অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যান্টাসি ড্রামা ‘গেম অব থ্রোনস’-এর মাধ্যমে জনপ্রিয় হয় নেকড়ের এক প্রজাতি—ডায়ার উলফস। প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বছর আগে এই প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার দাবি করেছে কলসাল বায়োসায়েন্সেস নামক এক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান।
কলসাল বায়োসায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, তাঁরা বিশ্বের প্রথম ‘ডি-এক্সটিংকশন’ বা বিলুপ্ত প্রাণী পুনরুদ্ধারের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তাঁদের গবেষকেরা ডায়ার উলফ বা ‘Aenocyon dirus’ প্রজাতিটি ফিরিয়ে এনেছে।
এর আগে প্লাইস্টোসিন যুগের উইলি বা লোমশ ম্যামথ ফিরিয়ে আনতে লোমশ ইঁদুর জন্ম দেন কলসাল বায়োসায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা। এবার তাঁরা সফলভাবে পরীক্ষাগারে তিনটি ডায়ার উলফের বাচ্চা তৈরি করেছেন। বিজ্ঞানীরা এটি করেছেন ডায়ার উলফের জেনোম পুনর্গঠন করে, যা তাঁরা প্রাচীন ডিএনএ থেকে সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা ডায়ার উলফের জেনেটিক কোড (জেনোম) তৈরি করার জন্য, এমন বিশেষ জিনের সংস্করণ চিহ্নিত করেছেন, যা শুধু ডায়ার উলফে ছিল এবং বিলুপ্ত প্রাণীটির জীবিত আত্মীয়দের মধ্যে ছিল না।
এরপর বিজ্ঞানীরা আধুনিক গ্রে উলফ বা ধূসর নেকড়ে (Canis lupus) থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করেন এবং সেটি পরিবর্তন (এডিট) করেন। এর মাধ্যমে ডায়ার উলফের বিশেষ জিনগুলোর সংস্করণ যুক্ত করতে সক্ষম হন তাঁরা। এই পরিবর্তিত ডিএনএ গ্রে উলফের ডিমের কোষে স্থাপন করা হয়। এই ডিমে নিউক্লিয়াস আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এরপর গবেষণাগারে ডিমগুলো পরিপক্ব করা হয়। পরবর্তী সময়ে সারোগেট কুকুরের গর্ভে ভ্রূণগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়।
তিনটি ভ্রূণ সফলভাবে তিনটি সারোগেট কুকুরের গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হলে সেগুলো থেকে জন্ম নেয় শুভ্র সাদা নেকড়ে—রোমুলাস, রেমুস ও খালেসি। এই নেকড়েরা দেখতে ‘গেম অব থ্রোনস’ সিরিজের জন স্নোর ডায়ার উলফ ‘ঘোস্ট’-এর মতো। রোমের পৌরাণিক যমজ প্রতিষ্ঠাতাদের নাম রোমুলাস ও রেমুস। বলা হয়ে থাকে, তারা একটি নেকড়ের কাছে লালিত-পালিত হয়। আর খালেসি হলো গেম অব থ্রোনসের জনপ্রিয় নারী চরিত্রের নাম।
কলসাল বায়োসায়েন্সেসের সিইও বেন ল্যাম বলেছেন, ‘আমাদের দল একটি ১৩ হাজার বছর পুরোনো দাঁত এবং ৭২ হাজার বছর পুরোনো খুলি থেকে ডায়ার উলফের ডিএনএ সংগ্রহ করার মাধ্যমে এই সুস্থ নেকড়ের বাচ্চার জন্ম হয়। এটি ছিল এক ঐতিহাসিক কাজ, যা অনেকে স্বপ্নেও ভাবেননি। আজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীকে এক নতুন যুগের দিকে নিয়ে আসছি।’
ডায়ার উলফের জন্ম হলো যেভাবে
ডায়ার উলফের ‘ডি-এক্সটিংকশন’-এর জন্য ১৯৯৬ সালের ডলি ভেড়ার তৈরি ক্লোনিং প্রযুক্তির মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করেন কলসালের বিজ্ঞানীরা। প্রথমে ডায়ার উলফের ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেটিকে আধুনিক গ্রে উলফের জেনেটিক কোডে বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা তাদের আসল জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলো পুনরুদ্ধার করেছে। এসব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে বড় আকার, সাদা লোম এবং বড় দাঁত।
এই পদ্ধতিতে একটি নিখুঁত ক্লোন তৈরি করা যায়। এর জন্য যে প্রাণীর ক্লোন তৈরি করা হবে, তার একটি কোষ নেওয়া হয় এবং কোষের নিউক্লিয়াসে থাকা তার জেনেটিক উপাদান বের করা হয়। এরপর এই জেনেটিক তথ্য একটি আরেকটি প্রাণীর ডিমে সন্নিবেশ করা হয়, যেটির নিজের নিউক্লিয়াস আগেই সরিয়ে ফেলা হয়। এখন সেই ডিম সব জেনেটিক তথ্য ধারণ করে, যা মূল ক্লোনিংবিষয়ক প্রাণীকে পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয়। এরপর ডিমটি সারোগেটের গর্ভে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সারোগেটে গর্ভধারণের পর পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
যেহেতু ডায়ার উলফ শেষ বরফযুগের শেষে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, তাই ডায়ার উলফের কোষের গঠন অনুমান করতে জীবাশ্ম রেকর্ড থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীরা।
এদিকে প্রাণীর জেনোম পুনর্গঠনের জন্য বিজ্ঞানীরা ডায়ার উলফের জীবাশ্ম থেকে জেনেটিক নমুনা সংগ্রহ করেন এবং এগুলোকে তাদের জীবিত আত্মীয়দের, যেমন গ্রে উলফ (ধূসর নেকড়ে) ও শিয়ালের জেনোমের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাঁরা ডিম দানকারী হিসেবে গ্রে উলফদের নির্বাচন করেন। কারণ, এই প্রাণীগুলো ডায়ার উলফের সবচেয়ে কাছের জীবিত আত্মীয়।
জিনোম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ১৪টি জিনের মধ্যে ২০টি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য চিহ্নিত করতে সক্ষম হন, যা ডায়ার উলফের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য দায়ী। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বড় আকার, সাদা লোম, বড় দাঁত এবং স্বতন্ত্র ডাক।
এরপর জীবিত গ্রে উলফের রক্তের নমুনা থেকে কোষ সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীরা। এ পদ্ধতি অনেক সহজ এবং কম ক্ষতিকর। তারপর সিআরআইএসপিআর জিন-এডিটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁরা চিহ্নিত ১৪টি জিনের মধ্যে ২০টি সম্পাদনা করেন, যাতে এই জিনগুলো ডায়ার উলফের প্রাচীন আত্মীয়দের মতো একই জেনেটিক সিকোয়েন্স থাকে।
একবার এই ‘ডায়ার উলফ কোষ’ তৈরি হওয়ার পর তাদের নিউক্লিয়াস বের করে নেওয়া হয় এবং তা জীবিত গ্রে উলফের ডিমে সন্নিবেশ করা হয়। ঠিক যেমন ডলি শিপের ক্ষেত্রে হয়েছিল। এসব ডিমের কোষের নিউক্লিয়াস আগে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, যাতে নতুন ডিএনএ প্রবেশের জন্য জায়গা তৈরি হয়।
সাধারণত প্রতিটি ক্রোমোজোমের একটিমাত্র অনুলিপি ধারণ করে প্রজনন কোষ (ডিম্বাণু ও শুক্রাণু)। তবে শরীরের অন্যান্য কোষে দুটি অনুলিপি থাকে। যখন শরীরের যেকোনো কোষের নিউক্লিয়াস প্রজনন কোষে স্থানান্তর করা হয়, তখন প্রজনন কোষটি ক্রোমোজোমের দুটি অনুলিপি পায়। এর ফলে প্রজনন কোষটি সমস্ত জেনেটিক তথ্য পেয়ে যায়, যা পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ গঠনের জন্য প্রয়োজন।
গবেষণাগারে তৈরি ডিমগুলোকে পরিপক্ব হওয়ার সময় দেওয়া হয়। এর ফলে ৪৫টি ভ্রূণ তৈরি হয়। এরপর ভ্রূণগুলো দুটি গৃহপালিত কুকুরের গর্ভে স্থানান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, গৃহপালিত কুকুরগুলো প্রকৃতপক্ষে গ্রে উলফের একটি উপপ্রজাতি।
প্রতিটি সারোগেট কুকুরে মাত্র একটি ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়। ৬৫ দিন গর্ভধারণের পর গত ১ অক্টোবর সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয় রোমুলাস এবং রেমুস। কয়েক মাস পর একই প্রক্রিয়া পুনরাবৃত্তি করা হয় আরেক সারোগেট কুকুরের মাধ্যমে। এর তিন মাস পরে খালেসির জন্ম হয়।
রোমুলাস এবং রেমাসের প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার, প্রথম চিৎকার করার এবং নবজাতক থেকে ছোট শাবকের আকার ধারণ করার ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করেছে কলসাল। তারা এই ডায়ার উলফদের ‘বিশ্বের প্রথম ডি-এক্সটিংকশন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তবে ২০০৩ সালে আরেকটি ডি-এক্সটিংকশন ঘটেছিল। স্পেনের বিজ্ঞানীরা ‘বুকার্ডো’ বা ‘পিরেনিয়ান আইবেক্স’ (Capra pyrenaica pyrenaica) নামে পরিচিত একটি বিলুপ্ত বন্য ছাগল প্রজাতির ক্লোন তৈরি করেন। কিন্তু ২০০৯ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়, নবজাতক ছাগলটি জন্মের কয়েক মিনিট পরেই মারা যায়।
কলসাল কোম্পানি আরও ঘোষণা করেছে, তারা ‘রেড উলফ’ (লাল উলফ) নামক বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনকভাবে বিলুপ্তির মুখে থাকা প্রজাতিটির ক্লোনও তৈরি করেছে।
জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ারড ‘উলির মাউস’ (বড় লোমের ইঁদুর) তৈরির মাত্র কয়েক মাস পর ডায়ার উলফ তৈরির এই ঘোষণা এল। এটি কলসাল কোম্পানির জন্য বড় মাইলফলক। কারণ, তারা ২০২৮ সালের মধ্যে উইলি ম্যামথদের (অতিকায় ম্যামথ) পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স ও সিএনএন
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যান্টাসি ড্রামা ‘গেম অব থ্রোনস’-এর মাধ্যমে জনপ্রিয় হয় নেকড়ের এক প্রজাতি—ডায়ার উলফস। প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বছর আগে এই প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার দাবি করেছে কলসাল বায়োসায়েন্সেস নামক এক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান।
কলসাল বায়োসায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, তাঁরা বিশ্বের প্রথম ‘ডি-এক্সটিংকশন’ বা বিলুপ্ত প্রাণী পুনরুদ্ধারের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তাঁদের গবেষকেরা ডায়ার উলফ বা ‘Aenocyon dirus’ প্রজাতিটি ফিরিয়ে এনেছে।
এর আগে প্লাইস্টোসিন যুগের উইলি বা লোমশ ম্যামথ ফিরিয়ে আনতে লোমশ ইঁদুর জন্ম দেন কলসাল বায়োসায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা। এবার তাঁরা সফলভাবে পরীক্ষাগারে তিনটি ডায়ার উলফের বাচ্চা তৈরি করেছেন। বিজ্ঞানীরা এটি করেছেন ডায়ার উলফের জেনোম পুনর্গঠন করে, যা তাঁরা প্রাচীন ডিএনএ থেকে সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা ডায়ার উলফের জেনেটিক কোড (জেনোম) তৈরি করার জন্য, এমন বিশেষ জিনের সংস্করণ চিহ্নিত করেছেন, যা শুধু ডায়ার উলফে ছিল এবং বিলুপ্ত প্রাণীটির জীবিত আত্মীয়দের মধ্যে ছিল না।
এরপর বিজ্ঞানীরা আধুনিক গ্রে উলফ বা ধূসর নেকড়ে (Canis lupus) থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করেন এবং সেটি পরিবর্তন (এডিট) করেন। এর মাধ্যমে ডায়ার উলফের বিশেষ জিনগুলোর সংস্করণ যুক্ত করতে সক্ষম হন তাঁরা। এই পরিবর্তিত ডিএনএ গ্রে উলফের ডিমের কোষে স্থাপন করা হয়। এই ডিমে নিউক্লিয়াস আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এরপর গবেষণাগারে ডিমগুলো পরিপক্ব করা হয়। পরবর্তী সময়ে সারোগেট কুকুরের গর্ভে ভ্রূণগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়।
তিনটি ভ্রূণ সফলভাবে তিনটি সারোগেট কুকুরের গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হলে সেগুলো থেকে জন্ম নেয় শুভ্র সাদা নেকড়ে—রোমুলাস, রেমুস ও খালেসি। এই নেকড়েরা দেখতে ‘গেম অব থ্রোনস’ সিরিজের জন স্নোর ডায়ার উলফ ‘ঘোস্ট’-এর মতো। রোমের পৌরাণিক যমজ প্রতিষ্ঠাতাদের নাম রোমুলাস ও রেমুস। বলা হয়ে থাকে, তারা একটি নেকড়ের কাছে লালিত-পালিত হয়। আর খালেসি হলো গেম অব থ্রোনসের জনপ্রিয় নারী চরিত্রের নাম।
কলসাল বায়োসায়েন্সেসের সিইও বেন ল্যাম বলেছেন, ‘আমাদের দল একটি ১৩ হাজার বছর পুরোনো দাঁত এবং ৭২ হাজার বছর পুরোনো খুলি থেকে ডায়ার উলফের ডিএনএ সংগ্রহ করার মাধ্যমে এই সুস্থ নেকড়ের বাচ্চার জন্ম হয়। এটি ছিল এক ঐতিহাসিক কাজ, যা অনেকে স্বপ্নেও ভাবেননি। আজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীকে এক নতুন যুগের দিকে নিয়ে আসছি।’
ডায়ার উলফের জন্ম হলো যেভাবে
ডায়ার উলফের ‘ডি-এক্সটিংকশন’-এর জন্য ১৯৯৬ সালের ডলি ভেড়ার তৈরি ক্লোনিং প্রযুক্তির মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করেন কলসালের বিজ্ঞানীরা। প্রথমে ডায়ার উলফের ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেটিকে আধুনিক গ্রে উলফের জেনেটিক কোডে বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা তাদের আসল জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলো পুনরুদ্ধার করেছে। এসব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে বড় আকার, সাদা লোম এবং বড় দাঁত।
এই পদ্ধতিতে একটি নিখুঁত ক্লোন তৈরি করা যায়। এর জন্য যে প্রাণীর ক্লোন তৈরি করা হবে, তার একটি কোষ নেওয়া হয় এবং কোষের নিউক্লিয়াসে থাকা তার জেনেটিক উপাদান বের করা হয়। এরপর এই জেনেটিক তথ্য একটি আরেকটি প্রাণীর ডিমে সন্নিবেশ করা হয়, যেটির নিজের নিউক্লিয়াস আগেই সরিয়ে ফেলা হয়। এখন সেই ডিম সব জেনেটিক তথ্য ধারণ করে, যা মূল ক্লোনিংবিষয়ক প্রাণীকে পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয়। এরপর ডিমটি সারোগেটের গর্ভে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সারোগেটে গর্ভধারণের পর পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
যেহেতু ডায়ার উলফ শেষ বরফযুগের শেষে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, তাই ডায়ার উলফের কোষের গঠন অনুমান করতে জীবাশ্ম রেকর্ড থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীরা।
এদিকে প্রাণীর জেনোম পুনর্গঠনের জন্য বিজ্ঞানীরা ডায়ার উলফের জীবাশ্ম থেকে জেনেটিক নমুনা সংগ্রহ করেন এবং এগুলোকে তাদের জীবিত আত্মীয়দের, যেমন গ্রে উলফ (ধূসর নেকড়ে) ও শিয়ালের জেনোমের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাঁরা ডিম দানকারী হিসেবে গ্রে উলফদের নির্বাচন করেন। কারণ, এই প্রাণীগুলো ডায়ার উলফের সবচেয়ে কাছের জীবিত আত্মীয়।
জিনোম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ১৪টি জিনের মধ্যে ২০টি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য চিহ্নিত করতে সক্ষম হন, যা ডায়ার উলফের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য দায়ী। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বড় আকার, সাদা লোম, বড় দাঁত এবং স্বতন্ত্র ডাক।
এরপর জীবিত গ্রে উলফের রক্তের নমুনা থেকে কোষ সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীরা। এ পদ্ধতি অনেক সহজ এবং কম ক্ষতিকর। তারপর সিআরআইএসপিআর জিন-এডিটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁরা চিহ্নিত ১৪টি জিনের মধ্যে ২০টি সম্পাদনা করেন, যাতে এই জিনগুলো ডায়ার উলফের প্রাচীন আত্মীয়দের মতো একই জেনেটিক সিকোয়েন্স থাকে।
একবার এই ‘ডায়ার উলফ কোষ’ তৈরি হওয়ার পর তাদের নিউক্লিয়াস বের করে নেওয়া হয় এবং তা জীবিত গ্রে উলফের ডিমে সন্নিবেশ করা হয়। ঠিক যেমন ডলি শিপের ক্ষেত্রে হয়েছিল। এসব ডিমের কোষের নিউক্লিয়াস আগে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, যাতে নতুন ডিএনএ প্রবেশের জন্য জায়গা তৈরি হয়।
সাধারণত প্রতিটি ক্রোমোজোমের একটিমাত্র অনুলিপি ধারণ করে প্রজনন কোষ (ডিম্বাণু ও শুক্রাণু)। তবে শরীরের অন্যান্য কোষে দুটি অনুলিপি থাকে। যখন শরীরের যেকোনো কোষের নিউক্লিয়াস প্রজনন কোষে স্থানান্তর করা হয়, তখন প্রজনন কোষটি ক্রোমোজোমের দুটি অনুলিপি পায়। এর ফলে প্রজনন কোষটি সমস্ত জেনেটিক তথ্য পেয়ে যায়, যা পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ গঠনের জন্য প্রয়োজন।
গবেষণাগারে তৈরি ডিমগুলোকে পরিপক্ব হওয়ার সময় দেওয়া হয়। এর ফলে ৪৫টি ভ্রূণ তৈরি হয়। এরপর ভ্রূণগুলো দুটি গৃহপালিত কুকুরের গর্ভে স্থানান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, গৃহপালিত কুকুরগুলো প্রকৃতপক্ষে গ্রে উলফের একটি উপপ্রজাতি।
প্রতিটি সারোগেট কুকুরে মাত্র একটি ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়। ৬৫ দিন গর্ভধারণের পর গত ১ অক্টোবর সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয় রোমুলাস এবং রেমুস। কয়েক মাস পর একই প্রক্রিয়া পুনরাবৃত্তি করা হয় আরেক সারোগেট কুকুরের মাধ্যমে। এর তিন মাস পরে খালেসির জন্ম হয়।
রোমুলাস এবং রেমাসের প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার, প্রথম চিৎকার করার এবং নবজাতক থেকে ছোট শাবকের আকার ধারণ করার ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করেছে কলসাল। তারা এই ডায়ার উলফদের ‘বিশ্বের প্রথম ডি-এক্সটিংকশন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তবে ২০০৩ সালে আরেকটি ডি-এক্সটিংকশন ঘটেছিল। স্পেনের বিজ্ঞানীরা ‘বুকার্ডো’ বা ‘পিরেনিয়ান আইবেক্স’ (Capra pyrenaica pyrenaica) নামে পরিচিত একটি বিলুপ্ত বন্য ছাগল প্রজাতির ক্লোন তৈরি করেন। কিন্তু ২০০৯ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়, নবজাতক ছাগলটি জন্মের কয়েক মিনিট পরেই মারা যায়।
কলসাল কোম্পানি আরও ঘোষণা করেছে, তারা ‘রেড উলফ’ (লাল উলফ) নামক বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনকভাবে বিলুপ্তির মুখে থাকা প্রজাতিটির ক্লোনও তৈরি করেছে।
জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ারড ‘উলির মাউস’ (বড় লোমের ইঁদুর) তৈরির মাত্র কয়েক মাস পর ডায়ার উলফ তৈরির এই ঘোষণা এল। এটি কলসাল কোম্পানির জন্য বড় মাইলফলক। কারণ, তারা ২০২৮ সালের মধ্যে উইলি ম্যামথদের (অতিকায় ম্যামথ) পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স ও সিএনএন
কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছেন ইসরায়েলের এক দল গবেষক। তাঁরা প্রথমবারের মতো এমন এক নতুন ধরনের কোয়ান্টাম বিজড়নের (এনটেঙ্গলমেন্ট) সন্ধান পেয়েছেন। অত্যন্ত ক্ষুদ্রাকৃতির কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ ফোটনের (আলোক কণা) মোট কৌণিক ভরবেগের সীমার মধ্যেই এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
১৬ ঘণ্টা আগেপৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে একসঙ্গে শত শত ‘মাইক্রোস্যাটেলাইট’ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক স্টার্টআপ স্পিনলঞ্চ। এ জন্য তারা এক ধরনের বিশাল কামান ব্যবহার করবে। কামানটি স্যাটলাইটগুলোকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দ্রুত গতিতে মহাকাশে পাঠাবে। প্যানকেকের মতো মহাকাশযানের প্রথম ব্যাচটি আগামী..
২ দিন আগেউপাদানটি স্বচ্ছ পেপারবোর্ড সেলুলোজ থেকে তৈরি করা হয়েছে। এটি উদ্ভিদের কোষপ্রাচীরের মূল উপাদান। সেলোফেনের হলেও এর আগে এটিকে শক্ত করে তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তাই এটি শুধু খাদ্য প্যাকেজিংয়ের মতো কাজে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু লিথিয়াম ব্রোমাইড দ্রবণে সেলুলোজ প্রক্রিয়াজাত করলে কোনো কোগুল্যান্ট (জমাটকারী রাসায়
২ দিন আগেমহাকাশ ভ্রমণ রোমাঞ্চকর বলে মনে হলেও এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং এক অভিযান। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ নভোচারীদের জন্য খাদ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে একাধিক কঠোর বিধি-নিষেধ রয়েছে, যা শুধুমাত্র স্বাদ বা বৈচিত্র্যের জন্য নয়, বরং স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার খাতিরে গুরুত্বপূর্ণ।
৪ দিন আগে