জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
শর্ত সাপেক্ষে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের প্রস্তাবে একমত বিএনপি। এ ক্ষেত্রে দলটির শর্ত—সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি করা যাবে না। তাই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণে অধিকাংশ দল একমত হলেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গেল ঝুলে। আবার জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) পরিবর্তে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির প্রস্তাবেও ঐকমত্য আটকে গেছে বিএনপি দ্বিমতের কারণে। অন্যদিকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিবিষয়ক প্রস্তাবটি বামপন্থীদের বিরোধিতার কারণে স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে কমিশন পেশ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ষষ্ঠ দিনে এসব আলোচনা হয়। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বেলা ১১টা থেকে সংলাপ শুরু হয়। দুপুর ১২টার পরে ২০ মিনিট এবং দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টার পরে অধিবেশন মুলতবি হয়। গতকালের আলোচনায় সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে কমিটি গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকালের বিষয়টি আলোচনায় আনার প্রস্তাব করেন। তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে আলোচনা করতে চাইলে তাঁরা স্বাগত জানাবেন। এক ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, এ প্রস্তাবে বিএনপি একমত। তবে সে ক্ষেত্রে কোনো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় নিয়োগে কমিটি এ জাতীয় ধারণার সঙ্গে একমত নয়। দুটি কো-রিলেটেড। তিনি বলেন, এনসিসি বা এ ধরনের কমিটির বিধান রাখতে হলে তাঁরা সে ক্ষেত্রে একমত নন। সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য এখন যেসব আইন আছে, সেগুলো আরও শক্তিশালী করা এবং যেসব ক্ষেত্রে আইন নেই, সেসব ক্ষেত্রে আইন করার পক্ষে তাঁরা।
একপর্যায়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, কমিটির বিষয়টি বিএনপি মেনে নিল আর প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হলো, এমন হয় কি না? তখন সালাহউদ্দিন বলেন, আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ সীমাহীন করা যাবে না বলা হয়েছে। এখন কেন বিবেচনা করার কথা বলা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, এ প্রস্তাবে অধিকাংশ দল একমত বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি বাদে অধিকাংশ দল যেহেতু এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছে, এখন বাস্তবায়নের দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশনের। আমরা দেখি তারা কী করে।’
বৈঠক শেষে আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে সর্বশেষ বলা হয়েছে, সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কোনো ধরনের কমিশন বা কমিটি যদি তৈরি করা হয়, তাহলে তারা প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল ১০ বছরের বিষয়টি আবার বিবেচনা করবে। এই আলোচনায় আমরা কোনো রকম ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারিনি।’
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগের জন্য জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। কমিশনের এনসিসির নাম ও কাঠামো নিয়ে দলগুলো দ্বিমত জানিয়েছিল। অন্যদিকে বিএনপি এনসিসি ধারণার সঙ্গেই একমত নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এনসিসি বাদ দিয়ে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নামে সংশোধিত প্রস্তাব পেশ করে কমিশন; যাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির নাম বাদ দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, নিম্ন ও উচ্চকক্ষের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত অন্য দলের একজন সদস্য, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি এবং প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি থাকবেন। তাঁরা শুধু সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ দেবেন। অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। তবে এতে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমে যাবে দাবি করে সংশোধিত প্রস্তাবটিতে দ্বিমত পোষণ করে বিএনপি। এ ছাড়া এনডিএম, বিএলডিপি, এনপিপি ও লেবার পার্টিও প্রস্তাবটির বিরোধিতা করে।
এনসিসির বিষয়ে বিরোধিতা করলেও এলডিপি, সিপিবি, বাসদ ও গণফোরাম সংশোধিত প্রস্তাবের পক্ষে একমত বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া জামায়াত, এনসিপি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্যসহ বৈঠকে উপস্থিত দলগুলো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির বিষয়ে একমত প্রকাশ করে।
দিনের আলোচনার শুরুতে সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি প্রস্তাব দিয়েই শুরু হয়েছিল। সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবে মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছে। তবে বিদ্যমান মূলনীতি অক্ষুণ্ন থাকবে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেনি কমিশন। বিদ্যমান সংবিধানের চার মূলনীতি হচ্ছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।
গত বৃহস্পতিবারের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নতুন প্রস্তাব হাজির করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তাতে বলা হয়, সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি’ উল্লেখিত হবে। তবে এই প্রস্তাব নিয়েও একমত হতে পারেনি দলগুলো। সিপিবি, বাসদ, গণফোরামসহ বামপন্থী দলগুলো বিদ্যমান মূলনীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত মূলনীতি যুক্ত করার পক্ষে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, আল্লাহর ওপর আস্থার বিষয়টি এখানে উল্লেখ করা হয়নি। কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সূক্ষ্মভাবে এড়িয়ে গেছে।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি রেখে নতুন কিছু একীভূত করা সংগতিপূর্ণ হবে না। বাহাত্তর বা পঞ্চম সংশোধনীতে না গিয়ে মূলনীতিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার, ধর্মীয় পক্ষপাতহীনতা যোগ করা যেতে পারে। তাঁরা বাহাত্তরের চার মূলনীতির প্রতিস্থাপন চান।
আলোচনার একপর্যায়ে আবার নতুন করে প্রস্তাব তোলা হয়। বর্তমান মূলনীতি অব্যাহত রাখা বা পরিবর্তন সাপেক্ষে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি’ উল্লেখ করা হবে। তবে তাতেও সবাই একমত হতে পারেনি। একপর্যায়ে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, তিনি একা সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন না। কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আলোচনার জন্য কিছু সময় বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির পর তিনি জানান, এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
বৈঠক শেষে আলী রীয়াজ বলেন, বিদ্যমান সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি অটুট রাখার বিষয়ে কয়েকটি দল মতামত দিয়েছে; আবার কয়েকটি দল ভিন্ন মতামত দিয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত কোনো ঐকমত্য তৈরি হয়নি। তবে সাম্য মানবিক মর্যাদা, গণতন্ত্র, সামাজিক সুবিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্প্রীতি এবং পক্ষপাতহীনতা—এই পাঁচ বিষয় উল্লেখ করার পক্ষে অধিকাংশ দলের সম্মতি রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন এ বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে পেশ করবে।
শর্ত সাপেক্ষে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের প্রস্তাবে একমত বিএনপি। এ ক্ষেত্রে দলটির শর্ত—সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি করা যাবে না। তাই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণে অধিকাংশ দল একমত হলেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গেল ঝুলে। আবার জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) পরিবর্তে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির প্রস্তাবেও ঐকমত্য আটকে গেছে বিএনপি দ্বিমতের কারণে। অন্যদিকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিবিষয়ক প্রস্তাবটি বামপন্থীদের বিরোধিতার কারণে স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে কমিশন পেশ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ষষ্ঠ দিনে এসব আলোচনা হয়। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বেলা ১১টা থেকে সংলাপ শুরু হয়। দুপুর ১২টার পরে ২০ মিনিট এবং দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টার পরে অধিবেশন মুলতবি হয়। গতকালের আলোচনায় সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে কমিটি গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকালের বিষয়টি আলোচনায় আনার প্রস্তাব করেন। তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে আলোচনা করতে চাইলে তাঁরা স্বাগত জানাবেন। এক ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, এ প্রস্তাবে বিএনপি একমত। তবে সে ক্ষেত্রে কোনো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় নিয়োগে কমিটি এ জাতীয় ধারণার সঙ্গে একমত নয়। দুটি কো-রিলেটেড। তিনি বলেন, এনসিসি বা এ ধরনের কমিটির বিধান রাখতে হলে তাঁরা সে ক্ষেত্রে একমত নন। সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য এখন যেসব আইন আছে, সেগুলো আরও শক্তিশালী করা এবং যেসব ক্ষেত্রে আইন নেই, সেসব ক্ষেত্রে আইন করার পক্ষে তাঁরা।
একপর্যায়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, কমিটির বিষয়টি বিএনপি মেনে নিল আর প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হলো, এমন হয় কি না? তখন সালাহউদ্দিন বলেন, আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ সীমাহীন করা যাবে না বলা হয়েছে। এখন কেন বিবেচনা করার কথা বলা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, এ প্রস্তাবে অধিকাংশ দল একমত বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি বাদে অধিকাংশ দল যেহেতু এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছে, এখন বাস্তবায়নের দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশনের। আমরা দেখি তারা কী করে।’
বৈঠক শেষে আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে সর্বশেষ বলা হয়েছে, সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কোনো ধরনের কমিশন বা কমিটি যদি তৈরি করা হয়, তাহলে তারা প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল ১০ বছরের বিষয়টি আবার বিবেচনা করবে। এই আলোচনায় আমরা কোনো রকম ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারিনি।’
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগের জন্য জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। কমিশনের এনসিসির নাম ও কাঠামো নিয়ে দলগুলো দ্বিমত জানিয়েছিল। অন্যদিকে বিএনপি এনসিসি ধারণার সঙ্গেই একমত নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এনসিসি বাদ দিয়ে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নামে সংশোধিত প্রস্তাব পেশ করে কমিশন; যাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির নাম বাদ দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, নিম্ন ও উচ্চকক্ষের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত অন্য দলের একজন সদস্য, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি এবং প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি থাকবেন। তাঁরা শুধু সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ দেবেন। অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। তবে এতে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমে যাবে দাবি করে সংশোধিত প্রস্তাবটিতে দ্বিমত পোষণ করে বিএনপি। এ ছাড়া এনডিএম, বিএলডিপি, এনপিপি ও লেবার পার্টিও প্রস্তাবটির বিরোধিতা করে।
এনসিসির বিষয়ে বিরোধিতা করলেও এলডিপি, সিপিবি, বাসদ ও গণফোরাম সংশোধিত প্রস্তাবের পক্ষে একমত বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া জামায়াত, এনসিপি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্যসহ বৈঠকে উপস্থিত দলগুলো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির বিষয়ে একমত প্রকাশ করে।
দিনের আলোচনার শুরুতে সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি প্রস্তাব দিয়েই শুরু হয়েছিল। সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবে মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছে। তবে বিদ্যমান মূলনীতি অক্ষুণ্ন থাকবে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেনি কমিশন। বিদ্যমান সংবিধানের চার মূলনীতি হচ্ছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।
গত বৃহস্পতিবারের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নতুন প্রস্তাব হাজির করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তাতে বলা হয়, সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি’ উল্লেখিত হবে। তবে এই প্রস্তাব নিয়েও একমত হতে পারেনি দলগুলো। সিপিবি, বাসদ, গণফোরামসহ বামপন্থী দলগুলো বিদ্যমান মূলনীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত মূলনীতি যুক্ত করার পক্ষে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, আল্লাহর ওপর আস্থার বিষয়টি এখানে উল্লেখ করা হয়নি। কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সূক্ষ্মভাবে এড়িয়ে গেছে।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি রেখে নতুন কিছু একীভূত করা সংগতিপূর্ণ হবে না। বাহাত্তর বা পঞ্চম সংশোধনীতে না গিয়ে মূলনীতিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার, ধর্মীয় পক্ষপাতহীনতা যোগ করা যেতে পারে। তাঁরা বাহাত্তরের চার মূলনীতির প্রতিস্থাপন চান।
আলোচনার একপর্যায়ে আবার নতুন করে প্রস্তাব তোলা হয়। বর্তমান মূলনীতি অব্যাহত রাখা বা পরিবর্তন সাপেক্ষে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি’ উল্লেখ করা হবে। তবে তাতেও সবাই একমত হতে পারেনি। একপর্যায়ে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, তিনি একা সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন না। কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আলোচনার জন্য কিছু সময় বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির পর তিনি জানান, এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
বৈঠক শেষে আলী রীয়াজ বলেন, বিদ্যমান সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি অটুট রাখার বিষয়ে কয়েকটি দল মতামত দিয়েছে; আবার কয়েকটি দল ভিন্ন মতামত দিয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত কোনো ঐকমত্য তৈরি হয়নি। তবে সাম্য মানবিক মর্যাদা, গণতন্ত্র, সামাজিক সুবিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্প্রীতি এবং পক্ষপাতহীনতা—এই পাঁচ বিষয় উল্লেখ করার পক্ষে অধিকাংশ দলের সম্মতি রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন এ বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে পেশ করবে।
স্বাস্থ্যের দুটি বড় প্রকল্প; বাস্তবায়ন কাল ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৯ সালের জুন। বিস্তারিত প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুযায়ী, মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ১৯ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। এত বড় প্রকল্প গ্রহণের আগে চালানো হয়নি কোনো প্রকার সমীক্ষা, এমনকি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই পর্যন্ত করা হয়নি। শুধু তা-ই নয়,
৫ ঘণ্টা আগেসরকার মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স (শূন্য সহনশীলতা)’ নীতির কথা বললেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ২০২০ সাল থেকে পাঁচ বছরে নিম্ন আদালতে রায় হওয়া মামলার ৫৭ শতাংশেরই আসামি খালাস পেয়েছেন। এসব মামলার রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে কোনো আপিলও করা হয়নি। এজাহার থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে সংশ্লিষ্ট
৭ ঘণ্টা আগেফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, থ্রেডস, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেটাকে সামাজিক সম্প্রীতি ব্যাহত করে এবং ঘৃণা ছড়ায় এমন অপতথ্যের মোকাবিলায় আরও কার্যকর উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
১২ ঘণ্টা আগেগণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার গঠনের দিন ৮ আগস্টকে নতুন বাংলাদেশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
১৩ ঘণ্টা আগে