপারউড’। কোম্পানিটি ইতিমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে এই কাঠের উৎপাদন শুরু করেছে।
৬ দিন আগেআন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতিমান রসায়নবিদ ড. ওমর ইয়াঘি রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি দ্বিতীয় মুসলিম বিজ্ঞানী হিসেবে রসায়নে নোবেল জয় করলেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং শুষ্ক অঞ্চল থেকে পানীয় জল সংগ্রহের প্রযুক্তিতে তাঁর যুগান্তকারী গবেষণার জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত।
১২ দিন আগেচলতি বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী—সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমর এম ইয়াঘি। আজ বুধবার সুইডেনের রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস এ পুরস্কারের বিজয়ী হিসেবে তাঁদের নাম ঘোষণা করেছে। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, তাঁরা ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কসের বিকাশ’ ঘটানোর জন্য এ সম্মাননা পাচ্ছেন।
১২ দিন আগেপদার্থবিজ্ঞানের একটি অন্যতম প্রধান প্রশ্ন হলো—কত বড় ব্যবস্থার (system) মধ্যে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার প্রভাব দৃশ্যমান করা সম্ভব? এ বছরের নোবেল বিজয়ীরা একটি বৈদ্যুতিক সার্কিট ব্যবহার করে এমন একটি ব্যবস্থায় কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং ও কোয়ান্টাইজড শক্তির স্তর প্রমাণ করেছেন—যেটির আকার রীতিমতো...
১৩ দিন আগে