Ajker Patrika

ব্যস্ত সড়কে বিশাল গর্ত, পড়ে গিয়ে পথচারী নারীর কান্না

আনিকা জীনাত, ঢাকা
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ২৩: ২১
ব্যস্ত সড়কে বিশাল গর্ত, পড়ে গিয়ে পথচারী নারীর কান্না

রামপুরা ব্রিজের কাছে যে পুলিশ বক্স, সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার কাছাকাছি পৌঁছাতেই হঠাৎ কানে এল একটা চিৎকার। ফিরে তাকাতেই চোখে পড়ল বিশাল এক গর্তের সামনে এক নারী বিলাপ করছেন। পাশে আরও দুজন কাঁদছেন। এগিয়ে যেতেই বোঝা গেল ঘটনা—এক নারী রাস্তায় থাকা এক বিশাল গর্তে পড়ে গেছেন। তিনিও কাঁদছেন, তাঁর সঙ্গে থাকা বাকি তিন আত্মীয়ও কাঁদছেন। ভিড় জমে গেল। 

কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ বক্সের কাছে থাকা বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছুটে এলেন। পথচারী এক ব্যক্তি সাহস করে গর্তে নেমে পড়েন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই নানা কসরত করে ওই নারীকে তুলে আনা হয় গর্ত থেকে। দুরু দুরু বুকে অপেক্ষারত প্রিয়জনদের ফিরে পেয়ে ওই নারী জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করেন। 

ঘটনা এটুকুই। কিন্তু এই একটি ঘটনা অনেকগুলো প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রথমে ঘটনাটির দিকে তাকানো যাক। রামপুরা পুলিশ বক্সের পেছনে একটি বিশাল গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে। কোনো এক প্রয়োজনেই হয়তো এই গর্ত খোঁড়া হয়েছে। কিন্তু তা আর ভরাট করার দিকে কেউ মনোযোগ দেয়নি। প্রয়োজনটি যদি নাও সারে, তবে যে সতর্কবার্তা যেভাবে দেওয়া প্রয়োজন ছিল, তেমনটা দেওয়া নেই। একটা সতর্কবার্তা অবশ্য আছে। কিন্তু রাস্তায় কোনো আলো না থাকায় সেটা পথচলতি মানুষের চোখে পড়া বা তা পাঠ করা সম্ভব নয়। এ সড়কে নিয়মিত যারা যাতায়াত করেন, তাঁদের কাছে এর অবস্থানটি পরিচিত হলেও অনিয়মিতদের জন্য এটি নির্ঘাত এক ফাঁদ। 

ব্যস্ত সড়কে এত বড় গর্ত কোথা থেকে এল, কীভাবে এল, এটি থাকা উচিত হয়েছে কি হয়নি, প্রশাসন ইত্যাদি নানা কথা ভিড়ে থাকা মানুষেরা বলাবলি করছেন। এর মধ্যেই প্রশ্ন মাথায় এল—কয়েক দিনের মাথায় সড়কে দুটি তাজা প্রাণ ঝরে যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা না এই কিছুদিন আগেই রাস্তায় নেমে এসেছিল; আন্দোলন করেছিল। নিরাপদ সড়কের দাবিতে তারা আন্দোলন করেছে। এতে মূলত রাস্তায় বেপরোয়াভাবে চলা যানবাহনের ও সেগুলোর চালকের দিকেই দৃষ্টি ছিল। কিন্তু এই মহানগরের সড়কগুলোয় থাকা গর্তও যে নানা দুর্ঘটনার কারণ, তা আজকের এই ঘটনা দ্বারা আবারও সামনে এল। 

শুধু এখানে নয়, রামপুরা ব্রিজ থেকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার দিকে যে রাস্তা চলে গেছে, তা গত কয়েক মাসে খুঁড়ে ওলটপালট করা হয়েছে। নিশ্চয় কোনো দরকারে কাজটি করা হয়েছে। কিন্তু সেই দরকার মিটে যাওয়ার পরও রাস্তা কিন্তু ফিরে পায়নি পুরোনো চেহারা। রাস্তার প্রায় অর্ধেক অংশ ছোট-বড় গর্তের দখলে, যা এড়িয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই বাস-গাড়িতে একটা প্রতিযোগিতা চলে নিত্য; হয় ছোটখাটো ঠোকাঠুকিও। শুধু এই কেন এই মূল রাস্তা থেকে একটু ভেতরের দিকে ঢুকলেই চোখে পড়বে খোলা ম্যানহোল। তিতাস রোডে অন্তত ২০টি ম্যানহোল রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকেরই ঢাকনা নেই; কবে চুরি হয়েছে, কে জানে। ফলে সেখানেও প্রায়ই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। তবে রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রীর দিকে যাওয়া রাস্তার মতো এতটা ব্যস্ত না হওয়ায় সে দুর্ঘটনার মাত্রা হয়তো কম। 

ঢাকার রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহনগুলোর চালক শুধু নয়, এসব রাস্তার গঠনও অনেক দুর্ঘটনার কারণ। কিন্তু এর দায়টা কে নেবে? আজ যে নারী রামপুরা ব্রিজের কাছে গর্তে পড়ে গেলেন, তিনি গুরুতর আহত হলে, তার দায় কার ওপর বর্তাত? 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত