সৌভিক রেজা
১৯৪০ সালে বরিশাল জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করার পরপরই একটি কিশোর ছেলে তখনকার এই ঢাকা শহরে এসেছিল ঢাকা কলেজে পড়তে। তখনকার দিনে অন্যান্যদের মতো এই ছেলেটিও কলকাতায় গিয়ে লেখাপড়া করতে পারতো হয়ত, কিন্তু সেটা হয়ে ওঠেনি প্রধানত ‘আর্থিক কারণে’। তাতে ছেলেটির যে খুব ক্ষতি হয়েছিল, তা তো নয়। কেননা, পরবর্তী সময়ে সে হিসাব করে দেখেছে যে তাঁর জীবনে ‘লোকসান’ বলে কিছুই নেই। একেবারেই যে ছিল না তা তো নয়, কিন্তু এই লোকসানটাকে গুরুত্ব না দেওয়া ছেলেটির বিনম্রতারই একটি নমুনা। সেই ছেলেটির জন্ম ১৯২৫ সালের পহেলা মে তারিখে, যে দিনটিকে প্রতিবছর স্মরণ করেন দুনিয়াজোড়া মেহনতি মানুষ। নিজেকে যিনি সবসময়ই ‘কৃষকের পোলা’ হিসেবে পরিচয় দিতেন, সেই লোকটির নাম সরদার ফজলুল করিম। এককথায় মানুষটির পরিচয় দেওয়া অনেকটাই অসম্ভব!
দুই.
নিজের মা-বাবা সম্বন্ধে সরদার ফজলুল করিম বলতেন, ‘আমার মা-বাবা নিরক্ষর এবং একেবারে মাটির মানুষ ছিলেন।’ কী হিসেবে ‘মাটির মানুষ’? সরদারের ভাষায়, ‘তাঁদের মতো লোকের কথা ছিল না আমাকে স্কুলের পাঠানোর। কিন্তু তাঁরা আমাকে স্কুলে পাঠিয়েছেন। সে জন্য আমি এই মাটির মানুষগুলোর কাছে ঋণী এবং এই দেশের মাটির প্রতি আমার মনের মধ্যে একটা ভক্তি জেগে আছে।’ পরবর্তী জীবনে তিনি কমিউনিস্ট কর্মী, অধ্যাপক, লেখক-অনুবাদকসহ আরও অনেক কিছুই হয়েছিলেন; কিন্তু কৃষকের ‘সন্তান’— এই পরিচয়টাকে কখনো নিজের শরীর থেকে তিনি মুছতে দেননি। বাংলার এই মাটির মানুষগুলোর প্রতি তাঁর এই ভক্তিটুকু তিনি আমৃত্যু বহন করে নিয়ে গিয়েছেন। শুধুই বহন করা নয়, তাঁর সেই পরিচয়ের তাৎপর্যটাকে তিনি খুব ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারতেন। আর সে-কারণেই বলতে পেরেছিলেন, ‘আমার পরিচয় আমি তৈরি করিনি। রাজনৈতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী— এসব পরিচয় আমার দেওয়া নয়। আমি কৃষকের পোলা। আমি শুধু বাপের ঋণ শোধ করতে চাই।’ বরিশালের পোলা সচেতনভাবে হয়ে উঠেছেন ‘কৃষকের পোলা’— এইভাবেই তাঁর পরিচয় নানাভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছে। কোনো একটা ছক-বাঁধা পরিচয়ের মধ্যে তিনি নিজেকে আটকে রাখতে চাননি। যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন যে, সরদার ফজলুল করিমের অর্জনটা ঠিক কোথায়? তবে তার উত্তরে এইটেই বলার যে, নিজেকে গণ্ডীবদ্ধ না করে রাখাটাই সরদার স্যারের সবচেয়ে বড়ো অর্জন। এইটে তিনি অর্জন করতে পেরেছিলেন বলেই নিজেকে একজন মার্ক্সবাদী হিসেবে পরিচয় দেবার পরেও প্লেটো ও মার্ক্সের মধ্যে কোনো বিরোধ খুঁজে পাননি। সরদার ফজুলল করিম বলেছিলেন, ‘প্লেটো হচ্ছেন আইডিয়ালিস্ট আর মার্ক্স হচ্ছেন রিয়েলিস্ট। কিন্তু গভীরে ঢুকলে উভয়ের সাদৃশ্যই পরিস্ফুট হয়।’ সেইসঙ্গে তিনি এটিও জানিয়েছিলেন, ‘মার্ক্স প্লেটোকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আইডিয়ালিস্ট ফিলোসফার মনে করেন।’ তিনি আমাদের এইটিও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, ‘মার্ক্স হেগেলকেও ফেলে দেননি’। তাঁর আরও একটি পরিচয় এই যে, তিনি ছিলেন ‘নিউ হেগেলিয়ান।’
আবার এ-ও ঠিক যে তিনি তাঁর নিজের লক্ষ্য থেকে কখনও বিচ্যুত হননি। আমৃত্যু সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেছেন। তাঁর ভাষায়, ‘সমাজতন্ত্র: সমাজের ন্যায়সঙ্গত সঙ্গতিপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। যেখানে সুস্থ-সবল ব্যক্তিমাত্রই উৎপাদনশীল কর্মে রত হতে ইচ্ছুক এবং বাধ্য।’ সরদার ফজলুল করিম মনে করতেন যে, ‘সমাজতন্ত্র হচ্ছে যুক্তিবাদী মানুষের আদর্শ।’ আর সে-কারণেই, তাঁর ভাষায়, ‘মানুষের সমাজের জন্য সমাজতন্ত্র এক অপরিহার্য লক্ষ্য।’ সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য বিপ্লবের কোনো বিকল্প সহজ পথ তিনি কখনও খোঁজেননি। আর সেইসঙ্গে এই বিশ্বাসটিও তাঁর ছিল যে, ‘যথার্থভাবে কোথাও অর্জিত হয়নি বলে সমাজতন্ত্র আদর্শ হিসেবে ব্যর্থ হতে পারে না।’ তাঁর এই বিশ্বাসে কোনো ‘খাদ’ ছিল না। সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘সমাজতন্ত্রের পতন’ দেখে নিজের বিশ্বাস থেকে, বিপ্লবের আদর্শ থেকে আরো অনেকের মতো সরে দাঁড়াননি।
তিন.
মাও সে তুং তীব্রভাবেই বিশ্বাস করতেন, ‘বিপ্লব কোনো ভোজ-সভা নয়। প্রবন্ধ রচনা, বা চিত্রাঙ্কন কিংবা সূচিকর্ম নয়।’ তিনি এ-ও বিশ্বাস করতেন, এই বিপ্লব ‘এত সুমার্জিত, এত ধীর-স্থির ও সুশীল, এত নম্র, বিনীত সংযত ও উদার হতে পারে না।’ তার কারণ হচ্ছে, মাওয়ের ভাষায়, ‘বিপ্লব হচ্ছে বিদ্রোহ—উগ্র বলপ্রয়োগের কাজ।’ অন্যদিকে, সরদার ফজলুল করিমও মনে করতেন, “সমাজতন্ত্র ‘মরণচাঁদের রসগোল্লা” নয়; সমাজতন্ত্র সমাজের উৎপাদনের উপায়হীন মানুষের রক্ত শোষণকারী অবাঞ্ছিত কৃমিকীটের ওষুধবিশেষ: সমাজতন্ত্র মিষ্টি নয়, সমাজতন্ত্র চিরতার পানি।’ এসব থেকে আমরা বুঝে নিতে পারি যে নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, বরং বলপ্রয়োগের সক্রিয় বিপ্লবে সরদার ফজলুল করিমের আস্থা ছিল। ভলতেয়ার মনে করতেন, ‘তত্ত্বায়ন না করে আমাদের কাজ করে যাওয়া উচিত। জীবনকে সহনীয় করে তোলার এটাই একমাত্র পথ।’ সরদার ফজলুল করিম সেই কাজটাকেই সবসময় গুরুত্ব দিয়ে গিয়েছেন।
চার.
এইসব বিপ্লব, এইসব কাজের গুরুত্ব নিহিত রয়েছে একটাই উদ্দেশ্যের গভীরে, তার নাম হচ্ছে— জীবন, মানুষের জীবন। আর সেই জীবনের কোনো পরাজয় নেই, সেই ‘জীবন জয়ী হবে’— এটিই ছিল সরদার ফজলুল করিমের যাবতীয় চিন্তা ও কর্মের মূল প্রেক্ষণ বিন্দু। প্রবহমান জীবনের সেই নিরন্তর ধারাকে তিনি সৃষ্টিশীল কাজে ব্যবহারের জন্যে আজীবন উদগ্রীব ছিলেন। সেই কারণে সরদার ফজলুল করিমের জীবনটাকে আমরা বলতে পারি, প্রবাহিত জীবনের এক চতুর্মুখী উৎসধারা। বাইবেলের ভাষায়, এই মানুষটিকে বলা যায়: ‘সে জলস্রোতের তীরে রোপিত বৃক্ষের সদৃশ হইবে, যাহা যথাসময়ে ফল দেয়, যাহার পত্র ম্লান হয় না। আর সে যাহা কিছু করে, তাহাতেই কৃতকার্য্য হয়।’
লেখক: অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৪০ সালে বরিশাল জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করার পরপরই একটি কিশোর ছেলে তখনকার এই ঢাকা শহরে এসেছিল ঢাকা কলেজে পড়তে। তখনকার দিনে অন্যান্যদের মতো এই ছেলেটিও কলকাতায় গিয়ে লেখাপড়া করতে পারতো হয়ত, কিন্তু সেটা হয়ে ওঠেনি প্রধানত ‘আর্থিক কারণে’। তাতে ছেলেটির যে খুব ক্ষতি হয়েছিল, তা তো নয়। কেননা, পরবর্তী সময়ে সে হিসাব করে দেখেছে যে তাঁর জীবনে ‘লোকসান’ বলে কিছুই নেই। একেবারেই যে ছিল না তা তো নয়, কিন্তু এই লোকসানটাকে গুরুত্ব না দেওয়া ছেলেটির বিনম্রতারই একটি নমুনা। সেই ছেলেটির জন্ম ১৯২৫ সালের পহেলা মে তারিখে, যে দিনটিকে প্রতিবছর স্মরণ করেন দুনিয়াজোড়া মেহনতি মানুষ। নিজেকে যিনি সবসময়ই ‘কৃষকের পোলা’ হিসেবে পরিচয় দিতেন, সেই লোকটির নাম সরদার ফজলুল করিম। এককথায় মানুষটির পরিচয় দেওয়া অনেকটাই অসম্ভব!
দুই.
নিজের মা-বাবা সম্বন্ধে সরদার ফজলুল করিম বলতেন, ‘আমার মা-বাবা নিরক্ষর এবং একেবারে মাটির মানুষ ছিলেন।’ কী হিসেবে ‘মাটির মানুষ’? সরদারের ভাষায়, ‘তাঁদের মতো লোকের কথা ছিল না আমাকে স্কুলের পাঠানোর। কিন্তু তাঁরা আমাকে স্কুলে পাঠিয়েছেন। সে জন্য আমি এই মাটির মানুষগুলোর কাছে ঋণী এবং এই দেশের মাটির প্রতি আমার মনের মধ্যে একটা ভক্তি জেগে আছে।’ পরবর্তী জীবনে তিনি কমিউনিস্ট কর্মী, অধ্যাপক, লেখক-অনুবাদকসহ আরও অনেক কিছুই হয়েছিলেন; কিন্তু কৃষকের ‘সন্তান’— এই পরিচয়টাকে কখনো নিজের শরীর থেকে তিনি মুছতে দেননি। বাংলার এই মাটির মানুষগুলোর প্রতি তাঁর এই ভক্তিটুকু তিনি আমৃত্যু বহন করে নিয়ে গিয়েছেন। শুধুই বহন করা নয়, তাঁর সেই পরিচয়ের তাৎপর্যটাকে তিনি খুব ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারতেন। আর সে-কারণেই বলতে পেরেছিলেন, ‘আমার পরিচয় আমি তৈরি করিনি। রাজনৈতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী— এসব পরিচয় আমার দেওয়া নয়। আমি কৃষকের পোলা। আমি শুধু বাপের ঋণ শোধ করতে চাই।’ বরিশালের পোলা সচেতনভাবে হয়ে উঠেছেন ‘কৃষকের পোলা’— এইভাবেই তাঁর পরিচয় নানাভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছে। কোনো একটা ছক-বাঁধা পরিচয়ের মধ্যে তিনি নিজেকে আটকে রাখতে চাননি। যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন যে, সরদার ফজলুল করিমের অর্জনটা ঠিক কোথায়? তবে তার উত্তরে এইটেই বলার যে, নিজেকে গণ্ডীবদ্ধ না করে রাখাটাই সরদার স্যারের সবচেয়ে বড়ো অর্জন। এইটে তিনি অর্জন করতে পেরেছিলেন বলেই নিজেকে একজন মার্ক্সবাদী হিসেবে পরিচয় দেবার পরেও প্লেটো ও মার্ক্সের মধ্যে কোনো বিরোধ খুঁজে পাননি। সরদার ফজুলল করিম বলেছিলেন, ‘প্লেটো হচ্ছেন আইডিয়ালিস্ট আর মার্ক্স হচ্ছেন রিয়েলিস্ট। কিন্তু গভীরে ঢুকলে উভয়ের সাদৃশ্যই পরিস্ফুট হয়।’ সেইসঙ্গে তিনি এটিও জানিয়েছিলেন, ‘মার্ক্স প্লেটোকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আইডিয়ালিস্ট ফিলোসফার মনে করেন।’ তিনি আমাদের এইটিও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, ‘মার্ক্স হেগেলকেও ফেলে দেননি’। তাঁর আরও একটি পরিচয় এই যে, তিনি ছিলেন ‘নিউ হেগেলিয়ান।’
আবার এ-ও ঠিক যে তিনি তাঁর নিজের লক্ষ্য থেকে কখনও বিচ্যুত হননি। আমৃত্যু সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেছেন। তাঁর ভাষায়, ‘সমাজতন্ত্র: সমাজের ন্যায়সঙ্গত সঙ্গতিপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। যেখানে সুস্থ-সবল ব্যক্তিমাত্রই উৎপাদনশীল কর্মে রত হতে ইচ্ছুক এবং বাধ্য।’ সরদার ফজলুল করিম মনে করতেন যে, ‘সমাজতন্ত্র হচ্ছে যুক্তিবাদী মানুষের আদর্শ।’ আর সে-কারণেই, তাঁর ভাষায়, ‘মানুষের সমাজের জন্য সমাজতন্ত্র এক অপরিহার্য লক্ষ্য।’ সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য বিপ্লবের কোনো বিকল্প সহজ পথ তিনি কখনও খোঁজেননি। আর সেইসঙ্গে এই বিশ্বাসটিও তাঁর ছিল যে, ‘যথার্থভাবে কোথাও অর্জিত হয়নি বলে সমাজতন্ত্র আদর্শ হিসেবে ব্যর্থ হতে পারে না।’ তাঁর এই বিশ্বাসে কোনো ‘খাদ’ ছিল না। সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘সমাজতন্ত্রের পতন’ দেখে নিজের বিশ্বাস থেকে, বিপ্লবের আদর্শ থেকে আরো অনেকের মতো সরে দাঁড়াননি।
তিন.
মাও সে তুং তীব্রভাবেই বিশ্বাস করতেন, ‘বিপ্লব কোনো ভোজ-সভা নয়। প্রবন্ধ রচনা, বা চিত্রাঙ্কন কিংবা সূচিকর্ম নয়।’ তিনি এ-ও বিশ্বাস করতেন, এই বিপ্লব ‘এত সুমার্জিত, এত ধীর-স্থির ও সুশীল, এত নম্র, বিনীত সংযত ও উদার হতে পারে না।’ তার কারণ হচ্ছে, মাওয়ের ভাষায়, ‘বিপ্লব হচ্ছে বিদ্রোহ—উগ্র বলপ্রয়োগের কাজ।’ অন্যদিকে, সরদার ফজলুল করিমও মনে করতেন, “সমাজতন্ত্র ‘মরণচাঁদের রসগোল্লা” নয়; সমাজতন্ত্র সমাজের উৎপাদনের উপায়হীন মানুষের রক্ত শোষণকারী অবাঞ্ছিত কৃমিকীটের ওষুধবিশেষ: সমাজতন্ত্র মিষ্টি নয়, সমাজতন্ত্র চিরতার পানি।’ এসব থেকে আমরা বুঝে নিতে পারি যে নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, বরং বলপ্রয়োগের সক্রিয় বিপ্লবে সরদার ফজলুল করিমের আস্থা ছিল। ভলতেয়ার মনে করতেন, ‘তত্ত্বায়ন না করে আমাদের কাজ করে যাওয়া উচিত। জীবনকে সহনীয় করে তোলার এটাই একমাত্র পথ।’ সরদার ফজলুল করিম সেই কাজটাকেই সবসময় গুরুত্ব দিয়ে গিয়েছেন।
চার.
এইসব বিপ্লব, এইসব কাজের গুরুত্ব নিহিত রয়েছে একটাই উদ্দেশ্যের গভীরে, তার নাম হচ্ছে— জীবন, মানুষের জীবন। আর সেই জীবনের কোনো পরাজয় নেই, সেই ‘জীবন জয়ী হবে’— এটিই ছিল সরদার ফজলুল করিমের যাবতীয় চিন্তা ও কর্মের মূল প্রেক্ষণ বিন্দু। প্রবহমান জীবনের সেই নিরন্তর ধারাকে তিনি সৃষ্টিশীল কাজে ব্যবহারের জন্যে আজীবন উদগ্রীব ছিলেন। সেই কারণে সরদার ফজলুল করিমের জীবনটাকে আমরা বলতে পারি, প্রবাহিত জীবনের এক চতুর্মুখী উৎসধারা। বাইবেলের ভাষায়, এই মানুষটিকে বলা যায়: ‘সে জলস্রোতের তীরে রোপিত বৃক্ষের সদৃশ হইবে, যাহা যথাসময়ে ফল দেয়, যাহার পত্র ম্লান হয় না। আর সে যাহা কিছু করে, তাহাতেই কৃতকার্য্য হয়।’
লেখক: অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের দেশে শিল্প-সাহিত্য-নাটক-সংগীত-চলচ্চিত্র হারাম হিসেবে পরিগণিত হয় বিশেষ একটি গোষ্ঠীর কাছে। এই গোষ্ঠীর কাছে ধর্ম যতটা নয়, তারচেয়ে বেশি বড় রক্ষণশীলতা, তাই প্রতিটি জায়গায় এরা চরম প্রতিক্রিয়া দেখায়। জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর যা বোঝা যাচ্ছে, তা হলো বাংলাদেশ...
১৩ ঘণ্টা আগেউইকিপিডিয়ায় নির্বাচনের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এইভাবে: নির্বাচন হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জনগণ প্রশাসনিক কাজের জন্য একজন প্রতিনিধিকে বেছে নেয়। সপ্তদশ শতক থেকে আধুনিক প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে নির্বাচন একটি আবশ্যিক প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সম্প্রতি দেওয়া একাধিক বক্তৃতায় চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে আমরা নিজেরা চাঁদাবাজি করব না এবং কাউকে চাঁদাবাজি করতেও দেব না। ঘুষ কেউ নেবে না...
১৩ ঘণ্টা আগেদায়ী আমরা সবাই। তেজগাঁও ও কুর্মিটোলার বিমানবন্দর দুটি ১৯৪৫ সালে তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান যখন হলো, তখন তেজগাঁওয়ে বিমানবন্দর করা হলো বেশ বড় আকারে। এরপর ১৯৬৪ সালে নগরায়ণ ও জনসংখ্যা বাড়ার কারণে তেজগাঁওয়ের বদলে কুর্মিটোলার বিমানবন্দর বড় পরিসরে চালু করার পরিকল্পনা করা হয়।
২ দিন আগে