Ajker Patrika

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ : জাতির গতিপথ নির্ণয় করে দেওয়া ভাষণ

জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
Thumbnail image

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ। বাংলার সংগ্রামের ইতিহাসে আশ্চর্য এক বাঁক এনেছিল এই দিনটি। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জন করার পরও যখন আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা না দিয়ে পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়া হয়, তখন তেতে ওঠে বাংলা। আর ভোটে বিজয়ের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপরই বর্তায় জাতিকে দিকনির্দেশনা দেওয়ার ভার। জাতির প্রতি সেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটিই সেদিন পালন করেছেন স্বাধিকার আন্দোলনের নায়ক।

ইতিহাস আমাদের জানায়, ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৬ দফা দাবি উত্থাপনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, তাকে জাতীয় মুক্তি আন্দোলন বললে ভুল হয় না। ধর্মকে হীনস্বার্থে ব্যবহার করে যে তথাকথিত ইসলামি রাষ্ট্র তৈরি করা হয়েছিল, সে রাষ্ট্রের বাঙালি জনসমষ্টিকে জাতীয়তাবাদের শক্তিতে সংহত করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ কারাবাস, ষড়যন্ত্র মামলা ইত্যাদি দিয়েও বেঁধে রাখা যায়নি শেখ মুজিবকে। বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন এই ভূখণ্ডের প্রতিটি মানুষের আত্মার আত্মীয়। নির্বাচনে বিজয়ের পর যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনি, তখনই তাঁর বিরুদ্ধে, তাঁর দলের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। লারকানায় ভুট্টোর বিলাসবহুল বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করে ইয়াহিয়া খান পূর্ব বাংলার মানুষের ক্ষমতার কেন্দ্রে আসার সম্ভাবনা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নাকচ করে দেন। তারই ফলে স্থগিত হয়ে যায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জাতির সামনে উপস্থিত হয় ৭ মার্চ।

ছাত্রলীগের বড় একটি অংশ এবং দেশের নাগরিকদের অনেকেই বঙ্গবন্ধুর মুখ থেকে একতরফা স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে চেয়েছিল। এই ভাষণে তাদের ভাবনার লাগাম টেনে ধরেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সরাসরি একতরফা স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে আন্তর্জাতিক মহলে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা আর থাকত না। কৌশল অবলম্বন করেই ‘মুজিব বিচ্ছিন্নতাবাদী’—এই কথা বলার সুযোগ তিনি দেননি ইয়াহিয়া কিংবা ভুট্টোকে। বরং ‘যদি’ শব্দ ব্যবহার করে সে ভাষণে বলে দিলেন সব কথাই। মুক্তিপাগল জাতি স্বাধীনতাসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার অপেক্ষায় ছিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ভাষণের মাধ্যমে তাদের আকাঙ্ক্ষায় জোগালেন সেই রসদ এবং দিলেন সবুজসংকেত। ছাপোষা বাঙালিকে উদ্বুদ্ধ করলেন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের অঙ্গীকার করতে। রমনা রেসকোর্সে সেদিন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ হয়ে উঠেছিল যেন অলৌকিক এক স্বপ্নময় যাত্রারম্ভ, একটি ভাষণ পুরো জাতির চলার পথ গড়ে দিয়েছিল। সেদিন আর সব কিছু ভেসে গিয়েছিল, দৃশ্যপটে একজনই মানুষ, শেখ মুজিব, দৃশ্যপটে একটাই স্পন্দন—সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের শপথ।

ভাষণটি তো শেষ হয়েছিল সেই অমোঘ শব্দাবলি দিয়ে—‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এই শব্দগুলোই তো নির্ধারণ করে দিল একটি জাতির গতিপথ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত