Ajker Patrika

ব্যাটারির ক্ষমতা!

সম্পাদকীয়
ব্যাটারির ক্ষমতা!

একটি ব্যাটারির ক্ষমতা সম্পর্কে সবারই কম-বেশি ধারণা আছে। ব্যাটারিতে টর্চ জ্বলে, ব্যাটারিতে জেনারেটর চলে, আবার চলে রিকশাও। ইদানীং আবার দেখা যাচ্ছে এই ব্যাটারির ক্ষমতায় রিকশাচালকেরাও দাপটে চলছেন! পাঠক, আপনি যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকেন তাহলে এর নমুনা দেখতে পাবেন ছবি ও ভিডিওর কল্যাণে। এই যেমন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা বিক্ষোভের নামে যে কারও ওপর হামলা করছেন। তাঁদের হামলা থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না সাংবাদিক কিংবা মোটরবাইকের চালকেরাও। আজকের পত্রিকায় এ নিয়ে খবর ছাপা হয়েছে ২২ এপ্রিল।

চুরি, ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাজনিত কারণে রাজধানীর গুলশান ও বনানীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পর থেকে কয়েক দিন ধরেই ওইসব এলাকায় এই যানের ক্ষুব্ধ চালকেরা বিক্ষোভ করছেন। কিন্তু তাঁদের বিক্ষোভের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে সব বাধা, রীতিমতো তাণ্ডব করছেন তাঁরা—এ বুঝি তাঁদের রিকশার ব্যাটারিরই ক্ষমতার কামাল! ২১ এপ্রিল বনানীর ১১ নম্বর সড়কের মাথায় সেতুসংলগ্ন এলাকা অবরোধ করেন তাঁরা। বন্ধ হয় যান চলাচল। এ সময় বেশ কয়েকজনকে তাঁরা অকারণে মারধর করেন। যাঁরা রিকশাচালকদের বিক্ষোভ ও মারধরের ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে আসেন, তাঁদেরও লাঠিপেটা করা হয়। বনানীর দিক থেকে আসা প্যাডেলচালিত রিকশাগুলোর হাওয়া ছেড়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। একটি রিকশাকে ফেলে দেওয়া হয় পাশের লেকে।

পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে কেউ অভিযোগ না করায় কোনো বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অথচ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল, যেন এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। কেননা, আগেও একাধিকবার ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে চালকেরা আন্দোলনে নেমেছিলেন। ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল সাধারণ জনগণকে। তাঁদের আন্দোলন সামাল দিতে না পেরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে।

ঠান্ডা মাথায় একটু ভাবলেই বোঝা যাবে, আসলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার প্রয়োজন আছে কি নেই। রাজধানীর বুকে যেখানে ইঞ্জিনচালিত ভারী যানবাহনের আধিক্য, সেখানে ব্যাটারিচালিত যান যদি অনিয়ন্ত্রিত গতি নিয়ে বাকিগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেয় তাহলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েই যায়।

যে শহরে রিকশা, ঠেলাগাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, ছোট, বড়, হালকা, ভারী, দ্রুতগতি—প্রায় ১৮টি সংস্করণের সব যান একসঙ্গে চলে, সেখানে সড়কের বিজ্ঞান মেনে না চললে দুর্ঘটনা ঘটবেই।

ঢাকার বাইরেও এই চিত্র ভিন্ন নয়। একটি ছোট উদাহরণ তো আজকের পত্রিকার ২২ এপ্রিলের প্রথম পাতাতেই রয়েছে। গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে দুই ব্যাটারিচালিত ভ্যানের ধাক্কায় সড়কে ছিটকে পড়ে আড়াই বছরের আলেয়া। মা তাকে কোলে তুলে নেওয়ার আগেই একটি কাভার্ড ভ্যানের চাপায় প্রাণ হারায় শিশুটি। সন্তানের নিথর দেহকেই হয়তো জড়িয়ে ধরেছেন আলেয়ার মা।

এমন দৃশ্য যেন কাউকে সহ্য করতে না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া খুব প্রয়োজন। কেন সাধারণ জনগণ রিকশাচালকদের হাতে মার খাবে, এই প্রশ্নও তোলা রইল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, মাদ্রাসা সুপারসহ তিনজন আটক

মধুচন্দ্রিমায় স্বামী নিহত, কফিন জড়িয়ে হিমাশি

বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক সাফিনুলের পরিবারের ৫৬ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

১৬ বছর আগে নিহত শিশু ও সাত বছর ধরে প্রবাসী অষ্টগ্রামে মামলার আসামি!

এটা ছোটখাটো অপহরণ: চবির ৫ শিক্ষার্থীকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত