Ajker Patrika

ইসিকে জবাবদিহির আওতায় আনতে আইনের সংশোধনের দাবি জামায়াতের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ইসিকে জবাবদিহির আওতায় আনতে আইনের সংশোধনের দাবি জামায়াতের

নির্বাচন কমিশনারদের অবসরের পরও জবাবদিহির আওতায় আনতে বিদ্যমান আইনে সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, দেশের বিদ্যমান আইনে অনিয়মের অবসরে যাওয়া নির্বাচন কমিশনারদের শাস্তির তেমন বিধান নেই। এ জন্য আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ রোববার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের দুপুরের বিরতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

সংলাপে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা করেছেন জানিয়ে তাহের বলেন, ‘গত ১৫ বছর বা তার আগে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে দায়িত্বপালন করেননি বা করতে পারেননি। প্রধান কারণ হচ্ছে বিদ্যমান আইনে নির্বাচন কমিশনারদের ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং তাদের ভুলভ্রান্তির জন্য খুব বেশি শাস্তির বিধান আমাদের দেশে নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি নির্বাচন কমিশনারেদের চাকরিকালীন সময়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তাদের ওপরে শাস্তি নিশ্চিত করতে পারে এবং সেখানে তারা তদন্ত করতে পারে। আমরা বলছি যখন তাদের চাকরি চলে যাবে মেয়াদ শেষ হবে, তখন কোনো আইনের আওতার তারা থাকে না। আমরা প্রস্তাব করছি তাদের জন্য একটি আইনের সংশোধন করে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন থেকে অবসরের পরেও তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় আইনের সংশোধন করা দরকার।’ বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একমত বলে দাবি করেন তাহের।

জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) প্রস্তাবে জামায়াত নীতিগতভাবে একমত। তবে কমিশনের প্রস্তাবে দলটি কিছু সংশোধন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তাহের। তিনি বলেন, ‘মূলত রাষ্ট্র প্রধান এবং প্রধান বিচারপতিকে এনসিসিতে রাখার প্রস্তাব করেছিল। আমরা বলেছি তাদের এখান থেকে দূরে রাখতে হবে। কারণ কোনো ক্রাইসিস হলে তার সমাধানের জন্য মানুষ যাবে কোথায়? তারা হয়তো প্রধান বিচারপতি অথবা রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। এ জন্য তাদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য বলেছি।’

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনেকটাই দুর্নীতিগ্রস্ত দাবি করে তাহের বলেন, ‘আমরা মৌলিকভাবে একটা কথা বলেছি যে দুর্নীতি দমন কমিশন নামে আমাদের যে সংস্থা আছে এটাই অনেক সময় দুর্নীতিগ্রস্ত। এটা সকল মানুষের কাছে অনেকটাই এভাবে চিহ্নিত, যে সেখানেই অনেক বেশি দুর্নীতি। আমরা দুদকের আওতাধীন একটি ওয়াচডগের একটি কাউন্সিল করার প্রস্তাব দিয়েছি। সেখানে একটি টাস্কফোর্স থাকবে, সেটা দুর্নীতিগুলোর ওপর তদন্ত করবে, চিহ্নিত করবে এবং তারা জড়িতদের প্রাথমিকভাবে শাস্তির আওতায় আনতে পারবে। যেমন—চাকরিজীবী হলে তাকে সাসপেন্ড করা, শোকজের আওতায় আনা ইত্যাদি।’

ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হলে দেশের স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ রোধ করা যাবে মন্তব্য করে তাহের বলেন, একজনের হাতে যেন সব ক্ষমতা কুক্ষিগত না হয়। সে জন্য একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী বা দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না। এ রকম উদাহরণ পৃথিবীর বহু দেশে রয়েছে। প্রতিবেশী ভারতে এটা বারবারই প্র্যাকটিস হয়। সোনিয়া গান্ধী যখন কংগ্রেসের সভাপতি তখন মনমোহন সিং ছিল প্রধানমন্ত্রী। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দলীয় প্রধান নন। আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান দলের প্রধান না। সারা দুনিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য আছে।

একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না এমন প্রস্তাবের বিষয়ে তাহের বলেন, অর্থাৎ ১০ বছরের বেশি কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত