Ajker Patrika

রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাংবাদিক ফজল আনসারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১৪: ০৩
রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাংবাদিক ফজল আনসারী

খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব ও আলোচিত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আজ সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়, মুশফিকুল ফজল আনসারীকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা–সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠন–এর সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩ (তিন) বছর মেয়াদে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপূর্বক বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে রাষ্ট্রদূত পদে পদায়নের নিমিত্ত তাঁর চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলো। 

দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনীতিক প্রতিবেদক ছিলেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। ২০১৫ সালে সমালোচনামূলক সাংবাদিকতার কারণে তাঁকে নির্বাসিত করা হয়। এর আগে তিনি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কোনো চাপের কাছে নির্বাচন কমিশন নতি স্বীকার করবে না: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইউএনওদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইউএনওদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সিইসি। ছবি: আজকের পত্রিকা

নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। আজ বুধবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইউএনওদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার আহ্বান জানিয়েছেন সিইসি।

সিইসি ইউএনওদের বলেন, ‘কোনো প্রেশারের কাছে নতি স্বীকার করবেন না, কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। সম্পূর্ণভাবে নিজের সিদ্ধান্তে আইন অনুযায়ী অটল থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব। নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না।’

ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে দুদিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫২
প্রিজনভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের। ছবি: সংগৃহীত
প্রিজনভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সময়ে গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত অপরাধের এক মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।

এর আগে সকাল ৭টার পর তাঁদের কারা কর্তৃপক্ষের এসি প্রিজন ভ্যানে কড়া নিরাপত্তায় ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এজলাসে তাঁদের ওঠানো হলে সকাল ৮টার পর বসেন ট্রাইব্যুনাল।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলায় সাবেক-বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩২ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য ছিল আজ। একই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ওপর শুনানির কথা ছিল।

অভিযুক্ত এই সেনা কর্মকর্তারা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, মেজর জেনারেল মোস্তফা সরোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম, কর্নেল মশিউল রহমান জুয়েল, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবির আহম্মেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, লে. কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার ও কর্নেল কে এম আজাদ।

সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা নিয়ে রাজধানীর কাকরাইল, মৎস্য ভবন, পল্টনসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোর থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালসহ হাইকোর্টের মাজার গেট এলাকায়। এখানে পুলিশ-র‍্যাবের পাশাপাশি বিজিবি-সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও দেখা গেছে। সব মিলিয়ে বাড়ানো হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা।

তিনটি মামলার মধ্যে দুটি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় এবং অন্য মামলাটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়।

গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা দুটি মামলার একটিতে আসামি ১৭ জন। তাঁদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে); র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম এখন সেনা হেফাজতে আছেন।

এই মামলার আসামিদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক তিনজন মহাপরিচালকও আছেন। তাঁরা হলেন বেনজীর আহমেদ (পরে আইজিপি হন), এম খুরশিদ হোসেন ও মো. হারুন-অর-রশিদ। তাঁরা পলাতক। এ ছাড়া মামলার আসামি শেখ হাসিনা, তাঁর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও র‍্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম পলাতক।

আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম-নির্যাতনের আরেকটি মামলায় শেখ হাসিনা, তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিনজন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী এখন সেনা হেফাজতে আছেন।

এই মামলার আসামিদের মধ্যে আরও আছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচজন মহাপরিচালক। তাঁরা হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।

অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক। তাঁদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য নেই। তবে সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো সূত্র বলছে, তাঁরা দেশত্যাগ করেছেন।

এ ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে রেদোয়ানুল ও রাফাত এখন সেনা হেফাজতে আছেন। অন্য দুজন পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে সেনা কর্মকর্তাদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৩
প্রিজনভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের। ছবি: সংগৃহীত
প্রিজনভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলায় হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল সোয়া ৭টায় প্রিজন ভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তায় তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সাড়ে ৭টায় প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে তাঁদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ট্রাইব্যুনালে আনা সেনা কর্মকর্তারা সাধারণ পোশাক পরা ছিলেন।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলায় সাবেক-বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩২ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য ছিল আজ। একই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে শুরু হবে শুনানি।

ট্রাইব্যুনালে আনা সেনা কর্মকর্তারা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, মেজর জেনারেল মোস্তফা সরোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম, কর্নেল মশিউল রহমান জুয়েল, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবির আহম্মেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, লে. কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার ও কর্নেল কেএম আজাদ।

সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা নিয়ে রাজধানীর কাকরাইল, মৎস্য ভবন, পল্টনসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোর থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালসহ হাইকোর্টের মাজার গেট এলাকা। এখানে পুলিশ-র‍্যাবের পাশাপাশি বিজিবি-সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও দেখা গেছে। সব মিলিয়ে বাড়ানো হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা।

তিনটি মামলার মধ্যে দুটি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় এবং অন্য মামলাটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়।

গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা দুটি মামলার একটিতে আসামি ১৭ জন। তাঁদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে); র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম এখন সেনা হেফাজতে আছেন।

এই মামলার আসামিদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক তিনজন মহাপরিচালকও আছেন। তাঁরা হলেন বেনজীর আহমেদ (পরে আইজিপি হন), এম খুরশিদ হোসেন ও মো. হারুন-অর-রশিদ। তাঁরা পলাতক।

এ ছাড়া মামলার আসামি শেখ হাসিনা, তাঁর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও র‍্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম পলাতক।

আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম-নির্যাতনের আরেকটি মামলায় শেখ হাসিনা, তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিনজন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী এখন সেনা হেফাজতে আছেন।

এই মামলার আসামিদের মধ্যে আরও আছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচজন মহাপরিচালক। তাঁরা হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।

অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক। তাঁদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য নেই। তবে সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো সূত্র বলছে, তাঁরা দেশত্যাগ করেছেন।

এ ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে রেদোয়ানুল ও রাফাত এখন সেনা হেফাজতে আছেন। অন্য দুজন পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সড়ক বাড়লেও নিরাপত্তা বাড়েনি

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা
সড়ক বাড়লেও নিরাপত্তা বাড়েনি
পোশাকশ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধের কারণে এক পাশে যানজট ও অন্য পাশ খালি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে গত এক যুগে কয়েকটি নতুন সড়ক-মহাসড়ক, সেতু, উড়ালসড়ক, টানেল যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনলেও সড়ক নিরাপত্তা বাড়েনি। যানবাহনের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা, বিশৃঙ্খল গণপরিবহন, অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত ও তিন চাকার যান এবং আইন না মানায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে মানুষ।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেও নিরাপত্তা পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ঘাটতি রয়ে গেছে। শুধু সড়ক নির্মাণ নয়, সেই সড়কে নিরাপদ চলাচল ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করাও জরুরি। সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৮ হাজার ৭৯২টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৩৮ হাজার ২২৭ জন এবং আহত হয়েছে ৬১ হাজার ৭০ জন। এই সময়ে সারা দেশে ১৩ হাজার ৫৯২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৩ হাজার ৬৫১ জনের। এই ৫ বছরের দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা প্রতিবছরই ঊর্ধ্বমুখী। এমন প্রেক্ষাপটে আজ ২২ অক্টোবর পালিত হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস।

জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কের প্রধান সমস্যা হলো বিশৃঙ্খলা। এর কারণ হলো চালক। এর জন্য লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া পরিবর্তন করতে চাচ্ছি। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হলো মোটরসাইকেল। নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে মানুষকে সচেতন করতে ১০ হাজার হেলমেট দেব।’

গত এক যুগে সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু, ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা-রংপুরসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো চার লেন বা ছয় লেনে উন্নীত হয়েছে। চট্টগ্রামে নির্মিত হয়েছে কর্ণফুলী টানেল। ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক যোগাযোগে নতুন দিগন্ত খুলে দিলেও বেপরোয়া গতি ও বিশৃঙ্খলায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি। টানেলেও দুর্ঘটনা ঘটছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে সড়ক নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার। এর মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের বেশির ভাগ অংশই প্রশস্ত করা হয়েছে। প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার সড়ক চার লেন হয়েছে। তবে অনেক জায়গায় মানসম্মত ট্রাফিক সাইন, গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই।

সওজের প্রকৌশলীরা বলছেন, নতুন প্রকল্পে এখন রোড সেফটি কম্পোনেন্ট যুক্ত হচ্ছে। তবে শুধু অবকাঠামো দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, এর সঙ্গে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে দ্রুত এগিয়েছে, কিন্তু নিরাপত্তাকে একইভাবে অগ্রাধিকার দেয়নি। সড়কে নিরাপত্তা উপকরণ, পথচারীর পারাপারের সুযোগ, গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ফুটপাত—এসব জায়গায় ঘাটতি রয়ে গেছে।

শৃঙ্খলার বাইরে গণপরিবহন: বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার বড় একটি অংশের কারণ গণপরিবহনের শৃঙ্খলাহীনতা ও নিয়ম না মানা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস ও ট্রাকচালকদের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা ও নিয়মভঙ্গ সড়ক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। পরিবহনমালিকদের চাপে সরকার সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন সরাতে পারেনি। রাজনৈতিক প্রভাব ও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি গণপরিবহন খাতকে অনিয়মের ঘূর্ণিতে রেখেছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বাসগুলো এখনো প্রতিযোগিতামূলকভাবে চলে, যাত্রী তুলতে যত্রতত্র থামে। পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের অনিয়ম এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। চালকদের প্রশিক্ষণ, কঠোর আইন প্রয়োগ ও কার্যকর তদারকি ছাড়া গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরবে না।

গণপরিবহনের শৃঙ্খলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন বলেন, গণপরিবহনব্যবস্থা দেখভালের জন্য একটি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ দরকার। এটি ছাড়া শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।

সড়ক আইন বাস্তবে কার্যকর হয়নি: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইন পাস হয়। ওই আইনে লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত গতি, ফিটনেসবিহীন যান চলাচল ও ওভারলোডের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির বিধান আছে। বাস্তবে আইনটি কার্যকর হয়নি বললেই চলে। উল্টো পরিবহনমালিকেরা আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধনের দাবি তুলেছেন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন না হওয়ার মূল কারণ হলো রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক দুর্বলতা। আইনটি ভালো হলেও বাস্তবায়নের ইচ্ছা ও সক্ষমতা দুটিই কম। পরিবহন খাত দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের নিয়ন্ত্রণে, তাই আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে বারবার ছাড় দেওয়া হয়। ফলে চালক, মালিক ও যাত্রী—কেউ আইনকে গুরুত্ব দেন না। বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো আইনই ফলপ্রসূ হয় না।

সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা দেশে ক্রমবর্ধমান ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এই যান বাড়লে রাজধানীর পুরো পরিবহনব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। প্রশিক্ষণবিহীন চালকদের কারণে এই যান দুর্ঘটনার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, এসব অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে না আনলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো আরও কঠিন হবে। তাই দ্রুত নীতিমালা, নিবন্ধন ও চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট সড়কে চলার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

সমন্বয়ের অভাব: সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন ও নীতি থাকলেও কার্যকারিতা ব্যাহত হচ্ছে সওজ, বিআরটিএ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে। এ তিনটি সংস্থা সড়ক, যানবাহন ও আইন প্রয়োগের দায়িত্বে থাকলেও নীতি ও পরিকল্পনায় একযোগে কাজ না করায় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে অগ্রগতি হচ্ছে না।

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা উন্নয়নের কাজ চলছে। পুলিশকে যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হচ্ছে, যাতে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায়। ক্ষতিপূরণের হার বাড়ানো ও যত্রতত্র বাস থামা বন্ধে পাইলট প্রকল্পও চালু হচ্ছে। এসব উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদি হলেও আমরা আশা করছি, এতে সড়ক নিরাপত্তায় দৃশ্যমান উন্নতি হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত