Ajker Patrika

ডায়রিয়ার প্রকোপ

সম্পাদকীয়
ডায়রিয়ার প্রকোপ

পাবনার ঈশ্বরদী ও নাটোরের লালপুর এলাকা দুটি লাগোয়া। এই দুই এলাকার দুটি হাসপাতালে দিন দিন ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ কেন ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে, তা এখনো অজানা। তবে ব্যাপারটি দুশ্চিন্তার বটে। এ নিয়ে ২ জুন আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে ৭-এর পাতায়।

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৯ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত ঈশ্বরদী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩৪ জন রোগী। তাঁদের বেশির ভাগই ঈশ্বরদী ইপিজেড কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী। এই হাসপাতাল রোগীর চাপ সামলাতে পারছে না বিধায় পাশের জেলার লালপুরে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া ও বমির উপসর্গ নিয়ে ১ জুন বিকেল পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন শতাধিক রোগী।

যেহেতু রোগীদের বেশির ভাগই রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা ইপিজেডের, তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই এলাকার পানি পান করে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টিম ইপিজেডের ভেতরে কেন্দ্রীয় পানি শোধনাগার ও দুটি কারখানায় পানির প্ল্যান্ট পরিদর্শন করে সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করেছে এবং তা ঢাকায় বিশেষজ্ঞ টিমের কাছে পাঠিয়েছে পরীক্ষার জন্য। পরীক্ষার ফলাফল পেলেই জানা যাবে এই এলাকার পানিতে মানবদেহ ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো পদার্থ রয়েছে কি না। তখন নেওয়া যাবে যথাযথ পদক্ষেপ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে অবহেলা করবে না, এই প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ডায়রিয়া কোনো রোগ নয়, বরং রোগের উপসর্গ। সাধারণত অস্বাস্থ্যকর দূষিত খাদ্য গ্রহণ বা পানি পান করলে জীবাণুর সংক্রমণে ডায়রিয়া হয়। ঈশ্বরদী ইপিজেড এলাকার শত শত মানুষের ডায়রিয়া কেন হচ্ছে তা জানা গেলে এই পীড়ার প্রকোপ কমানো সম্ভব হবে।

ঈশ্বরদী কিংবা লালপুরে আপাতত ডায়রিয়া পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে। তবে আরেকটি শঙ্কা—সারা দেশে কয়েক দিনের টানা বর্ষণ এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে কিছু এলাকায় বন্যার উপদ্রব দেখা দিতে পারে। আর তখন পেটের পীড়ায় ভুগতে পারেন অনেকেই। বন্যার সময় ডায়রিয়ার আক্রমণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। তাই এখনই সব ধরনের পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে ফেলা উত্তম।

কারা নেবেন পূর্বপ্রস্তুতি? উত্তর আছে একই দিনের পত্রিকায়, শেষের পাতায়—বন্যার ঝুঁকিতে আছে পুরো সিলেট বিভাগ। এ ছাড়া, পানি বাড়ছে তিন পার্বত্য জেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা ও লালমনিরহাটেও। শুধু বন্যাই নয়, ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও।

এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগকে আমরা ঠেকাতে পারি না। কিন্তু আমরা নিরাপদে থাকার সার্বিক প্রস্তুতি নিশ্চয়ই নিতে পারি। এই সময়টায় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকাটা যেমন জরুরি, তেমনি ডায়রিয়ার মতো উপসর্গগুলো যেন আক্রমণ না করে, সেই প্রস্তুতি নেওয়াটাও জরুরি। জনসাধারণকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে সরকারি পদক্ষেপগুলোই সেরা।

আসন্ন কোরবানির ঈদে অসুখ ব্যাপারটা কিন্তু একেবারেই অপ্রত্যাশিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পশ্চিমবঙ্গে আটক দুই আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তা, পরে মুক্তি

সভা শেষে সরকারি গাড়িতেই গরু নিয়ে গেলেন ইউএনও

যশোরে বিএনপি ও যুবদল নেতার বাড়িতে কাফনের কাপড়, দা, চিরকুট পাঠিয়ে হুমকি

১২ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা

নিউজিল্যান্ডের সংসদে হাকা, দুনিয়া কাঁপানো সেই সাংসদেরা বরখাস্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত