একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই মানুষ তাঁদের পতন চায়: জামায়াত নেতা মাসুদ

বিএনপিকে ইঙ্গিত করে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ‘একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই মানুষ তাঁদের পতন চায়।’ পুরান ঢাকায় এক ব্যবসায়ীকে মাথা থেঁতলে হত্যার প্রতিবাদে আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা দক্ষিণ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা যেখানে সারা বিশ্বে মানুষ সরকারের পতন চায়, সেখানে বাংলাদেশে মানুষ একটা দল ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই তাদের পতন চায়। তাদের হাত থেকে মুক্তি চায়।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এটি কতটা নির্লজ্জতা, সেটি বলে শেষ করা যায় না। আমাদের দেশের মানুষ এখন একটা দল ক্ষমতায় আসতে পারে এ আতঙ্কে তাদের বিরুদ্ধে পতনের আন্দোলন শুরু করেছে।’

মাসুদ অভিযোগ করে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে একটি দল নির্বাচন নির্বাচন জিকির তুলে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। তাঁরা নির্বাচনের পাঁয়তারা অংশ হিসেবে এই অন্যায় অপকর্মগুলো শুরু করেছে।’

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষ নিশ্চিত হতে চেয়েছে, সন্ত্রাসীদের হাতে আর কাউকে জীবন দিতে হবে না, কাউকে চাঁদা দিতে হবে না। কিন্তু দেখা গেছে আওয়ামী লীগের মতই আরেকদল সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, ‘নিজেরাই নিজেদের দলীয় নেতা-কর্মীদের নৃশংসভাবে খুন করছে। তারা প্রতিদিন নির্বাচন চাইলেও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না। কারণ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ধর্ষক, খুনি তাদেরই পালিত। জামায়াতে ইসলামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, খুনি, ধর্ষক, লুটেরা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের প্রতিহত করবে।’

সভাপতির বক্তব্যে দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘দ্রুত নির্বাচন না দিলে দেশের অবস্থা আরও খারাপ হবে বলে তারা ঘোষণা দিয়ে এসব সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ধর্ষণ, খুনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আসছে। তাঁরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে, ধর্ষকের বিরুদ্ধে, খুনির বিরুদ্ধে কথা বলছে না; বরং পক্ষ নিচ্ছে।’

তামাশা করতে সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়নি উল্লেখ করে সরকারের উদ্দেশ্যে বুলবুল বলেন, ‘জনগণের জানমাল, ইজ্জত রক্ষা করতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। জাতির সঙ্গে তামাশা করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়নি। সরকারকে মনে রাখতে হবে তাঁরা ক্ষমতায় বসেনি, তাদেরকে জনগণ ক্ষমতায় বসিয়েছে।’

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইট থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে শাহবাগ গিয়ে শেষ হয়।