Ajker Patrika

সরকারের পদক্ষেপের অপেক্ষায় দলগুলো

  • দুই দিন ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক।
  • বিএনপির দাবি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন।
  • জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াতসহ বাকি দলগুলো।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ মে ২০২৫, ০৮: ২০
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দুই দিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর অংশ হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। গতকাল যমুনায়। ছবি: প্রেস উইং
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দুই দিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর অংশ হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। গতকাল যমুনায়। ছবি: প্রেস উইং

দায়িত্ব পালনে নানা দিক থেকে বাধা আসায় বিরক্ত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন—এমন কথা চাউর হওয়ার পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ নড়াচড়া শুরু হয়েছে। গত শনিবার থেকে একের পর এক রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। তাঁদের প্রায় সবাই প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে অনুরোধ করেছেন। সেই সঙ্গে জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট একটি রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এখন সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, সে দিকে দৃষ্টি সবার।

বিরাজমান অস্থিরতার মধ্যে গত শনিবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন তিনি। এসব বৈঠক থেকে সরকারপ্রধানের কাছে নিজেদের বক্তব্য উত্থাপন করেছে দলগুলো। বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করেছে বিএনপি। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলের নেতাদের বৈঠকের পর গতকাল রোববার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে।

জামায়াতে ইসলামী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে সরকারের প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন চেয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখসহ রোডম্যাপ চেয়েছে দলটি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শনিবারের বৈঠক শেষে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দিলেই সব অনিশ্চয়তা কেটে যাবে। আমরা দুটি বিষয় স্পষ্ট করার কথা বলেছি।

এক. নির্বাচনটা কখন হবে? আর আপনি যে নির্বাচনের সময় দিয়েছেন, তার মধ্যে জনগণের কোনো ভোগান্তি না হয়ে একটা কমফোর্টেবল টাইমে নির্বাচনটা হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। দুই. আমরা বলেছি, নির্বাচনের আগে সংস্কার এবং বিচারের দৃশ্যমানপ্রক্রিয়া যাতে জনগণ দেখতে পারে।’

অন্য দিকে এনসিপির পক্ষ থেকে বরাবরের মতো নির্বাচনের চেয়ে সংস্কার ও জুলাই গণহত্যার বিচারের দিকে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টা যে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, সেই দায়িত্ব সম্পন্ন করেই যেন তিনি যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে তাঁকে অনুরোধ করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল রোববার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি), নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি, বাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এসব দলের পক্ষ থেকেও বৈঠকে সরকারকে তার কর্মপরিকল্পনা বিশেষ করে সংস্কার ও নির্বাচন বিষয়ে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চাওয়া হয় বলে জানা গেছে।

এদিকে অস্থির পরিস্থিতিকে শান্ত করতে নির্বাচন ও সংস্কার বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করার তাগিদ এলেও এ বিষয়ে সহসাই সিদ্ধান্ত নেওয়া সরকারের জন্য কঠিন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও নিবিড় আলোচনার দরকার বলে মনে করছেন তাঁরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার যদি ডিসেম্বরকে ধরে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে, সেটা একটা পক্ষের দিকে যাবে। আবার সংস্কার ও বিচারে গুরুত্ব দিয়ে যদি নির্বাচন নিয়ে বিলম্বের কথা বলে, সে ক্ষেত্রে সরকার অন্যপক্ষের বিরাগভাজন হবে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সহজ করতে সরকারের সঙ্গে দলগুলোর আরও নিবিড় আলোচনা হওয়া দরকার বলে মনে করছেন সাব্বির আহমেদ। ওই আলোচনার মধ্য দিয়ে সবাইকে একটা জায়গায় এনে এরপর সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৫৮
শনিবার সকাল ১০টার পর ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শনিবার সকাল ১০টার পর ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ শনিবার সকাল ১০টার পরে জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিদলে রয়েছেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার উপস্থিত আছেন।

১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই সনদে আইনি ভিত্তির নিশ্চয়তা না পেয়ে ওই দিন স্বাক্ষর করেনি এনসিপি। দলটিকে সনদে স্বাক্ষর করাতে সরকার ও কমিশন কয়েক দফা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেও সমাধান হয়নি। এর মধ্যে আজ কমিশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেছে এনসিপি।

এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নির্ধারণে কমিশন কয়েক দফা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আজই সরকারকে সনদ বাস্তবায়নের চূড়ান্ত রূপরেখা-সংবলিত সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজ এনসিপির সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৩১
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধিদল। আজ শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিনিধিদলে থাকবেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।

সাক্ষাৎকালে এনসিপির প্রতিনিধিদল জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আদেশ, আইনি ভিত্তিসহ সনদের নানা বিষয়ে আলোচনা করবে বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে আস্থা-সংশয়ের দোলাচলে বিএনপি

  • প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতিতে এখনো আস্থা আছে।
  • তবে কথা ও কাজে কিছু গরমিল দেখছে বিএনপি।
  • সরকারের দিক থেকে বারবার বলায় বাড়ছে সন্দেহ।
রেজা করিম, ঢাকা 
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ২৭
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে আস্থা-সংশয়ের দোলাচলে বিএনপি

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনো আস্থায় রেখেছে বিএনপি। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঘোষিত সময়ের মধ্যেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবেন বলে বিশ্বাস করেন দলটির নেতারা। তবে এর মধ্যেও কিছু ঘটনা, কয়েকটি রাজনৈতিক দলের তৎপরতা ও হঠাৎ করে নির্বাচন নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের সরব ভূমিকায় সন্দেহ দেখা দিয়েছে তাদের মনে।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন যাতে না হয়, সে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে—বিএনপির তরফ থেকে এই অভিযোগ আসছে বারবার। গত বৃহস্পতিবারও রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল চেষ্টা করছে নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, নির্বাচন যেন সঠিক সময়ে না হয়।

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত সময়ের মধ্যে সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চায়—এ বিষয়ে সরকারের ওপর বিএনপির আস্থা আছে। কিন্তু অনেক দলই নির্বাচন পেছানোর জন্য চেষ্টা করছে, নানা রকম কলাকৌশল অবলম্বন করছে বলে বিএনপির কাছে মনে হচ্ছে। ওই সব দলের এ চেষ্টায় একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তখন সরকার বাধ্য হবে নির্বাচন পেছাতে। এ বিষয়টিই বিএনপির চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকারের ওপর আস্থা রাখলেও নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে যে খানিকটা ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে, সেটাই বললেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারের ওপর এখনো আমাদের আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে এবং সমর্থনও আছে। নির্বাচন পেছাবে, এখনই আমরা এটা মনে করি না। তবে কিছু মহল কিছু ঘটনা সামনে নিয়ে আসছে, যেগুলো এখন সামনে আসার কথা নয়। স্বাভাবিক কারণে একধরনের ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।’

বিএনপি যখন বারবার নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র দেখছে, তখন ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জোরালো অবস্থান জানান দিচ্ছেন সরকারের দায়িত্বশীল লোকেরা। তাঁরাও বারবার জোর দিয়েই বলে চলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। এমন কোনো শক্তি নেই, এটি প্রতিহত করবে।

গতকাল শুক্রবার মাগুরায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে সব দল ঐকমত্য পোষণ করেছে। নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর কোনো চাপ নেই। জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবার।’

সরকারের দিক থেকে বারবার জোর দিয়ে একই কথা বলাতেও আবার খটকা লাগছে বিএনপির নেতাদের মনে। তাঁরা বলছেন, প্রশাসনে এখনো একটি বিশেষ দলের লোকেরা জায়গা করে নিয়ে আছে, সরকারের মধ্যে সন্দেহভাজন উপদেষ্টা আছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন নিয়েও বিএনপির কিছু সুপারিশ আছে। এসব নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু সরকারের দিক থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। কেবল মাঠপর্যায়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুতির কিছু কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। কাজেই নির্বাচন নিয়ে সরকারের লোকজনদের বক্তৃতায় আর কাজে কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচন বিলম্বে সরকারের ভেতরেই ইন্ধন রয়েছে কি না, সেটাও একটা সন্দেহের বিষয়।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘সরকারের দিক থেকে বেশি বেশি বলায় মনে হচ্ছে, হঠাৎ করে এত গতি বেড়ে গেল কেন!’ নির্বাচন বিলম্বের আশঙ্কার কথা জানিয়ে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। সরকারের ভেতর থেকেও সেটায় ইন্ধন আছে। এ রকম ইঙ্গিত আমরা তো পাচ্ছি।’

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। ২০২৫-এর ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে একপর্যায়ে কঠোর অবস্থান নেয় তারা। বিএনপির এই দাবির বিপরীতে ২০২৬-এর জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি আসে সরকারের দিক থেকে। এরপর গত জুনে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পর ২০২৬-এর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা আসে।

জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান গতকাল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে বাংলাদেশে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কাজেই আমরাও প্রত্যাশা করি, সঠিক সময়ে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন হবে। আমরা আস্থা রাখছি এবং বিশ্বাস করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এনসিপির সঙ্গে যোগাযোগ আছে, তবে জোট গঠন নিয়ে আগেই বলা যাচ্ছে না: সালাহউদ্দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সালাহউদ্দিন আহমদ। ফাইল ছবি
সালাহউদ্দিন আহমদ। ফাইল ছবি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট গঠনে আলাপ-আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ আছে বলেও জানান তিনি।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে তাঁর নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট গঠনে আলাপ-আলোচনা চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত জোট কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটা দেখার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দলটির সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ আছে। তবে জোটবদ্ধ হব কি হব না, তারা হবে কি হবে না—রাজনীতির মাঠে কোনো কিছুই আগে থেকে বলে দেওয়া যায় না।’

জাতীয় সরকার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের প্রতিশ্রুতি আছে, যাতে করে আমরা যুগপৎ সঙ্গী এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিয়ে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন এবং সরকার গঠন করতে পারি। সেটাই হচ্ছে ঐকমত্যের জাতীয় সরকার। সাধারণ জাতীয় সরকার বলতে যেটা বোঝায় সেটা নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত