Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে রাজনীতি আছে: আজিজ আহমেদ

এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে রাজনীতি আছে: আজিজ আহমেদ
কামরুল হাসান
আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১৮: ৪৮

ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে যে অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন সাবেক এই সেনাপ্রধান। তিনি বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি যদিও ব্যক্তিগত, তারপরও বর্তমান সরকারের সময়ে তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই ঘটনাটি কিছুটা হলেও সরকারকে হেয় করে। তাঁর ভাষায়, ‘এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে রাজনীতি আছে।’

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সোমবার (বাংলাদেশ সময় সোমবার মধ্যরাতের পর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও তার পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে গতকাল মিরপুর ডিওএইচএসের বাসভবনে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক এই সেনাপ্রধান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান। পুরো কথোপকথন নিচে তুলে ধরা হলো:

প্রশ্ন: আপনার ও আপনার পরিবারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটাকে কীভাবে দেখছেন?
উত্তর: এটা শুনে আমি অবাক ও মর্মাহত হয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমার বিরুদ্ধে যে দুটো অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়, মিথ্যা।

প্রশ্ন: আপনার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, আপনি আপনার ভাইকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন। এটা করতে গিয়ে আপনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। 
উত্তর: আপনারা হয়তো খেয়াল করবেন, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান’ নামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছিল, সেখানে সেই একই কথা ছিল। তাহলে সহজেই বুঝতে পারছেন আল জাজিরার তথ্যচিত্র ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা একই সূত্রে গাঁথা।

প্রশ্ন: আপনার বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ হলো, সেনাপ্রধান হিসেবে আপনি নিজের ভাইকে সামরিক কাজ দিয়ে ঘুষ নিয়েছেন, দুর্নীতি করেছেন।
উত্তর: আমি চার বছর ডিজি বিজিবি থাকাকালে কিংবা তিন বছর সেনাপ্রধান থাকাকালে আমার কোনো ভাইকে বা কোনো আত্মীয়কে কোনো কন্ট্রাক্ট দিয়েছি, এমন যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে, আমি যেকোনো পরিণতি মেনে নিতে প্রস্তুত আছি। দেখুন, একই কথা আল জাজিরাতে ছিল। তারাও বলেছে, আমি আমার দাপ্তরিক সুবিধা ব্যবহার করে ভাইকে সুবিধা দিয়েছি। তারা যে ভাইয়ের কথা বলছে, সে ভাই ২০০২ সালের পর থেকে বাংলাদেশে নেই। তাহলে কী করে অভিযোগ সত্য হলো?

প্রশ্ন: আরও অভিযোগ ছিল, আপনি আপনার সেই ভাইকে জেলখানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে সহায়তা করেছেন। 
উত্তর: তাঁকে ক্ষমা করার ব্যাপারে মহামান্য রাষ্ট্রপতি যে চিঠি দিয়েছিলেন, সেখানে উল্লেখ আছে, তাঁদের অভিযোগ ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ। কারণ, আমার ভাই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। এখানে আমি কী করে পদের অপব্যবহার করলাম?

প্রশ্ন: তাহলে আপনি আপনার ভাইকে ছাড়াতে কোনো সহযোগিতা করেননি? 
উত্তর: না। আমি বলছি, সহযোগিতা করিনি। আমার ভাইয়ের সাজা মওকুফে আমার কোনো ভূমিকা ছিল না।

প্রশ্ন: সেনাপ্রধান হওয়ার ছয় মাস আগে আপনার এক ভাই জেল থেকে মুক্তি পান, তখন আলোচনা ছিল যে আপনি প্রভাব খাটিয়েছেন। 
উত্তর: দেখুন, অভিযোগের প্রমাণ লাগে। কোনো সংবাদমাধ্যম কি প্রমাণ দিয়ে সেটা বলতে পেরেছে? পারেনি।

প্রশ্ন: আপনি সেনাপ্রধান হওয়ার পর আপনার আরেক ভাই জেল থেকে মুক্তি পান, সেটা নিয়েও সমালোচনা ছিল। 
উত্তর: দেখুন, কারামুক্তির প্রক্রিয়াটি অনেক আগে থেকে হয়। যখন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তখন আমি সেনাপ্রধানই ছিলাম না।

প্রশ্ন: শেষ পর্যন্ত এসব ঘটনাই কি নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে? 
উত্তর: এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।

প্রশ্ন: আপনার এক ভাই সন্ত্রাসী মামলায় সাজা খাটার পর সেনাপ্রধানের বাসায় থেকেছেন, এটা কি ঠিক? 
উত্তর: তারা তখন সবকিছু থেকে মুক্ত। তখন তাদের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ ছিল না। তাহলে আমার বাসায় আসাটা কি অন্যায়? তারা আমার নয়, নিজের বাসাতেই থেকেছে।

প্রশ্ন: আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আপনি কি মনে করেন এ নিষেধাজ্ঞা সেসব প্রতিষ্ঠানকেও বিতর্কিত করেছে? 
উত্তর: দেখুন, নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান জড়িত নয়। এটা ব্যক্তির বিরুদ্ধে, প্রতিষ্ঠানের নয়।

প্রশ্ন: তাহলে আপনি বলছেন, এতে কোনো প্রতিষ্ঠানের গায়ে দাগ লাগছে না? 
উত্তর: আমি মনে করি, শুধু আমাকে বিতর্কিত করার জন্য এটা হয়েছে। তারপরও যারা আমাকে নিয়োগ দিয়েছে, তারাও কিছুটা হলে এর মধ্যে চলে আসে।

প্রশ্ন: সরকারের কি কোনো দায় আছে বলে আপনি মনে করেন? 
উত্তর: না, আমি সেটা মনে করি না। আমি এটাকে দায় হিসেবে নিতেই চাই না, এটা মিথ্যে।

প্রশ্ন: তাহলে বলুন, আপনাকে ঘিরে এত অভিযোগ কেন? আর কারও বিরুদ্ধে তো এমন অভিযোগ শোনা যায় না। 
উত্তর: শুধু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এটা আমি মানব না। দেখুন, আমি দুটি বাহিনীর প্রধান থাকার সময় দেশে দুটি নির্বাচন হয়েছে। আর কাউকে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। তারপরও আমি অন্যদের নিয়ে কিছু বলতে চাই না।  

প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন, এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আপনাকে একটি নৈতিক দায়ের মুখে পড়তে হয়েছে? 
উত্তর: আমি কেন নৈতিক দায় নেব? দুটি বাহিনী কমান্ড করার সময় আমি এমন কিছু করিনি যে সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে। এখন কেউ আপনাকে পছন্দ না করে কিছু বললে তার দায় তো আপনার হতে পারে না।

প্রশ্ন: আপনার পরিবারের লোকজন তো রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ছিল, তাহলে এসবের পেছনে কোনো রাজনীতি থাকতে পারে বলে মনে করেন? 
উত্তর: আমার পরিবার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু আমি তো সৈনিকই ছিলাম। তারপরও আমাকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে। একদল এসে বলেছে আমি অন্য দলের, আবার সেই দল এসে অন্য কথা বলেছে।

প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন, এ ঘটনা সরকারকে বিব্রত করেছে? 
উত্তর: এটা বলে আমি বিষয়টি সরকারের ঘাড়ে নিয়ে যেতে চাই না। দায় আসবে কি না সেটা সরকার মূল্যায়ন করবে। তা ছাড়া বিষয়টি তো সত্য নয়, তাহলে দায়ের প্রশ্ন কেন?

প্রশ্ন: তাহলে এর কোনো তাৎপর্য নেই বলছেন? 
উত্তর: এটা একেকজনে একেক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন। আমার দৃষ্টি আলাদা।

প্রশ্ন: তাহলে আপনি বিষয়টিকে কোণ দৃষ্টিতে দেখছেন? 
উত্তর:আমার দৃষ্টি হলো, এটা আমি ও আমার পরিবারের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

প্রশ্ন: আপনার বা আপনার পরিবারের কোনো সম্পদ কি আমেরিকায় আছে? 
উত্তর: না, কানাকড়িও নেই।

প্রশ্ন: নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি কি সরকার বা আমেরিকার পক্ষ থেকে আপনাকে জানানো হয়েছিল? 
উত্তর: না, আমি জানতাম না। আজ সকালে আমার এক বন্ধু এটা জানাল।

প্রশ্ন: এখন আপনি কী করবেন ভাবছেন? 
উত্তর: এতে কী করার আছে?

প্রশ্ন: নিষেধাজ্ঞার ফলে আপনি আমেরিকা ও তাদের বন্ধু দেশে যেতে পারবেন না। 
উত্তর: এটা মনে হয় ঠিক না। আমি তো ঘুরে বেড়াচ্ছি, কেউ না করেনি। আমি মনে করি না নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশের বাইরে যেতে পারব না। আর আমেরিকায় যেতেই হবে, এমন কোনো কথা আছে?

প্রশ্ন: আপনার নিষেধাজ্ঞার পেছনে রাজনীতিটা কী? 
উত্তর: রাজনীতি অবশ্যই আছে। আল জাজিরা কী করেছে দেখুন, তারা আমার আমেরিকা সফর বাতিল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সেটা পারেনি। ৯টা এনজিও জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আবেদন করেছিল যাতে কেউ আমার সঙ্গে বৈঠক না করে। সেটাও পারেনি। আল জাজিরা আমাকে, দেশের সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে হেয় করতেই সেটা করেছিল।

প্রশ্ন: আর এখন? 
উত্তর: হয়তো সরকারকেও কিছু হেয় করতেই এটা করা হয়েছে। তবে আমি এটা বলতে চাই না। কারণ, আমি এখন সরকারের কেউ নই।

প্রশ্ন: আপনাকে ধন্যবাদ।
উত্তর: আপনাকেও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তফসিল ঘোষণার পর কার্যকর আসিফ-মাহফুজের পদত্যাগপত্র: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫২
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে বুধবার সন্ধ্যায় প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে বুধবার সন্ধ্যায় প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের পদত্যাগপত্র প্রধান উপদেষ্টা গ্রহণ করেছেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তাঁদের পদত্যাগপত্র কার্যকর হবে।

প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে আজ বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদ আজ বিকেল ৫টা নাগাদ প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। তাঁদের পদত্যাগপত্র নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে।

শফিকুল আলম জানান, পদত্যাগ করা দুই ছাত্র উপদেষ্টার ভবিষ্যৎ জীবনের মঙ্গল কামনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই তফসিল ঘোষণা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকের আরও ৬৫,৫০২ প্রধান শিক্ষক পাচ্ছেন ১০ম গ্রেডে বেতন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫১
প্রাথমিকের আরও ৬৫,৫০২ প্রধান শিক্ষক পাচ্ছেন ১০ম গ্রেডে বেতন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজ বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসনিক উন্নয়ন ও সমন্বয়-১ অধিশাখার এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষকের পদের বেতন স্কেল ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ আলোচনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষকের পদের বেতন স্কেল ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের প্রস্তাব সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উপস্থাপন করে।

রিট পিটিশন অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল গ্রেড-১১ থেকে গ্রেড-১০-এ উন্নীতকরণ করে সরকারি আদেশ জারি করা হয়েছে। উক্ত ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের ধারাবাহিকতায় অবশিষ্ট ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষক পদের বেতন স্কেল গ্রেড-১১ থেকে গ্রেড-১০-এ উন্নীতকরণের প্রস্তাব করা হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্মতি দেয়।

এতে বলা হয়, অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ সম্মতি দিয়েছে। অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ উক্ত ৬৫ হাজার ৫০২টি পদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে নির্ধারণ করেছে। বিস্তারিত পর্যালোচনাপূর্বক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদের বেতন স্কেল ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের সুপারিশ করা যেতে পারে মর্মে সভায় ঐকমত্য প্রকাশ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো ৬০ এজেন্সির পেটে ৪৫০০ কোটি টাকা

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে ঢাকার ছোট চায়ের দোকান ছেড়ে উন্নত জীবনের আশায় ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার পথে পা বাড়ান কুমিল্লার চান্দিনার যুবক আকাশ। পরিবারকে একটু স্বস্তি দিতে শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে দেশে-বিদেশে দালালদের টাকা পরিশোধ করে বিদেশে গেলেও সেখানে গিয়ে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল ভয়াবহ বাস্তবতা।

মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর আকাশ বুঝতে পারেন, যে বেতনের কথা বলা হয়েছিল, এর সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। যেখানে খেয়ে-পরে টিকে থাকা কঠিন, সেখানে সঞ্চয়ের তো প্রশ্নই আসে না। ঢাকায় তাঁর আগের চায়ের দোকান থেকেও কম আয় হয় সেখানে। কয়েক মাসের মধ্যে বুঝে যান, বিদেশে আসা ছিল জীবনের বড় ভুল। নিজের সঙ্গে বিপদে ফেলেছেন পরিবারকেও।

অবশেষে ২০২৩ সালে দেশে ফিরে কমলাপুর ফুটপাতে আবার শুরু করেন চায়ের দোকান। দুই বছরে ধারদেনা শোধ করেছেন, তবে বাবার জমিটা উদ্ধার করতে পারেননি।

আকাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় যাওয়াই ছিল আমাদের জীবনের সবচেয়ে ভুল সিদ্ধান্ত। আমরা কয়েকজন একসঙ্গেই দেশে ফিরে এসেছি। আর কখনো বিদেশে যেতে চাই না।’

সম্প্রতি মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের নিয়ে একটি জরিপ শুরু করেছে দেশের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ নিয়ে তদন্তে নেমেছে। এতে ৬০টি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে নতুন করে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি উঠে এসেছে।

দুদকের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মোট ২ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৬ জন শ্রমিকের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি ২০ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালাল চক্র। এই অর্থ আত্মসাৎ করেছে দেশের ৬০টি রিক্রুটিং এজেন্সি। এসব এজেন্সির ১২৪ জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগও পেয়েছে দুদক।

এই চার বছরে ১০০ এজেন্সির বিরুদ্ধে শ্রমিকদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো শ্রমিকদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে ৭ হাজার ৯৮৪ কোটি ১৫ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা। এজেন্সিগুলোর ২৩২ জন দায়িত্বশীল ব্যক্তির বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।

দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে এসব অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম। এর মধ্যে কয়েকটি হলো—জনতা ট্রাভেলস লিমিটেড, ত্রিবেনী ইন্টারন্যাশনাল, এমএস সান ওভারসিজ, কিসওয়া এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, নাতাশা ওভারসিজ, রমনা এয়ার ইন্টারন্যাশনাল, উইন ইন্টারন্যাশনাল, মৃধা ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন, প্রান্তিক ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেড, সুলতান ওভারসিজ ও প্রভাতী ইন্টারন্যাশনাল।

দুদকের একটি সূত্র জানায়, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে উপার্জন করা টাকা বহু বছর ধরে হাতিয়ে নিচ্ছিল এ চক্র। তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করেছিল মালয়েশিয়া। পরে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দেশটি পুনরায় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার চুক্তি করে। তখন শ্রমিক ভিসায় যেতে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা ফি নির্ধারণ করে সরকার, যা ২০২২ সালে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি অর্থ আদায় করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৩
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। ফাইল ছবি
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দুই ছাত্র প্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম পদত্যাগ করেছেন। আজ বুধবার সন্ধ্যা ৫টা ৮ মিনিটে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় গিয়ে তাঁর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর দুই উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সূত্র জানায়, আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করছেন। বৈঠকের বিষয়ে তাঁরা সাংবাদিকদের জানাবেন।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। তবে সেখানে কে বক্তব্য দেবেন, তা জানানো হয়নি।

তফসিল ঘোষণার সম্ভাব্য সময় জানানোর পর থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম শিগগির পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন বলে আলোচনা চলছিল। কারণ, তাঁরা দুজনই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন।

এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আজ সন্ধ্যায় বা আগামীকাল বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে বলে খবর আসার পর দুই উপদেষ্টা আজ পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন জোরালো হয়।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও পদত্যাগের বিষয়ে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

আসিফ মাহমুদ জানান, তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। তবে পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। কোন দলের মনোনয়ন নেবেন, সেটি পরে জানাবেন।

গত বছর কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একপর্যায়ে জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে রূপ নেয় এবং ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতন হয়। পরে ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

শুরুতেই ওই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পান আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ। আর মাহফুজ আলম উপদেষ্টার পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা।

মাহফুজ পরে উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন এবং কিছুদিন দপ্তরবিহীন ছিলেন। নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পর তিনি তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার দায়িত্ব পান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত