Ajker Patrika

বিমানবন্দরের আগুন নেভাতে ২৬ ঘণ্টা লাগার পাঁচ কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৫৫
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রায় সাড়ে ২৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে লাগা আগুন নেভাতে। কেন এত সময় লাগল—এর পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।

আজ রোববার বিকেলে কার্গো ভিলেজ এলাকায় ৮ নম্বর গেটের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে কারণগুলো তুলে ধরেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক বলেন, প্রথমত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য বস্তুর (কম্বাস্টিবল ম্যাটেরিয়াল) আধিক্য, দ্বিতীয়ত স্টিল স্ট্রাকচারের তাপ শোষণ, তৃতীয়ত অপরিষ্কার ও গাদাগাদি পরিবেশ, চতুর্থত অগ্নিনিরাপত্তা-ব্যবস্থার ঘাটতি এবং সর্বশেষ ছোট ছোট স্টিলের স্ট্রাকচার কেটে ভেতরে প্রবেশ করায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘণ্টা আর পুরোপুরি নির্বাপণ করতে লাগে সাড়ে ২৬ ঘণ্টা।

আগুন নিয়ন্ত্রণে একযোগে কাজ করেন ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটসহ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কার্গো ভিলেজের কাস্টম হাউসের অংশ ও এর সামনের অংশগুলোতে অনেক উচ্চমাত্রার দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল, যার লোড ছিল অনেক বেশি। এই অতিরিক্ত দাহ্যের কারণে আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। স্টিলের স্ট্রাকচারের ইস্যুটা অনেক বেশি। এই স্ট্রাকচার তাপ অনেক শোষণ ও নির্গত করে। এই উচ্চ তাপমাত্রার কারণেও আগুন পুরোপুরি নেভাতে বিলম্ব হয়। কার্গো কমপ্লেক্সের ভেতরের পরিবেশ ছিল অত্যন্ত গাদাগাদি ও সরু।

‘এ ছাড়া ভেতরে ছোট ছোট কম্পার্টমেন্ট বা ঘরের মতো করে ভাগ করা ছিল। ফলে ফায়ার ফাইটারদের পক্ষে ভেতরে প্রবেশ করা ও আগুন নেভানোর কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কনফাইনড স্পেস (বদ্ধ জায়গা) ও অনেক দাহ্য পদার্থ—এসব কিছু মিলিয়ে আমাদের এটাকে বিভিন্ন ফায়ার হুক দিয়ে উল্টে-পাল্টে তারপর আস্তে আস্তে নির্বাপণ করতে হয়েছে। সময় বেশি লেগেছে এ জন্য।’

অভিযোগ উঠেছে, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে কার্গো ভিলেজে অগ্নিনিরাপত্তা-ব্যবস্থার ঘাটতি ছিল। অ্যাকটিভ (যেমন ফায়ার অ্যালার্ম, ডিটেকশন সিস্টেম) অথবা প্যাসিভ (যেমন স্বয়ংক্রিয় প্রটেকশন সিস্টেম বা স্প্রিংকলার)—কোনো ধরনের ডিটেকশন ও প্রটেকশন সিস্টেমই সেখানে ছিল না।

এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিষয় আমরা এখানে পাইনি; যে কারণে আমাদেরও বেগ পেতে হয়েছে।’

অগ্নিকাণ্ডে আহত ব্যক্তিদের সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের দুজন এবং আনসার বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডে অবকাঠামোগত ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশি তাপমাত্রার কারণে ভবনটি অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। বেশ কিছু ফাটল ধরেছে, কলামেও ফাটল দেখা গেছে। এ বিষয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে জরিপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেতরে থাকা ওষুধ ও বিভিন্ন বাই প্রোডাক্ট থেকে কেমিক্যাল এজেন্ট তৈরি হওয়ায় কিছুটা পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও মিরপুরের কেমিক্যাল গোডাউনের মতো অতটা তেজস্ক্রিয়তা বা বড় ধরনের প্রভাব নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রাহকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার জেলহাজতে

পুরান ঢাকায় বাসার সিঁড়িতে জবি ছাত্রদল নেতার রক্তাক্ত লাশ

টিকটকে প্রেম, বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে রাঙামাটিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার কিশোরী

একের পর এক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জরুরি বৈঠক

৪৯তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১২১৯

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত