Ajker Patrika

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক

নাটোরে শ্মশানঘাটে নিহত ব্যক্তিকে পুরোহিত দাবি করে ভারতীয় গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ১৮
Thumbnail image
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টস

নাটোরে শ্মশানঘাটে একটি ভোগঘরে সম্ভাব্য চুরির ঘটনায় তরুণ কুমার নামে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই ভুক্তভোগী সনাতন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে প্রচার করেছে ভারতের সবচেয়ে বড় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)। গতকাল শনিবার পিটিআই কলকাতা ইসকনের মুখপাত্র রাধারমণ দাসের এক্স (সাবেক টুইটার) হ‍্যান্ডেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওর বরাতে সংবাদটি প্রকাশ করে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড পেজ থেকে প্রকাশিত এক পোস্টে বলা হয়েছে, এই সংবাদে বাংলাদেশের কোনো কর্তৃপক্ষের, হিন্দুনেতা এবং ভুক্তভোগীর কোনো স্বজনের বক্তব্য নেওয়া হয়নি। পিটিআই খবরটি প্রকাশের পর তা ভারতে হিন্দুস্তান টাইমস, দ‍্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটা মাত্রই তা যাচাই–বাছাই না করে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড বলে চালিয়ে দেওয়া কোনো দায়িত্বশীল কাজ নয়। এই ধরনের অতিরঞ্জিত সংবাদ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের কারণ হতে পারে।’

তরুণ কুমার ইসকন সদস্য ছিলেন না নিশ্চিত করে হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সংবাদ প্রকাশের আগে স্থানীয় পর্যায়ে বা অফিশিয়াল মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা উচিত মিডিয়ার।’

বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, নাটোর জেলার সদর থানার বড় হরিশপুর মহাশ্মশান ঘাট থেকে গতকাল থানা-পুলিশ হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তরুণ কুমার দাস (৬০) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্মশানঘাটের ভেতরে অবস্থিত ভোগঘরে অজ্ঞাতনামা চোরেরা চুরি করার সময় ভুক্তভোগী তরুণ কুমার দাস চোরদের দেখে চিৎকার করার চেষ্টা করলে চোরেরা তাঁর মুখ ও হাত-পা বেঁধে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

পুলিশ জানায়, শ্মশানঘাটের ভোগঘর থেকে কয়েকটি কাঁসার প্লেট চুরি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। স্থানীয় এক ধর্মীয় নেতা জানান, ভুক্তভোগী বহুদিন যাবৎ মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং বেশ কিছুদিন যাবৎ ওই মহাশ্মশান ঘাটে অবস্থান করছিলেন।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘শনিবার লাশ উদ্ধারের পর থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত যা তথ্য পাওয়া গেছে—তাতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাদকাসক্ত কিছু লোক চুরি করতে গেলে এই ঘটনা ঘটতে পারে। হত্যার সম্ভাব্য সকল কারণই খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।’

নাটোরের ওই শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সত্য নারায়ণ রায় টিপু বলেন, ‘তরুণ কুমার শ্মশান কমিটির কোনো সদস্য নয় এবং তিনি কোনো পুরোহিত বা সেবক ছিলেন না। তিনি মানসিকভাবে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ কুমার ইসকন বা কোনো সংগঠনের সদস্য ছিলেন না। এই ঘটনায় কোনো সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা আছে বলেও আমাদের কাছে মনে হয় না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত