Ajker Patrika

বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে, সংসদে শেখ সেলিম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২: ০৩
বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে, সংসদে শেখ সেলিম

বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে দল দুটির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেছেন, `এরা রাষ্ট্রের শত্রু, স্বাধীনতার শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু। সন্ত্রাসী, জঙ্গি, স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করছি।' 

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি তুলে ধরেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এ দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে আপনিই এটা পারবেন। বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতাবিরোধীদের নিষিদ্ধ করলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে।’

বাংলাদেশ ও দেশের স্বাধীনতাকে বাঁচাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যাতে রাজনীতি করতে না পারে, সে জন্য এ দাবি করছি। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। এরা যেন রাজনীতির নামে বাংলাদেশে খুন, সন্ত্রাস ও অরাজকতা করতে না পারে। আর যাকেই ধরতে পারবেন, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোনো দয়া-মায়া দেখানোর সুযোগ নেই।’ 

শেখ সেলিম বলেন, ‘বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এরা জঙ্গি, সন্ত্রাসী, স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী। তাদের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তারা সংবিধানকে তোয়াক্কা করে না। যারা সংবিধান নির্বাচন মানে না, তারা আবার কী রাজনীতি করবে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যকারীদের সন্ধানে কমিশন গঠনের প্রস্তাব করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘কারা এর পেছনে জড়িত ছিল, তা বেরিয়ে আসবে। যারা বঙ্গবন্ধুকে মারতে পারে, তারা যেকোনো ঘটনা ঘটাতে পারে।’ গত একাদশ জাতীয় সংসদেও এ দাবি করেছিলেন শেখ সেলিম।

দেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, `বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান লন্ডনে বসে বিশ্বের বড় সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করে—কীভাবে বাংলাদেশে অস্থিরতা বৃদ্ধি করা যায়, উন্নয়নের অব্যাহত ধারা বন্ধ করা যায় সেই ষড়যন্ত্র করছে।' 

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে শেখ সেলিম বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন অর্থনৈতিক মুক্তির পথে অগ্রসর হন, তখন অতি বিপ্লবী, প্রতিবিপ্লবী, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা জড়িত ছিল। উগ্রপন্থী সিরাজ সিকদার, সর্বহারা হকিত্বোহা, পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি, লাল পতাকা বাহিনীর থানা লুট, ব্যাংক লুট, পাটের গুদামে আগুন, মানুষ হত্যা। সাতজন সংসদ সদস্যকেও হত্যা করা হয়। কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে গণবাহিনী ও জাসদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে সশস্ত্র আক্রমণ করে। কর্নেল ওসমানী গণতন্ত্র বলে বুক ফাটিয়ে ফেলত, সে খুনি মোশতাকের সামরিক উপদেষ্টা হয়।’ 

শেখ সেলিম বলেন, গণবাহিনীর প্রধান কর্নেল তাহের বাহিনী রেডিও স্টেশনে গিয়ে খুনিদের সমর্থন জানায়। গণবাহিনী-জাসদ এরা যে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলে বঙ্গবন্ধুকে বিব্রত করার চেষ্টা করেছিল, বঙ্গবন্ধুর চারপাশে যে শক্তিগুলো ছিল সেখান থেকে ষড়যন্ত্র না হলে বঙ্গবন্ধুর গায়ে কেউ হাত দিতে পারত না। বড় একটা চক্র বঙ্গবন্ধুর আশপাশে ঘুরে তাঁকে বিভ্রান্ত করেছে। কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী এখনো আইনের শাসন, মানবাধিকারের কথা বলে টেলিভিশনের পর্দা ফাটিয়ে দেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই সব বুদ্ধিজীবীরা সেদিন কোথায় ছিলেন?’ 

শেখ সেলিম আরও বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধের জন্য বিএনপি-জামায়াত একের পর এক নাশকতা শুরু করে। লন্ডনে বসে তারেক জিয়া অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে জনগণ এর জবাব দিয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে তাঁরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত