অনলাইন ডেস্ক
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে মানুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছে—মহাবিশ্বের সর্বশেষ পরিণতি কী হতে পারে। এটি কি অনন্তকাল ধরে প্রসারিত হতে থাকবে, নাকি একদিন সব ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে এসব প্রশ্নের নির্দিষ্ট উত্তর এখন পাওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের সাংহাই জিয়াও তং বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পদার্থবিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি গবেষণায় তাঁরা জানিয়েছেন, ‘বিগ ক্রাঞ্চ’ নামের মহাজাগতিক ঘটনার মাধ্যমে মহাবিশ্ব ধ্বংস হবে প্রায় ৩৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন বছর বয়সে। এই ঘটনার মাধ্যমে পুরো মহাবিশ্ব আবার একটি বিন্দুতে সংকুচিত হয়ে পড়বে।
প্রসঙ্গত, মহাবিশ্বের বয়স বর্তমানে প্রায় ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বছর। অর্থাৎ, এই গবেষণার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মহাবিশ্বের অস্তিত্ব রয়েছে আর ২০ বিলিয়ন বা ২০০০ কোটি বছর মাত্র!
গবেষকেরা ‘ডার্ক এনার্জি সার্ভে’ এবং ‘ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক ইন্সট্রুমেন্ট’সহ বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানের জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই মডেল তৈরি করেছেন।
এটি প্রচলিত সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে, যেখানে বলা হয়েছিল—মহাবিশ্ব চিরকাল প্রসারিত হতে থাকবে।
নতুন মডেল অনুযায়ী, আরও ৭০০ কোটি বছর প্রসারিত হওয়ার পর মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে সংকুচিত হতে শুরু করবে। শেষ পর্যন্ত তা এক বিন্দুতে এসে আবার ‘ধ্বংস’ হবে।
এই গবেষণার মূল চাবিকাঠি হলো ডার্ক এনার্জি। এটি মহাবিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ জুড়ে থাকা এক রহস্যময় শক্তি, যা মহাবিশ্বকে প্রসারিত করে চলছে।
পূর্বে বিজ্ঞানীরা ধারণা করতেন, ডার্ক এনার্জি মহাজাগতিক ধ্রুবকের মতো আচরণ করে, স্থির চাপ বজায় রাখে যা মহাবিশ্বকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রসারিত করে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, এটি হতে পারে পরিবর্তনশীল বা ডাইনামিক।
গবেষকেরা একটি মডেল প্রস্তাব করেছেন যেখানে রয়েছে একটি অতি হালকা কণা ‘অ্যাক্সিয়ন’। এই কণাটি একটি ঋণাত্মক মহাজাগতিক ধ্রুবক হিসাবে পরিচিত।
বিষয়টি সহজভাবে বোঝার জন্য একটি রাবার ব্যান্ডের উদাহরণ দেওয়া যায়। শুরুতে এটি প্রসারিত হয়, তবে একসময় ওই রাবারের টান প্রসারণের শক্তির চেয়ে এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে, তা আবার নিজেই সংকুচিত হয়ে পড়ে।
এই মডেল অনুসারে, মহাবিশ্ব বর্তমানের তুলনায় ৬৯ শতাংশ বড় হবে আরও ৭০০ কোটি বছর পরে। এরপর ধীরে ধীরে মহাবিশ্বের সংকোচন শুরু হবে, কারণ তখন মহাকর্ষীয় শক্তি এবং ঋণাত্মক কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট (একধরনের বিপরীতমুখী শক্তি) প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করবে। এই শক্তিগুলো ধীরে ধীরে প্রসারণকে থামিয়ে দিয়ে মহাবিশ্বকে টেনে একত্র করে। আর শেষ মুহূর্তে এই সংকোচন খুব দ্রুত ঘটে, যেন পুরো মহাবিশ্ব একটি বিন্দুতে চলে আসবে।
গবেষকেরা অবশ্য জানিয়েছেন, এই মডেলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা রয়েছে। সীমিত পর্যবেক্ষণমূলক তথ্যের কারণে তাদের মডেলে প্রচুর পরিমাণে ভুল থাকতে পারে। এই ঋণাত্মক কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট একেবারেই কাল্পনিক পর্যায়ে রয়েছে এখনো। ফলে অনন্তকাল ধরে সম্প্রসারণের মত বিকল্প ধারণাগুলোকেও একেবারে বাতিল করা যাচ্ছে না।
তবে এই গবেষণার সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হলো—এই তত্ত্ব ভবিষ্যতে পরীক্ষা করা সম্ভব। আগামী বছরগুলোতে যেসব নতুন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক প্রকল্প চালু হবে, সেগুলো ডার্ক এনার্জির আচরণ আরও নিখুঁতভাবে মাপতে পারবে।
ফলে এই বিগ ক্রাঞ্চ তত্ত্ব প্রমাণিত, পরিমার্জিত বা পুরোপুরি বাতিল—সবই হতে পারে।
তবে ভয়ের কিছু নেই। কারণ, এই ঘটনাটি ঘটবে ২০ বিলিয়ন বছর পরে। তুলনায়, পৃথিবীতে জটিল প্রাণের উদ্ভব হয়েছিল মাত্র ৬০০ মিলিয়ন বছর আগে।
তার আগেই আমাদের সূর্য নিভে যাবে, মিল্কিওয়ে এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির সংঘর্ষের মতো মহাজাগতিক ঘটনা ঘটবে।
তবুও, এই গবেষণা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি নির্দিষ্ট, পরীক্ষাযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। এবং এই ভবিষ্যদ্বাণী বলছে—একদিন মহাবিশ্ব নিজেই নিজেই ধ্বংস হবে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে মানুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছে—মহাবিশ্বের সর্বশেষ পরিণতি কী হতে পারে। এটি কি অনন্তকাল ধরে প্রসারিত হতে থাকবে, নাকি একদিন সব ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে এসব প্রশ্নের নির্দিষ্ট উত্তর এখন পাওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের সাংহাই জিয়াও তং বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পদার্থবিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি গবেষণায় তাঁরা জানিয়েছেন, ‘বিগ ক্রাঞ্চ’ নামের মহাজাগতিক ঘটনার মাধ্যমে মহাবিশ্ব ধ্বংস হবে প্রায় ৩৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন বছর বয়সে। এই ঘটনার মাধ্যমে পুরো মহাবিশ্ব আবার একটি বিন্দুতে সংকুচিত হয়ে পড়বে।
প্রসঙ্গত, মহাবিশ্বের বয়স বর্তমানে প্রায় ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বছর। অর্থাৎ, এই গবেষণার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মহাবিশ্বের অস্তিত্ব রয়েছে আর ২০ বিলিয়ন বা ২০০০ কোটি বছর মাত্র!
গবেষকেরা ‘ডার্ক এনার্জি সার্ভে’ এবং ‘ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক ইন্সট্রুমেন্ট’সহ বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানের জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই মডেল তৈরি করেছেন।
এটি প্রচলিত সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে, যেখানে বলা হয়েছিল—মহাবিশ্ব চিরকাল প্রসারিত হতে থাকবে।
নতুন মডেল অনুযায়ী, আরও ৭০০ কোটি বছর প্রসারিত হওয়ার পর মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে সংকুচিত হতে শুরু করবে। শেষ পর্যন্ত তা এক বিন্দুতে এসে আবার ‘ধ্বংস’ হবে।
এই গবেষণার মূল চাবিকাঠি হলো ডার্ক এনার্জি। এটি মহাবিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ জুড়ে থাকা এক রহস্যময় শক্তি, যা মহাবিশ্বকে প্রসারিত করে চলছে।
পূর্বে বিজ্ঞানীরা ধারণা করতেন, ডার্ক এনার্জি মহাজাগতিক ধ্রুবকের মতো আচরণ করে, স্থির চাপ বজায় রাখে যা মহাবিশ্বকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রসারিত করে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, এটি হতে পারে পরিবর্তনশীল বা ডাইনামিক।
গবেষকেরা একটি মডেল প্রস্তাব করেছেন যেখানে রয়েছে একটি অতি হালকা কণা ‘অ্যাক্সিয়ন’। এই কণাটি একটি ঋণাত্মক মহাজাগতিক ধ্রুবক হিসাবে পরিচিত।
বিষয়টি সহজভাবে বোঝার জন্য একটি রাবার ব্যান্ডের উদাহরণ দেওয়া যায়। শুরুতে এটি প্রসারিত হয়, তবে একসময় ওই রাবারের টান প্রসারণের শক্তির চেয়ে এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে, তা আবার নিজেই সংকুচিত হয়ে পড়ে।
এই মডেল অনুসারে, মহাবিশ্ব বর্তমানের তুলনায় ৬৯ শতাংশ বড় হবে আরও ৭০০ কোটি বছর পরে। এরপর ধীরে ধীরে মহাবিশ্বের সংকোচন শুরু হবে, কারণ তখন মহাকর্ষীয় শক্তি এবং ঋণাত্মক কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট (একধরনের বিপরীতমুখী শক্তি) প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করবে। এই শক্তিগুলো ধীরে ধীরে প্রসারণকে থামিয়ে দিয়ে মহাবিশ্বকে টেনে একত্র করে। আর শেষ মুহূর্তে এই সংকোচন খুব দ্রুত ঘটে, যেন পুরো মহাবিশ্ব একটি বিন্দুতে চলে আসবে।
গবেষকেরা অবশ্য জানিয়েছেন, এই মডেলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা রয়েছে। সীমিত পর্যবেক্ষণমূলক তথ্যের কারণে তাদের মডেলে প্রচুর পরিমাণে ভুল থাকতে পারে। এই ঋণাত্মক কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট একেবারেই কাল্পনিক পর্যায়ে রয়েছে এখনো। ফলে অনন্তকাল ধরে সম্প্রসারণের মত বিকল্প ধারণাগুলোকেও একেবারে বাতিল করা যাচ্ছে না।
তবে এই গবেষণার সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হলো—এই তত্ত্ব ভবিষ্যতে পরীক্ষা করা সম্ভব। আগামী বছরগুলোতে যেসব নতুন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক প্রকল্প চালু হবে, সেগুলো ডার্ক এনার্জির আচরণ আরও নিখুঁতভাবে মাপতে পারবে।
ফলে এই বিগ ক্রাঞ্চ তত্ত্ব প্রমাণিত, পরিমার্জিত বা পুরোপুরি বাতিল—সবই হতে পারে।
তবে ভয়ের কিছু নেই। কারণ, এই ঘটনাটি ঘটবে ২০ বিলিয়ন বছর পরে। তুলনায়, পৃথিবীতে জটিল প্রাণের উদ্ভব হয়েছিল মাত্র ৬০০ মিলিয়ন বছর আগে।
তার আগেই আমাদের সূর্য নিভে যাবে, মিল্কিওয়ে এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির সংঘর্ষের মতো মহাজাগতিক ঘটনা ঘটবে।
তবুও, এই গবেষণা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি নির্দিষ্ট, পরীক্ষাযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। এবং এই ভবিষ্যদ্বাণী বলছে—একদিন মহাবিশ্ব নিজেই নিজেই ধ্বংস হবে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
মানবদেহকে যদি একটি জটিল যন্ত্র বলা হয়, তাহলে তা হয়তো অতিরঞ্জন হবে না। কোষের সূক্ষ্ম গঠন থেকে শুরু করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ, মস্তিষ্ক, যকৃৎ—৪০ কোটি বছরের বিবর্তনের ধারায় ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে। তবুও আজও বিজ্ঞানীরা বুঝে উঠতে পারেননি, কীভাবে ঠিক এমন আকৃতির মানুষ আমরা হয়ে উঠলাম।
১৩ ঘণ্টা আগেপ্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে বাংলাদেশসহ গোটা উত্তর গোলার্ধ। তীব্র রোদ, দীর্ঘ দিন আর বাড়তে থাকা তাপমাত্রা যেন জানান দিচ্ছে—গ্রীষ্ম শুরু হয়ে গেছে। অথচ, ঠিক এই সময়েই সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে রয়েছে পৃথিবী।
১ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের সরকার মাংসখেকো মাছির লার্ভা মোকাবিলায় এক অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছে। বিলিয়ন বিলিয়ন মাছি প্রজনন করে সেগুলো মেক্সিকো ও দক্ষিণ টেক্সাসে বিমান থেকে ফেলা হবে। শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও, এটি যুক্তরাষ্ট্রের গরুর মাংস শিল্প, বন্যপ্রাণী এবং গৃহপালিত প্রাণীদের সুরক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক একটি কার্যকর পদ্ধত
২ দিন আগেপ্রাথমিক ফলাফল দেখায়, প্রথম শ্রেণির শুরুতে ছেলেমেয়ের মধ্যে গণিতের দক্ষতায় পার্থক্য প্রায় ছিল না বললেই চলে। তবে স্কুল শুরু হওয়ার মাত্র চার মাস পরই ছেলেদের একটু এগিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবধান ক্রমাগত বাড়তে থাকে—চতুর্থ ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে এসে তা আরও স্পষ্ট হয়।
২ দিন আগে