Ajker Patrika

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা জাতিসংঘের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা জাতিসংঘের

অস্থিতিশীল দেশগুলোয় শান্তি রক্ষায় অবদানের জন্য বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করেছেন ঢাকা সফররত জাতিসংঘের দুই আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জাঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স ও ক্যাথরিন পোলার্ড। বিশ্ব সংস্থাটির দুই শীর্ষ কর্মকর্তা শান্তিরক্ষা মিশনে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকারও প্রশংসা করেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের সভার প্রস্তুতি বৈঠকে যোগ দিতে এই দুই কর্মকর্তা ঢাকা সফর করছেন। 

আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের সম্পর্কে তাঁদের মনোভাবের কথা জানান। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। 

জাঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স বলেন, জাতিসংঘ সফলভাবে তাঁর শান্তিরক্ষা অভিযানের ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে। 

বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের নয়টি শান্তিরক্ষা মিশনে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার বাংলাদেশি নারী-পুরুষ নিযুক্ত রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের শান্তিরক্ষীরা জাতিসংঘ মিশনে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও পেশাদারি অবদান রেখে আসছে। 

ক্যাথরিন পোলার্ড যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতন রোধে ট্রাস্ট ফান্ডে বাংলাদেশের অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। 

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নারী নিরাপত্তা এবং (জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে) নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ এ বিষয়ে তদন্তের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। 

জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এবং তাঁর সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নিজস্ব অর্থায়নে প্রশমন ও অভিযোজন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। 

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত উপস্থিত ছিলেন। 

জাতিসংঘ কর্মকর্তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন। 

জাতিসংঘ কর্মকর্তারা মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে আফ্রিকার দেশ মালিতে শান্তিরক্ষা বাহিনীর নানান সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। আগামী ডিসেম্বরে ঘানায় শান্তিরক্ষা মিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকায় দুই দিনের প্রস্তুতিমূলক বৈঠক রোববার সকালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে শুরু হয়। 

প্রস্তুতিমূলক বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা মিশনে বৈষম্য ও যৌন হয়রানির কোনো সুযোগ নেই। তিনি এই ধরনের নেতিবাচক প্রবণতা রোধে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। 

সব শান্তিরক্ষী যেন নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশে কাজ করতে পারে, তার কৌশল খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন পররাষ্ট্রসচিব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...