Ajker Patrika

জিএসপি পুনর্বহাল নয়, অন্যেরটা ঠেকাতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
জিএসপি পুনর্বহাল নয়, অন্যেরটা ঠেকাতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, মার্কিন বাজারে বিশেষ শুল্ক সুবিধা জিএসপির নিষেধাজ্ঞায় আর্থিকভাবে বাংলাদেশ খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ফলে বাংলাদেশ জিএসপি পুনর্বহাল চায় না, বরং বাংলাদেশের যে প্রতিযোগী দেশগুলো রয়েছে, তাদের এ ধরনের শুল্ক সুবিধা ঠেকাতে চায় বাংলাদেশ। 

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ২৭ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল ও মার্কিন বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার নিয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জিএসপি…আমরা যদিও রাজনৈতিক ভাবে এটা নিয়ে খুব কথা বলি। ইন টার্মস অব টোটাল মানি, ইটজ নোট এ বিগ ইস্যু (অর্থের বিবেচনায় জিএসপি খুব একটা বড় প্রভাব ফেলছে না)। আমরা এখন এলডিসি (স্বল্পোন্নত আয়ের দেশ) থেকে উত্তরণ হচ্ছি। আমরা সব জায়গাতে ফ্রি ট্রেড (মুক্ত বাণিজ্য) চাই। আমরা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি চাই।’ 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কস্ট ইফেক্টিভ এত বেশি যে ওইটা (জিএসপি নিষেধাজ্ঞা) দিলে পরেও আমাদের বেশি ক্ষতি হয় না। আমরা চাই অন্যদের জিএসপি টাইপের (ধরনের) ফ্যাসিলিটি (সুবিধা) না থাকে, তারা (বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা) যাতে না পায়। বাংলাদেশ যে গার্মেন্টস পাঠায়, তাতে তারা (মার্কিনিরা) অনেক চার্জ (শুল্কারোপ) করে। আমাদের ১৫% ট্যারিফ চার্জ করে। আমাদের প্রতিযোগীরা যে সুবিধা পায়, সেগুলো আমরা ঠেকিয়ে রাখতে চাই।’ 

মার্কিন ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের সফর ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৭ জনের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসেছে। কারণ তাদের বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি। তবে বিনিয়োগের ৯০ শতাংশই জ্বালানি খাতে। 

মালয়েশিয়াতে মার্কিন বিনিয়োগ বাংলাদেশের থেকে বেশি জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নতি করছে। বাংলাদেশে সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বে মার্কিন বার্ষিক বিনিয়োগ প্রায় ট্রিলিয়ন ডলার। আর এর খুব সামান্যই বাংলাদেশে আসে। ওষুধ শিল্প, তথ্য ও প্রযুক্তি, সুনীল অর্থনীতিসহ বাংলাদেশের অনেক খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। তবে মার্কিন বিনিয়োগ শুধু জ্বালানি খাতে। তবে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আরও বিনিয়োগ দরকার রয়েছে। 

ইউক্রেন সংকটে জ্বালানি তেলের সংকট সমাধানে মার্কিন ব্যবসায়ীদের ভূমিকার বিষয়ে আবদুল মোমেন বলেন, জ্বালানি তেল নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে আমরা বলেছি যে, বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি চায়। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করেছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নিতে চায়। মার্কিন ব্যবসায়ীদের এ খাতে প্রযুক্তি ও অর্থায়নে আহ্বান জানানো হয়েছে।

জ্বালানি সংকটে মার্কিন ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টিতে তারা খুবই চিন্তিত। এ বিষয়ে চিন্তিত হওয়া ভালো। 

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে মার্কিন বিনিয়োগের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশ ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করেছে। অনেক দেশ বিনিয়োগের জন্য নিজেদের অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কোনো অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়নি। এখানে সুযোগ রয়েছে বিনিয়োগের। আগে আগ্রহ না থাকলেও এখন মার্কিন ব্যবসায়ীদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

মার্কিন ব্যবসায়ীদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের বিষয়ে আবদুল মোমেন বলেন, সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেবে, এগুলো সরকারকে দেবে না। 

র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে মার্কিন ব্যবসায়ীদের ভূমিকার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়ীরা খুবই শক্তিশালী। আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হলে এগুলো আস্তে আস্তে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত