Ajker Patrika

সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘স্যাডফিশিং’ প্রবণতা আসলে কী

স্যাডফিশিং মূলত পরিকল্পিত মিথ্যা পোস্টের সমালোচনা করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ছবি: ফেসবুক
স্যাডফিশিং মূলত পরিকল্পিত মিথ্যা পোস্টের সমালোচনা করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ছবি: ফেসবুক

‘আমার ছোট বোনের যে এত দুঃখ তা ওর সাথে ফেসবুকে এড না থাকলে জানতামই না!’ চলতি বছরের শুরুর দিকে এমন একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস অনেককে শেয়ার করতে দেখা যায়। লেখার পাশে ইমোজি দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে এটি মজা করে শেয়ার করা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ নানা সমস্যা, আফসোস, খেদ, দুঃখ বিষয়ক পোস্ট, কমেন্ট, স্টোরি শেয়ার করে। এসব পোস্টের মাধ্যমে সহানুভূতি, লাইক বা কমেন্ট পেতে চায় অনেকে। কেউ কেউ ইচ্ছা করে বিষয়টি করে। নেটিজেনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বানিয়ে গল্প বলার প্রবণতাও রয়েছে। আবার কেউ কেউ অবচেতন মনে এসব করে। এই ধরনের প্রবণতাকে বলে ‘স্যাডফিশিং’।

২০১৯ সালে সেলিব্রেটি মডেল কেন্ডাল জেনারের সমালোচনায় ‘স্যাডফিশিং’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন সাংবাদিক রেবেকা রিড। সে সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে কেন্ডাল জেনার মুখে ব্রণ নিয়ে সহানুভূতির গল্প রচনা করেন। পরবর্তীতে জানা যায়, সেটি ছিল একটি বিজ্ঞাপনের অংশ! এই ধরনের কারসাজি বর্ণনা করতে একটি শব্দ খুঁজছিলেন সাংবাদিক রেবেকা। শেষ ‘স্যাডফিশিং’ শব্দটিই জুতসই মনে হয় তাঁর কাছে।

রিড বলেন, স্যাডফিশিং মূলত ‘পরিকল্পিত মিথ্যা পোস্ট’ দেওয়ার প্রবণতার সমালোচনা করতেই তৈরি করা হয়েছিল। তবে এই শব্দ এখন মানুষের সত্যিকার দুর্বলতাকে অনলাইনে প্রকাশ করতে নিরুৎসাহিত করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অনেকেরই এই ধরনের প্রবণতা রয়েছে, এটা অবশ্য খুব একটা খারাপ নয়। অন্যের মনোযোগ পেতে চাওয়া মানুষের স্বভাব। এতে দোষের কিছু নেই।

পরবর্তীতে ‘স্যাডফিশিং’ শব্দটি নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেন আচরণ বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক কারা পেট্রোফেস। তাঁর মতে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের আবেগপূর্ণ অবস্থাকে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করার প্রবণতাই হলো— স্যাডফিশিং। এর মাধ্যমে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করে অনেকে। অবশ্য এই ব্যাখ্যাটি সাংবাদিক রিডের ব্যবহৃত ‘স্যাডফিশিং’ শব্দটির মূল অর্থ থেকে আলাদা। রিড সেলিব্রিটি সংস্কৃতির সমালোচনার জন্য স্যাডফিশিং শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন।

গবেষক কারা পেট্রোফেস এবং তাঁর সহকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্রবণতা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। ২০২১ সালে আমেরিকান কলেজ হেলথ সাময়িকীতে এ সম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন তাঁরা। গবেষণাপত্রে বলা হয়, মানসিক চাপ প্রশমনে ‘অসুস্থ’ কৌশল হিসেবে স্যাডফিশিং–এর প্রবণতা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে।

জনপ্রিয় মনোবিজ্ঞানের ভাষায়, যাদের মধ্যে ‘অ্যাংশাস অ্যাটাচমেন্ট স্টাইল’ বেশি রয়েছে, তাঁদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। যাদের মধ্যে প্রিয়জনের ছেড়ে যাওয়ার ভয়, অন্যের ওপর বেশি নির্ভরশীলতা ও অন্যদের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার বেশি আকাঙ্ক্ষা থাকে তাদের মধ্যে ‘অ্যাংশাস অ্যাটাচমেন্ট স্টাইল’ থাকে।

কারা পেট্রোফেস বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, ‘অ্যাংশাস অ্যাটাচমেন্ট’ থাকা ব্যক্তিরা অন্যদের মাধ্যমে নিজের স্বীকৃতি খোঁজেন, বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ এবং অনলাইন বা বাস্তবে বেশি সংখ্যক বন্ধু প্রয়োজন মনে করেন— এই ধরনের ব্যক্তি বেশি স্যাডফিশিং করতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল এই ধারণা দেয় যে, যারা অ্যাংশাস অ্যাটাচমেন্ট এবং নেতিবাচক আন্তঃব্যক্তিক অভিজ্ঞতা নিয়ে বসবাস করেন, তাঁদের অনলাইনে অনুপযুক্ত আচরণ করার সম্ভাবনা বেশি। এ ধরনের আচরণের একটি উদাহরণ হলো— অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিষণ্নতা বা দুঃখের ভান করে সহানুভূতি পাওয়া চেষ্টা করা, যেখানে প্রকৃতপক্ষে তিনি ওই ধরনের কোনো পরিস্থিতিতে নেই।

তবে মনস্তত্ত্ববিদ টেস ব্রিগহাম যুক্তি দেন, সহকর্মীদের কাছে নিজের স্বীকৃতি খোঁজা মানবিক প্রকৃতির একটি স্বাভাবিক প্রবণতা এবং এটি অবশ্যই ‘অ্যাংশাস অ্যাটাচমেন্ট স্টাইল’ নির্দেশ করে না।

স্যাডফিশিং এবং সত্যিকারভাবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, স্যাডফিশিং হতে পারে একটি বিশেষ উদ্ধৃতি সংবলিত পোস্ট যা প্রাক্তনের প্রতি ইঙ্গিত করে। অন্যদিকে কেউ যদি বিষণ্নতার সঙ্গে লড়াইয়ের বিষয়ে কোনো কনটেন্ট শেয়ার করে, তাহলে তা সত্যিকার অর্থেই সাহায্য চাওয়া বা অন্যদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা হতে পারে।

ব্যক্তিগত লাভের জন্য অনলাইনে দুঃখ বিলাস করছে— কারও বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হলে, সত্যিকার অর্থেই যারা নিজেদের দুঃখ প্রকাশ করতে চান তাঁরা অস্বস্তিবোধ করতে পারেন এবং নিজেকে অনলাইনে খুবই অরক্ষিত ভাবতে পারেন।

স্বাধীন চিন্তকদের সংগঠন ‘হেডস কনফারেন্স’–এর তথ্য অনুযায়ী, যারা স্যাডফিশিং–এর জন্য অভিযুক্ত হন, তাঁদের মধ্যে আত্মমর্যাদা বোধ কমে যেতে পারে, বিপরীতে উদ্বেগ বাড়তে পারে এবং নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারে। তাঁরা পরিবারের এবং বন্ধুদের কাছে অ্যাটেনশন সিকার বা অন্যদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য মরিয়া হিসেবে অবহেলিত বা উপেক্ষিত হতে পারেন। ফলে প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং সমর্থন থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারা আলি খানের মতো ফিটনেস পেতে যেমন ডায়েট রুটিন মেনে চলবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সারা আলি খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
সারা আলি খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

শরীরচর্চা ও ডায়েটের বেলায় বলিউড তারকা সারা আলি খান ভীষণ পরিশ্রমী। শরীর আর ওজন ঠিক রাখতে বিস্বাদ খাবার খেতেও আপত্তি নেই তাঁর। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর সকালের খাবার নিয়ে কথা বলেছেন। অন্যরা যেমন মুখরোচক জম্পেশ নাশতা করতে পারেন, সারার কপালে সেই সুখ নেই। কারণ, আর পাঁচজনের মতো দুধ বা শর্করাজাতীয় খাবার খাওয়ার অনুমতি নেই তাঁর। সকাল সকাল যা খেতে হয়, সেটি সারার অপছন্দ হলেও যেহেতু শরীরের জন্য ভালো, তাই আপত্তি করেন না।

সারা আলি খান চিনি, শর্করা ও দুধজাতীয় খাবার ছাড়া ডায়েট রুটিন অনুসরণ করেন। ওজন কমাতে কি সবারই এই রুটিন মেনে চলা উচিত? ‘পিংক ভিলা’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ২৯ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী বলেছিলেন, তিনি কঠোরভাবে চিনি, দুধ ও শর্করাবিহীন ডায়েট অনুসরণ করেন।

শরীর আর ওজন ঠিক রাখতে বিস্বাদ খাবার খেতেও আপত্তি নেই সারা আলি খানের। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
শরীর আর ওজন ঠিক রাখতে বিস্বাদ খাবার খেতেও আপত্তি নেই সারা আলি খানের। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

কিন্তু এটি কি স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি? এটি কি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে?

ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান ও ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সুমিত শর্মা চলতি বছরের ২৮ মার্চ তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে সারা আলি খানের এই ডায়েট কাজ করে কি না সে সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। কী করে এই ডায়েট শরীরের কাজে লাগে সেটিও বর্ণনা করেছেন।

সুমিত শর্মার ভাষ্য, ‘ওজন কমানোর প্রক্রিয়াটি সহজ, যদি আপনি জানেন কী খাবেন এবং কখন খাবেন।’ তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, দুধ, চিনি, মিহি ময়দা ও গমের মতো কিছু উপকরণ বাদ দিলে ওজন কমানোর মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যেতে পারে।

তাঁর মতে, কেউ যদি এই পদ্ধতি সঠিকভাবে মেনে চলেন, তাহলে মাত্র দুই মাসের মধ্যে সারা আলি খানের মতো ফিটনেস অর্জন করা সম্ভব হবে। তিনি একটি সহজ ডায়েটও শেয়ার করেছেন যা অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।

কী সেই ডায়েট রুটিন?

সকালের নাশতা

সুমিত দিন শুরু করার পরামর্শ দেন স্প্রাউট, ডাবের পানি, শুকনো ফল, তাজা শাকসবজি ও ফল দিয়ে। এসব খাবার সারা দিন শক্তি জোগানের জন্য আঁশ, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।

দুপুরের খাবার

দুপুরের খাবারের জন্য সুমিত মসুর ডাল দিয়ে ভাত খাওয়ার পরামর্শ দেন। এটি ক্ল্যাসিক ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যা তৃপ্তি পেতে ও হজমে সহায়তা করে।

রাতের খাবার

রাতে হালকা কিন্তু তৃপ্তিদায়ক খাবার হিসেবে মৌসুমি সবজির সঙ্গে রুটি বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন সুমিত। এ ধরনের খাবার হজমের জন্য সহজ। সুমিত আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ যোগ করেছেন। তিনি বলেন, দুপুর ও রাতের খাবারের আগে এক বাটি সালাদ খেতে ভুলবেন না। সালাদ হজমে সাহায্য করে, অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায় এবং আপনার খাবারে আরও আঁশ যোগ করে।

সারা আলি খানের মতো ফিটনেস ও সুন্দর ত্বক পেতে বাড়তি টিপস

ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই সারা কাঁচা হলুদ ও পালংশাক পানিতে ফুটিয়ে একটি পানীয় তৈরি করে পান করেন। রোজ সকালে এই পানি পান করে তাঁর দিন শুরু হয়। হলুদ ও পালংশাক একসঙ্গে খেলে তা হজমশক্তি ভালো রাখে, ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এতে ওজনও বাড়ে না।

পুষ্টিবিদদের মতে, হলুদ ও পালংশাক দুটি খাবারই পুষ্টিগুণে ভরা। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনও রয়েছে এতে। হলুদে থাকা কারকিউমিন প্রদাহবিরোধী একটি উপাদান। এ ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষ ভালো রাখতে সাহায্য করে। হৃৎস্বাস্থ্য ভালো রাখে। রোগপ্রতিরোধ শক্তিও বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে পালংশাকে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে, আয়রন ও ক্যালসিয়াম। দুটি উপকরণই স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

যেভাবে এই পানীয় তৈরি করবেন

পালংশাক ভালোভাবে ধুয়ে তা লবণ মেশানো গরম পানিতে ৩ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পরিষ্কার করে নিন। এবার ফুটন্ত পানিতে পালংশাক ও হলুদ দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। বেশ কয়েক মিনিট ফোটানোর পর পানির রং পরিবর্তন হয়ে গাঢ় হয়ে এলে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে কুসুম গরম অবস্থায় পান করতে হবে।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস ও অন্যান্য

ছবি: ইনস্টাগ্রাম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পোষা প্রাণী কি আমাদের শিক্ষক

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৪
কীভাবে শান্ত থাকতে হয়, কীভাবে ভালোবাসতে হয় এবং কীভাবে দিন উপভোগ করতে হয়—পোষা প্রাণীর দিকে গভীর মনোযোগ দিলে এগুলো শেখা যায়। ছবি: পেক্সেলস
কীভাবে শান্ত থাকতে হয়, কীভাবে ভালোবাসতে হয় এবং কীভাবে দিন উপভোগ করতে হয়—পোষা প্রাণীর দিকে গভীর মনোযোগ দিলে এগুলো শেখা যায়। ছবি: পেক্সেলস

অনেকে শখ করে বাড়িতে বিড়াল, কুকুর, পাখি, মাছ বা খরগোশ পোষেন। যদি আপনি শিখতে চান, তাহলে এই প্রাণীগুলোর সাধারণ দৈনন্দিন অভ্যাসের মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতে পারেন। কীভাবে শান্ত থাকতে হয়, কীভাবে ভালোবাসতে হয় এবং কীভাবে দিন উপভোগ করতে হয়—পোষা প্রাণীর দিকে গভীর মনোযোগ দিলে এগুলো শেখা যায়। কিন্তু আপনি কি শিখছেন?

সুস্থ শরীর ও মনের পাঠ

বাড়ির পোষা প্রাণীর কাছ থেকে শরীর ও মন সতেজ রাখা শেখাটা খুব সহজ। তাদের আচরণ দেখলেই বুঝবেন, শরীর ও মন ভালো রাখতে বিশেষ কিছু করার দরকার নেই। এর জন্য প্রয়োজন শুধু ধারাবাহিকতা এবং প্রকৃতির নিয়ম অনুসরণ করা।

খেয়াল করবেন, আপনার বাড়ির পোষা প্রাণীটি দিনের বেলা ঝিমিয়ে নেয়। যাকে বলা হয় পাওয়ার ন্যাপ। এরপর তারা ছোটাছুটি করে বেড়ায় পূর্ণ শক্তি নিয়ে। বিষয়টি আসলে পাওয়ার ন্যাপের শক্তি। ন্যাপ কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং সতর্কতা বৃদ্ধি করে—এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। শহরের রাস্তায় দেখে থাকবেন, অনেকে কুকুর নিয়ে হাঁটতে বের হন। যাঁরা পোষা কুকুরকে নিয়মিত বাইরে হাঁটতে নিয়ে যান, তাঁদের এটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়। এই অভ্যাসের কারণে সকালে কিংবা বিকেলের দিকে কোনো এক বেলা হাঁটার স্বাস্থ্য উপকারিতা পেয়ে থাকেন। এই হাঁটা মানসিক চাপ কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে দূরে রাখে। এটি প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম সেরা উপায়।

ধরুন, আপনার বাড়ির বিড়ালটি মাছ ভালোবাসে। আপনার মাছের প্রতি আকর্ষণ না থাকলেও বিড়ালের তৃপ্তি করে মাছ খাওয়ার দৃশ্য আপনাকে মাছ খাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে পারে। প্রাণীদের আরও একটি চমৎকার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তাদের নির্দিষ্ট রুটিন। এটিও শিক্ষণীয়। কিছু কিছু মানুষ জীবনকে একটা নির্দিষ্ট রুটিনের ভেতরে নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট করে। একটি ধারাবাহিক দৈনন্দিন রুটিন ঘুমের মান উন্নত করে। আপনার পোষ্য যেমন ঘুম থেকে উঠেই গা ঝাড়া দিয়ে সতেজ হয়, তেমনি নিয়মিত স্ট্রেচিং শরীরের নমনীয়তা বাড়ায় এবং শক্তি দেয়। পোষা প্রাণীরা সব সময় নিজেদের পরিষ্কার রাখে। এই পরিচ্ছন্নতা আত্মসম্মান বাড়াতে সহায়ক।

মানসিক শান্তি ও ইতিবাচকতার সূত্র

পোষা প্রাণীরা নিজেদের যেকোনো পরিস্থিতিতে সেরাটা খুঁজে নেয়। ছবি: পেক্সেলস
পোষা প্রাণীরা নিজেদের যেকোনো পরিস্থিতিতে সেরাটা খুঁজে নেয়। ছবি: পেক্সেলস

পোষা প্রাণীরা অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে না। তারা কেবল বর্তমানে বাঁচে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া মানসিক শান্তির পাঠগুলো হলো—

ক্ষমা করুন এবং ভুলে যান: আপনার পোষ্যটি হয়তো আপনার ওপর রেগে গেছে। কিন্তু সেই রাগ স্থায়ী নয়। তারা কোনো হিংসা পুষে রাখে না। রাগ ধরে রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। প্রাণীরা এ বিষয়টিই শেখায়।

ইতিবাচক থাকুন: পোষা প্রাণীরা নিজেদের যেকোনো পরিস্থিতিতে সেরাটা খুঁজে নেয়। হতে পারে সেটা একফালি ঘাস বা একঝলক রোদ। তারা নেতিবাচক দিক নিয়ে পড়ে থাকে না। মানুষের ক্ষেত্রেও তাই। নেতিবাচকতা নিয়ে বেশি ভাবলে বিষণ্নতা বাড়ে।

বর্তমান মুহূর্তে বাঁচুন: তারা মাইন্ডফুলনেস বা সচেতন থাকা শিখেছে মানুষের চেয়ে আগে। তারা খেলুক, ঘুমাক—যা-ই করুক না কেন, তাতে পুরোপুরি মনোযোগ দেয়।

সম্পর্ক ও যোগাযোগের পাঠ

ভালোবাসা, আনুগত্য ও মনোযোগ—এগুলো একটি সুস্থ সম্পর্কের ভিত্তি। এসব আমরা প্রাণীদের কাছ থেকে খুব সহজে শিখতে পারি। বলার আগে শুনতে শিখুন। যখন আমাদের মাথায় নতুন ধারণা ঘুরতে থাকে, তখন আমরা প্রায়ই অন্যকে মাঝপথে থামিয়ে দিই। পোষ্যটি কিন্তু আপনার কথা শেষ করার জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে। তাদের এই মনোযোগ দিয়ে শোনা ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। পোষা প্রাণীরা আপনার মনের ভাষা বুঝে শরীরের ভাষা পরখ করে। কিন্তু মানুষ শারীরিক ভাষা প্রায়ই উপেক্ষা করে। আপনার অঙ্গভঙ্গি বা চোখের ভাষা কী বলছে, সেদিকে খেয়াল রাখা ব্যক্তিগত সম্পর্ক উন্নত করে।

নিঃশর্ত ভালোবাসা দেওয়া প্রাণীরাই শেখায়। কুকুর কখনো খুব ঝানু খেলোয়াড় হওয়ার ভান করে না। সব সময় তারা আপনার প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পর্কে ‘খেলোয়াড়ি মনোভাব’ ভুল মানুষকে আকর্ষণ করে। আমরা অনেক সময় খুব দ্রুত মানুষকে বিচার করে ফেলি। কিন্তু খেয়াল করবেন, আপনার বিড়ালটি আপনার পোশাক বা মেধা দেখে আপনার কোলে এসে বসবে না। প্রাণীরা ভদ্রতার ভাষা বোঝে, কোনো সামাজিক স্তর নয়। প্রাণীরা বন্ধুত্ব ও দীর্ঘ জীবন সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়। যাদের বন্ধু বেশি, তারা অন্যদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে। পোষ্যরা আপনাকে সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব শেখায়।

জীবনের উদ্দেশ্য ও মূল্য

জীবনের আসল আনন্দ আসে উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া এবং ছোট ছোট জিনিসে খুশি হওয়ার মধ্য দিয়ে; শুধু পোষা প্রাণীরা নয়, আমাদের চারপাশের যেকোনো প্রাণীই আমাদের বিষয়টি শেখায়।

খেলা শুধু শিশু বা প্রাণীদের জন্য নয়; এটি বুদ্ধিমত্তা, সৃজনশীলতা ও সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খেলার জন্য সময় বের করুন। একটি উদ্দেশ্য পূরণের জন্য বাঁচুন। বিরক্ত হলে প্রাণীরা আক্রমণাত্মক বা উদ্বিগ্ন হতে পারে। মানুষেরও উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য না থাকলে মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। কাজ করার সহজাত তাড়না আমাদের সুস্থ রাখে। একটি পোষ্য মেঝেতে একটি টুকরা খাবার পেয়ে বা পুরোনো বল খুঁজে পেয়ে পুরো দিনের আনন্দে কাটিয়ে দিতে পারে। তাদের মতো আপনিও প্রিয় খাবার উপভোগ করা বা পছন্দের সিনেমা দেখার মতো ছোট ছোট আনন্দে বেঁচে থাকা শিখুন।

সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেডিটেশন শুরু করতে চাচ্ছেন, জেনে নিন টিপসগুলো

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ২৬
কাজে মনোযোগ ফেরাতে এবং আত্মিক সুখ পেতে মেডিটেশন খুব কার্যকরী অনুশীলন। ছবি: কোলাজ
কাজে মনোযোগ ফেরাতে এবং আত্মিক সুখ পেতে মেডিটেশন খুব কার্যকরী অনুশীলন। ছবি: কোলাজ

মেডিটেশন বা ধ্যান জীবন স্থিতিশীল করে। কাজে মনোযোগ ফেরাতে এবং আত্মিক সুখ পেতে মেডিটেশন খুব কার্যকরী অনুশীলন। কিন্তু অনেকে কিছুদিন মেডিটেশন করার পর ছেড়ে দেন। বলে বসেন, ‘কোথায়, কাজ হচ্ছে না তো!’ এমন হলে বুঝতে হবে, কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। অথবা আপনি নিজেই বেশ চাপ নিয়ে নিচ্ছেন বলে অস্থিরতাও কাটছে না, মানসিক শান্তিও মিলছে না।

এভারগ্রিন ইয়োগার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক বাপ্পা শান্তনু বলেন, ‘মেডিটেশন করার জন্য সবার আগে মেরুদণ্ড সোজা করে বসতে শিখতে হবে। যিনি এভাবে বসতে পারেন না, তিনি অতটা উপকার পাবেন না মেডিটেশন থেকে। এভাবে বসার পর নড়াচড়া একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। হাতের আঙুল ও পায়ের আঙুল নাড়ানো থেকেও বিরত থাকা চাই। এরপর শ্বাসপ্রশ্বাসে মনোযোগ দিন। এককথায় শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরের পরিবর্তনগুলো অনুভব করুন। শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খুব ধীরে ধীরে শ্বাস নিয়ে খুব ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এরপর ১ অনুপাত ২ হিসাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। অর্থাৎ যতটা সময় নিয়ে শ্বাস নেবেন, তার দ্বিগুণ সময় নিয়ে ছাড়তে হবে। কিন্তু প্রথম দিনেই এটা করতে যাওয়া ঠিক নয়। ধীরে ধীরে বুঝে ও অনুভব করে এগোতে হবে। এভাবে ৫ দিন সময় লাগিয়ে এ পর্যন্ত আসতে পারলে অনেকটাই ভালো বোধ হবে।’

নতুনেরা যেভাবে মেডিটেশন বা ধ্যান শুরু করতে পারেন

শুরুতে বেশি সময় নেবেন না

মেডিটেশন যাঁরা শুরু করেছেন, তাঁরা প্রথম দিনগুলোয় ৩০ মিনিট বা তার বেশি সময় ধরে নিজেকে ধ্যানে বাধ্য করবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ধ্যান করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এতে করে আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হওয়ার পরিবর্তে কমে যেতে পারে। তাই প্রতিদিন মাত্র ৫ মিনিট দিয়ে শুরু করুন। ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে পারেন। তাতেও মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা হলে এক মিনিটের শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন করা দিয়ে শুরু করুন। প্রতিদিন এভাবে চলতে দিন। এক সপ্তাহ পর এটাই নিয়মে আসবে। তখন মনোনিবেশ করা সহজ হবে।

মানসিকভাবে আরোগ্য় লাভের জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত ২ মাস অন্তত ২০ মিনিট মেডিটেশনে নিমগ্ন হতে হবে। এভাবে মেডিটেশন করলে মস্তিষ্কের গঠনের পরিবর্তন হয়। যেটাকে আমরা নিউরোপ্লাস্টিসিটি বলি। মেডিটেশন বা ধ্যানের এটাই সহজ মাধ্যম, যা নিজে নিজেই অনুশীলন করা সম্ভব। বাপ্পা শান্তনু, সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক, এভারগ্রিন ইয়োগা

তবে প্রথম কয়েকটি সেশনে মানসিক স্থিরতা আশা করা উচিত নয়। ধ্যান শুরু করার সময় বিভিন্নভাবে মনঃসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তবে প্রতিবার যখন আপনি মনকে পুনরায় শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলনে ফিরিয়ে আনবেন, আপনার মনোযোগের বৃত্তটি আরও শক্তিশালী হবে। এটাই অনুশীলন। অনুশীলনকারীদের মতে, মেডিটেশন বা ধ্যান মানে চিন্তামুক্ত থাকা নয়; বরং চিন্তাভাবনা থাকা সত্ত্বেও আপনার সচেতনতাকে নোঙর করতে পারার নামই মেডিটেশন বা ধ্যান।

ধরন বেছে নিন

সব ধরনের ধ্যান বা মেডিটেশন সবার জন্য উপযুক্ত না-ও হতে পারে। ইতিবাচক চিন্তা, ভিজুয়ালাইজেশন থেকে শুরু করে গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ধ্যান রয়েছে। প্রতিটিই অনুশীলন করে দেখতে হবে, কোনটির সঙ্গে আপনার শরীরের সমন্বয় ঘটছে। কয়েকবার চেষ্টা করার পর যদি দেখা যায়, সেগুলোর কোনো একটির সঙ্গে আপনার বেশি সংযোগ তৈরি হচ্ছে, তাহলে সেটিই আপনার মেডিটেশনের সঠিক মাধ্যম।

সংগীত, সুগন্ধি, ফুল ইত্যাদি পাশে রেখে মেডিটেশনের পরিবেশ তৈরি করে নিন। প্রতীকী ছবিটি নেওয়া হয়েছে পেক্সেলস থেকে।
সংগীত, সুগন্ধি, ফুল ইত্যাদি পাশে রেখে মেডিটেশনের পরিবেশ তৈরি করে নিন। প্রতীকী ছবিটি নেওয়া হয়েছে পেক্সেলস থেকে।

পরিবেশ তৈরি

সমুদ্রের ঢেউয়ের আওয়াজ, বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ, ঝরনার আওয়াজ ইত্যাদির বিভিন্ন ভিডিও বা সাউন্ডট্র্যাক পাওয়া যায় ইউটিউবে। সেগুলোর কোনো একটা ছেড়ে তারপর ধ্যান শুরু করলে কিছুটা সহজে মনোনিবেশ করতে পারবেন। এতে বাড়তি উদ্বেগ কমে আসবে এবং অনেকটাই আরামবোধ হবে।

শ্বাসপ্রশ্বাসে মনোযোগ

খুব দ্রুত ধ্যানে নিমগ্ন হওয়ার জন্য গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন অনেকে। চোখ বন্ধ করে চোয়াল শিথিল করুন। ধীরে ধীরে আপনার কাঁধ শিথিল করে নিন। তারপর নাক দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নিতে শুরু করুন। শ্বাস নেওয়ার সময় শরীর প্রসারিত হচ্ছে অনুভব করতে থাকুন। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন, যাতে শরীর তার কেন্দ্রে ফিরে আসে। তিন থেকে পাঁচ মিনিটের জন্য এটি পুনরাবৃত্তি করুন।

সূক্ষ্ম বিষয়ে মনোযোগ দিন

মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হওয়া এড়াতে শ্বাসের অনুভূতি, হাতের তালুর ওজন ইত্যাদি শারীরিক সংবেদনগুলোয় মনোনিবেশ করুন। এগুলো আপনাকে বাইরের পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধ্যানে নিমগ্ন হতে সহায়তা করবে।

ধ্যানের নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করুন

ধ্যানের জন্য বাড়িতে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থাকলে ভালো। এতে অনুশীলন আরও বিশেষ হয়ে উঠবে। এ ছাড়া সে জায়গাটি চোখে পড়লে আপনার মস্তিষ্ক সংকেত দেবে, ধ্যান করার সময় হয়েছে। নিয়মিত ধ্যানের জন্য একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ, আরামদায়ক জায়গা বেছে নিন। সেখানে যেন প্রাকৃতিক আলো, সবুজ ও আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা থাকে, সেদিকে নজর দিন। ধ্যান শুরু করার আগে এই পরিবেশ আপনার স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে তুলবে। এই জায়গা আপনার মস্তিষ্ককে বিভ্রান্তি কমানোর নির্দেশ দেবে। এখানে একটি ছোট ট্রেতে সুগন্ধি মোমবাতি, ধূপকাঠি, ফুল থাকতে পারে। সেগুলোর সৌন্দর্য ও গন্ধ মস্তিষ্ক শান্ত করতে সাহায্য করবে।

ধ্যান বা মেডিটেশন মানসিক প্রশান্তি আনে, শরীরের স্থিতিশীলতা ও সহনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করে। এক দিনে বা এক সপ্তাহে অর্থাৎ কম সময়ে এটি আয়ত্ত করতে যাবেন না। ধীরে ধীরে সময় নিয়ে আয়ত্ত করুন এবং দীর্ঘ মেয়াদে সুস্থ থাকুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৫
আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

মেষ

আজ আপনার ভেতরের অ্যাড্রেনালিন ডাবল ডোজ নিয়ে নেমেছে। আজ এত দ্রুত কাজ করবেন যে সহকর্মীরা ভাববে আপনি কফি-মেশিনের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করছেন। কিন্তু সাবধান! সব এনার্জি যেন বেলা ২টার পর শেষ না হয়ে যায়। কোনো মিটিংয়ে আপনার আইডিয়াটা ‘চিৎকার’ করে বলবেন না, সাধারণ স্বরে বলুন। আজকে সাতবার হাই তুলবেন।

বৃষ

আপনার আরামপ্রিয় মন আজ কাজের ডেস্ক থেকে সোজা সোফায় টানতে চাইবে। আজ খাবারের ব্যাপারে কোনো আপস করবেন না। দুপুরের খাবারের মেনু ঠিক করতে গিয়ে যে সময় নষ্ট করবেন, সেটা দিয়ে একটা ছোটখাটো উপন্যাস লেখা যেত। নিজের রূপচর্চা, শরীরের সেবাযত্ন আজ চরম পর্যায়ে নিয়ে যাবেন। স্ন্যাকস হাতে রাখুন, তবে ঘুমিয়ে পড়বেন না। ঘুম কাজের পরে!

মিথুন

আজ মস্তিষ্ক একটি হাইস্পিড ওয়াইফাই রাউটারের মতো কাজ করবে। একাই তিনজনের সঙ্গে চ্যাট করতে পারবেন, একটি ই-মেল ড্রাফট করতে পারবেন এবং একই সঙ্গে গানও গাইতে পারবেন। কিন্তু সতর্ক থাকুন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভুল গ্রুপ চ্যাটে চলে যেতে পারে! জরুরি মেসেজ পাঠানোর আগে প্রাপকের নামটা তিনবার দেখে নিন। ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না।

কর্কট

আপনার হৃদয়ের নিরাপত্তা দরকার আজ। মনে হতে পারে ঘর ছেড়ে কোথাও যাবেন না। কাঁথা মুড়ি দিয়ে থাকাই আজ আপনার কাছে জীবনের পরম সত্য, পরম প্রাপ্তি। ঘরের চার দেয়ালকে আজ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আশ্রয় মনে হবে। ফ্রিজের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস না ফেলে, নিজেই কিছু রান্না করুন। বাড়িতে আপনার প্রিয়জনের জন্য অপ্রত্যাশিত আরামের ব্যবস্থা করলে সুফল পাবেন।

সিংহ

আলো আকর্ষণকারী হিসেবে আজ আপনার খ্যাতি বাড়বে। আজ আপনি যেখানে যাবেন, সেখানেই আপনার প্রবেশে একটি অদৃশ্য স্পটলাইট জ্বলবে। অতিরিক্ত মনোযোগের জন্য হয়তো অফিসের বাথরুমের আয়নায় সেলফি তুলতে পারেন। আপনার উজ্জ্বলতা এমনিতেই যথেষ্ট। ইনডোরে সানগ্লাস পরা এড়িয়ে চলুন। আজ অযথা একটি দামি জিনিসের জন্য বাজেট নষ্ট হতে পারে, শুধু শুধু লোক দেখানোর জন্য টাকা নষ্ট করার কোনো মানে হয় না!

কন্যা

আজ আপনি জীবনের প্রতিটি সেকেন্ডের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করবেন। ‘টু-ডু’ লিস্টের রং কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে এক ঘণ্টা ব্যয় করবেন, যা আসলে আপনার ‘টু-ডু’ লিস্টে নেই। নিখুঁতভাবে থাকার চাপ আপনার কপালে ভাঁজ ফেলতে পারে। আজ একটি কাজ নিখুঁত না হলেও পৃথিবী থেমে যাবে না। প্লিজ, শ্বাস নিন। পানি পান করতে ভুলে যেতে পারেন। কারণ, আপনি পানির আণবিক গঠন নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন।

তুলা

আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় সংগ্রাম আজ আবার শুরু হবে: সিদ্ধান্তহীনতা। দুপুরে কী খাবেন—ভাত না রুটি? আজ এটা আপনার কাছে জীবনের অর্থ খোঁজার মতোই কঠিন মনে হবে। ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে মাঝখানে আটকে যাবেন। লাঞ্চের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটা কয়েন টস করুন। আর ফল যা-ই হোক, চোখ বন্ধ করে মেনে নিন। সহকর্মীদের সঙ্গে আজ ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’-এর মাঝের শব্দটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।

বৃশ্চিক

আপনার ডিটেকটিভ মোড আজ চালু থাকবে। জানতে পারবেন কে শেষ বিস্কুটটি খেয়েছে এবং তার পরিণাম কী হবে। গভীর এবং তীব্র মনোযোগ আজ সাফল্য এনে দেবে অথবা অপ্রয়োজনীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্বে ফেলে দেবে। সবার দুর্বলতা খুঁজে না বের করে, নিজের কাজের ওপর ফোকাস করুন। অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতার কারণে আজ ভালো সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।

ধনু

আপনার ভেতরে থাকা ভবঘুরে মন আজ বিদ্রোহ ঘোষণা করবে। অফিসে বসেও মনে মনে আন্দিজ পর্বতমালার চূড়ায় অথবা সুন্দরবনের গহিনে ঘুরে বেড়াবেন। ছোটখাটো অ্যাডভেঞ্চার আজ আপনার দরকার। যদি বিদেশে যেতে মন চায়, তবে অন্তত ভিন্ন রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাথরুমে যান। এমন কিছু বলবেন না যা পরে প্রত্যাহার করতে হবে! সুতরাং কথাবার্তা ভেবেচিন্তে বলুন। ওভারস্মার্ট হতে যাবেন না।

মকর

কাজ, কাজ আর কাজ—এটাই আপনার জীবনের মন্ত্র। এমনকি একটি শামুককেও তার ধীরগতির জন্য সমালোচনা করতে পারেন। গ্রহরা বলছে, আপনি পাঁচ বছর আগেই বিরতি পাওয়ার যোগ্য হয়ে রয়েছেন। এবার থামুন। একটি ছোট বিরতি নিন। পৃথিবী আপনার অনুপস্থিতিতেও ঘুরতে থাকবে। আজ অতিরিক্ত টাকা সাশ্রয় করতে পেরে গর্বিত হবেন।

কুম্ভ

আপনার মাথা আজ ‘আউট অব দ্য বক্স’ থেকে অনেক দূরে, সম্ভবত অন্য গ্রহের চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত। এমন একটি চমৎকার আইডিয়া নিয়ে আসবেন, যার মধ্যে কবুতর এবং পুলি সিস্টেম জড়িত থাকতে পারে। আইডিয়াটি দুর্দান্ত, কিন্তু সাধারণ মানুষ কি তা বুঝবে? একবার পরীক্ষা করে দেখুন। আজ এমন এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে পারেন, যার কথা ছয় মাস ধরে ভুলে গিয়েছিলেন।

মীন

আজ আপনার বেশির ভাগ সময় কাটবে দিবাস্বপ্নে। হয়তো ট্যাক্সের ফাইল করছেন, কিন্তু মন একই সঙ্গে একটি সিম্ফনি রচনা করছে। বাস্তব জগৎ আজ আপনার কাছে কিছুটা ধূসর লাগতে পারে। কল্পনার জগৎ থেকে একটু বের হয়ে আসুন। টাকা গুনতে গুনতে স্বপ্ন দেখা যায় না। আপনার সৃজনশীলতা আজ চূড়ায় থাকবে। একটি কবিতা লিখুন, কিন্তু অফিসে নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত