Ajker Patrika

অনিয়ম-দুর্নীতির বেনামি অভিযোগও খতিয়ে দেখবে সরকার

উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২: ০০
অনিয়ম-দুর্নীতির বেনামি অভিযোগও খতিয়ে দেখবে সরকার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ বেনামি হলেও তার সত্যতা খতিয়ে দেখতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেছেন, শুধু নিজেরা সৎ থাকলেই হবে না; মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সংস্থাগুলোতে কী হচ্ছে, তার দায়িত্বও নিতে হবে। কঠোর নজরদারি করতে হবে। কারও অনিয়ম ও দুর্নীতি পাওয়া গেলে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যেন মানুষ মনে করে সরকার দুর্নীতি নির্মূল করতে চায়।

সচিবালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিব সভায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের এমন সব নির্দেশনাই দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সভায় বলা হয়, আর্থিক সাশ্রয়ের জন্য প্রকল্পের প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) ও ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপট্যান্স টেস্টের (এফএটি) জন্য বিদেশযাত্রা বন্ধ করতে হবে। জনবান্ধব ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ছাড়া অন্য প্রকল্পের বিষয়ে ধীরে চলো নীতিতে চলতে হবে। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট ও সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অত্যন্ত দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সচিবের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিকেল সাড়ে ৪টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সচিব সভা শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে। অন্তত ৭০ জন সচিব বৈঠকে অংশ নেন। এতে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ ৮ থেকে ১০ জন সচিব। বৈঠকে দুর্নীতি প্রতিরোধে সচিবেরা নানা ধরনের মতামত তুলে ধরেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অঢেল সম্পদ অর্জনের খবরে বিব্রত প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। অনেকের বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতির খবর আসছে গণমাধ্যমে। যাঁদের নামে পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে বেনামে আগেও অভিযোগ এসেছিল, কিন্তু পাত্তা দেওয়া হয়নি। সভায় স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, অভিযোগ বেনামে হলেও তার সত্যতা খতিয়ে দেখতে হবে। প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী নাম প্রকাশ করবে না, এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং, বেনামি বলে তা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নামে-বেনামে হলেও তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।

অপর একজন সচিব জানান, মূলত দেশের রিজার্ভ ঠিক রাখতে অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতেই সচিবদের ডেকেছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। দিনে দিনে রিজার্ভ কমছে। সরকারি টাকায় বিদেশভ্রমণ পরিপত্রের মাধ্যমে বন্ধ করা হলেও তা এখন মানছেন না কর্মকর্তারা। প্রকল্পের যন্ত্রপাতি কেনা, অভিজ্ঞতা নেওয়াসহ নানা অসিলায় কর্মকর্তারা বিদেশে যাচ্ছেন। এভাবে বিদেশযাত্রা বন্ধ করতে প্রকল্পের পিএসআই সম্পূর্ণ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। আর্থিক সাশ্রয়ে গত বছরের পরিপত্র যথাযথভাবে পালন করা এবং এর কঠোর মনিটর করতে বলেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের ব্রিফ্রিং
সভা শেষে আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকের অবহিত করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, দ্রুত ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা যুগোপযোগী করে নতুন বিধিমালা এবং ২০১২ সালের শুদ্ধাচার নীতিমালা সংশোধন করা হচ্ছে।

মাহবুব হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা শুদ্ধাচার বিষয়ে কিছু আলোচনা করেছি, বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছি এবং নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আলোচনা করেছি। কিছু দাপ্তরিক কাজে প্রধানমন্ত্রী সময়ে সময়ে যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন, সেগুলো যাতে যত্নসহকারে গুরুত্ব দিয়ে অনুসরণ করা হয়, সে ব্যাপারে তাদের (সচিব) পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত