মনজুরুল ইসলাম ঢাকা
দেশের বিমানবন্দরগুলোতে বিভিন্ন সেবার জন্য সব এয়ারলাইনসকে চার্জ (মাশুল) দিতে হয়। কিন্তু একবার বকেয়া পড়লেই গুনতে হয় বড় অঙ্কের সারচার্জ। এর পরিমাণ মাসে ৬ শতাংশ হারে বছরে ৭২ শতাংশ, যা অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বকেয়ার কারণে এই সারচার্জের জাঁতাকলে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ দেশীয় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো।
বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে বিমান বাংলাদেশসহ বিভিন্ন উড়োজাহাজ সংস্থার বকেয়ার বড় অংশই সারচার্জ। যেমন বিমানের ৬ হাজার ৩২৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বকেয়ার মধ্যে ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ৬ লাখ টাকাই সারচার্জ।
উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো এই সারচার্জ আন্তর্জাতিক মানে নামিয়ে আনার দাবি জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এয়ারলাইনসগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি) বলছে, মাত্রাতিরিক্ত সারচার্জের কারণে একবার বকেয়ার চক্রে পড়লে আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে না। মাত্রাতিরিক্ত সারচার্জ থাকলে চালু থাকা দেশীয় এয়ারলাইনসগুলোও যেকোনো পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বেবিচক বলছে, সারচার্জ কমানো সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। এখানে বেবিচকের কিছু করার নেই।
দেশের বিমানবন্দর ব্যবহারের জন্য এয়ারলাইনসগুলোকে বিভিন্ন অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ দিতে হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার, নেভিগেশন, নিরাপত্তা, বিমানবন্দর ব্যবহার, বোর্ডিং ডেস্ক ইত্যাদি। আন্তর্জাতিক রুটের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা করায় এ চার্জ বেশি গুনতে হয় দেশীয় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে। এ ছাড়া উড়োজাহাজ বিমানবন্দরে রাখার জন্যও অর্থ দিতে হয়। এসব অর্থ দিতে হয় বেবিচককে। কখনো এই অর্থ বকেয়া পড়লে আরোপ হয় সারচার্জ। বকেয়ার সঙ্গে মাসে ৬ শতাংশ হারে যোগ হয় সারচার্জ। এক বছর বকেয়া থাকলে সারচার্জই যোগ হয় ৭২ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ টাকার বকেয়া বছর শেষে দাঁড়ায় ১৭২ টাকা। বছর পার হলে বকেয়ার পরিমাণও মোট বকেয়ার ৭২ শতাংশ হারে বাড়তে থাকে।
উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, কোনো এয়ারলাইনস একবার এই সারচার্জে আটকা পড়লে ওই অর্থ পরিশোধ করে নিয়মিত কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খায়। অতীতে দেশীয় যেসব বেসরকারি এয়ারলাইনস বন্ধ হয়েছে, তার সব কটি এই সারচার্জের চক্র থেকে বের হতে পারেনি। একসময় এয়ারলাইনসগুলো বন্ধ হয়ে গেলেও বছরের পর বছর বকেয়ার অর্থে যোগ হচ্ছে সারচার্জ। আদায় না হওয়ায় সারচার্জের বদৌলতে দিন দিন বাড়ছে বকেয়া।
২ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৮২ কোটি টাকা নিট মুনাফার ঘোষণা দিলেও রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির কাছে বেবিচক পাবে ৬ হাজার ৩২৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। বেবিচকের সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কাছে বেবিচকের মোট পাওনার মধ্যে মূল বিল ৯১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর বিপরীতে ভ্যাট ৫২৮ কোটি ৯২ লাখ, আয়কর ৫২ লাখ টাকা। বাকি ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ৬ লাখ টাকাই সারচার্জ। বিপুল পরিমাণ এ বকেয়া আদায়ে বিমানকে কিছুদিন পরপর চিঠি দিচ্ছে বেবিচক। বিমান নিয়মিত বিরতিতে কিছু কিছু টাকা পরিশোধও করছে। তবে তা বকেয়ার তুলনায় সামান্য। ফলে মাসে মাসে সারচার্জ যোগ হওয়ায় বকেয়া কমছে না। সর্বশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর বেবিচকের সমন্বয় সভায় বকেয়া আদায়ে আবারও উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে নিয়মিত চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
দেশীয় বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর কাছে বকেয়ার একটি বড় অংশই সারচার্জ। এক দশকের বেশি কার্যক্রম চালানোর পর ২০১১ সালে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া জিএমজি এয়ারলাইনসের কাছে বেবিচকের পাওনা ছিল ৩৯৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সারচার্জই ৩৩৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ বন্ধ হওয়া রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছে বেবিচকের পাওনা ৪০৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সারচার্জ ২৩৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। একইভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কাছে বেবিচকের পাওনা ৩৮৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা; যার মধ্যে সারচার্জ ৩২৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
বকেয়ার বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে বকেয়া যা আছে সেগুলো পুরোনো। ২০২০ সালের পর কোনো বকেয়া নেই। আগের বকেয়া নিয়মিত কিস্তিতে পরিশোধ করা হচ্ছে। তবে সারচার্জ নিয়ে বেবিচকের সঙ্গে বিরোধ থাকায় সারচার্জ বাদ রেখে মূল বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। আগামী ২০২৭-২৮ অর্থবছরের মধ্যে বেবিচকের সব বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব হবে।
জানতে চাইলে বেবিচকের পরিচালক (অর্থ) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গত ৫-৭ বছরের তুলনায় বিমানের কাছ থেকে এখন আদায়ের পরিমাণ বেশ সন্তোষজনক। গত এক বছরে বিমান চলতি পাওনা পরিশোধের পাশাপাশি বকেয়া বিলের ১০৭ কোটি টাকাও দিয়েছে। যদিও তা মোট বকেয়ার তুলনায় অনেক কম। বিমানের সঙ্গে নিয়মিত সভা করে পাওনা পরিশোধের জন্য তাগাদা অব্যাহত রাখা হবে। তিনি বলেন, টিকিট বিক্রির সময় বিমানযাত্রীদের কাছ থেকে বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি এবং প্যাসেঞ্জার সিকিউরিটি ফি আদায় করে। বিমান যা পরে বেবিচককে দেয়।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেবিচকের সারচার্জ প্রতিবেশী যেকোনো দেশের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। যেমন ভারতে এয়ারলাইনসভেদে বার্ষিক সারচার্জ ১২-১৮, সিঙ্গাপুরে ৮, মালয়েশিয়ায় ১২, ওমানে ১০ এবং পাকিস্তানে আন্তব্যাংকিং এক্সচেঞ্জ রেটের ওপর ২ শতাংশ।
দেশী এয়ারলাইনসগুলো এই মাত্রাতিরিক্ত সারচার্জ কমিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস মিললেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ বকেয়া হলে মাসে ৬ শতাংশ হারে সারচার্জ বাতিল চেয়ে বেবিচক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় এয়ারলাইনসগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি)। ওই চিঠিতে সে সময় এওএবির মহাসচিব ও নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং, পার্কিং, রুট নেভিগেশনসহ বিভিন্ন খাতে বেবিচকের মাশুল এয়ারলাইনস নির্দিষ্ট সময়ে দিতে ব্যর্থ হলে মাসে ৬ শতাংশ হারে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৭২ শতাংশ সারচার্জ দিতে হয়, যা ভারতের চেয়ে ৮৩ শতাংশ বেশি। সারচার্জের হার অতিরিক্ত হওয়ায় এয়ারলাইনসগুলোর একবার বকেয়ার চক্রে পড়লে আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে না।
এ প্রসঙ্গে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেবিচকের সারচার্জ অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি। এর জাঁতাকলে পড়ছে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো। ১৯৯২ সাল থেকে এ পর্যন্ত যত বেসরকারি এয়ারলাইনস বন্ধ হয়েছে, সব কটি এই জাঁতাকলে পড়েছিল। এগুলোর কাছে বেবিচক বিপুল অর্থ পায়, যা কখনোই আদায় হবে না, কাগজেই থাকবে। ওই এয়ারলাইনসগুলোর বাজার দখল করেছে বিদেশি এয়ারলাইনস। এতে লাভের টাকাও চলে যাচ্ছে বিদেশে। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এয়ারলাইনসগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে এই অসম সারচার্জ সংশোধন করা। তা না হলে দেশীয় কোনো এয়ারলাইনসই বেশি দিন টিকে থাকতে পারবে না।
দেশের বিমানবন্দরগুলোতে বিভিন্ন সেবার জন্য সব এয়ারলাইনসকে চার্জ (মাশুল) দিতে হয়। কিন্তু একবার বকেয়া পড়লেই গুনতে হয় বড় অঙ্কের সারচার্জ। এর পরিমাণ মাসে ৬ শতাংশ হারে বছরে ৭২ শতাংশ, যা অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বকেয়ার কারণে এই সারচার্জের জাঁতাকলে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ দেশীয় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো।
বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে বিমান বাংলাদেশসহ বিভিন্ন উড়োজাহাজ সংস্থার বকেয়ার বড় অংশই সারচার্জ। যেমন বিমানের ৬ হাজার ৩২৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বকেয়ার মধ্যে ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ৬ লাখ টাকাই সারচার্জ।
উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো এই সারচার্জ আন্তর্জাতিক মানে নামিয়ে আনার দাবি জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এয়ারলাইনসগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি) বলছে, মাত্রাতিরিক্ত সারচার্জের কারণে একবার বকেয়ার চক্রে পড়লে আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে না। মাত্রাতিরিক্ত সারচার্জ থাকলে চালু থাকা দেশীয় এয়ারলাইনসগুলোও যেকোনো পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বেবিচক বলছে, সারচার্জ কমানো সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। এখানে বেবিচকের কিছু করার নেই।
দেশের বিমানবন্দর ব্যবহারের জন্য এয়ারলাইনসগুলোকে বিভিন্ন অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ দিতে হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার, নেভিগেশন, নিরাপত্তা, বিমানবন্দর ব্যবহার, বোর্ডিং ডেস্ক ইত্যাদি। আন্তর্জাতিক রুটের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা করায় এ চার্জ বেশি গুনতে হয় দেশীয় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে। এ ছাড়া উড়োজাহাজ বিমানবন্দরে রাখার জন্যও অর্থ দিতে হয়। এসব অর্থ দিতে হয় বেবিচককে। কখনো এই অর্থ বকেয়া পড়লে আরোপ হয় সারচার্জ। বকেয়ার সঙ্গে মাসে ৬ শতাংশ হারে যোগ হয় সারচার্জ। এক বছর বকেয়া থাকলে সারচার্জই যোগ হয় ৭২ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ টাকার বকেয়া বছর শেষে দাঁড়ায় ১৭২ টাকা। বছর পার হলে বকেয়ার পরিমাণও মোট বকেয়ার ৭২ শতাংশ হারে বাড়তে থাকে।
উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, কোনো এয়ারলাইনস একবার এই সারচার্জে আটকা পড়লে ওই অর্থ পরিশোধ করে নিয়মিত কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খায়। অতীতে দেশীয় যেসব বেসরকারি এয়ারলাইনস বন্ধ হয়েছে, তার সব কটি এই সারচার্জের চক্র থেকে বের হতে পারেনি। একসময় এয়ারলাইনসগুলো বন্ধ হয়ে গেলেও বছরের পর বছর বকেয়ার অর্থে যোগ হচ্ছে সারচার্জ। আদায় না হওয়ায় সারচার্জের বদৌলতে দিন দিন বাড়ছে বকেয়া।
২ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৮২ কোটি টাকা নিট মুনাফার ঘোষণা দিলেও রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির কাছে বেবিচক পাবে ৬ হাজার ৩২৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। বেবিচকের সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কাছে বেবিচকের মোট পাওনার মধ্যে মূল বিল ৯১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর বিপরীতে ভ্যাট ৫২৮ কোটি ৯২ লাখ, আয়কর ৫২ লাখ টাকা। বাকি ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ৬ লাখ টাকাই সারচার্জ। বিপুল পরিমাণ এ বকেয়া আদায়ে বিমানকে কিছুদিন পরপর চিঠি দিচ্ছে বেবিচক। বিমান নিয়মিত বিরতিতে কিছু কিছু টাকা পরিশোধও করছে। তবে তা বকেয়ার তুলনায় সামান্য। ফলে মাসে মাসে সারচার্জ যোগ হওয়ায় বকেয়া কমছে না। সর্বশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর বেবিচকের সমন্বয় সভায় বকেয়া আদায়ে আবারও উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে নিয়মিত চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
দেশীয় বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর কাছে বকেয়ার একটি বড় অংশই সারচার্জ। এক দশকের বেশি কার্যক্রম চালানোর পর ২০১১ সালে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া জিএমজি এয়ারলাইনসের কাছে বেবিচকের পাওনা ছিল ৩৯৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সারচার্জই ৩৩৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ বন্ধ হওয়া রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছে বেবিচকের পাওনা ৪০৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সারচার্জ ২৩৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। একইভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কাছে বেবিচকের পাওনা ৩৮৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা; যার মধ্যে সারচার্জ ৩২৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
বকেয়ার বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে বকেয়া যা আছে সেগুলো পুরোনো। ২০২০ সালের পর কোনো বকেয়া নেই। আগের বকেয়া নিয়মিত কিস্তিতে পরিশোধ করা হচ্ছে। তবে সারচার্জ নিয়ে বেবিচকের সঙ্গে বিরোধ থাকায় সারচার্জ বাদ রেখে মূল বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। আগামী ২০২৭-২৮ অর্থবছরের মধ্যে বেবিচকের সব বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব হবে।
জানতে চাইলে বেবিচকের পরিচালক (অর্থ) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গত ৫-৭ বছরের তুলনায় বিমানের কাছ থেকে এখন আদায়ের পরিমাণ বেশ সন্তোষজনক। গত এক বছরে বিমান চলতি পাওনা পরিশোধের পাশাপাশি বকেয়া বিলের ১০৭ কোটি টাকাও দিয়েছে। যদিও তা মোট বকেয়ার তুলনায় অনেক কম। বিমানের সঙ্গে নিয়মিত সভা করে পাওনা পরিশোধের জন্য তাগাদা অব্যাহত রাখা হবে। তিনি বলেন, টিকিট বিক্রির সময় বিমানযাত্রীদের কাছ থেকে বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি এবং প্যাসেঞ্জার সিকিউরিটি ফি আদায় করে। বিমান যা পরে বেবিচককে দেয়।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেবিচকের সারচার্জ প্রতিবেশী যেকোনো দেশের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। যেমন ভারতে এয়ারলাইনসভেদে বার্ষিক সারচার্জ ১২-১৮, সিঙ্গাপুরে ৮, মালয়েশিয়ায় ১২, ওমানে ১০ এবং পাকিস্তানে আন্তব্যাংকিং এক্সচেঞ্জ রেটের ওপর ২ শতাংশ।
দেশী এয়ারলাইনসগুলো এই মাত্রাতিরিক্ত সারচার্জ কমিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস মিললেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ বকেয়া হলে মাসে ৬ শতাংশ হারে সারচার্জ বাতিল চেয়ে বেবিচক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় এয়ারলাইনসগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি)। ওই চিঠিতে সে সময় এওএবির মহাসচিব ও নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং, পার্কিং, রুট নেভিগেশনসহ বিভিন্ন খাতে বেবিচকের মাশুল এয়ারলাইনস নির্দিষ্ট সময়ে দিতে ব্যর্থ হলে মাসে ৬ শতাংশ হারে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৭২ শতাংশ সারচার্জ দিতে হয়, যা ভারতের চেয়ে ৮৩ শতাংশ বেশি। সারচার্জের হার অতিরিক্ত হওয়ায় এয়ারলাইনসগুলোর একবার বকেয়ার চক্রে পড়লে আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে না।
এ প্রসঙ্গে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেবিচকের সারচার্জ অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি। এর জাঁতাকলে পড়ছে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো। ১৯৯২ সাল থেকে এ পর্যন্ত যত বেসরকারি এয়ারলাইনস বন্ধ হয়েছে, সব কটি এই জাঁতাকলে পড়েছিল। এগুলোর কাছে বেবিচক বিপুল অর্থ পায়, যা কখনোই আদায় হবে না, কাগজেই থাকবে। ওই এয়ারলাইনসগুলোর বাজার দখল করেছে বিদেশি এয়ারলাইনস। এতে লাভের টাকাও চলে যাচ্ছে বিদেশে। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এয়ারলাইনসগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে এই অসম সারচার্জ সংশোধন করা। তা না হলে দেশীয় কোনো এয়ারলাইনসই বেশি দিন টিকে থাকতে পারবে না।
১৭ এপ্রিল তারিখটায় পৌঁছুতে হলে মেলে ধরতে হয় ইতিহাসের ডানা। এই দিনটিতে বৈদ্যনাথতলা হয়ে ওঠে মুজিবনগর। কেন মুজিবনগর? মুজিব তো তখন নেই। তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে ভরেছে ইয়াহিয়া। বিচারের নাম করে শেখ মুজিবকে হত্যা করার তোড়জোড় চলছে তখন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের শপথ নেওয়ার জন্য যে জায়গাটি বেছে নেওয়া হলো...
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মাতে আয়োজিত বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। আর পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ...
২ ঘণ্টা আগেজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর সংগ্রামে বিএনপি অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছে। দেশে যেন আর ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র ফিরতে না পারে এবং একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যায় সে লক্ষ্যেই প্রণয়ন করা...
৩ ঘণ্টা আগেদাবিদাওয়া আদায়ে বিভিন্ন সময় আন্দোলনে নেমেছেন সরকারি কর্মচারীরা। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হলে একের পর এক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিলেন তাঁরা। সরকারি কর্মচারীদের এমন দলবদ্ধ আন্দোলনের পথ বন্ধ করতে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
১২ ঘণ্টা আগে