Ajker Patrika

ইসির ওয়েবসাইট: নৌকা আউট, দাঁড়িপাল্লা ইন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ইসির ওয়েবসাইট: নৌকা আউট, দাঁড়িপাল্লা ইন

নিবন্ধন স্থগিত থাকা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘ নয় বছর পর ফিরে এসেছে জামায়াতে ইসলামীর নামসহ তাদের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।

আজ বুধবার ইসির ওয়েবসাইটে দল দুটির প্রতীক নিয়ে এমন পদক্ষেপ দেখা গেছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে গত ১২ মে দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর ইসিও তাদের ওয়েবসাইট হালনাগাদ করে তাতে দলটির নামের পাশে স্থগিত লিখে রাখে।

অন্যদিকে আদালতের রায়ে ২০১৩ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এরপর তাদের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা বাদ দেওয়া হয় ২০১৬ সালে ফুল কোর্টসভার এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেটি কোনো রায় ছিল না। সে সময় ইসির ওয়েবসাইট থেকে জামায়াতের নাম ও প্রতীক বাদ দেওয়া হয়। এমনকি ইসির তফসিলভুক্ত তালিকা থেকেও দাঁড়িপাল্লার নাম বাদ দেওয়া হয়।

ওয়েবসাইটে এই পরিবর্তনের বিষয়ে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কোনো চাপে নয়, এটি কমিশনের সিদ্ধান্ত। কমিশন মনে করছে, প্রতীকটি সরিয়ে রাখা যথাসিদ্ধ বা যথার্থ হবে।’

কমিশনের তফসিলভুক্ত তালিকা থেকে নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়া হবে কি না—জানতে চাওয়া হলে আখতার আহমেদ জানান, প্রতীকের তালিকায় নৌকা সংরক্ষিত থাকবে। নৌকা প্রতীক অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না।

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে জামায়াতের প্রতীক ফেরা নিয়ে আখতার আহমেদ বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার গেজেট প্রকাশের পরই এটি ওয়েবসাইটে দেওয়া উচিত ছিল। ভুলে এত দিন সেটি করা হয়নি। আজকে ওয়েবসাইটে তোলা হয়েছে।

গত রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে ইসির তালিকা থেকে নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সে সময় নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেছিলেন, ‌প্রতীক কখনো নিষিদ্ধ হয় না। দল বিলোপ ঘোষণা করলেও প্রতীক সংরক্ষণে রাখা হয়, প্রতীকের মালিক নির্বাচন কমিশন।

এর প্রতিক্রিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘অভিশপ্ত “নৌকা” মার্কাটাকে আপনারা কোন বিবেচনায় আবার শিডিউলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালেন? সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই গণঅভ্যুত্থানকে আপনারা জাস্ট বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন। কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এবং কাদের দেওয়ার জন্য এই মার্কা রাখছেন আপনারা? পরাজিতদের স্বপ্নের রিফাইন্ড আওয়ামি লীগকে তাদের মার্কা ফিরিয়ে দিতে চান? বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে নির্বাচন কমিশনের প্রতি প্রশ্ন রইল।’

উপদেষ্টার এই পোস্টের পরদিনই নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে নৌকা প্রতীক সরালো নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে সেখানে ফিরিয়ে আনা হলো জামায়াতে ইসলামীর নাম ও প্রতীক।

অবশ্য এনসিপির চাওয়া অনুযায়ী ‌শাপলা প্রতীক তফসিলভুক্ত করা হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ।

আখতার আহমেদ বলেন, শাপলা প্রতীক হিসেবে তফসিলভুক্ত করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ভবিষ্যতে হবে কি না, সেটার সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত