ড. জোবাইদা নাসরীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। জাপানের হিরোশিমা ইউনিভার্সিটি থেকে নৃবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং যুক্তরাজ্যের ডারহাম ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেছেন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠনসহ নানা বিষয় নিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানা।
মাসুদ রানা
গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী পরিস্থিতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
একটা গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, সেটা আমি বলছি না। একটা গণ-অভ্যুত্থান হওয়ার পরে একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সাত মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে সেটার দোহাই দিয়ে আমরা এখনো অনেক কিছুকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমার কাছে মনে হয়, সেটা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত ছিল না। কোনো সহিংসতাকে কোনো কারণ দিয়ে বৈধতা দেওয়া যাবে না। সেটা যদি দিই, তাহলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন নারীকে ধর্ষণ করা হয় তাদের পোশাক, হাঁটাচলা অন্যকে প্রভাবিত করে—সেই বক্তব্যকে ন্যায্যতা দিয়ে; আবার কেউ আওয়ামী লীগ করেছেন বলে তাঁদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে হবে, মবের মাধ্যমে তাঁদের হেনস্তা করা যাবে কিংবা তাঁদের হত্যার হুমকি এবং নিপীড়ন করা যাবে।
এগুলোকে বৈধতা দেওয়া মানে হলো, জাস্টিসের ব্যাপারটাকে বন্ধ করে দেওয়া। আমরা যখন দেশের সাম্প্রতিক যেকোনো ঘটনাকে বিশ্লেষণ করি, তখন অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তারা এসব নিয়ে একধরনের বৈধতার সম্মতি উৎপাদন করছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হয়েছেন। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে সময় এ-ও অভিযোগ করা হয়েছিল—এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা কোনো না কোনোভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আবার বলা হয়েছে, এ দেশের হিন্দুরা তো সংখ্যালঘু হিসেবে নির্যাতিত হয়নি, তারা নির্যাতিত হয়েছে আওয়ামী লীগ করার কারণে। আবার তারা ভারতের সঙ্গে যুক্ত বলে আমরা তাদের কল্পিতভাবে অভিযুক্ত করছি। এ ধরনের ন্যারেটিভ সমাজের মধ্যে প্রচলিত আছে। এভাবে তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এগুলো যে আবার একটা জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে, ব্যাপারটা সে রকমও নয়। এসব ঘটনার পরের প্রতিক্রিয়া তাদের ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার পেতেও সমস্যার সৃষ্টি করছে।
আরও একটু বিস্তারিত বলবেন?
গণ-অভ্যুত্থানের পরিসর তৈরি হয়েছিল এবং আন্দোলনটা সংগঠিত হয়েছিল অবশ্যই একটা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে। আওয়ামী লীগ সরকার দলীয়ভাবে সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল নিয়োগ থেকে সবকিছুতে। বিশেষ করে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্রসংগঠন গণরুম থেকে শুরু করে সবকিছুতে একটা ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিল। সেসব জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। এসব ঘটনার প্রতিফলনে গণ-অভ্যুত্থানটা সংঘটিত হয়েছিল। তাহলে এরপর কী ঘটছে? এই আন্দোলনটাকে যতভাবে পারা যায় গ্লোরিফাই করা হচ্ছে। যেমন প্রথম দিকে বলা হয়েছিল এ আন্দোলনটা শিক্ষার্থী, শ্রমিক, কৃষক ও জনতার আন্দোলন ছিল। পরবর্তী সময়ে সেটাকে নিয়ে, এর মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলো। বিএনপি বলছে তারা এর মাস্টারমাইন্ড, প্রধান উপদেষ্টা দেশের বাইরে একটা অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলমকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এরপর জামায়াত বলল তারা এ আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড।
জুলাই আন্দোলনের মালিকানা কীভাবে গণতন্ত্রকে সংকুচিত করেছে, সেটা আমরা পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে দেখতে পেলাম। আন্দোলনটাকে মালিকানার ঘেরাটোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ করার ফলে মবোক্রেসিকে উৎসাহিত করা হলো।
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগ নিশানা করে রাজনীতি করে দেশের মধ্যে একটা ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল এবং জনগণকে সেই মালিকানার অংশীদার করেনি। এ সরকারও একইভাবে জুলাই আন্দোলনকে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে সীমাবদ্ধ করেছে। আন্দোলনে যাঁরা শহীদ এবং আহত হয়েছেন, তার বেশির ভাগই গরিব ঘরের সন্তান। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে আলাপ, এই আন্দোলনের আলোচনা থেকে ‘শ্রেণি’ প্রশ্নটাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীনতা, ন্যায্যতা ও প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে অবশ্যই ‘শ্রেণি’কে আমলে নিতে হবে। উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের সময় আমরা কোনো শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব দেখিনি। আন্দোলনে এত আহত-নিহত হলেন, সেখানে তাঁদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই কেন? তাঁদের সঙ্গে কোনো প্রকার আলাপেরও জায়গা রাখা হয়নি। এখন পর্যন্ত গার্মেন্টসে আন্দোলন চলছে। বেতনের আন্দোলন করার কারণে অনেক শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাই বলছি, এই আন্দোলনের ফল একটা গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে। একটা নির্দিষ্ট মতাদর্শিক গোষ্ঠী সেটাকে প্রভাবিত করছে। সুতরাং কোনো নির্দিষ্ট মতাদর্শিক গোষ্ঠী আন্দোলনকে ওন করার কারণে সরকারের সঙ্গে তারা আঁতাত করেছে এবং সরকার তাদের সাপোর্টও দিচ্ছে। ফলে এখানে ডেমোক্রেসির পরিবর্তে মবোক্রেসি প্রাধান্য পেয়েছে। সরকার এখনো মবের কাছে নির্ভর করছে। সরকার মবকে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কীভাবে বলতে পারেন, আন্দোলনকারীদের উঠিয়ে দিতে জনগণই যথেষ্ট?
কেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মব ঠেকাতে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে? আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সরকার কোনো আন্দোলন করতে দিচ্ছে আর কোনোটা করতে দিচ্ছে না, এটা কি সরকারের একধরনের রাজনীতি নয়? সরকার আদতে রাজনৈতিক দলের সরকার না হলেও তাদের কর্মকাণ্ড বলে দিচ্ছে তারা রাজনৈতিক সরকার। সরকারের কর্মকাণ্ডই বলে দিচ্ছে তারা কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে আমলে নিচ্ছে আর কাদের নিচ্ছে না। যেমন পাঠ্যপুস্তকে একটা আদিবাসী গ্রাফিতিকে নিয়ে একটি সংগঠন প্রতিবাদ করল। যার নাম আগে আমরা কখনো শুনিনি। তাদের আন্দোলনের ফলে সেটা বাদ দেওয়া হলো। পরের দিন যখন আদিবাসী শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াল, তাদের ওপর পুলিশ এবং ওই সংগঠনের কর্মীদের দিয়ে হামলা করা হলো। সরকার কিন্তু তাদের দাবি মেনে নেয়নি। স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, কার দাবি মানা হবে এবং কার বিরুদ্ধে মব করা হবে—এগুলোর মধ্য দিয়ে সরকার তার রাজনীতি স্পষ্ট করছে। সরকার যেখানে নিশ্চুপ থাকছে, সেটা রাজনৈতিক কারণে নিশ্চুপ থাকছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
আমি প্রথমত তাদের স্বাগত জানাই। বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে দুই-তিনটি দলের শাসনে ছিল। আর জনগণ তাদের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না। জনগণের প্রত্যাশা নতুন ধারার রাজনীতির প্রতি—দেশে আর রাজনীতির কর্তৃত্ব থাকবে না এবং ভোট দেওয়ার পরিবেশ ফিরে আসবে। সেই জায়গা থেকে নতুন দলের প্রতি আমাদের আশাবাদী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই আমরা শঙ্কা দেখতে পাচ্ছি, দলটি গঠন থেকে গণতন্ত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। নেতৃত্ব নিয়ে নানা ধরনের আঁতাত করা হয়েছে। দ্বন্দ্ব, কোন্দল তৈরি হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব তৈরির প্রক্রিয়া প্রথমেই বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। কারা নেতৃত্বে আসবে, সেটা দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীর মতামত ব্যতিরেকে করা হয়েছে।
এ দলের মেনিফেস্টো, কর্মসূচি, গঠনতন্ত্র নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। তারা কোন মতাদর্শের, সেটাও তারা স্পষ্ট করে বলেনি। যদিও তারা বারবার মধ্যপন্থী ও রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলেছে, কিন্তু সেটা স্পষ্ট নয়।
একটি রাজনৈতিক দল জনগণের কাছে টিকে থাকবে ততক্ষণ, যতক্ষণ এটা জনমুখী হবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এ দলটি প্রথম থেকেই বিতর্কের সূচনা করেছে। নানা ধরনের ঝুঁকি, আশঙ্কা, দ্বন্দ্ব ও সমালোচনাকে সামনে নিয়ে এসেছে। দলটিতে তাদের মুরব্বি দলগুলোর নেতাদের হস্তক্ষেপ থাকতে পারে, সেটা তাদের দ্বন্দ্বকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যেদিন এ দলটির আত্মপ্রকাশ হলো, সেটার খরচের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এরপর ইফতার পার্টির অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখন কথা হলো, যে সমন্বয়কেরা জনগণের সমর্থন নিয়ে একটি গণ-অভ্যুত্থান করল, সেই দলের ইফতার পার্টি হলো ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে। শ্রমজীবী মানুষের সমর্থন পাওয়ার জন্য তারা কিছু করেনি। তাদের সঙ্গে শ্রমজীবী মানুষের কোনো যোগসূত্র নেই। তারা যোগসূত্র তৈরি করছে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সমর্থন পাওয়ার জন্য, অন্যদিকে তারা ব্যবসায়ীদের কাছে যাচ্ছে ডোনেশনের জন্য। একটি দলকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে অবশ্যই স্বচ্ছতা থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে কেন এ দলটিকে মানুষ মেনে নেবে? আর তারা যে বৈষম্যহীনতা, ন্যায়বিচার পাওয়ার কথা বলেছে, সেসব তাদের কাজের মধ্যে জনগণ খুঁজে পাচ্ছে না। সে রকম কোনো কর্মসূচিও তাদের এখন পর্যন্ত নেই। অস্পষ্টতা ও স্বচ্ছতার অভাব দলটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে। এ বিষয়গুলোতে তাদের মনোযোগী হতে হবে এবং জনগণের কাছে এ দলটি যদি আস্থাভাজন হয়ে উঠতে না পারে তাহলে কিংস পার্টির তকমা কিছুতেই ঘুচবে না।
কেন আপনি এ দলটিকে কিংস পার্টি বলছেন?
খোদ প্রধান উপদেষ্টা এই পার্টির ঘোষণার কথা বলেছেন। তিনি আগেই বলেছেন, শিক্ষার্থীরা দল গঠন করবে এবং তিনি তাদের উৎসাহ দিচ্ছেন। একজন উপদেষ্টা শুধু বললেই কিংস পার্টি না-ও হতে পারে। কিন্তু সারজিস আলম হেলিকপ্টার ব্যবহার করল। কারণ, দলটির সঙ্গে সরকারের শুধু আঁতাত নয়, একদম সরাসরি কানেক্টিভিটি বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা যাচ্ছে। তাই এ দলটিকে কোনোভাবেই বলার জায়গা নেই যে, সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে না। যখনই কোনো দল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আত্মপ্রকাশ করে এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ডে সেটা প্রকাশিত হয়, অবশ্যই সেটাকে কিংস পার্টি বলার সুযোগ আছে।
এনসিপি দ্বিতীয় রিপাবলিকের কথা বলছে। সেটার প্রাসঙ্গিকতা আছে কি?
আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষের কাছে সেরা অর্জন, সেরা আবেগ ও সেরা ভালোবাসার জায়গা হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। একটি স্বাধীন দেশে অনেক ধরনের গণ-অভ্যুত্থান ঘটতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ তার মুক্তির স্বাদ না পাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুক্তির স্বাদ পেতে চাইবে। তবে মুক্তিযুদ্ধের একটা বড় চাওয়া ছিল অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিকভাবে বৈষম্যহীনতা এবং নারীমুক্তি। যেই অর্জন গত ৫৪ বছর ধরে সম্ভব হয়নি। সেই আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে বিভিন্ন সময়ে গণ-আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থান হচ্ছে।
দ্বিতীয় রিপাবলিক একটা তাত্ত্বিক ধারণা। তারা হয়তোবা অন্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে সেটা করতে চায়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির জন্মের ইতিহাসই বলে দ্বিতীয় রিপাবলিক শুধু অসম্ভব না, এটা অবাস্তব চিন্তাও বটে। কারণ, বাংলাদেশের যে সংবিধান বাহাত্তর সালে তৈরি হয়েছে, সেটার সংস্কার হতে পারে। সেটার সীমাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলার সুযোগ আছে। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সমান মর্যাদার কথা বলা হলেও সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি। আবার বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিতর্ক আছে। সবার মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি। কিন্তু সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান এবং নতুনভাবে রাষ্ট্রের সূচনা করাটা দেশের জনগণ কতটুকু গ্রহণ করবে, সেটা বলা কঠিন। সুতরাং দ্বিতীয় রিপাবলিকের কথা তাদের দলের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা আকারে এবং গঠনতন্ত্রে থাকতে পারে। কিন্তু আমার কাছে সেটা বাস্তবসম্মত বিষয় বলে মনে হয় না।
সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী পরিস্থিতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
একটা গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, সেটা আমি বলছি না। একটা গণ-অভ্যুত্থান হওয়ার পরে একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সাত মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে সেটার দোহাই দিয়ে আমরা এখনো অনেক কিছুকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমার কাছে মনে হয়, সেটা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত ছিল না। কোনো সহিংসতাকে কোনো কারণ দিয়ে বৈধতা দেওয়া যাবে না। সেটা যদি দিই, তাহলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন নারীকে ধর্ষণ করা হয় তাদের পোশাক, হাঁটাচলা অন্যকে প্রভাবিত করে—সেই বক্তব্যকে ন্যায্যতা দিয়ে; আবার কেউ আওয়ামী লীগ করেছেন বলে তাঁদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে হবে, মবের মাধ্যমে তাঁদের হেনস্তা করা যাবে কিংবা তাঁদের হত্যার হুমকি এবং নিপীড়ন করা যাবে।
এগুলোকে বৈধতা দেওয়া মানে হলো, জাস্টিসের ব্যাপারটাকে বন্ধ করে দেওয়া। আমরা যখন দেশের সাম্প্রতিক যেকোনো ঘটনাকে বিশ্লেষণ করি, তখন অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তারা এসব নিয়ে একধরনের বৈধতার সম্মতি উৎপাদন করছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হয়েছেন। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে সময় এ-ও অভিযোগ করা হয়েছিল—এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা কোনো না কোনোভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আবার বলা হয়েছে, এ দেশের হিন্দুরা তো সংখ্যালঘু হিসেবে নির্যাতিত হয়নি, তারা নির্যাতিত হয়েছে আওয়ামী লীগ করার কারণে। আবার তারা ভারতের সঙ্গে যুক্ত বলে আমরা তাদের কল্পিতভাবে অভিযুক্ত করছি। এ ধরনের ন্যারেটিভ সমাজের মধ্যে প্রচলিত আছে। এভাবে তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এগুলো যে আবার একটা জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে, ব্যাপারটা সে রকমও নয়। এসব ঘটনার পরের প্রতিক্রিয়া তাদের ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার পেতেও সমস্যার সৃষ্টি করছে।
আরও একটু বিস্তারিত বলবেন?
গণ-অভ্যুত্থানের পরিসর তৈরি হয়েছিল এবং আন্দোলনটা সংগঠিত হয়েছিল অবশ্যই একটা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে। আওয়ামী লীগ সরকার দলীয়ভাবে সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল নিয়োগ থেকে সবকিছুতে। বিশেষ করে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্রসংগঠন গণরুম থেকে শুরু করে সবকিছুতে একটা ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিল। সেসব জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। এসব ঘটনার প্রতিফলনে গণ-অভ্যুত্থানটা সংঘটিত হয়েছিল। তাহলে এরপর কী ঘটছে? এই আন্দোলনটাকে যতভাবে পারা যায় গ্লোরিফাই করা হচ্ছে। যেমন প্রথম দিকে বলা হয়েছিল এ আন্দোলনটা শিক্ষার্থী, শ্রমিক, কৃষক ও জনতার আন্দোলন ছিল। পরবর্তী সময়ে সেটাকে নিয়ে, এর মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলো। বিএনপি বলছে তারা এর মাস্টারমাইন্ড, প্রধান উপদেষ্টা দেশের বাইরে একটা অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলমকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এরপর জামায়াত বলল তারা এ আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড।
জুলাই আন্দোলনের মালিকানা কীভাবে গণতন্ত্রকে সংকুচিত করেছে, সেটা আমরা পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে দেখতে পেলাম। আন্দোলনটাকে মালিকানার ঘেরাটোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ করার ফলে মবোক্রেসিকে উৎসাহিত করা হলো।
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগ নিশানা করে রাজনীতি করে দেশের মধ্যে একটা ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল এবং জনগণকে সেই মালিকানার অংশীদার করেনি। এ সরকারও একইভাবে জুলাই আন্দোলনকে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে সীমাবদ্ধ করেছে। আন্দোলনে যাঁরা শহীদ এবং আহত হয়েছেন, তার বেশির ভাগই গরিব ঘরের সন্তান। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে আলাপ, এই আন্দোলনের আলোচনা থেকে ‘শ্রেণি’ প্রশ্নটাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীনতা, ন্যায্যতা ও প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে অবশ্যই ‘শ্রেণি’কে আমলে নিতে হবে। উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের সময় আমরা কোনো শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব দেখিনি। আন্দোলনে এত আহত-নিহত হলেন, সেখানে তাঁদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই কেন? তাঁদের সঙ্গে কোনো প্রকার আলাপেরও জায়গা রাখা হয়নি। এখন পর্যন্ত গার্মেন্টসে আন্দোলন চলছে। বেতনের আন্দোলন করার কারণে অনেক শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাই বলছি, এই আন্দোলনের ফল একটা গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে। একটা নির্দিষ্ট মতাদর্শিক গোষ্ঠী সেটাকে প্রভাবিত করছে। সুতরাং কোনো নির্দিষ্ট মতাদর্শিক গোষ্ঠী আন্দোলনকে ওন করার কারণে সরকারের সঙ্গে তারা আঁতাত করেছে এবং সরকার তাদের সাপোর্টও দিচ্ছে। ফলে এখানে ডেমোক্রেসির পরিবর্তে মবোক্রেসি প্রাধান্য পেয়েছে। সরকার এখনো মবের কাছে নির্ভর করছে। সরকার মবকে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কীভাবে বলতে পারেন, আন্দোলনকারীদের উঠিয়ে দিতে জনগণই যথেষ্ট?
কেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মব ঠেকাতে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে? আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সরকার কোনো আন্দোলন করতে দিচ্ছে আর কোনোটা করতে দিচ্ছে না, এটা কি সরকারের একধরনের রাজনীতি নয়? সরকার আদতে রাজনৈতিক দলের সরকার না হলেও তাদের কর্মকাণ্ড বলে দিচ্ছে তারা রাজনৈতিক সরকার। সরকারের কর্মকাণ্ডই বলে দিচ্ছে তারা কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে আমলে নিচ্ছে আর কাদের নিচ্ছে না। যেমন পাঠ্যপুস্তকে একটা আদিবাসী গ্রাফিতিকে নিয়ে একটি সংগঠন প্রতিবাদ করল। যার নাম আগে আমরা কখনো শুনিনি। তাদের আন্দোলনের ফলে সেটা বাদ দেওয়া হলো। পরের দিন যখন আদিবাসী শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াল, তাদের ওপর পুলিশ এবং ওই সংগঠনের কর্মীদের দিয়ে হামলা করা হলো। সরকার কিন্তু তাদের দাবি মেনে নেয়নি। স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, কার দাবি মানা হবে এবং কার বিরুদ্ধে মব করা হবে—এগুলোর মধ্য দিয়ে সরকার তার রাজনীতি স্পষ্ট করছে। সরকার যেখানে নিশ্চুপ থাকছে, সেটা রাজনৈতিক কারণে নিশ্চুপ থাকছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
আমি প্রথমত তাদের স্বাগত জানাই। বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে দুই-তিনটি দলের শাসনে ছিল। আর জনগণ তাদের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না। জনগণের প্রত্যাশা নতুন ধারার রাজনীতির প্রতি—দেশে আর রাজনীতির কর্তৃত্ব থাকবে না এবং ভোট দেওয়ার পরিবেশ ফিরে আসবে। সেই জায়গা থেকে নতুন দলের প্রতি আমাদের আশাবাদী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই আমরা শঙ্কা দেখতে পাচ্ছি, দলটি গঠন থেকে গণতন্ত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। নেতৃত্ব নিয়ে নানা ধরনের আঁতাত করা হয়েছে। দ্বন্দ্ব, কোন্দল তৈরি হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব তৈরির প্রক্রিয়া প্রথমেই বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। কারা নেতৃত্বে আসবে, সেটা দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীর মতামত ব্যতিরেকে করা হয়েছে।
এ দলের মেনিফেস্টো, কর্মসূচি, গঠনতন্ত্র নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। তারা কোন মতাদর্শের, সেটাও তারা স্পষ্ট করে বলেনি। যদিও তারা বারবার মধ্যপন্থী ও রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলেছে, কিন্তু সেটা স্পষ্ট নয়।
একটি রাজনৈতিক দল জনগণের কাছে টিকে থাকবে ততক্ষণ, যতক্ষণ এটা জনমুখী হবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এ দলটি প্রথম থেকেই বিতর্কের সূচনা করেছে। নানা ধরনের ঝুঁকি, আশঙ্কা, দ্বন্দ্ব ও সমালোচনাকে সামনে নিয়ে এসেছে। দলটিতে তাদের মুরব্বি দলগুলোর নেতাদের হস্তক্ষেপ থাকতে পারে, সেটা তাদের দ্বন্দ্বকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যেদিন এ দলটির আত্মপ্রকাশ হলো, সেটার খরচের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এরপর ইফতার পার্টির অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখন কথা হলো, যে সমন্বয়কেরা জনগণের সমর্থন নিয়ে একটি গণ-অভ্যুত্থান করল, সেই দলের ইফতার পার্টি হলো ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে। শ্রমজীবী মানুষের সমর্থন পাওয়ার জন্য তারা কিছু করেনি। তাদের সঙ্গে শ্রমজীবী মানুষের কোনো যোগসূত্র নেই। তারা যোগসূত্র তৈরি করছে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সমর্থন পাওয়ার জন্য, অন্যদিকে তারা ব্যবসায়ীদের কাছে যাচ্ছে ডোনেশনের জন্য। একটি দলকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে অবশ্যই স্বচ্ছতা থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে কেন এ দলটিকে মানুষ মেনে নেবে? আর তারা যে বৈষম্যহীনতা, ন্যায়বিচার পাওয়ার কথা বলেছে, সেসব তাদের কাজের মধ্যে জনগণ খুঁজে পাচ্ছে না। সে রকম কোনো কর্মসূচিও তাদের এখন পর্যন্ত নেই। অস্পষ্টতা ও স্বচ্ছতার অভাব দলটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে। এ বিষয়গুলোতে তাদের মনোযোগী হতে হবে এবং জনগণের কাছে এ দলটি যদি আস্থাভাজন হয়ে উঠতে না পারে তাহলে কিংস পার্টির তকমা কিছুতেই ঘুচবে না।
কেন আপনি এ দলটিকে কিংস পার্টি বলছেন?
খোদ প্রধান উপদেষ্টা এই পার্টির ঘোষণার কথা বলেছেন। তিনি আগেই বলেছেন, শিক্ষার্থীরা দল গঠন করবে এবং তিনি তাদের উৎসাহ দিচ্ছেন। একজন উপদেষ্টা শুধু বললেই কিংস পার্টি না-ও হতে পারে। কিন্তু সারজিস আলম হেলিকপ্টার ব্যবহার করল। কারণ, দলটির সঙ্গে সরকারের শুধু আঁতাত নয়, একদম সরাসরি কানেক্টিভিটি বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা যাচ্ছে। তাই এ দলটিকে কোনোভাবেই বলার জায়গা নেই যে, সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে না। যখনই কোনো দল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আত্মপ্রকাশ করে এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ডে সেটা প্রকাশিত হয়, অবশ্যই সেটাকে কিংস পার্টি বলার সুযোগ আছে।
এনসিপি দ্বিতীয় রিপাবলিকের কথা বলছে। সেটার প্রাসঙ্গিকতা আছে কি?
আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষের কাছে সেরা অর্জন, সেরা আবেগ ও সেরা ভালোবাসার জায়গা হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। একটি স্বাধীন দেশে অনেক ধরনের গণ-অভ্যুত্থান ঘটতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ তার মুক্তির স্বাদ না পাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুক্তির স্বাদ পেতে চাইবে। তবে মুক্তিযুদ্ধের একটা বড় চাওয়া ছিল অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিকভাবে বৈষম্যহীনতা এবং নারীমুক্তি। যেই অর্জন গত ৫৪ বছর ধরে সম্ভব হয়নি। সেই আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে বিভিন্ন সময়ে গণ-আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থান হচ্ছে।
দ্বিতীয় রিপাবলিক একটা তাত্ত্বিক ধারণা। তারা হয়তোবা অন্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে সেটা করতে চায়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির জন্মের ইতিহাসই বলে দ্বিতীয় রিপাবলিক শুধু অসম্ভব না, এটা অবাস্তব চিন্তাও বটে। কারণ, বাংলাদেশের যে সংবিধান বাহাত্তর সালে তৈরি হয়েছে, সেটার সংস্কার হতে পারে। সেটার সীমাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলার সুযোগ আছে। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সমান মর্যাদার কথা বলা হলেও সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি। আবার বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিতর্ক আছে। সবার মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি। কিন্তু সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান এবং নতুনভাবে রাষ্ট্রের সূচনা করাটা দেশের জনগণ কতটুকু গ্রহণ করবে, সেটা বলা কঠিন। সুতরাং দ্বিতীয় রিপাবলিকের কথা তাদের দলের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা আকারে এবং গঠনতন্ত্রে থাকতে পারে। কিন্তু আমার কাছে সেটা বাস্তবসম্মত বিষয় বলে মনে হয় না।
সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়, যেখানে পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত খসড়া আইনে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, শুধু রণাঙ্গনে...
১ ঘণ্টা আগে১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম নির্মম রাত। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামক পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে ঢাকা শহরকে পরিণত করেছিল মৃত্যুপুরীতে। নিরীহ মানুষের ওপর বর্বর আক্রমণ চালিয়ে তারা ভেবেছিল...
১ ঘণ্টা আগেঐকমত্য কমিশনে বিএনপির পক্ষ থেকে মতামত দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো প্রস্তাবনা। সেটি পুরোপুরি পরিবর্তন বা সংশোধনের...
১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকার তিনের পাতায় রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানের একটা ছবি ছাপা হয়েছে। তিন সারিতে দখল হয়ে গেছে গুলিস্তানের রাস্তা। সামান্য সরু একচিলতে রাস্তা রয়েছে ফাঁকা, সেখান দিয়েই অতিকষ্টে চলছে যানবাহন। হানিফ উড়ালসেতু থেকে নামছে যে যান...
১ ঘণ্টা আগে