সম্পাদকীয়
চিত্রপরিচালক আমজাদ হোসেন ১৯৭৯ সালে ‘সুন্দরী’ নামে একটি সিনেমা তৈরি করেছিলেন। সেখানে ছিল একটা অসাধারণ সংলাপ। ববিতার বাবা মারা গেছেন। খুব কষ্টে কাটছে দিনকাল।
ববিতার প্রেমিক ইলিয়াস কাঞ্চনও এই মৃত্যুতে বাক্হীন হয়ে গেছেন। এ রকম সময় একদিন রেগে ববিতা বলছেন, ‘বাপ মরছে আমার আর দাড়ি রাখছে কাঞ্চন!’
কথাটা মনে হলো তেলের দাম নিয়ে যে অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে লিখতে গিয়ে। তেলের দাম বাড়াল সরকার, আর ধর্মঘট ডাকলেন পরিবহন নেতারা! ওই, বাপ মরেছে ববিতার আর কাঞ্চনের দাড়ি রাখার মতোই ব্যাপারটা। পরিবহন মালিকেরা কি আদৌ কোনো দিন সাধারণ যাত্রীদের কথা ভেবেছেন? অতীত অভিজ্ঞতা তো বলে উল্টো কথা। তেলের দাম বাড়লেই তাঁরা বাড়তি ভাড়া আদায় করতে শুরু করেন। আর ধর্মঘট? মালিকেরা কিন্তু জানেন, ভাড়া পুনর্নির্ধারণের প্রশ্নটির একটা মীমাংসা হওয়ার আগপর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট না করলেও তাঁদের আয়ের তেমন কোনো ক্ষতি-বৃদ্ধি হতো না, যেমন হতো না তেলের দাম না বাড়ালে সরকারের। কিন্তু দুই পক্ষই ধরে-বেঁধে যাদের বলির পাঁঠা বানালেন, তাদের নাম সহজ ভাষায় জনগণ বা আমজনতা।
আমজনতা যে আসলেই আমজনতা, এ ছাড়া তাদের আর কোনো পরিচয় নেই, সেটা রাজনীতিবিদেরা বুঝলেও স্বীকার করেন না। বক্তৃতায়, বিবৃতিতে তাঁরা আজও বলতে থাকেন, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। এ বাক্যটি যখন আমজনতা বা সাধারণ নাগরিকদের কানে যায়, তখন কিছুক্ষণের জন্য তাঁরা নিজেদের রাজাধিরাজ মনে করলেও করতে পারেন। কিন্তু দিন কেটে গেলে বুঝতে অসুবিধা হয় না, এগুলো সব ফাঁকা বুলি। তাঁরা যে তিমিরে ছিলেন, সে তিমিরেই রয়েছেন।
তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে অরাজকতা চলছে, তার শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ। চাকরির পরীক্ষা নিয়ে চাকরিপ্রার্থীরাই শুধু বিপদে পড়েছেন তা নয়, দরকারি কাজে রাস্তায় নেমে প্রয়োজনীয় বাহন পায়নি সাধারণ মানুষ। আন্তজেলা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কেনা টিকিট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল অনেক মানুষ। কিন্তু বাস ছাড়েনি। আর এ ক্ষেত্রে যা হয়, রিকশাচালক, সিএনজিচালকেরা বাড়িয়ে দিয়েছেন ভাড়া। এই তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে তাঁদের বাহনের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও এ কাজটি তাঁরা করে চলেছেন অনবরত। কয়েক মাস ধরেই দ্রব্যমূল্য বাড়তির দিকে, এই সুযোগে তা আবার বাড়ানো হবে। এই তো কিছুদিন আগে ভারত পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, এই গুজবে অকারণেই এ দেশে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল পেঁয়াজের দাম। অথচ ঘটনাটা সত্য ছিল না। লাভের গুড় খেয়েছে মহাজনেরাই।
করোনাকালে বহু মানুষের আর্থিক জীবন বিপৎসীমায় দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে টাকার পাহাড় গড়া মানুষ, অন্যদিকে ক্রমেই নিঃস্ব হয়ে যাওয়া আমজনতা—এখানে মাথাপিছু আয় বাড়লেও তাতে খুশি হওয়ার কিছু নেই; বরং জনগণ যে কলুর বলদ, সেটাই দৃশ্যমান হয়। আমাদের এই ট্র্যাজেডি কাটবে কী করে?
চিত্রপরিচালক আমজাদ হোসেন ১৯৭৯ সালে ‘সুন্দরী’ নামে একটি সিনেমা তৈরি করেছিলেন। সেখানে ছিল একটা অসাধারণ সংলাপ। ববিতার বাবা মারা গেছেন। খুব কষ্টে কাটছে দিনকাল।
ববিতার প্রেমিক ইলিয়াস কাঞ্চনও এই মৃত্যুতে বাক্হীন হয়ে গেছেন। এ রকম সময় একদিন রেগে ববিতা বলছেন, ‘বাপ মরছে আমার আর দাড়ি রাখছে কাঞ্চন!’
কথাটা মনে হলো তেলের দাম নিয়ে যে অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে লিখতে গিয়ে। তেলের দাম বাড়াল সরকার, আর ধর্মঘট ডাকলেন পরিবহন নেতারা! ওই, বাপ মরেছে ববিতার আর কাঞ্চনের দাড়ি রাখার মতোই ব্যাপারটা। পরিবহন মালিকেরা কি আদৌ কোনো দিন সাধারণ যাত্রীদের কথা ভেবেছেন? অতীত অভিজ্ঞতা তো বলে উল্টো কথা। তেলের দাম বাড়লেই তাঁরা বাড়তি ভাড়া আদায় করতে শুরু করেন। আর ধর্মঘট? মালিকেরা কিন্তু জানেন, ভাড়া পুনর্নির্ধারণের প্রশ্নটির একটা মীমাংসা হওয়ার আগপর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট না করলেও তাঁদের আয়ের তেমন কোনো ক্ষতি-বৃদ্ধি হতো না, যেমন হতো না তেলের দাম না বাড়ালে সরকারের। কিন্তু দুই পক্ষই ধরে-বেঁধে যাদের বলির পাঁঠা বানালেন, তাদের নাম সহজ ভাষায় জনগণ বা আমজনতা।
আমজনতা যে আসলেই আমজনতা, এ ছাড়া তাদের আর কোনো পরিচয় নেই, সেটা রাজনীতিবিদেরা বুঝলেও স্বীকার করেন না। বক্তৃতায়, বিবৃতিতে তাঁরা আজও বলতে থাকেন, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। এ বাক্যটি যখন আমজনতা বা সাধারণ নাগরিকদের কানে যায়, তখন কিছুক্ষণের জন্য তাঁরা নিজেদের রাজাধিরাজ মনে করলেও করতে পারেন। কিন্তু দিন কেটে গেলে বুঝতে অসুবিধা হয় না, এগুলো সব ফাঁকা বুলি। তাঁরা যে তিমিরে ছিলেন, সে তিমিরেই রয়েছেন।
তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে অরাজকতা চলছে, তার শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ। চাকরির পরীক্ষা নিয়ে চাকরিপ্রার্থীরাই শুধু বিপদে পড়েছেন তা নয়, দরকারি কাজে রাস্তায় নেমে প্রয়োজনীয় বাহন পায়নি সাধারণ মানুষ। আন্তজেলা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কেনা টিকিট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল অনেক মানুষ। কিন্তু বাস ছাড়েনি। আর এ ক্ষেত্রে যা হয়, রিকশাচালক, সিএনজিচালকেরা বাড়িয়ে দিয়েছেন ভাড়া। এই তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে তাঁদের বাহনের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও এ কাজটি তাঁরা করে চলেছেন অনবরত। কয়েক মাস ধরেই দ্রব্যমূল্য বাড়তির দিকে, এই সুযোগে তা আবার বাড়ানো হবে। এই তো কিছুদিন আগে ভারত পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, এই গুজবে অকারণেই এ দেশে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল পেঁয়াজের দাম। অথচ ঘটনাটা সত্য ছিল না। লাভের গুড় খেয়েছে মহাজনেরাই।
করোনাকালে বহু মানুষের আর্থিক জীবন বিপৎসীমায় দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে টাকার পাহাড় গড়া মানুষ, অন্যদিকে ক্রমেই নিঃস্ব হয়ে যাওয়া আমজনতা—এখানে মাথাপিছু আয় বাড়লেও তাতে খুশি হওয়ার কিছু নেই; বরং জনগণ যে কলুর বলদ, সেটাই দৃশ্যমান হয়। আমাদের এই ট্র্যাজেডি কাটবে কী করে?
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) যে তদন্ত করেছে, ২৭ জানুয়ারি সে তদন্তের ৫৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউর একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে...
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসে ফেব্রুয়ারি একটি অনন্য মাস। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি আমাদের জন্য যে পথ রচনা করে দিয়েছে, সেই পথই দেশকে পৌঁছে দিয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। প্রকৃতপক্ষে এ দেশের আপামর ছাত্র-শ্রমিক-জনতা রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে সেই পথকে করেছে মসৃণ...
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি একধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নানা বাধা দেখা যাচ্ছে। এসব ঘটনা শুধু বিচ্ছিন্ন কিছু প্রতিবন্ধকতা নয়; বরং বৃহত্তর সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন।
৫ ঘণ্টা আগেআজ থেকে বাংলা একাডেমি আয়োজিত বইমেলা শুরু হচ্ছে। মাসব্যাপী এই আয়োজন প্রাণের মেলায় পরিণত হোক, সেই কামনা করি। তবে আজ বইমেলা নিয়ে নয়, বাংলা একাডেমি পুরস্কার নিয়ে যে নাটক অভিনীত হলো, তা নিয়েই কিছু কথা বলা সংগত হবে।
৫ ঘণ্টা আগে