Ajker Patrika

স্মার্ট কার্ডের পুরোপুরি সুফল মিলছে না

মো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা
আপডেট : ৩১ মে ২০২৪, ১২: ১০
স্মার্ট কার্ডের পুরোপুরি সুফল মিলছে না

দেশের নাগরিকের হাতে স্মার্ট কার্ড নামে পরিচিত উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তুলে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এই কার্ডে তিনটি স্তরে আছে ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য। প্রথম স্তরের তথ্যগুলো খালি চোখে দেখা যায়। দ্বিতীয় স্তরের তথ্যগুলো দেখতে ম্যাগনিফাইং গ্লাস বা অতসী কাচের মতো যন্ত্র লাগে। আর তৃতীয় স্তরের তথ্য দেখতে ল্যাবরেটরিতে ফরেনসিক পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও নাগরিকের তথ্য যাচাই করার সুবিধা আছে এতে। তবে সবার হাতে পৌঁছে দিতে না পারায় স্মার্ট কার্ডের সুফল পুরোপুরি পাচ্ছেন না নাগরিকেরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও তথ্য যাচাই করতে পারার কথা। ইসির দেওয়া সফটওয়্যারের মাধ্যমে যে কেউ ভোটারদের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি ১৭৬টি প্রতিষ্ঠান ইসি থেকে নাগরিকের তথ্য যাচাইয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ। কিন্তু অফলাইনের সুবিধা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

ইসির হিসাব অনুযায়ী, ২ মে পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড মোট পারসোনালাইজেশন বা ছাপা হয়েছে ৮ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২২৬টি; এখনো প্রিন্ট করা হয়নি বা ফাঁকা আছে ৪৪ লাখ ২ হাজার ৭৭৪টি কার্ড। আইডিইএ-২ প্রকল্পের প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) গত বছর সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, ফরাসি কোম্পানি অবারথার টেকনোলজিস থেকে সংগ্রহ করা ৯ কোটি কার্ডের মধ্যে ১৭ লাখ ৯৪ হাজার ৭৪৯টি ফাঁকা কার্ড নষ্ট হয়ে গেছে। সেই হিসাবে ইসির হাতে বর্তমানে আছে ২৬ লাখের মতো। ইসি নতুন প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৩৬ লাখ কার্ড পেলেও সব নাগরিকের হাতে পৌঁছাতে চাইলে আরও প্রায় ১ কোটি নতুন কার্ড লাগবে। দেশে এখন ভোটার ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। এ বিষয়ে ইসির এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে জানা গেছে।

বাকি নাগরিকেরা কবে স্মার্ট কার্ড পাবেন, জানতে চাইলে আইডিইএ দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ৯ কোটি আগের কেনা ছিল। আর ২ কোটি ৩৬ লাখ কেনার প্রক্রিয়া চলছে।

ইসি সূত্রে জানা যায়, ৯ কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দিতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আইডিইএ প্রকল্পটি ২০১১ সালে নেওয়া হয়েছিল। এর মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। অগ্রগতি না হওয়ায় ছয় দফা বাড়িয়ে মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় মেটানো হচ্ছে। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২২ সালের জুনে শেষ হলেও এখনো দেশের ৯ কোটি নাগরিক স্মার্ট কার্ড পাননি। আরও তিন কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্ট কার্ড দিতে নেওয়া নতুন প্রকল্পের (আইডিইএ-২) সময়ও সাড়ে তিন বছর পেরিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

লবণাক্ত সুন্দরবনে মাটির গভীরে আছে দুটি বিশাল মিঠাপানির ভান্ডার: গবেষণা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামছে দুদক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম দুদকের কোনো সাবেক চেয়ারম্যান একই সংস্থার অনুসন্ধানের মুখোমুখি হচ্ছেন।

দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু এবং ইকবাল মাহমুদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক যোগসাজশের অভিযোগ উঠে এসেছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ইকবাল মাহমুদের ভাই সাদিক মাহমুদ বকুল ছিলেন ঠিকাদার মিঠুর ব্যবসায়িক সহযোগী। এই সম্পর্কের সুযোগে তাঁরা স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু ইকবাল মাহমুদের প্রভাবের কারণে দীর্ঘদিন মিঠু ও বকুল—দু’জনই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ঠিকাদার মিঠুর কাছ থেকে রাজধানীর গুলশানের অভিজাত এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেছিলেন ইকবাল মাহমুদ—এমন অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থপাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়েও অনুসন্ধান চালাবে দুদক।

পাশাপাশি তাঁর ভাই সাদিক মাহমুদ বকুলের সম্পদের উৎস, বিদেশে সম্ভাব্য লেনদেন এবং যৌথ ব্যবসার আর্থিক তথ্যও খতিয়ে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, ১১ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে থাকা অবস্থায় ঠিকাদার মিঠুর কাছ থেকে স্বাস্থ্য খাতের বিস্তৃত অনিয়ম, পাচারকৃত অর্থ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় দুদক। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে এই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

লবণাক্ত সুন্দরবনে মাটির গভীরে আছে দুটি বিশাল মিঠাপানির ভান্ডার: গবেষণা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

/শুরু হলো বিজয়ের মাস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শুরু হলো বিজয়ের মাস

পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দমননীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রাম করেছিল পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। পূর্ব বাংলার মানুষের স্বাধিকারের আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি পায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে। দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র লড়াইয়ের পর একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর জন্মলাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাঙালির ‘বিজয়ের মাস’ হিসেবে পরিচিত সেই ডিসেম্বরের প্রথম দিন আজ।

স্বাধীনতার মূল্য হিসেবে পূর্ব বাংলার ৩০ লাখ মানুষকে শহীদ হতে হয়েছে। ২ লাখের মতো নারী হারিয়েছেন সম্ভ্রম। প্রতিবছর ডিসেম্বরে বিজয়ের আনন্দ উদ্‌যাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে একাত্তরের শহীদ আর সেই বীরাঙ্গনা নারীদের সর্বোচ্চ ত্যাগকে। স্মরণ করে জীবন তুচ্ছ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা।

পাকিস্তানি বাহিনী একাত্তরের ২৫ মার্চ ঢাকায় গণহত্যা শুরু করার পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার মানুষ। দলমত-নির্বিশেষে প্রায় সব শ্রেণির মানুষ দেশ স্বাধীন করার যুদ্ধে যোগ দেয়। তবে একটি ক্ষুদ্র অংশ পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। বাঙালি সেনা, ইপিআর (পরে বিডিআর), পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনী আর সর্বস্তরের জনগণের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা মুক্তিবাহিনী ৯ মাস বীরত্বের সঙ্গে যুক্ত করে। এ যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের আক্রান্ত মানুষকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করেছিল প্রতিবেশী ভারত।

কয়েক মাস ধরে মুক্তিবাহিনীর নিরন্তর আক্রমণে ক্রমে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে সীমান্ত এলাকা থেকে ক্রমে ঢাকার দিকে অগ্রসর হতে থাকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কমান্ড। ৩ তারিখ পরস্পরকে আক্রমণ করার মধ্য দিয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ভারত ও পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রমেই ঢাকার দিকে পিছু হটতে থাকে পাকিস্তানি সেনারা। যৌথ বাহিনীর আক্রমণের মুখে শেষ পর্যন্ত ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণে রাজি হয় পাকিস্তানি বাহিনী। তখনকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৯৩ হাজার সেনাকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন পাকিস্তান বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী। স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

ডিসেম্বর মাসটি সেই থেকে বাংলাদেশের মানুষের উদ্‌যাপনের মাস। দেশজুড়ে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এ মাসজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিজয় উদ্‌যাপন করে। শ্রদ্ধা জানায় একাত্তরের শহীদ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের। সংবাদপত্রগুলো বের করে বিশেষ ক্রোড়পত্র। রেডিও-টিভিতে থাকে বিজয়ের তাৎপর্য তুলে ধরা নানা আয়োজন। এ মাসজুড়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে উড়তে দেখা যায় লাল-সবুজ পতাকা, যা ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর বাংলার শ্যামল প্রকৃতির প্রতীক।

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনের অবসানের পর এসেছে দ্বিতীয় ডিসেম্বর। কোনো একক দলের নিয়ন্ত্রণে বা বৃত্তবন্দী না থেকে অনেকটা ভিন্ন আবহে শুরু হচ্ছে বাঙালির বিজয়ের মাস।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে এক অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। ডিসেম্বর শুধু আনন্দ উদ্‌যাপন নয়, মাথা উঁচু করে বাঁচতে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে প্রতিবছর নতুন করে শপথ নেওয়ার মাসও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

লবণাক্ত সুন্দরবনে মাটির গভীরে আছে দুটি বিশাল মিঠাপানির ভান্ডার: গবেষণা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে খালেদা জিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৪
সোমবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিং করেন আহমেদ আজম খান। ছবি: সংগৃহীত
সোমবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিং করেন আহমেদ আজম খান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটেছে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে (লাইফ সাপোর্ট) আছেন। গতকাল রোববার রাত থেকেই তাঁর অবস্থা ‘খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে’ চলে গেছে বলে আজ সোমবার দুপুরে জানিয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান।

আজ বেলা পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিং করেন আহমেদ আজম খান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে ম্যাডাম খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে চলে গেছেন। ফাইট করছেন তিনি আমাদের মাঝে ফিরে আসার জন্য। এখনো অবস্থা ক্রিটিক্যাল আছে। বলবার মতো কোনো কন্ডিশনে এখনো তিনি আসেন নাই। সারা জাতির কাছে দোয়া চাওয়া ছাড়া আর কিছু বলা নেই।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বর্তমানে খালেদা জিয়া ভেন্টিলেশন সাপোর্টে আছেন। সিসিইউ থেকে আইসিইউ, এরপরে ভেন্টিলেশন বা লাইফ সাপোর্ট—যা-ই বলেন। আমি এগুলোর বাইরে বলব যে ম্যাডাম খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে আছেন।’

আজম খান জানান, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় শুরু থেকেই আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তাঁর চিকিৎসায় চীনের চিকিৎসকেরাও যুক্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে ক্লান্তিহীনভাবে চেষ্টা করছেন। বাদ বাকি আল্লাহ ভরসা।’

এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে শয্যাশায়ী খালেদা জিয়া। তাঁর লিভারে সমস্যা, কিডনির কর্মক্ষমতা কমে গেছে, শ্বাসকষ্টসহ একাধিক শারীরিক জটিলতা একসঙ্গে দেখা দিয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর রাতে গুরুতর অবস্থায় তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর শারীরিক অবস্থাকে ‘অত্যন্ত সংকটজনক’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। পরদিন তিনি আরও বলেছিলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা বর্তমানে নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

লবণাক্ত সুন্দরবনে মাটির গভীরে আছে দুটি বিশাল মিঠাপানির ভান্ডার: গবেষণা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের স্বার্থ রক্ষায় পিলখানা হত্যাকাণ্ড: শহীদ পরিবারগুলোর অভিযোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৪
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার বিডিআর–এর নিহত পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার বিডিআর–এর নিহত পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভারতের স্বার্থ রক্ষা ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নিজ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শহীদ সদস্যদের পরিবারের কয়েকজন প্রতিনিধি। তাদের দাবি, এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মধ্যে ‘ভারতবিরোধী’ অবস্থান গ্রহণকারীদের উদ্দেশে ভয় দেখানোর বার্তা দেওয়া হয়েছিল।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে ‘বিডিআর তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশে শহীদ পরিবারের মতপ্রকাশ’—শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন নিহত সাবেক বিডিআর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া।

রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘বার্তাটা ছিল এমন—সেনাবাহিনীতে কেউ ভারতবিরোধী হলে তার পরিণতি হবে পিলখানার মতো।’ তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে যাদের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে শহীদ কর্নেল কুদরুতী ইলাহীর ছেলে সাকিব রহমান বলেন, ‘কমিশন বলেছে কিছু নাম আপাতত প্রকাশ করতে চায় না। আমরা মনে করি, এই অজুহাত দেখিয়ে নামগুলো আর প্রকাশ করা হবে না। শহীদ পরিবার হিসেবে আমরা তা মেনে নেব না।’ তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে সামরিক ও বেসামরিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি করেন।

শহীদ কর্নেল মুজিবুল হকের ছেলে মুবিন হক বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচারের জন্য রাস্তায় নেমেছি। আওয়ামী লীগ ও তাদের কিছু অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা আমাদের মানহানি করেছে, সম্মিলিতভাবে অপপ্রচার চালিয়েছে। শহীদ পরিবারকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে।’ তিনি সরকারকে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

শহীদ নূরুল ইসলামের সন্তান পরিচয় দিয়ে আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার একটি মিথ্যা ইস্যু সামনে এনে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সশস্ত্র বাহিনীকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় এবং এর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার সূচনা করে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ জানে এই হত্যাকাণ্ড কারা করেছে—আওয়ামী লীগ করেছে, শেখ হাসিনা করেছে, এবং ভারতের সংশ্লিষ্টতা ছিল।’ এসব কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করারও দাবি করেন তিনি।

এদিকে, সেনাবাহিনীকে দুর্বল করতে ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। এ ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা এবং ভারতের সম্পৃক্ততাও পেয়েছে কমিশন।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম নতুন ভবনের সপ্তম তলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত তদন্ত কমিশন। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।

এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিশন। সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম বলেন। তাঁরা হলেন—ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিদেশে পলাতক শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মির্জা আজম, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাহারা খাতুন।

এর বাইরে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তার নামও উল্লেখ করেন তদন্ত কমিশনের প্রধান আ ল ম ফজলুর রহমান। তাঁরা হলেন—শেখ হাসিনার সাবেক নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন উদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক ডিজিএফআই প্রধান জেনারেল আকবর (মোল্লা ফজলে আকবর)।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহী জওয়ানদের হামলায় নিহত হন ৫৭ সেনা কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের দুই মাসের মধ্যে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

লবণাক্ত সুন্দরবনে মাটির গভীরে আছে দুটি বিশাল মিঠাপানির ভান্ডার: গবেষণা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত