আজকের পত্রিকা ডেস্ক
হাসি মানুষের সহজাত এক অভিব্যক্তি। কখনো তা আনন্দের, কখনো সৌজন্যের, আবার কখনো নিছক সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করা একপ্রকার মুখোশ। আমরা প্রতিদিনই নানা ধরনের হাসিমাখা মুখ দেখি। তবে সব হাসিই আসল হাসি নয়। অনেক সময় মুখে হাসি থাকলেও চোখে থাকে না এক ফোঁটা উষ্ণতা। ঠিক তখনই আমাদের মন বলে ওঠে—‘কিছু একটা গড়বড় আছে।’ আসল আর নকলের এই সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। হাসিকে আসল বা মেকি বলে মনে হওয়ার পেছনের কারণটি লুকিয়ে আছে মুখের পেশি, স্নায়ুবিজ্ঞান আর আবেগের আন্তরিকতায় এক চমকপ্রদ মিশেলে।
আসল বনাম কৃত্রিম হাসি
সব হাসি এক নয়। বিজ্ঞানের ভাষায়, অন্তত দুটি আলাদা ধরনের হাসি আছে। একটিকে বলে ডুশেন স্মাইল (Duchenne smile), যেটা আসে মনের গভীর থেকে। আরেকটি ‘নন-ডুশেন স্মাইল (non-Duchenne smile), যা সামাজিক সৌজন্য বা কৌশলগত কারণে করা হয়।
ডুশেন হাসির নামকরণ করা হয়েছে ফরাসি স্নায়ুবিজ্ঞানী গিয়োম ডুশেন দ্য বুলোনির নামে। এই হাসিতে দুটি মূল পেশি কাজ করে।
প্রথমত, মুখের কোণের দিকে থাকা ‘রিজোরিয়াস’ ও ‘জাইগোমেটিকাস মেজর’ নামের পেশিগুলো ঠোঁটকে টেনে তোলে।
দ্বিতীয়ত, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ‘অরবিকুলারিস অকুলি’—চোখের চারপাশের পেশি, যা সংকুচিত হয়ে চোখে কুঁচকে রেখা তৈরি করে।
কৃত্রিম হাসিতে সাধারণত শুধু মুখের পেশি সক্রিয় হয়। চোখ থাকে নিরাবেগ। তাই এমন হাসি দেখে মনে হয় যান্ত্রিক—ভদ্রতা বা চাপা আবেগের মুখোশমাত্র।
হাসির স্নায়ুবিজ্ঞান
দুই ধরনের হাসিই মুখের অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণকারী সপ্তম করোটির স্নায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে পার্থক্যটা হয় উৎসে। আসল হাসি আসে মস্তিষ্কের আবেগ-নিয়ন্ত্রক অংশ ‘লিম্বিক সিস্টেম’ থেকে, বিশেষ করে ‘অ্যামিগডালা’ নামক অংশ থেকে।
অন্যদিকে কৃত্রিম হাসি আসে সচেতন নিয়ন্ত্রণে ‘মোটর কর্টেক্স’ থেকে। মানে হলো, সত্যিকারের হাসি ইচ্ছা করলেও কৃত্রিম বানানো যায় না। চোখের আশপাশের অরবিকুলারিস অকুলি পেশি কেবল তখনই সঠিকভাবে সংকুচিত হয়, যখন অভ্যন্তরীণ আবেগ তা সৃষ্টি করে। এ জন্য অভিনেতারাও বাস্তব অভিজ্ঞতা মনে করে বা ‘মেথড অ্যাক্টিং’-এর মাধ্যমে সে আবেগকে ডাকতে হয়।
চোখেই লুকিয়ে সত্য
মানুষের মস্তিষ্ক দারুণভাবে পারদর্শী সত্যিকারের আবেগ চিনতে। এমনকি ১০ মাস বয়সী শিশুদের মাঝেও গবেষণায় দেখা গেছে, তারা আসল আর নকল হাসির পার্থক্য বুঝতে পারে।
এই দক্ষতা আমাদের পূর্বপুরুষদের মাঝে টিকে থাকার উপায় ছিল—কে বন্ধু, কে প্রতারক, তা বোঝার জন্য।
মুখাবয়ব পড়তে ও অভিব্যক্তি বিশ্লেষণ করতে ‘ফুসিফর্ম গাইরাস’ ও ‘সুপেরিয়র টেম্পোরাল সালকাস’ নামক মস্তিষ্কের অংশ একসঙ্গে কাজ করে।
সামাজিক হাসির গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জ
নকল হাসি মানেই খারাপ কিছু নয়। বরং এগুলো সমাজে শান্তি বজায় রাখে, সৌজন্য রক্ষা করে, বিবাদ ঠেকায়, সম্মান দেখায়।
তবে দীর্ঘদিন এই ধরনের আবেগবিহীন হাসি ‘পরিধান’ করলে মানসিক চাপ বাড়ে। একে বলা হয় ‘ইমোশনাল লেবার’।
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা চাকরিতে জোর করে হাসতে বাধ্য হন—বিশেষ করে কাস্টমার সার্ভিসে—তাদের মানসিক চাপ, হৃদ্রোগের ঝুঁকি ও অবসাদ বেড়ে যায়।
কৃত্রিম মুখ ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
এখন এআই যুগে কৃত্রিম মুখ তৈরি হচ্ছে—চ্যাটবট, ভার্চুয়াল সহকারী ইত্যাদি। তাদের মুখে হাসি বসানো সহজ, তবে চোখে কৃত্রিম সেই রেখা দেওয়া কঠিন। সে জন্য এখনো মানবদেহের অরবিকুলারিস অকুলিই রয়ে গেছে সত্যিকারের হাসির মানদণ্ড। পরের বার যখন কারও হাসি বিশ্লেষণ করবেন—মুখের দিকে নয়, চোখের দিকে তাকান।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট
হাসি মানুষের সহজাত এক অভিব্যক্তি। কখনো তা আনন্দের, কখনো সৌজন্যের, আবার কখনো নিছক সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করা একপ্রকার মুখোশ। আমরা প্রতিদিনই নানা ধরনের হাসিমাখা মুখ দেখি। তবে সব হাসিই আসল হাসি নয়। অনেক সময় মুখে হাসি থাকলেও চোখে থাকে না এক ফোঁটা উষ্ণতা। ঠিক তখনই আমাদের মন বলে ওঠে—‘কিছু একটা গড়বড় আছে।’ আসল আর নকলের এই সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। হাসিকে আসল বা মেকি বলে মনে হওয়ার পেছনের কারণটি লুকিয়ে আছে মুখের পেশি, স্নায়ুবিজ্ঞান আর আবেগের আন্তরিকতায় এক চমকপ্রদ মিশেলে।
আসল বনাম কৃত্রিম হাসি
সব হাসি এক নয়। বিজ্ঞানের ভাষায়, অন্তত দুটি আলাদা ধরনের হাসি আছে। একটিকে বলে ডুশেন স্মাইল (Duchenne smile), যেটা আসে মনের গভীর থেকে। আরেকটি ‘নন-ডুশেন স্মাইল (non-Duchenne smile), যা সামাজিক সৌজন্য বা কৌশলগত কারণে করা হয়।
ডুশেন হাসির নামকরণ করা হয়েছে ফরাসি স্নায়ুবিজ্ঞানী গিয়োম ডুশেন দ্য বুলোনির নামে। এই হাসিতে দুটি মূল পেশি কাজ করে।
প্রথমত, মুখের কোণের দিকে থাকা ‘রিজোরিয়াস’ ও ‘জাইগোমেটিকাস মেজর’ নামের পেশিগুলো ঠোঁটকে টেনে তোলে।
দ্বিতীয়ত, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ‘অরবিকুলারিস অকুলি’—চোখের চারপাশের পেশি, যা সংকুচিত হয়ে চোখে কুঁচকে রেখা তৈরি করে।
কৃত্রিম হাসিতে সাধারণত শুধু মুখের পেশি সক্রিয় হয়। চোখ থাকে নিরাবেগ। তাই এমন হাসি দেখে মনে হয় যান্ত্রিক—ভদ্রতা বা চাপা আবেগের মুখোশমাত্র।
হাসির স্নায়ুবিজ্ঞান
দুই ধরনের হাসিই মুখের অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণকারী সপ্তম করোটির স্নায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে পার্থক্যটা হয় উৎসে। আসল হাসি আসে মস্তিষ্কের আবেগ-নিয়ন্ত্রক অংশ ‘লিম্বিক সিস্টেম’ থেকে, বিশেষ করে ‘অ্যামিগডালা’ নামক অংশ থেকে।
অন্যদিকে কৃত্রিম হাসি আসে সচেতন নিয়ন্ত্রণে ‘মোটর কর্টেক্স’ থেকে। মানে হলো, সত্যিকারের হাসি ইচ্ছা করলেও কৃত্রিম বানানো যায় না। চোখের আশপাশের অরবিকুলারিস অকুলি পেশি কেবল তখনই সঠিকভাবে সংকুচিত হয়, যখন অভ্যন্তরীণ আবেগ তা সৃষ্টি করে। এ জন্য অভিনেতারাও বাস্তব অভিজ্ঞতা মনে করে বা ‘মেথড অ্যাক্টিং’-এর মাধ্যমে সে আবেগকে ডাকতে হয়।
চোখেই লুকিয়ে সত্য
মানুষের মস্তিষ্ক দারুণভাবে পারদর্শী সত্যিকারের আবেগ চিনতে। এমনকি ১০ মাস বয়সী শিশুদের মাঝেও গবেষণায় দেখা গেছে, তারা আসল আর নকল হাসির পার্থক্য বুঝতে পারে।
এই দক্ষতা আমাদের পূর্বপুরুষদের মাঝে টিকে থাকার উপায় ছিল—কে বন্ধু, কে প্রতারক, তা বোঝার জন্য।
মুখাবয়ব পড়তে ও অভিব্যক্তি বিশ্লেষণ করতে ‘ফুসিফর্ম গাইরাস’ ও ‘সুপেরিয়র টেম্পোরাল সালকাস’ নামক মস্তিষ্কের অংশ একসঙ্গে কাজ করে।
সামাজিক হাসির গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জ
নকল হাসি মানেই খারাপ কিছু নয়। বরং এগুলো সমাজে শান্তি বজায় রাখে, সৌজন্য রক্ষা করে, বিবাদ ঠেকায়, সম্মান দেখায়।
তবে দীর্ঘদিন এই ধরনের আবেগবিহীন হাসি ‘পরিধান’ করলে মানসিক চাপ বাড়ে। একে বলা হয় ‘ইমোশনাল লেবার’।
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা চাকরিতে জোর করে হাসতে বাধ্য হন—বিশেষ করে কাস্টমার সার্ভিসে—তাদের মানসিক চাপ, হৃদ্রোগের ঝুঁকি ও অবসাদ বেড়ে যায়।
কৃত্রিম মুখ ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
এখন এআই যুগে কৃত্রিম মুখ তৈরি হচ্ছে—চ্যাটবট, ভার্চুয়াল সহকারী ইত্যাদি। তাদের মুখে হাসি বসানো সহজ, তবে চোখে কৃত্রিম সেই রেখা দেওয়া কঠিন। সে জন্য এখনো মানবদেহের অরবিকুলারিস অকুলিই রয়ে গেছে সত্যিকারের হাসির মানদণ্ড। পরের বার যখন কারও হাসি বিশ্লেষণ করবেন—মুখের দিকে নয়, চোখের দিকে তাকান।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট
‘ইভেন্টউড’ নামে একটি মার্কিন কোম্পানি এমন এক ধরনের কাঠ তৈরি করেছে, যার শক্তি ইস্পাতের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি এবং ওজন ছয় গুণ কম। এই কাঠের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপারউড’। কোম্পানিটি ইতিমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে এই কাঠের উৎপাদন শুরু করেছে।
৬ দিন আগেআন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতিমান রসায়নবিদ ড. ওমর ইয়াঘি রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি দ্বিতীয় মুসলিম বিজ্ঞানী হিসেবে রসায়নে নোবেল জয় করলেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং শুষ্ক অঞ্চল থেকে পানীয় জল সংগ্রহের প্রযুক্তিতে তাঁর যুগান্তকারী গবেষণার জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত।
১২ দিন আগেচলতি বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী—সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমর এম ইয়াঘি। আজ বুধবার সুইডেনের রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস এ পুরস্কারের বিজয়ী হিসেবে তাঁদের নাম ঘোষণা করেছে। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, তাঁরা ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কসের বিকাশ’ ঘটানোর জন্য এ সম্মাননা পাচ্ছেন।
১২ দিন আগেপদার্থবিজ্ঞানের একটি অন্যতম প্রধান প্রশ্ন হলো—কত বড় ব্যবস্থার (system) মধ্যে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার প্রভাব দৃশ্যমান করা সম্ভব? এ বছরের নোবেল বিজয়ীরা একটি বৈদ্যুতিক সার্কিট ব্যবহার করে এমন একটি ব্যবস্থায় কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং ও কোয়ান্টাইজড শক্তির স্তর প্রমাণ করেছেন—যেটির আকার রীতিমতো...
১৩ দিন আগে