Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

দেশের উপকূলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলায় জরুরি সেবা চালু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি সেবা ৯৯৯ সেল চালু করা হয়েছে। যে কোনো অভিযোগ বা প্রয়োজনে এই নম্বরে কল দিয়ে সেবা পাওয়া যাবে। 

আজ রোববার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলার প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় মানুষকে সচেতন করতে উপকূল এলাকায় গত তিন দিন ধরে মাইকিং করছে। তারা প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী জোড়ার রেখেছে। আজ (রোববার) রাত অনুমান ৯টা থেকে রাত ১২টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানবে। দেশের প্রতিটি নিরাপত্তাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। কোস্টগার্ড উপকূলের ৫৭টি স্থানে মাইকিং করছে। একই সঙ্গে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ বোটের সঙ্গে কিছু রিলিফও তারা জোগাড় করে রেখেছে।’ 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উপকূল পেরিয়ে লোকালয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আঘাত হানবে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয়, সে জন্য সকলের সঙ্গে পরামর্শ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করেছে। সভায় বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ড, র‍্যাব, ফায়ার সার্ভিস, আইজি (প্রিজন), সচিবসহ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাও এখানে উপস্থিত ছিলেন। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ত্রাণসামগ্রীর প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নৌপুলিশ এবং জেলা পুলিশ কাজ করছে। লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা কাজ করছে। বাংলাদেশ আনসার এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গত ৪ দিন যাবৎ ১০ হাজার সদস্যকে ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন এবং পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য সেখানে অবস্থান করছে। 

তিনি বলেন, বিজিবি এবং র‍্যাব আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে। সুন্দরবন এলাকায় বিজিবির ছোট ছোট বিওপি সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে কিছু ধ্বংস হলে, ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য র‍্যাব প্রস্তুত রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ এবং র‍্যাব অবস্থান নিয়েছে। 

উপকূলীয় অঞ্চলে কারাগার ও আসামিদের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জের কারাগারে হঠাৎ করে বন্যা আসায় দুই থেকে তিন ফুট পানি ঢুকেছিল। সে জন্য উপকূলীয় কারাগারগুলোতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইজি (প্রিজন) প্রস্তুতি নিয়েছেন। উপকূলীয় এলাকার কারাগারে বন্দীদের অন্য নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া বা তাদের খাদ্য সামগ্রীর যাতে কোনো ঘাটতি না হয়, সেগুলোরও তারা একটা প্রস্তুতি নিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, দেশের উপকূলীয় এলাকায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ভি-সেট নেটের মাধ্যমে কোস্টগার্ড লাইভ মনিটরিং করছে। ফায়ার সার্ভিস পুরো উপকূলীয় এলাকায় তিনটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় পাঁচ হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছে। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানেই লোকজনকে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তুত থাকবে। উপকূলীয় এলাকা এবং দেশব্যাপী ফায়ার সার্ভিস এই কাজগুলো করবে। প্রচুর বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে পার্বত্য এলাকায় ভূমিধস প্রতিরোধে ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীরা প্রস্তুত রয়েছে। 

এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে রাস্তাঘাট ও স্থাপনা মেরামত এবং অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট জনবল ও স্বেচ্ছাসেবীরা প্রস্তুত রয়েছেন। যাতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। দুর্যোগকালীন কিংবা পরবর্তী সময়ে লুটপাটের ঘটনা এড়াতেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত