Ajker Patrika

অনুদান সংকট ও মুদ্রাস্ফীতিতে ভুগছে রোহিঙ্গারা, সহায়তার আহ্বান কারিতাসের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অনুদান সংকট ও মুদ্রাস্ফীতিতে ভুগছে রোহিঙ্গারা, সহায়তার আহ্বান কারিতাসের

রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর বর্তমানে সবচেয়ে বেশি অনুদান সংকটে ভুগছে রোহিঙ্গা। বিশ্বব্যাপী অনুদানের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এর সঙ্গে দিন দিন মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যান্য তহবিলও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের মানসম্পন্ন ও মানবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসীকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি সহায়তা সংস্থা কারিতাস। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে কারিতাস আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যালিস্টার ডাটন। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সেখানকার সার্বিক অবস্থা তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে অ্যালিস্টার ডাটন বলেন, ‘২০১৭ সালে শরণার্থী সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে এই সাড়াদান কার্যক্রমের অর্থায়ন বর্তমানে একদম কমে গেছে। তাদের খাদ্য সহায়তার জন্য প্রতি মাসে প্রতি জনের জন্য তহবিল ১০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য খাতের তহবিলও উল্লেখযোগ্যভাবে অনেক বেশি কমে গেছে এবং বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১১ শতাংশ হয়েছে। নিয়মিত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বসবাসের ঘরগুলো, পানি ও স্যানিটেশন সুবিধারও অবনতি ঘটেছে।’ 

অ্যালিস্টার ডাটন আরও বলেন, ‘২০২৪ সালে রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকটের জন্য বাংলাদেশের নেতৃত্বে ৮৫২ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহের লক্ষ্যে যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। গত বছর সাড়াদান পরিকল্পনার মাত্র ৬৫ শতাংশ তহবিল সংগৃহীত হয়েছে এবং অনুদান সংগ্রহের ক্ষেত্রে পরিস্থিতির যথেষ্ট অবনতি হচ্ছে।’ 

 ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কারিতাস কক্সবাজার এবং ভাসানচরে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দানকারী কমিউনিটির সদস্যদের জন্য আশ্রয় সহায়তা, সুরক্ষা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম, শিক্ষা, পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি খাতে জরুরি সহায়তা হিসাবে ৪৫ মিলিয়ন ডলারের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে বলে জানান ডাটন। এ বছরও কারিতাস ৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। 

ডাটন বলেন, গত ছয় বছরে ক্যাম্পে ২ লাখ এর বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে। এই শিশুরা কখনই তাদের নিজ দেশ দেখেনি এবং তাদের কোন জাতীয়তা নেই। তারা রাষ্ট্রহীন। এই বিষয়ে নতুন করে আন্তর্জাতিক মনোযোগ এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনসহ তাদের অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপের পাশাপাশি এই অঞ্চল এবং এর বাইরের দেশগুলোকে সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। 

কারিতাসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আজ বিশ্বের সবচেয়ে অরক্ষিত মানুষদের মধ্যে রোহিঙ্গা পরিবারগুলোও রয়েছে, যারা কাজ করার কোনো অধিকার ছাড়াই প্রান্তিক অবস্থায় বসবাস করছে। এখন যারা কিশোর-কিশোরী, তারা তাদের জীবনের অর্ধেক সময়ই এই বসতিতে কাটিয়েছে। এদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সকলকে আরও কিছু করতে হবে এবং তাদের ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলোও পরিকল্পনায় নিয়ে নিশ্চিত করতে হবে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. বেনেডিক্ট আলো ডি রোজারিও, কারিতাস বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বিশপ জেমস রমেন বৈরাগী, নির্বাহী পরিচালক সেবাস্টিয়ান রোজারিও, পরিচালক-কর্মসূচি দাউদ জীবন দাস, পরিচালক-অর্থ ও প্রশাসন রিমি সুবাস দাশ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত