নির্বাচন নিয়ে সংলাপ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন চ্যালেঞ্জিং হবে। তাই নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সাবধানী ও সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদেরা। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে এমন পরামর্শ দেন তাঁরা।
সংলাপে অংশ নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, এই নির্বাচনে বড় চালেঞ্জ ও অর্জনের বিষয় হচ্ছে, সফলভাবে নির্বাচন করা। দেশের জন্য এই নির্বাচন একটা ট্রানজিশন, যার সফলতার ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে। ’৭০-এর নির্বাচন যেমন টার্নিং পয়েন্ট ছিল, এবারের নির্বাচনটাও টার্নিং পয়েন্ট হবে।
কর্মকর্তাদের দক্ষ করার পাশাপাশি তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা প্রদানের পরামর্শ দিয়ে হুমায়ুন কবির আরও বলেন, এবারের নির্বাচনে ৮০ ভাগ ক্যাম্পেইন হবে অনলাইনে, সামাজিক মাধ্যমে। এটার জন্য ইসি কতটুকু প্রস্তুত? মিথ্যা তথ্য, অপতথ্য, এআই জেনারেটেড তথ্য আসবে। নির্বাচনের আগেই অনেক উত্তেজনা সৃষ্টি করবে সামাজিক মাধ্যমগুলো। এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইসিকে কৌশল হাতে রাখতে হবে। ভোটের পরও ফলাফল বিভ্রান্ত করতে অনেক কিছু করা হতে পারে। উন্নত দেশও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই অবস্থায় ইসির কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘৫৪ বছরেও ক্ষমতার ট্রানজিশন কেমন হবে, তা আমরা ঠিক করতে পারিনি।
তিনজন সাবেক প্রধান বিচারপতির পরিণতি আপনারা দেখেছেন। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিণতি আপনারা দেখেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ওপর আস্থা নেই। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এমন এক পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছেন আপনারা। সিইসির ভাষায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চ্যালেঞ্জে আছেন তিনি। তাই কমিশনকে স্বাধীনভাবে মেরুদণ্ড সোজা করে নির্বাচন উপহার দিতে হবে। যদি সাহসী হতে পারেন, সত্যি মেরুদণ্ড থাকে, তাহলে স্বাধীন হতে পারবেন। স্বাধীন হলে জাতিকে সুন্দর, ভালো নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন। চ্যালেঞ্জ কিন্তু ভয়ংকর অবস্থা। অতীতে সব কমিশন নিজেদের স্বাধীন ও মেরুদণ্ড শক্ত দাবি করলেও তার বাস্তবায়ন ‘দেখাতে পারেনি’।
রুবায়েত ফেরদৌস আরও বলেন, দলগুলোর মনোনয়ন-বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমে অবাধ তথ্যপ্রবাহ দিতে হবে। জাতীয় ও দেশি পর্যবেক্ষক বাড়াতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেছেন, পোস্টাল ভোটিং নতুন চ্যালেঞ্জ। বিতর্কিত হওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমলাদের বাইরে রেখে নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
পিআর ভোট পদ্ধতি নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি না করে কোনোভাবে পদ্ধতিটির পক্ষে অবস্থান না নেওয়ার আহ্বান জানান চবি উপাচার্য। শাপলা প্রতীক নিয়ে তিনি বলেন, ইসি যে প্রতীক দেয়, সে প্রতীকেই ভোট করতে হবে। বিশেষ মার্কা না দিলে ভোটে রাজি নয়, এমন দাবি ঠিক না। স্থানীয় নির্বাচন না করে জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান তিনি।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ভোটের আগে, ভোটের সময় ও পরে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, অতীতে যারা জিততে পারেনি, নারী ও শিশুর প্রতি তাদের নির্যাতনের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশার সঙ্গে নবীন-প্রবীণ, ধনী-দরিদ্র সবার কথা মনে রাখতে হবে, যেন ভুলে না যাই। আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়ে গেছে। নারীর বিষয়ে প্রচণ্ড রকম ক্ষোভ রয়ে গেছে। ৫১ শতাংশ নারী অথচ আসন ৫-৭ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব। আমরা ক্ষুব্ধ হয়েছি। নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাই।’
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জায়িফ রহমান বলেন, নির্বিঘ্ন ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ইসি দৃশ্যমান উদ্যোগ নিলে জনগণের মধ্যে ভরসা বাড়বে ইসির প্রতি। মিস ইনফরমেশন, এআই জেনারেটেড তথ্যের অপব্যবহার রোধে তৎপর থাকার অনুরোধ করেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
সংলাপে অংশ নিয়ে সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান বলেন, ‘একটা পক্ষকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ধরে নিলাম, তারা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনে বসেছে, তাদের মধ্যে যদি কেউ মনে করেন যে, পরিস্থিতি অনুকূলে নয় বা আমরা জিতব না, সুতরাং আমরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। তাহলে কী পরিস্থিতি হবে, আপনারা ভেবে দেখুন। সুষ্ঠু নির্বাচন না করতে পারলে পদত্যাগ করার মতো সাহস থাকতে হবে।’
সংলাপে অংশ নিয়ে সংসদ নির্বাচনে গণমাধ্যমের সম্পৃক্ততা বাড়াতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি আরও বলেন, আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট এবং প্রতিটি ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার।
নির্বাচনে রাজনৈতিক শিষ্টাচার প্রতিষ্ঠায় দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রচুর ভুয়া তথ্য, ভুল তথ্য, ফেক ইমেজ এবং এআইনির্ভর বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। নির্বাচনের সময় এগুলোর প্রভাব আরও বাড়বে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির জন্য আমাদের এখানে যে জিনিসটা দরকার, এখনো বাংলাদেশ সেটার জন্য প্রস্তুত নয়।’
কবি মোহন রায়হান বলেন, এখনো প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা রয়েছে। তারা কিন্তু সুন্দর একটি নির্বাচন হতে বাধা দেবে। এ বিষয় ইসিকে সজাগ থাকতে হবে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি দাবি করেন, শুধু ঋণখেলাপি নয়, যাঁরা অর্থ পাচারকারী তাঁরাও যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সেই আইন করতে হবে।
সংলাপে স্বাগত বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য ভোট করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচন সুন্দরভাবে করার জন্য আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার অনেক কিছু এগিয়ে নিয়েছি। সংস্কার কমিশনের আলোচনায় অনেক কিছু হয়েছে। আমাদের কোনো গ্যাপ থাকলে আপনারা তা পূরণ করে দেবেন।’
এ সময় ফোনালাপ ফাঁসের ভয়ে ‘ফোন ধরেন না’ বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘অনেকের ফোন কল ধরি না। কল ফাঁসের ভয়ে ফোনে কথা বলি না। কিন্তু আমাদের সব সময় দরজা খোলা। যেকোনো সময়ে আপনাদের সুপারিশ আমরা গ্রহণ করব।’
সিইসি আরও বলেন, যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে চায়, তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে।
পোস্টাল ব্যালটে কী কী চ্যালেঞ্জ হতে পারে তা বের করতে নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট মে রেইজ ডিবেটস। এটা পরের দিকে ডিবেট হতে পারে। ইট মে রেইজ লট অব কোয়েশ্চেনস এজ ওয়েল। এটা আমরা জানি। তবে তারা (কনসালট্যান্ট) আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, যে ব্যবস্থা নেবেন।’
সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির জ্যেষ্ঠ সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সকালে ১৩ এবং বিকেলে ১৫ জন সংলাপে অংশ নেন।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন চ্যালেঞ্জিং হবে। তাই নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সাবধানী ও সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদেরা। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে এমন পরামর্শ দেন তাঁরা।
সংলাপে অংশ নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, এই নির্বাচনে বড় চালেঞ্জ ও অর্জনের বিষয় হচ্ছে, সফলভাবে নির্বাচন করা। দেশের জন্য এই নির্বাচন একটা ট্রানজিশন, যার সফলতার ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে। ’৭০-এর নির্বাচন যেমন টার্নিং পয়েন্ট ছিল, এবারের নির্বাচনটাও টার্নিং পয়েন্ট হবে।
কর্মকর্তাদের দক্ষ করার পাশাপাশি তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা প্রদানের পরামর্শ দিয়ে হুমায়ুন কবির আরও বলেন, এবারের নির্বাচনে ৮০ ভাগ ক্যাম্পেইন হবে অনলাইনে, সামাজিক মাধ্যমে। এটার জন্য ইসি কতটুকু প্রস্তুত? মিথ্যা তথ্য, অপতথ্য, এআই জেনারেটেড তথ্য আসবে। নির্বাচনের আগেই অনেক উত্তেজনা সৃষ্টি করবে সামাজিক মাধ্যমগুলো। এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইসিকে কৌশল হাতে রাখতে হবে। ভোটের পরও ফলাফল বিভ্রান্ত করতে অনেক কিছু করা হতে পারে। উন্নত দেশও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই অবস্থায় ইসির কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘৫৪ বছরেও ক্ষমতার ট্রানজিশন কেমন হবে, তা আমরা ঠিক করতে পারিনি।
তিনজন সাবেক প্রধান বিচারপতির পরিণতি আপনারা দেখেছেন। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিণতি আপনারা দেখেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ওপর আস্থা নেই। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এমন এক পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছেন আপনারা। সিইসির ভাষায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চ্যালেঞ্জে আছেন তিনি। তাই কমিশনকে স্বাধীনভাবে মেরুদণ্ড সোজা করে নির্বাচন উপহার দিতে হবে। যদি সাহসী হতে পারেন, সত্যি মেরুদণ্ড থাকে, তাহলে স্বাধীন হতে পারবেন। স্বাধীন হলে জাতিকে সুন্দর, ভালো নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন। চ্যালেঞ্জ কিন্তু ভয়ংকর অবস্থা। অতীতে সব কমিশন নিজেদের স্বাধীন ও মেরুদণ্ড শক্ত দাবি করলেও তার বাস্তবায়ন ‘দেখাতে পারেনি’।
রুবায়েত ফেরদৌস আরও বলেন, দলগুলোর মনোনয়ন-বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমে অবাধ তথ্যপ্রবাহ দিতে হবে। জাতীয় ও দেশি পর্যবেক্ষক বাড়াতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেছেন, পোস্টাল ভোটিং নতুন চ্যালেঞ্জ। বিতর্কিত হওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমলাদের বাইরে রেখে নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
পিআর ভোট পদ্ধতি নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি না করে কোনোভাবে পদ্ধতিটির পক্ষে অবস্থান না নেওয়ার আহ্বান জানান চবি উপাচার্য। শাপলা প্রতীক নিয়ে তিনি বলেন, ইসি যে প্রতীক দেয়, সে প্রতীকেই ভোট করতে হবে। বিশেষ মার্কা না দিলে ভোটে রাজি নয়, এমন দাবি ঠিক না। স্থানীয় নির্বাচন না করে জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান তিনি।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ভোটের আগে, ভোটের সময় ও পরে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, অতীতে যারা জিততে পারেনি, নারী ও শিশুর প্রতি তাদের নির্যাতনের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশার সঙ্গে নবীন-প্রবীণ, ধনী-দরিদ্র সবার কথা মনে রাখতে হবে, যেন ভুলে না যাই। আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়ে গেছে। নারীর বিষয়ে প্রচণ্ড রকম ক্ষোভ রয়ে গেছে। ৫১ শতাংশ নারী অথচ আসন ৫-৭ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব। আমরা ক্ষুব্ধ হয়েছি। নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাই।’
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জায়িফ রহমান বলেন, নির্বিঘ্ন ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ইসি দৃশ্যমান উদ্যোগ নিলে জনগণের মধ্যে ভরসা বাড়বে ইসির প্রতি। মিস ইনফরমেশন, এআই জেনারেটেড তথ্যের অপব্যবহার রোধে তৎপর থাকার অনুরোধ করেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
সংলাপে অংশ নিয়ে সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান বলেন, ‘একটা পক্ষকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ধরে নিলাম, তারা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনে বসেছে, তাদের মধ্যে যদি কেউ মনে করেন যে, পরিস্থিতি অনুকূলে নয় বা আমরা জিতব না, সুতরাং আমরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। তাহলে কী পরিস্থিতি হবে, আপনারা ভেবে দেখুন। সুষ্ঠু নির্বাচন না করতে পারলে পদত্যাগ করার মতো সাহস থাকতে হবে।’
সংলাপে অংশ নিয়ে সংসদ নির্বাচনে গণমাধ্যমের সম্পৃক্ততা বাড়াতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি আরও বলেন, আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট এবং প্রতিটি ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার।
নির্বাচনে রাজনৈতিক শিষ্টাচার প্রতিষ্ঠায় দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রচুর ভুয়া তথ্য, ভুল তথ্য, ফেক ইমেজ এবং এআইনির্ভর বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। নির্বাচনের সময় এগুলোর প্রভাব আরও বাড়বে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির জন্য আমাদের এখানে যে জিনিসটা দরকার, এখনো বাংলাদেশ সেটার জন্য প্রস্তুত নয়।’
কবি মোহন রায়হান বলেন, এখনো প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা রয়েছে। তারা কিন্তু সুন্দর একটি নির্বাচন হতে বাধা দেবে। এ বিষয় ইসিকে সজাগ থাকতে হবে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি দাবি করেন, শুধু ঋণখেলাপি নয়, যাঁরা অর্থ পাচারকারী তাঁরাও যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সেই আইন করতে হবে।
সংলাপে স্বাগত বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য ভোট করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচন সুন্দরভাবে করার জন্য আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার অনেক কিছু এগিয়ে নিয়েছি। সংস্কার কমিশনের আলোচনায় অনেক কিছু হয়েছে। আমাদের কোনো গ্যাপ থাকলে আপনারা তা পূরণ করে দেবেন।’
এ সময় ফোনালাপ ফাঁসের ভয়ে ‘ফোন ধরেন না’ বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘অনেকের ফোন কল ধরি না। কল ফাঁসের ভয়ে ফোনে কথা বলি না। কিন্তু আমাদের সব সময় দরজা খোলা। যেকোনো সময়ে আপনাদের সুপারিশ আমরা গ্রহণ করব।’
সিইসি আরও বলেন, যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে চায়, তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে।
পোস্টাল ব্যালটে কী কী চ্যালেঞ্জ হতে পারে তা বের করতে নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট মে রেইজ ডিবেটস। এটা পরের দিকে ডিবেট হতে পারে। ইট মে রেইজ লট অব কোয়েশ্চেনস এজ ওয়েল। এটা আমরা জানি। তবে তারা (কনসালট্যান্ট) আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, যে ব্যবস্থা নেবেন।’
সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির জ্যেষ্ঠ সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সকালে ১৩ এবং বিকেলে ১৫ জন সংলাপে অংশ নেন।
জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত ভাষ্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। ১৭ অক্টোবর দলগুলো এই সনদে স্বাক্ষর করবে। জাতীয় সংসদ ভবনে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণের চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেইফতেখারুজ্জামান বলেন, অন্য অভিযুক্তরা যদি বেসামরিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন কারা হেফাজতে থাকতে পারে, তাহলে সেনা কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা ‘সাব-জেল’ ঘোষণার যৌক্তিকতা কী? এভাবে বিশেষ শ্রেণিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া ন্যায়বিচারের পরিপন্থী এবং সরকারের এই বৈষম্যমূলক আচরণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপ
১১ ঘণ্টা আগেম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার্য মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে দেশের সব জেলায় পৃথক বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
১১ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রতিবেদনে সিআইডি জানিয়েছে, দেশ ও বিদেশ থেকে পরিচালিত একটি অনলাইন নেটওয়ার্ক ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’-এর মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা নেওয়া হয়ে
১১ ঘণ্টা আগে