Ajker Patrika

প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছর নিয়ে ঐকমত্য হয়নি: আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, ২০: ৪২
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ফাইল ছবি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১০ বছরের মেয়াদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো এখনো একমত নয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে যে নতুন নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, তা হলো—সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি।

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ষষ্ঠ দিনের সংলাপ শেষে আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে সবশেষ বলা হয়েছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য যদি কোনো ধরনের কমিশন বা কমিটি তৈরি করা হয়, তাহলে তারা প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল আবার বিবেচনা করবে। এই আলোচনায় আমরা কোনো রকম ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারিনি।

‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির বিষয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত না চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারছি, ততক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। সবশেষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের মেয়াদকাল নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, তা অধিকাংশ রাজনৈতিক দল স্বাগত জানিয়েছে। আমরা আশাবাদী, আলোচনায় আমরা সবাই একমত হতে পারব।’

এনসিসির পরিবর্তে নতুন কমিটির নাম প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করার কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এনসিসির পরিবর্তে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে নতুন নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, যার নাম—সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি।

‘এখানে তিনটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। এনসিসিতে যেসব নিয়োগের কথা বলা হয়েছে–অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ, তিন বাহিনীর প্রধানের নিয়োগ–তা বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত কমিটি সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়োগ দেবে।

‘তৃতীয়ত কাঠামোগতভাবে কারা সদস্য হবেন, তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে—সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, নিম্নকক্ষের স্পিকার, উচ্চকক্ষের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, অন্যান্য বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির একজন প্রতিনিধি (যিনি আইন দ্বারা বিবেচিত হবেন) এবং প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি সদস্য হবেন।

‘এর আগে এনসিসিতে প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রপতির কথা বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এটি থাকছে না। এই প্রস্তাবের ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। আলোচনা শেষে যেটা লক্ষ করা গেছে, অনেক দল থেকে এটিকে স্বাগত জানানো হয়েছে, কিছু কিছু দল এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।’

এদিকে বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিএনপি, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) ও লেবার পার্টি এই বিষয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছে।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিদ্যমান সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি অটুট রাখার বিষয়ে কয়েকটি দল মতামত দিয়েছে। আবার কয়েকটি দল ভিন্ন মতামত দিয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত কোনো ঐকমত্য তৈরি হয়নি।

‘তবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, গণতন্ত্র, সামাজিক সুবিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও পক্ষপাতহীনতা—এই বিষয়গুলো সংবিধানে উল্লেখ করার পক্ষে অধিকাংশ দলের সম্মতি রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন এ বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে পেশ করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত