Ajker Patrika

নজরুল ইসলাম মজুমদারের আরও ১৮০ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। ফাইল ছবি
নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। ফাইল ছবি

নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের রাজধানীর পূর্বাচলে জলসিঁড়ি আবাসিক প্রকল্পের ১৬২ কাঠার প্লটসহ ৫৩ দলিলের বিভিন্ন স্থানে জমি ক্রোক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর তিনটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ এই নির্দেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এসব নির্দেশ দেন বলে জানান দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ।

দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ এসব জমি ও ব্যাংক হিসাব ক্রোক ও অবরুদ্ধের নির্দেশ চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে নজরুলের প্লট ও জমির মূল্য দেখানো হয়েছে ১৮০ কোটি ৩৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। তিনটি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ২ লাখ ৩৮৪ টাকা রয়েছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৭৮১ কোটি ১ লাখ ২২ হাজার ৯৫৪ টাকা অর্জন করেছেন। এসব সম্পদ জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। সে জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তদন্তকালে বিভিন্ন সূত্র হতে জানা যায়, আসামির স্থাবর, অস্থাবর সম্পদসমূহ বিক্রি, স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন। মামলা নিষ্পত্তির আগে আসামির অবৈধ সম্পত্তিসমূহ হস্তান্তর, স্থানান্তর, বিক্রি হয়ে গেলে রাষ্ট্রের ক্ষতি হবে। এ অবস্থায় তাঁর স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা আবশ্যক।

উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ নজরুল ইসলামের বাড়ি, প্লট ক্রোক ও ৫৫ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর ৯ মার্চ নজরুল ইসলামের যুক্তরাজ্যের পাঁচটি বাড়ি, আইল অফ ম্যান ও জার্সির দুটি বাড়ি ক্রোক এবং বিদেশের একটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সর্বশেষ গত ১৮ জুন নজরুল ইসলামের স্ত্রী নাসরিন ইসলামের দুটি ক্রোক, ৫৪টি কোম্পানির শেয়ার ও দুটি বিও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। নাসরিন ইসলামের এসব সম্পদের মোট মূল্য প্রায় ৬৩ লাখ।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

/শুরু হলো বিজয়ের মাস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শুরু হলো বিজয়ের মাস

পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দমননীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রাম করেছিল পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। পূর্ব বাংলার মানুষের স্বাধিকারের আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি পায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে। দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র লড়াইয়ের পর একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর জন্মলাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাঙালির ‘বিজয়ের মাস’ হিসেবে পরিচিত সেই ডিসেম্বরের প্রথম দিন আজ।

স্বাধীনতার মূল্য হিসেবে পূর্ব বাংলার ৩০ লাখ মানুষকে শহীদ হতে হয়েছে। ২ লাখের মতো নারী হারিয়েছেন সম্ভ্রম। প্রতিবছর ডিসেম্বরে বিজয়ের আনন্দ উদ্‌যাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে একাত্তরের শহীদ আর সেই বীরাঙ্গনা নারীদের সর্বোচ্চ ত্যাগকে। স্মরণ করে জীবন তুচ্ছ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা।

পাকিস্তানি বাহিনী একাত্তরের ২৫ মার্চ ঢাকায় গণহত্যা শুরু করার পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার মানুষ। দলমত-নির্বিশেষে প্রায় সব শ্রেণির মানুষ দেশ স্বাধীন করার যুদ্ধে যোগ দেয়। তবে একটি ক্ষুদ্র অংশ পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। বাঙালি সেনা, ইপিআর (পরে বিডিআর), পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনী আর সর্বস্তরের জনগণের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা মুক্তিবাহিনী ৯ মাস বীরত্বের সঙ্গে যুক্ত করে। এ যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের আক্রান্ত মানুষকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করেছিল প্রতিবেশী ভারত।

কয়েক মাস ধরে মুক্তিবাহিনীর নিরন্তর আক্রমণে ক্রমে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে সীমান্ত এলাকা থেকে ক্রমে ঢাকার দিকে অগ্রসর হতে থাকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কমান্ড। ৩ তারিখ পরস্পরকে আক্রমণ করার মধ্য দিয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ভারত ও পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রমেই ঢাকার দিকে পিছু হটতে থাকে পাকিস্তানি সেনারা। যৌথ বাহিনীর আক্রমণের মুখে শেষ পর্যন্ত ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণে রাজি হয় পাকিস্তানি বাহিনী। তখনকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৯৩ হাজার সেনাকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন পাকিস্তান বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী। স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

ডিসেম্বর মাসটি সেই থেকে বাংলাদেশের মানুষের উদ্‌যাপনের মাস। দেশজুড়ে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এ মাসজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিজয় উদ্‌যাপন করে। শ্রদ্ধা জানায় একাত্তরের শহীদ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের। সংবাদপত্রগুলো বের করে বিশেষ ক্রোড়পত্র। রেডিও-টিভিতে থাকে বিজয়ের তাৎপর্য তুলে ধরা নানা আয়োজন। এ মাসজুড়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে উড়তে দেখা যায় লাল-সবুজ পতাকা, যা ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর বাংলার শ্যামল প্রকৃতির প্রতীক।

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনের অবসানের পর এসেছে দ্বিতীয় ডিসেম্বর। কোনো একক দলের নিয়ন্ত্রণে বা বৃত্তবন্দী না থেকে অনেকটা ভিন্ন আবহে শুরু হচ্ছে বাঙালির বিজয়ের মাস।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে এক অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। ডিসেম্বর শুধু আনন্দ উদ্‌যাপন নয়, মাথা উঁচু করে বাঁচতে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে প্রতিবছর নতুন করে শপথ নেওয়ার মাসও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে খালেদা জিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৭
সোমবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিং করেন আহমেদ আজম খান। ছবি: সংগৃহীত
সোমবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিং করেন আহমেদ আজম খান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটেছে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে (লাইফ সাপোর্ট) আছেন। গতকাল রোববার রাত থেকেই তাঁর অবস্থা ‘খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে’ চলে গেছে বলে আজ সোমবার দুপুরে জানিয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান।

আজ বেলা পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিং করেন আহমেদ আজম খান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে ম্যাডাম খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে চলে গেছেন। ফাইট করছেন তিনি আমাদের মাঝে ফিরে আসার জন্য। এখনো অবস্থা ক্রিটিক্যাল আছে। বলবার মতো কোনো কন্ডিশনে এখনো তিনি আসেন নাই। সারা জাতির কাছে দোয়া চাওয়া ছাড়া আর কিছু বলা নেই।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘বর্তমানে খালেদা জিয়া ভেন্টিলেশন সাপোর্টে আছেন। সিসিইউ থেকে আইসিইউ, এরপরে ভেন্টিলেশন বা লাইফ সাপোর্ট-যাই বলেন। আমি এগুলোর বাইরে বলব যে, ম্যাডাম খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে আছেন।’

আজম খান জানান, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় শুরু থেকেই আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তাঁর চিকিৎসায় চীনের চিকিৎসকেরাও যুক্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে ক্লান্তিহীনভাবে চেষ্টা করছেন। বাদ বাকি আল্লাহ ভরসা।’

এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে শয্যাশায়ী খালেদা জিয়া। তাঁর লিভারে সমস্যা, কিডনির কর্মক্ষমতা কমে গেছে, শ্বাসকষ্টসহ একাধিক শারীরিক জটিলতা একসঙ্গে দেখা দিয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর রাতে গুরুতর অবস্থায় তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর শারীরিক অবস্থাকে ‘অত্যন্ত সংকটজনক’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। পরদিন তিনি আরও বলেছিলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা বর্তমানে নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের স্বার্থ রক্ষায় পিলখানা হত্যাকাণ্ড: শহীদ পরিবারগুলোর অভিযোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার বিডিআর–এর নিহত পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার বিডিআর–এর নিহত পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভারতের স্বার্থ রক্ষা ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নিজ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শহীদ সদস্যদের পরিবারের কয়েকজন প্রতিনিধি। তাদের দাবি, এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মধ্যে ‘ভারতবিরোধী’ অবস্থান গ্রহণকারীদের উদ্দেশে ভয় দেখানোর বার্তা দেওয়া হয়েছিল।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে ‘বিডিআর তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশে শহীদ পরিবারের মতপ্রকাশ’—শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন নিহত সাবেক বিডিআর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া।

রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘বার্তাটা ছিল এমন—সেনাবাহিনীতে কেউ ভারতবিরোধী হলে তার পরিণতি হবে পিলখানার মতো।’ তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে যাদের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে শহীদ কর্নেল কুদরুতী ইলাহীর ছেলে সাকিব রহমান বলেন, ‘কমিশন বলেছে কিছু নাম আপাতত প্রকাশ করতে চায় না। আমরা মনে করি, এই অজুহাত দেখিয়ে নামগুলো আর প্রকাশ করা হবে না। শহীদ পরিবার হিসেবে আমরা তা মেনে নেব না।’ তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে সামরিক ও বেসামরিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি করেন।

শহীদ কর্নেল মুজিবুল হকের ছেলে মুবিন হক বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচারের জন্য রাস্তায় নেমেছি। আওয়ামী লীগ ও তাদের কিছু অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা আমাদের মানহানি করেছে, সম্মিলিতভাবে অপপ্রচার চালিয়েছে। শহীদ পরিবারকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে।’ তিনি সরকারকে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

শহীদ নূরুল ইসলামের সন্তান পরিচয় দিয়ে আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার একটি মিথ্যা ইস্যু সামনে এনে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সশস্ত্র বাহিনীকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় এবং এর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার সূচনা করে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ জানে এই হত্যাকাণ্ড কারা করেছে—আওয়ামী লীগ করেছে, শেখ হাসিনা করেছে, এবং ভারতের সংশ্লিষ্টতা ছিল।’ এসব কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করারও দাবি করেন তিনি।

এদিকে, সেনাবাহিনীকে দুর্বল করতে ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। এ ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা এবং ভারতের সম্পৃক্ততাও পেয়েছে কমিশন।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম নতুন ভবনের সপ্তম তলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত তদন্ত কমিশন। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।

এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিশন। সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম বলেন। তাঁরা হলেন—ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিদেশে পলাতক শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মির্জা আজম, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাহারা খাতুন।

এর বাইরে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তার নামও উল্লেখ করেন তদন্ত কমিশনের প্রধান আ ল ম ফজলুর রহমান। তাঁরা হলেন—শেখ হাসিনার সাবেক নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন উদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক ডিজিএফআই প্রধান জেনারেল আকবর (মোল্লা ফজলে আকবর)।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহী জওয়ানদের হামলায় নিহত হন ৫৭ সেনা কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের দুই মাসের মধ্যে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি: হাসিনার ৫, রেহানার ৭ ও টিউলিপের ২ বছর কারাদণ্ড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার নামে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনাকে ৫ বছর, শেখ রেহানাকে ৭ বছর ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে (টিউলিপ সিদ্দিক) ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন।

এ ছাড়া এই মামলায় সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে।

এক মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং গৃহায়ন ও গণতন্ত্র মন্ত্রণালয়ের যারা প্লট বরাদ্দে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তাদের ১২ জনকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি টিউলিপ সিদ্দিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও শেখ রেহানাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

খালাস দেওয়া হয়েছে যাদের তাঁরা হলেন—গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন-২) মো. অলিউল্লাহ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যানের মো. আনিছুর রহমান মিঞা পিএএ, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন) মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) মাজহারুল ইসলাম এবং সাবেক উপ-পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) নায়েব আলী শরীফ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৫ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়। আজ বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে রায় ঘোষণা শুরু হয়। আদালত রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়ে শোনান। রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে আদালতে হাজির করা হয়।

শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য সব আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালত সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন।

গত ৩১ জুলাই আদালত এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

গত ১২,১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুর্নীতির দমন কমিশন দুদক শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্য ও অন্যদের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা দায়ের করে। এরমধ্যে তিনটি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে গত ২৭ নভেম্বর। তিন মামলায় শেখ হাসিনাকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই মামলায় পৃথকভাবে শেখ হাসিনার ছেলে জয়কে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও মেয়ে পুতুলকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউকের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকা অন্যান্যদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গত ২৫ মার্চ ছয় মামলায় আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে দুদক।

শেখ রেহানার প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার একটি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মামলায় আরো অভিযোগ করা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থেকে তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে, অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণ কর্মচারিদের বা রাজউক কর্মচারিদের প্রভাবিত করে শেখ রেহানাকে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন। শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর মাকে প্লট বরাদ্দে বিশেষ ক্ষমতা বলে প্রত্যক্ষ প্রভাব খাটিয়েছেন। অন্যদিকে রাজউকের প্রকল্প বরাদ্দ বিষয়ক কর্মচারিরা নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত