Ajker Patrika

ছাত্র ইউনিয়নের ৪২তম সম্মেলন

‘গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বৈষম্যহীন সমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
তিন দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন থেকে বর্ণিল শোভাযাত্রা বের করা হয়। ছবি: ফেসবুক
তিন দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন থেকে বর্ণিল শোভাযাত্রা বের করা হয়। ছবি: ফেসবুক

লড়াই, সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৪২তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা শামসি আরা জামান।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে তিন দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়। সমাবেশে শেষে একটি বর্ণিল শোভাযাত্রা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে জিমনেশিয়ামে গিয়ে শেষ হয়। তাঁরা জানিয়েছেন, টিএসসি অডিটরিয়ামে আগামী দুই দিন জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

উদ্বোধন ঘোষণা শেষে শামসি আরা জামান বলেন, সন্তান হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার টালবাহানা করলে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে স্বজনহারা মানুষ আবারও রাজপথে নামবে। বৈষম্য বিলোপের স্লোগান মুখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন থেকে হাজার হাজার মানুষ নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছে, কিন্তু সেই স্বপ্ন ক্রমেই অধরা হয়ে উঠছে। গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে এখন একধরনের ব্যবসা শুরু হয়েছে, অসংখ্য নির্দোষ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি নিশ্চিতভাবেই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের আহ্বায়ক তামজীদ হায়দার চঞ্চল বলেন, জুলাইয়ে শুরু হওয়া সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী ও ধর্মকে স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারকারীদের কাছে সরকার একরকম আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলের আজ্ঞাবহতা বর্জন করে সরকারকে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথে ফিরে আসতে বাধ্য করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়। ছবি: ফেসবুক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়। ছবি: ফেসবুক

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন,‘ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটাতে সক্ষম হলেও ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এখনো সম্ভব হয়নি। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিতে টালবাহানা, সব শহীদ পরিবারে সহায়তা পৌঁছাতে না পারা, শ্রমিকদের ওপর নির্বিচার গুলি চালানো, ছাত্র আন্দোলনে ন্যক্কারজনক পুলিশি হামলা অব্যাহত রাখাসহ নানা ঘটনা আমরা লক্ষ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এসব ঘটনায় সরকারের ভূমিকা ও নিষ্ক্রিয়তা নিশ্চিতভাবেই শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। হাসিনার পতনের বছরপূর্তি হওয়ার আগেই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন থেকে দূরে সরে যাওয়ার ঘটনা আমাদের পুনর্বার রাজপথে নামার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি এতে সঞ্চালনা করেন। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, শামসুল আলম সজ্জন ও বাকী বিল্লাহ; সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর আলম, রাকসুর সাবেক ভিপি রাগীব আহসান মুন্না প্রমুখ। এ ছাড়া সম্মেলনে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ হরিজন ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

২৬ এপ্রিল বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে সংগঠনের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত