জামাল নজরুল ইসলাম—শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা বিশ্বে প্রথম সারির পদার্থবিজ্ঞানীদের কথা উঠলেই উচ্চারিত হয় এই নাম। মৌলিক পদার্থবিজ্ঞানে মতো অবদান রাখা বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে তিনি অনন্য। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ। সৃষ্টিতত্ত্ব, মহাবিশ্বের উৎপত্তি, কৃষ্ণবিবর (ব্ল্যাকহোল), আপেক্ষিকতা তত্ত্ব, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ, স্ট্রিং থিওরিসহ আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের বহু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। বৈশ্বিক বিজ্ঞানসমাজে তাঁর গবেষণার ফল গভীর প্রভাব রয়েছে। বিজ্ঞান গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০২৫ সালে তাঁকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) দেওয়া হয়েছে।
জামাল নজরুল ইসলামের শিক্ষক, বন্ধু আর সহপাঠীদের নাম শুনলে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যেতে পারে কারও কারও। কেমব্রিজে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন বিশ্বখ্যাত পদার্থ ও মহাকাশবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। ফ্রিম্যান ডাইসন, পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান, সুব্রামানিয়াম চন্দ্রশেখর, আবদুস সালাম, অমর্ত্য সেন ও অমিয় বাগচী, জয়ন্ত নারলিকার ও জিম মার্লিস—এঁরা সবাই ছিলেন জামাল নজরুলের ঘনিষ্ঠজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী। কেউ শিক্ষক, কেউ সহপাঠী, কেউ সহগবেষক, কেউবা বন্ধু।
জন্ম ও শিক্ষা
অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৩৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা খানবাহাদুর সিরাজুল ইসলাম ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের একজন সাব-জজ এবং তাঁর মা রাহাত আরা বেগম ছিলেন লেখক ও গায়িকা। ছোটবেলা থেকেই জামাল নজরুলের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল; বিশেষ করে পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে তাঁর আগ্রহ ছিল অত্যন্ত প্রবল।
এই বিজ্ঞানীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় কলকাতায়। পরে চট্টগ্রামে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে আবার কলকাতায় যান। সেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ স্নাতক শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান জামাল, সেখানে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
এই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ই বদলে দিয়েছে জামালের জীবন। বিশ্বখ্যাত এই বিদ্যাপীঠে গণিত ট্রাইপজের তিন বছরের কোর্স দুই বছরে শেষ করেন তিনি। গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডির পাশাপাশি লাভ করেন ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি। বলা বাহুল্য, বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকজন বিজ্ঞানী কেবল এই ডিগ্রি অর্জনের সম্মান লাভ করেছেন।
কেমব্রিজে থাকাকালীন তিনি পৃথিবী বিখ্যাত পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং, রজার পেনরোজ, ডেনিস শিয়ামা এবং অন্য শীর্ষ বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করেন। এখান থেকেই তিনি গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায় নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন এবং বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন এবং পরবর্তী গবেষণার জন্য ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক) এবং ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইএসএ) কাজ করেন।
বিজ্ঞান গবেষণায় অবদান
অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের গবেষণা ছিল অত্যন্ত মৌলিক এবং বৈশ্বিক। তিনি মহাবিশ্বের উৎপত্তি, কৃষ্ণবিবরের (ব্ল্যাকহোল) গঠন, আপেক্ষিকতা তত্ত্ব, স্ট্রিং থিওরি, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ও কসমোলজির জটিল সমীকরণ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তাঁর কাজের মধ্যে মহাবিশ্বের গঠন এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে বিস্তারিত তত্ত্ব অন্যতম, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহলে বিপ্লব সৃষ্টি করে।
তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত গবেষণাকর্ম হলো দি আলটিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স। ১৯৮৩ সালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত এই গবেষণা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়। এতে মহাবিশ্বের বিকিরণ, কৃষ্ণবিবরের গঠন ও কার্যপদ্ধতি, মহাকর্ষীয় তরঙ্গের তত্ত্ব এবং আপেক্ষিকতা তত্ত্বের গভীর বিশ্লেষণ ছিল।
বাংলাদেশের অনন্য পদার্থবিজ্ঞানী
কেমব্রিজে জয়জয়কার অবস্থার মধ্যেই সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন জামাল নজরুল। বিদেশে তিন দশকের বিলাসী জীবন ছেড়ে বাংলাদেশে ফিরে এলেন তিনি। কারণ, তিনি বিশ্বাস করতেন, দেশের বিজ্ঞান ও গবেষণা ক্ষেত্রে উন্নতি করতে হলে বিজ্ঞানীদের দেশেই ফিরে এসে কাজ করতে হবে। ১৯৮৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জীবনের শেষ ২৯ বছর দেশের মানুষের কল্যাণে বিজ্ঞান সাধনা আর অধ্যাপনায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি।
তাঁর হাতেই গড়ে ওঠে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট। ১৯৮৭ সালে এই বিভাগ উদ্বোধনে বাংলাদেশে এসেছিলেন নজরুলের প্রিয়জন পাকিস্তানের নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক আবদুস সালাম। ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণের পরও ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে জামাল নজরুল আমৃত্যু সংযুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করেন এবং তাঁদের বিশ্বমানের গবেষণায় পারদর্শী করার জন্য সহায়তা দেন। তাঁর নেতৃত্বে, বাংলাদেশে জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং মহাবিশ্ব গবেষণার নতুন দিক উন্মোচিত হয়। জামাল নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও মহাকাশবিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (বিআইএএস) প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করেন এবং তরুণ গবেষকদের আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করেন। তাঁর শিক্ষাদানে গবেষণা এবং জ্ঞানচর্চার প্রতি অনুরাগী নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি হয়, যারা তাঁর অনুসরণে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নিজেদের নিয়োজিত করেছে।
স্বাধীনতা পদকসহ যত সম্মাননা
২০২৫ সালে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার, যা তাঁর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অসামান্য অবদানকে সম্মান জানিয়ে তাঁকে দেওয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সের স্বর্ণপদক, একুশে পদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
অত্যন্ত সাদাসিধে জীবনযাপনকারী একজন মানুষ ছিলেন জামাল নজরুল ইসলাম। তিনি প্রচারবিমুখ ছিলেন। নিজের গবেষণা ও শিক্ষার প্রতি একাগ্র মনোযোগ ছিল তাঁর। বই পড়া, গবেষণা করা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জ্ঞান বিনিময় করা ছিল তাঁর প্রিয়।
২০১৩ সালের ১৬ মার্চ ৭৪ বছর বয়সে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে বিজ্ঞান ও শিক্ষাক্ষেত্রে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
জামাল নজরুল ইসলাম—শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা বিশ্বে প্রথম সারির পদার্থবিজ্ঞানীদের কথা উঠলেই উচ্চারিত হয় এই নাম। মৌলিক পদার্থবিজ্ঞানে মতো অবদান রাখা বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে তিনি অনন্য। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ। সৃষ্টিতত্ত্ব, মহাবিশ্বের উৎপত্তি, কৃষ্ণবিবর (ব্ল্যাকহোল), আপেক্ষিকতা তত্ত্ব, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ, স্ট্রিং থিওরিসহ আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের বহু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। বৈশ্বিক বিজ্ঞানসমাজে তাঁর গবেষণার ফল গভীর প্রভাব রয়েছে। বিজ্ঞান গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০২৫ সালে তাঁকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) দেওয়া হয়েছে।
জামাল নজরুল ইসলামের শিক্ষক, বন্ধু আর সহপাঠীদের নাম শুনলে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যেতে পারে কারও কারও। কেমব্রিজে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন বিশ্বখ্যাত পদার্থ ও মহাকাশবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। ফ্রিম্যান ডাইসন, পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান, সুব্রামানিয়াম চন্দ্রশেখর, আবদুস সালাম, অমর্ত্য সেন ও অমিয় বাগচী, জয়ন্ত নারলিকার ও জিম মার্লিস—এঁরা সবাই ছিলেন জামাল নজরুলের ঘনিষ্ঠজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী। কেউ শিক্ষক, কেউ সহপাঠী, কেউ সহগবেষক, কেউবা বন্ধু।
জন্ম ও শিক্ষা
অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৩৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা খানবাহাদুর সিরাজুল ইসলাম ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের একজন সাব-জজ এবং তাঁর মা রাহাত আরা বেগম ছিলেন লেখক ও গায়িকা। ছোটবেলা থেকেই জামাল নজরুলের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল; বিশেষ করে পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে তাঁর আগ্রহ ছিল অত্যন্ত প্রবল।
এই বিজ্ঞানীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় কলকাতায়। পরে চট্টগ্রামে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে আবার কলকাতায় যান। সেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ স্নাতক শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান জামাল, সেখানে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
এই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ই বদলে দিয়েছে জামালের জীবন। বিশ্বখ্যাত এই বিদ্যাপীঠে গণিত ট্রাইপজের তিন বছরের কোর্স দুই বছরে শেষ করেন তিনি। গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডির পাশাপাশি লাভ করেন ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি। বলা বাহুল্য, বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকজন বিজ্ঞানী কেবল এই ডিগ্রি অর্জনের সম্মান লাভ করেছেন।
কেমব্রিজে থাকাকালীন তিনি পৃথিবী বিখ্যাত পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং, রজার পেনরোজ, ডেনিস শিয়ামা এবং অন্য শীর্ষ বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করেন। এখান থেকেই তিনি গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায় নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন এবং বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন এবং পরবর্তী গবেষণার জন্য ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক) এবং ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইএসএ) কাজ করেন।
বিজ্ঞান গবেষণায় অবদান
অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের গবেষণা ছিল অত্যন্ত মৌলিক এবং বৈশ্বিক। তিনি মহাবিশ্বের উৎপত্তি, কৃষ্ণবিবরের (ব্ল্যাকহোল) গঠন, আপেক্ষিকতা তত্ত্ব, স্ট্রিং থিওরি, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ও কসমোলজির জটিল সমীকরণ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তাঁর কাজের মধ্যে মহাবিশ্বের গঠন এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে বিস্তারিত তত্ত্ব অন্যতম, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহলে বিপ্লব সৃষ্টি করে।
তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত গবেষণাকর্ম হলো দি আলটিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স। ১৯৮৩ সালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত এই গবেষণা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়। এতে মহাবিশ্বের বিকিরণ, কৃষ্ণবিবরের গঠন ও কার্যপদ্ধতি, মহাকর্ষীয় তরঙ্গের তত্ত্ব এবং আপেক্ষিকতা তত্ত্বের গভীর বিশ্লেষণ ছিল।
বাংলাদেশের অনন্য পদার্থবিজ্ঞানী
কেমব্রিজে জয়জয়কার অবস্থার মধ্যেই সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন জামাল নজরুল। বিদেশে তিন দশকের বিলাসী জীবন ছেড়ে বাংলাদেশে ফিরে এলেন তিনি। কারণ, তিনি বিশ্বাস করতেন, দেশের বিজ্ঞান ও গবেষণা ক্ষেত্রে উন্নতি করতে হলে বিজ্ঞানীদের দেশেই ফিরে এসে কাজ করতে হবে। ১৯৮৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জীবনের শেষ ২৯ বছর দেশের মানুষের কল্যাণে বিজ্ঞান সাধনা আর অধ্যাপনায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি।
তাঁর হাতেই গড়ে ওঠে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট। ১৯৮৭ সালে এই বিভাগ উদ্বোধনে বাংলাদেশে এসেছিলেন নজরুলের প্রিয়জন পাকিস্তানের নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক আবদুস সালাম। ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণের পরও ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে জামাল নজরুল আমৃত্যু সংযুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করেন এবং তাঁদের বিশ্বমানের গবেষণায় পারদর্শী করার জন্য সহায়তা দেন। তাঁর নেতৃত্বে, বাংলাদেশে জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং মহাবিশ্ব গবেষণার নতুন দিক উন্মোচিত হয়। জামাল নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও মহাকাশবিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (বিআইএএস) প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করেন এবং তরুণ গবেষকদের আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করেন। তাঁর শিক্ষাদানে গবেষণা এবং জ্ঞানচর্চার প্রতি অনুরাগী নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি হয়, যারা তাঁর অনুসরণে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নিজেদের নিয়োজিত করেছে।
স্বাধীনতা পদকসহ যত সম্মাননা
২০২৫ সালে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার, যা তাঁর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অসামান্য অবদানকে সম্মান জানিয়ে তাঁকে দেওয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সের স্বর্ণপদক, একুশে পদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
অত্যন্ত সাদাসিধে জীবনযাপনকারী একজন মানুষ ছিলেন জামাল নজরুল ইসলাম। তিনি প্রচারবিমুখ ছিলেন। নিজের গবেষণা ও শিক্ষার প্রতি একাগ্র মনোযোগ ছিল তাঁর। বই পড়া, গবেষণা করা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জ্ঞান বিনিময় করা ছিল তাঁর প্রিয়।
২০১৩ সালের ১৬ মার্চ ৭৪ বছর বয়সে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে বিজ্ঞান ও শিক্ষাক্ষেত্রে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
নেত্রকোনার রায়পুর আনোয়ারা উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মাসুদ মিয়া অবসরে গেছেন ২০২২ সালে। বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় অবসরকালীন আর্থিক সুবিধার আশায় চাকরিরত অবস্থায় নিয়মিত চাঁদা দিয়েছেন। অবসরের পর সেই সুবিধার জন্য আবেদন করে এখনো প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা পাননি।
৬ ঘণ্টা আগেদর-কষাকষি শেষে মুখে হাসি। গরুর গলায় বাঁধা রশির প্রান্ত ধরার হাতবদল। গরু নিয়ে বাড়ির পথ ধরা। এমন দৃশ্য গতকাল বুধবার বারবার চোখে পড়েছে রাজধানীর অস্থায়ী ও স্থায়ী পশুর হাটগুলোয়। দাম গতবারের চেয়ে বেশি না কম, এ নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও ব্যাপারীদের অপেক্ষা কেটে ঈদের ছুটি শুরুর আগেই জমেছে কোরবানির পশুর হাটগুলো।
৬ ঘণ্টা আগেজাতিসংঘ মনে করে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকা দরকার। জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস গতকাল বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
৬ ঘণ্টা আগেপবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শুরু আজ বৃহস্পতিবার থেকে। তবে গতকাল বুধবার দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ভিড় জমে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপনে কর্মস্থল ঢাকা ছাড়তে উন্মুখ তারা। যানবাহনের চাপে বিভিন্ন মহাসড়কে দ
৭ ঘণ্টা আগে