Ajker Patrika

পুরো রমজান মাসে ছুটি চান প্রাথমিকের শিক্ষকেরা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পুরো রমজান মাসে ছুটি চান প্রাথমিকের শিক্ষকেরা 

করোনার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ ছিল প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসময় শিখন ঘাটতিতে পড়তে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। অনেকে আবার ঝড়েও পড়েছেন। এসব বিষয় মাথায় রেখে শিখন ঘাটতি পূরণের জন্য ২০ রমজান পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

তবে স্বাধীনতার পর থেকে রমজান মাসে কখনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চালু ছিল না। এ ছাড়া রমজান মাসে গরমের মধ্যে দিনব্যাপী ক্লাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে রমজান মাসের ছুটি পুর্নবহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। 

প্রাথমিকের শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি থেকে এ দাবি জানানো হয়। মঙ্গলবার সংগঠনটির এক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই ছুটির বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করা হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে। প্রত্যেক জেলা কমিটি নিজ নিজ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রত্যেক উপজেলা কমিটি নিজ নিজ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন জমা দেবেন। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামসুদ্দিন মাসুদ জানান, প্রাথমিকের শিক্ষকেরা অন্যান্য সরকারি চাকুরিজীবীদের থেকে কম ছুটি ভোগ করেন। অন্যদের সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে দুইদিন। সেখানে আমরা শুধু শুক্রবার ছুটি পেয়ে থাকি। এছাড়া জাতীয় দিবসগুলোতেও আমাদের বিদ্যালয়ে আসতে হয়। স্বাধীনতার পর থেকে রমজান মাসে কখনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চালু ছিলো না। মাঝে একবার রমজানে দুই থেকে তিনদিন ক্লাস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেটি পুনরায় বন্ধ করা হয়। 

এই শিক্ষক আরও জানান, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সারা দিনে হয়তো একটি ক্লাস নেন। কিন্তু প্রাথমিকের একজন শিক্ষককে সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অনেকগুলো ক্লাস নিতে হয়। শিক্ষার্থীদের বারবার বোঝাতে হয়। সারা দিন কথা বলতে হয়। অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন দুই থেকে তিনজন। তাহলে তাঁরা কীভাবে রমজান মাসে ক্লাস নেবেন? 

তবে শিখন ঘাটতির বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, শিখন ঘাটতি পূরণের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হলেও এটি কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটি নিয়ে আমরা সন্দিহান। প্রয়োজনে রমজান মাসের পরে আমরা সমন্বয় করে নেব। 

তাঁরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি বন্ধ রয়েছে। যে কারণে অনেক শিক্ষককে নিজের বাড়ি থেকে অনেক দূরে গিয়ে ক্লাস নিতে হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে সেটি ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বেরও হয়ে যায়। তাই রমজান মাসে এই গরমের মধ্যে তাঁদের পক্ষে এভাবে সারা দিন ক্লাস চালিয়ে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। 

এর আগে মঙ্গলবার আগামী ২০ রমজান পর্যন্ত প্রাথমিকের ক্লাস কার্যক্রম চালু রাখার নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। উপসচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণে আগামী ২০ রমজান পর্যন্ত প্রাথমিকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চালু রাখা হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত