জুনের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় দফায় সংলাপ করবে ঐকমত্য কমিশন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে আগামী মাসের (জুন) প্রথম সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সংলাপ শুরু করবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সংলাপের উদ্বোধন করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় আজ সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের অন্য সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা এ সময় সংস্কারপ্রক্রিয়া ও নির্বাচন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নাগরিক সমাজ ও তৃণমূলের সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করে জনসচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে হবে। কেউ যেন ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিতে না পারে, সে বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে হবে। শৃঙ্খলা আনতে হবে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপদ ভোটের আয়োজন করতে হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এত বড় অভ্যুত্থানের পর যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছিলাম, এটা যেন তেমন বাংলাদেশই রয়ে না যায়।’

বৈঠকে অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে অনিয়মের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের ভূমিকা তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, এ বিষয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে।

কমিশনের সদস্য আইয়ুব ভূঁইয়া অবিলম্বে জনপ্রশাসন সংস্কার বাস্তবায়ন কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এনবিআর সংস্কারে জনপ্রশাসন কমিশনের সুপারিশ ছাড়া আরও দুটি কমিশন কাজ করেছে, ফলে একধরনের সমন্বয়হীনতা সৃষ্টি হয়েছে।

বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি এমদাদুল হক রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে যে কমিশন গঠন করা হয়েছে, তা যেন স্বচ্ছভাবে কাজ করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে আহ্বান জানান।

দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান প্রাথমিকভাবে গঠিত ছয়টি কমিশনের বাইরে গণমাধ্যম, শ্রম, স্থানীয় সরকার, নারী ও স্বাস্থ্যবিষয়ক যে সংস্কার কমিশনগুলো গঠিত হয়েছে, সেগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান জানান।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য প্রণীত খসড়া প্রস্তাবটি অধ্যাদেশ আকারে প্রকাশ করার আহ্বান জানান।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি সফর রাজ হোসেন।