Ajker Patrika

কুয়েটের ভিসি, প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২: ০৪
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম। ফাইল ছবি
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম। ফাইল ছবি

খুলনা বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) অধ্যাপক এস কে শরিফুল আলমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শুক্রবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

অব্যাহতির তথ্য নিশ্চিত করেছে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ উদ-দৌলা-খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাত পৌনে ১২টার দিকে তাদের অব্যাহতির প্রজ্ঞাপন হাতে পেয়েছি। তাদের অব্যাহতি দিয়ে নিজ নিজ বিভাগের দায়িত্বে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।’

অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এবং অধ্যাপক এস কে শরিফুল আলম কুয়েটের ইলেক্ট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক।

কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

এর পর ২০ এপ্রিল উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা না আসায় অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা।

এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার বুধবার কুয়েট ক্যাম্পাসে যান। তবে দীর্ঘ সময় বুঝিয়েও তিনি অনশন ভাঙাতে পারেননি। কীভাবে এই আন্দোলন ছয় দফা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পরিণত হল, সে বিষয়টি শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টাকে জানান। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।

এরপর বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পাশাপাশি সব হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে শুরু হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত আসে।

আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে গত বুধবার শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন অনেক শিক্ষার্থী। তবে উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তারা।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠন করা কমিটির তিন সদস্য কুয়েট ক্যাম্পাসে যায়। বুধবার দিবাগত রাতে উপাচার্য ও উপ উপাচার্যের অপসারণের বার্তা দিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত