Ajker Patrika

বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে সালিসের ওপর গুরুত্ব মানবাধিকারকর্মীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে সালিসের ওপর গুরুত্ব মানবাধিকারকর্মীদের

প্রচলিত আইনি প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা আছে। এ কারণে সালিসের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হোক—এটি চান মানবাধিকারকর্মীরা। সেই সঙ্গে চলমান বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে সালিসের মাধ্যমে নারী নির্যাতন রোধ করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা অনেকখানি সম্ভব বলে মনে করছেন তাঁরা। 

আজ বুধবার এমএসএফের ‘অবৈধ সালিসের প্রভাব ও প্রতিকার’ শীর্ষক সভায় এসব কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিষ্ঠাতা সুলতানা কামাল। 

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ (২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর) পালন উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এমএসএফের কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘প্রচলিত আইনি প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা আছে। এ কারণে সালিসের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হোক, এটা মানবাধিকার কর্মীরাও চান। আইনের ন্যায্যতার যে বিষয় আছে, সেটার সঙ্গে সালিসের বিষয় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সালিসের মাধ্যমে বিশেষ করে পারিবারিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ দুজনের কারও হার–জিতের কিছু থাকে না। সালিসের একটি সিদ্ধান্ত তাঁদের ওপর দেওয়া হয়। তাতে ওই নারী–পুরুষের ওপর নেতিবাচক চাপ কম পড়ে। নীতি নির্ধারকদের কাছে এই দাবি করতে হবে যে, সালিস যেন জনবান্ধব হয়, নারীবান্ধব হয়। এখন বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। নারী নির্যাতন রোধ করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সালিসের মাধ্যমে তা অনেকখানি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।’ 

বেসরকারি সংস্থা নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশি কবির বলেন, ‘গ্রামে এখনো আদালতের চেয়ে সমাজের মধ্য থেকে আসা সিদ্ধান্তকে গ্রামের মানুষ গুরুত্ব দেন বেশি। এই সুযোগে গ্রামের প্রভাবশালীরা তাঁদের নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন। সহায়তা দেওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ মানুষেরা সেসব সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।’ 

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন এমএসএফের নির্বাহী পরিষদের সদস্য সানাইয়া ফাহীম আনসারী। সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সংস্থার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা তানিয়া খাতুন। সভা সঞ্চালনা করেন সংস্থার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নাহিদ শামস। 

আলোচনায় হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আইনের বাইরে যেকোনো ঘটনা ঘটলেই পুলিশকে জানানো প্রয়োজন। ভুক্তভোগীর পাশে সবাইকে দাঁড়াতে হবে।’ 

অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘বৈধ সালিস নারীর অধিকার কতটা সুরক্ষিত করছে সেটিও দেখা দরকার। নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি।’ 
 
আমরাই পারির প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক বলেন, ‘প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় এখন জবাবদিহি নেই। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ জোরদার হবে।’ 

সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম, দীপ্ত টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফুয়াদ চৌধুরী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত