সম্পাদকীয়
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিঃসন্দেহে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে এই সাক্ষাৎ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপের একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি ছিল ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। এ ধরনের বৈঠক শুধু কুশল বিনিময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না—এগুলো প্রায়ই বৃহত্তর কূটনৈতিক ব্যবস্থার পূর্বাভাস হয়ে ওঠে।
ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে সংযুক্ত। কিন্তু সেই সম্পর্ককে প্রাণবন্ত ও কার্যকর রাখতে হলে কেবল অতীত স্মৃতি নয়, বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের দিকেও সজাগ থাকতে হয়। এমন এক সময়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো, যখন দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সংহতি ও সহযোগিতা নতুনভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। সার্ক কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে, ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে কার্যকারিতা হারিয়েছে। এর প্রেক্ষাপটে বিমসটেক হয়ে উঠছে বিকল্প আঞ্চলিক কাঠামো, যা বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও সংযোগে জোর দিচ্ছে। মোদির নেতৃত্বে ভারত এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে চায়। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক তাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তরে অবস্থান করছে।
এই পটভূমিতে ড. ইউনূস ও মোদির বৈঠক কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তা বহন করে। বার্তাটি হলো—বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে আগ্রহী নতুন প্রশাসন এবং ভারতও সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে সদিচ্ছা দেখাতে প্রস্তুত। তবে সম্পর্ক টিকে থাকুক বলেই তা যেন একতরফা না হয়। ভারত যেমন বাংলাদেশের ভৌগোলিক সংযোগের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রবেশাধিকার চায়, তেমনি বাংলাদেশও চায় সীমান্ত হত্যা বন্ধ হোক, অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন হোক ন্যায়সংগতভাবে এবং বাণিজ্যে ভারসাম্য আসুক। এইসব বিষয় দ্বিপক্ষীয় আস্থার ভিত্তি নির্মাণে জরুরি।
এ ছাড়া ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং মোদির প্রভাবশালী নেতৃত্ব—এই দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। তবে সম্পর্ক ব্যক্তিনির্ভর না হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক হোক—এটাই হবে টেকসই কূটনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি। দুই দেশের জনগণের স্বার্থ যেন সর্বাগ্রে বিবেচিত হয়, সম্পর্ক যেন কেবল নিরাপত্তা বা বাণিজ্য নয়, বরং শিক্ষার আদান-প্রদান, সাংস্কৃতিক বিনিময়, প্রযুক্তিগত সহযোগিতার দিকেও প্রসারিত হয়।
ইউনূস-মোদি এই বৈঠক সেই বৃহত্তর কাঠামোর একটি সূচনা হতে পারে। তবে কেবল ছবি তুলে কূটনৈতিক সৌজন্য প্রকাশ করে থেমে থাকলে হবে না। কার্যকর ও দায়বদ্ধ সম্পর্ক গড়তে হলে উভয় দেশকেই সাহসিকতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যদি আস্থা ও পারস্পরিক সম্মান বজায় রেখে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা দেখানো হয়, তাহলে ভারতের পক্ষ থেকেও অবশ্যই তা একই রকম আন্তরিক হওয়া উচিত।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিঃসন্দেহে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে এই সাক্ষাৎ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপের একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি ছিল ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। এ ধরনের বৈঠক শুধু কুশল বিনিময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না—এগুলো প্রায়ই বৃহত্তর কূটনৈতিক ব্যবস্থার পূর্বাভাস হয়ে ওঠে।
ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে সংযুক্ত। কিন্তু সেই সম্পর্ককে প্রাণবন্ত ও কার্যকর রাখতে হলে কেবল অতীত স্মৃতি নয়, বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের দিকেও সজাগ থাকতে হয়। এমন এক সময়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো, যখন দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সংহতি ও সহযোগিতা নতুনভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। সার্ক কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে, ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে কার্যকারিতা হারিয়েছে। এর প্রেক্ষাপটে বিমসটেক হয়ে উঠছে বিকল্প আঞ্চলিক কাঠামো, যা বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও সংযোগে জোর দিচ্ছে। মোদির নেতৃত্বে ভারত এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে চায়। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক তাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তরে অবস্থান করছে।
এই পটভূমিতে ড. ইউনূস ও মোদির বৈঠক কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তা বহন করে। বার্তাটি হলো—বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে আগ্রহী নতুন প্রশাসন এবং ভারতও সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে সদিচ্ছা দেখাতে প্রস্তুত। তবে সম্পর্ক টিকে থাকুক বলেই তা যেন একতরফা না হয়। ভারত যেমন বাংলাদেশের ভৌগোলিক সংযোগের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রবেশাধিকার চায়, তেমনি বাংলাদেশও চায় সীমান্ত হত্যা বন্ধ হোক, অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন হোক ন্যায়সংগতভাবে এবং বাণিজ্যে ভারসাম্য আসুক। এইসব বিষয় দ্বিপক্ষীয় আস্থার ভিত্তি নির্মাণে জরুরি।
এ ছাড়া ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং মোদির প্রভাবশালী নেতৃত্ব—এই দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। তবে সম্পর্ক ব্যক্তিনির্ভর না হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক হোক—এটাই হবে টেকসই কূটনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি। দুই দেশের জনগণের স্বার্থ যেন সর্বাগ্রে বিবেচিত হয়, সম্পর্ক যেন কেবল নিরাপত্তা বা বাণিজ্য নয়, বরং শিক্ষার আদান-প্রদান, সাংস্কৃতিক বিনিময়, প্রযুক্তিগত সহযোগিতার দিকেও প্রসারিত হয়।
ইউনূস-মোদি এই বৈঠক সেই বৃহত্তর কাঠামোর একটি সূচনা হতে পারে। তবে কেবল ছবি তুলে কূটনৈতিক সৌজন্য প্রকাশ করে থেমে থাকলে হবে না। কার্যকর ও দায়বদ্ধ সম্পর্ক গড়তে হলে উভয় দেশকেই সাহসিকতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যদি আস্থা ও পারস্পরিক সম্মান বজায় রেখে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা দেখানো হয়, তাহলে ভারতের পক্ষ থেকেও অবশ্যই তা একই রকম আন্তরিক হওয়া উচিত।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে একটি অভ্যুত্থানোত্তর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র একধরনের অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও বৈষম্যের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আশা করা হয়েছিল, অরাজনৈতিক সরকারের বাজেটে
২ ঘণ্টা আগেসংবাদপত্রের পাতায় প্রকাশিত কোনো কোনো শিরোনাম ও সংবাদ বিশেষ আগ্রহ নিয়ে পড়তে চান পাঠক। আজকের পত্রিকায় ৩১ মে প্রকাশিত প্রধান শিরোনাম, ‘৬ মাসের টানাটানিতে ভোট’ শীর্ষক সংবাদটি সম্পর্কে আমাকে একজন সম্পাদক ফোন করে প্রশংসা করলেন। আমি বুঝতে পারলাম শিরোনামটি যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভোট নিয়ে জনগণের আগ
১ দিন আগেঈদ—এই শব্দটির সঙ্গে অগণিত মানুষের হৃদয়ে যে অনুভব জাগে, তা আনন্দ, উৎসব আর মিলনের। ঘরে ঘরে নতুন জামা, সুস্বাদু খাবার, কোলাকুলি আর রঙিন খুশির চিত্র যেন ঈদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে সেই পরিচিত দৃশ্যের বাইরে যে একটা বড় প্রশ্ন থেকে যায়, তা হলো—ঈদ কি সবার জন্য একরকম? ঈদের দিন কি সকলের মুখেই সমান হাসি? ঈদের আনন
১ দিন আগে১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঈদ এসেছিল। সেই ঈদের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একটা বিশেষ নাটক লিখেছিলাম। যুদ্ধরত শিল্পীদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়ে নাটকটি প্রচারিত হয়েছিল ঈদের আগের দিন। নাটকটির নাম ছিল ‘চান্দের তলোয়ার’। ঈদের চাঁদ সাধারণত আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। খুশির এই ঈদের বড় প্রতীক হলো চাঁদ।
১ দিন আগে