Ajker Patrika

আর কত জীবন দেবে এ দেশের মানুষ: নজরুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ফাইল ছবি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ফাইল ছবি

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের ছাত্র আন্দোলন ও চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এত জীবন দেওয়ার পরও এখনো কেন অসংগতি নিয়ে আলোচনা হয়— এমন আক্ষেপ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, ‘আর কত জীবন দেবে এ দেশের মানুষ, আর কত লড়াই করবে। মানুষ প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুলে ওঠে, হাইস্কুল থেকে কলেজে যায়, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, আস্তে আস্তে মানুষ উন্নত হয়। আস্তে আস্তে মানুষের পরিবর্তন হয়, ইতিবাচক পরিবর্তন। আর আমরা বারবার যেন সাপ-লুডুর মতো অনেকদূর আগে যাই, আবার সাপে কেটে নিচে চলে আসি, আবার আগানোর চেষ্টা করি, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

আজ শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫ এর সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘যা যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল, সেটা এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি। এই অধ্যাদেশে অতীতে যাঁরা শাস্তি পেয়েছেন, তাঁরা মুক্তি পাবেন। কিন্তু ঘুরেফিরে ওই একই বিধান আরেক জায়গায় রাখা হয়েছে, যাতে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হবে। এর চেয়ে বড় অযৌক্তিক বিষয় আর কী হতে পারে। অধ্যাদেশের বিধানে অস্পষ্টতা আছে।’

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আইনে অস্পষ্টতার সুযোগে যারা আইন প্রয়োগ করে, তারা জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়। আইনে যদি অস্পষ্টতা থাকে এবং জনগণ হয়রানির শিকার হয়, তাহলে সে অস্পষ্টতা দূর করার কর্তব্য যাঁরা আইন করেন তাঁদের।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, আইন করা হয় মানুষের জন্য। কিন্তু মানুষ তা বোঝে কি না, সে প্রশ্ন রয়েছে। এসব আইন মানুষকে জানানোর ও বোঝানোর জন্য রাজনীতিক, দল ও নাগরিক সমাজের প্রতি তিনি অনুরোধ জানান। যাঁরা আইনের অপব্যবহার করে এবং ব্যতয় ঘটিয়ে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়, তাদের শাস্তির বিধান ও জবাবদিহির বিধানও থাকা উচিত। বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড চলে ঐকমত্য কমিশনে। সেখানে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও এই সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে আলোচনা নেই।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের দেশে শ্রম আইনে আছে, প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগ পত্র দিতে হবে কিন্তু আমাদের দেশে যত শ্রমিক আছে তার ২০-২৫ শতাংশ শ্রমিককেও নিয়োগ পত্র পায় না। তাদের গ্রাচুইটি, সুবিধা তার কোনটাই দেওয়া হয় না, যা শ্রম আইনে লেখা আছে। যারা শ্রমিককে কম মজুরি দেয় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি বা অভিযোগ দেওয়ার কোনও মেকানিজম নেই।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। মব ভায়োলেন্সের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে বাড়ি থেকে বের করে যেভাবে মব তৈরি করা হয়েছে, এটা কোন সংস্কৃতি? তিনি অন্যায় করলে তাঁকে বিচারেরে মাধ্যমে শাস্তি দেন।

ফরিদপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদের বাড়িতেও হামলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বাড়ি ভাঙার সংস্কৃতি চললে দেশে গণতন্ত্র আসবে কী করে। থানা ঘেরাও করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই সরকারের ব্যর্থতার সীমা নেই।

নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার সেমিনারে মূল বক্তব্য পাঠ করেন। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশুরুর, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়াসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে হার্ডিঞ্জের পাশে রেলসেতু

স্বরূপকাঠিতে বিএনপি সভাপতিকে ‘আ.লীগের দোসর’ বললেন পরাজিত প্রার্থী

১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, ভারতীয় নিরব মোদির বেলজিয়ান ভাই যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার

সালিস না মেনে মামলা, ক্ষিপ্ত মেম্বার-চেয়ারম্যানরা হত্যা করেন মা ও ছেলে-মেয়েকে: র‍্যাব

বরযাত্রীদের বিলাসবহুল গাড়ি উঠে গেল কলেজের দেয়ালে, বরসহ নিহত ৮

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত