Ajker Patrika

আলোচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সরকারপ্রধান হওয়ার শর্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আলোচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সরকারপ্রধান হওয়ার শর্ত

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে আজ শনিবার বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ছয়টি ইসলামি দল ও ইসলামি আন্দোলন, এলডিপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশ জাসদ, গণফোরাম এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় হয়। এতে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, আদিলুর রহমান খান, আসিফ মাহমুদ এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। 

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো এবং একজন টানা দুই মেয়াদে সরকার প্রধান হতে পারবেন না—মতবিনিময় সভায় এমন আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। 

তিনি জানান, ইসলামি দলগুলো তাদের নেতা–কর্মীদের নামে থাকা মামলাগুলো এক মাসের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি করেছে। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, ২০১৬ সাল এবং ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আসেন, তখন প্রতিবাদ বিক্ষোভে অনেক লোক মারা গেছেন। এ তিন ঘটনায় নতুন করে তদন্ত দাবি করেছে ৬টি ইসলামি দল। 

রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান পরিবর্তন নাকি পুনর্লিখন চায় সে বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অনুরোধ করেছেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, জাতীয় পার্টির কয়েকজন সংবিধান সংশোধনের কথা বলেছেন। আবার আরেকজন বলেছেন, ফ্রেমওয়ার্কটা রেখে সংবিধান নতুন করে লেখা যায়। এ নিয়ে আরও বাস্তবসম্মত মতামত প্রধান উপদেষ্টা চান। গণফোরামের ক্ষেত্রেও একই বিষয়। 

বর্তমান সরকারের সময়কাল নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল বক্তব্য দেয়নি বলে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘বৈঠকে সময় নিয়ে কিছু বলেননি। সবাই বলছেন, আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে। আস্থা প্রকাশ করছেন। সবাই ধৈর্য ধরছেন। মনে হয় পুরো জাতি ধৈর্য ধরছেন।’ 

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে শনিবারের বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেন, ‘রাষ্ট্রের সংস্কার ও নির্বাচনী রূপরেখা নিয়ে অনেকের মনে সংশয়–সন্দেহ আশঙ্কা আছে। উনি (প্রধান উপদেষ্টা) মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে শুনতে চেয়েছেন তারা আসলে কী ধরনের সংস্কার চায়, ক্ষমতা পরিবর্তনের রূপরেখা কীভাবে চায়, কীভাবে নির্বাচন তারা নির্বাচনী রূপান্তর দেখতে চাচ্ছেন। এসব বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন।’ 

আরেক প্রশ্নের জবাবে উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেন, ‘সংবিধান সংশোধন নিয়ে অনেক প্রস্তাব এসেছে। একটা হলো সাংবিধানিক পরিষদ। সংবিধানে যে সংশোধনী হয়েছে সেগুলো যদি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয় সে ক্ষেত্রে আদালতের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসবে, কী করে পরিবর্তন হবে। আবার রাজনৈতিক দলগুলো পরামর্শ দিয়েছে। কেউ কেউ গণভোটের কথা বলেছেন। আবার কেউ কেউ সংবিধান কমিশন করে কী ধরনের পরিবর্তন আসবে, সেটা ধরে পরবর্তী সরকার এসে অনুমোদন করবে। তবে এটা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব আসেনি। প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে লিখিত মতামত দিতে বলেছেন। সেগুলো স্টাডি করে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন অথবা পরিবর্তন, পরিমার্জন যেটার প্রয়োজন হয় সেটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’ 

শনিবার ছয়টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডিঅপরাধীদের প্রতি যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয় সে বিষয়েও মতবিনিময় সভায় আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। 

রাজনৈতিক দলগুলো অনেকগুলো সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আশাবাদ শুনতে পেয়েছেন। তিনিও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে সবার সঙ্গে মিলে, সবগুলো রাজনৈতিক দল ও প্ল্যাটফর্মকে সঙ্গে নিয়ে আগামীর রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা শিগগিরই উপস্থাপন করবেন।’ 

মতবিনিময় সভায় অনেকগুলো প্রশ্ন উঠেছে জানিয়ে মাহফুজ বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার কীভাবে হবে, বিচারের প্রক্রিয়া কী হবে—এসব প্রশ্ন এসেছে।’ 

সংবিধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধান কি সংস্কার করব, নাকি পুনরায় লেখা হবে—সেটা নিয়ে বারবার আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে রাজনৈতিক দলগুলো দেশের সংকট উপস্থাপন করেছে। প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে আশ্বস্ত করেছেন। বলেছেন, খুব দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে। খুব দ্রুত সামলিয়ে নেবেন।’ 

মাহফুজ আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সবার মতামতের ভিত্তিতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে চান। যার মাধ্যমে ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করেছেন সেটা সুদৃঢ় হবে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের একটা পরিবর্তনের জন্য একটা দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের উদ্যোগ নিতে পারবেন। এ মিশনের অংশ হচ্ছে মতবিনিময় সভা, যাতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত