Ajker Patrika

হোটেলের কমপ্লিমেন্টারি নাশতা কেন খাবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
বিনা মূল্যের নাশতা সকালে রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে খোঁজার সময় বাঁচায়। এই বেঁচে যাওয়া সময় নিজের মতো ব্যবহার করা যায়। ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
বিনা মূল্যের নাশতা সকালে রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে খোঁজার সময় বাঁচায়। এই বেঁচে যাওয়া সময় নিজের মতো ব্যবহার করা যায়। ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

ভিয়েতনামসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রন্ধনবিষয়ক পর্যটন বা কালিনারি ট্যুরিজমের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ভিয়েতনাম ভ্রমণকারীরা এমন হোটেলগুলোকে বেছে নিচ্ছেন, যেখানে বিনা মূল্যে সকালের নাশতার ব্যবস্থা আছে।

ভিয়েতনামের মানুষের কাছে সকালের নাশতা হলো দিনের গুরুত্বপূর্ণ খাবার। অনেকে ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠে তাজা স্ট্রিট ফুড উপভোগ করার মাধ্যমে সকাল শুরু করে। অনলাইন ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম ‘আগরা’ এশিয়ার ২৫ হাজারের বেশি পর্যটকের মধ্যে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। তাতে দেখা গেছে, ভিয়েতনাম ভ্রমণকারী পর্যটকদের ৬৭ শতাংশ এমন আবাসন পছন্দ করে, যেখানে বিনা মূল্যে সকালের নাশতা অন্তর্ভুক্ত থাকে। এটি কেবল দিনের শুরুটা সাশ্রয়ী করে তোলে না, বরং ভ্রমণকারীদের স্থানীয় স্বাদ ও আতিথেয়তার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগও দেয়। এশিয়ার মতো অঞ্চলে এই প্রবণতা বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

কেন বেছে নিচ্ছেন বিনা মূল্যের নাশতা

খাবারের মান

হোটেলের নাশতা সব সময় বিলাসবহুল বা জাঁকালো না-ও হতে পারে। তবে হোটেলের নাশতার মান সাধারণত ভালো হয়। এ ধরনের খাবার সারা দিনের জন্য পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহ করে। বিনা মূল্যে সকালের নাশতা কেবল টাকা বাঁচানোর জন্যই নয়, এটি সময় বাঁচানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। একটি অপরিচিত গন্তব্যে ভ্রমণের সময় হোটেলে নাশতা করা অনেকের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।

বিনা মূল্যে সকালের নাশতা কেবল টাকা নয়, সময় বাঁচানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। ছবি: পেক্সেলস
বিনা মূল্যে সকালের নাশতা কেবল টাকা নয়, সময় বাঁচানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। ছবি: পেক্সেলস

ব্যয় সাশ্রয়

বিনা মূল্যের নাশতা ভ্রমণে সামগ্রিক খাদ্য বাজেট কমাতে সাহায্য করে। সেই সাশ্রয় করা অর্থ অন্যান্য ভ্রমণ খরচ বা কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা যায়।

সময় সাশ্রয়

এটি সকালে রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে খোঁজার প্রয়োজনীয়তা দূর করে। এই ব্যবস্থা নিলে রেস্তোরাঁয় টেবিলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। কিংবা অর্ডার দিয়ে খাবার তৈরির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। এই বেঁচে যাওয়া সময় ও শক্তি দর্শনীয় জায়গা দেখা কিংবা বিশ্রাম নেওয়ার মতো কাজে ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া এটি বিশেষ করে ব্যস্ত সময়সূচি বা সকালে দ্রুত নাশতা সেরে ফেলতে চাওয়া ভ্রমণকারীদের জন্য চমৎকার সমাধান।

স্বাস্থ্যকর সূচনা

অনেক হোটেলে বিভিন্ন ধরনের নাশতার বিকল্প দেওয়া হয়। সাধারণত সেসব খাবারের মধ্যে থাকে তাজা ফল, ফলের জুস ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। এসব খাবার ভ্রমণে শক্তি জোগায় এবং পুরো ভ্রমণ ভালোভাবে শেষ করার জন্য শরীরকে সহায়তা করে। তাই ভ্রমণে হোটেলের পুষ্টিকর খাবার দিয়ে দিন শুরু করা নিরাপদ। একটি সুষম নাশতা সারা দিনের জন্য ইতিবাচক সুর তৈরি করে।

নমনীয়তা

হোটেলের বিনা মূল্যের নাশতা পছন্দ ও প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সাজিয়ে নেওয়ার স্বাধীনতা দেয়। নিরামিষ, ভেগান বা গ্লুটেনমুক্ত খাবারসহ বিভিন্ন বিকল্প থাকায় যেকোনো একটি সহজে বেছে নেওয়া যায়। এ ব্যবস্থা ব্যক্তিগত স্বাদ ও চাহিদার ক্ষেত্রে ভ্রমণেও একটা পারিবারিক অনুভব তৈরি করতে পারে।

সামাজিকতা

হোটেলের ফ্রি নাশতার টেবিল অন্যান্য সহভ্রমণকারীর সঙ্গে দেখা করার এবং নতুন বন্ধু তৈরি করার সুযোগ। আপনি অন্য অতিথিদের সঙ্গে টেবিল ভাগ করে নিচ্ছেন, হোটেলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। অথবা নাশতার টেবিলে চুপচাপ বসে কেবল পরিবেশ উপভোগ করছেন। এই পরিবেশ অভিজ্ঞতা অর্জনের ক্ষেত্রে দারুণ এক উপায়। হোটেলে ফ্রি নাশতার সময় সামাজিক বন্ধন তৈরি করার চমৎকার উপায়। এটি আপনার সামগ্রিক ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে আরও সুন্দর করে তুলবে।

ভিয়েতনামের জনপ্রিয় ৩ খাবার

ফো বো: এটি মূলত গরুর মাংসের নুডলস স্যুপ। এই খাবার ভিয়েতনামের মানুষের সকালের নাশতা হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সেদ্ধ করা হাড়ের ঝোলে চালের নুডলস দিয়ে ফো বো তৈরি করা হয়। পাতলা করে কাটা কাঁচা গরুর মাংসের ওপর ঢেলে দেওয়া হয় গরম ঝোল। ফলে পাতলা করে কাটা মাংস সঙ্গে সঙ্গে সেদ্ধ হয়ে যায়। এটি তাজা বিন স্প্রাউট, ধনেপাতা ও থাই তুলসীর মতো সুগন্ধি ভেষজ, লেবুর ফালি ও কাটা মরিচ দিয়ে পরিবেশন করা হয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় রান্না করা হয় এই খাবার। ফলে এর আলাদা গন্ধ ও স্বাদ আছে।

ফো বো। ছবি: পেক্সেলস
ফো বো। ছবি: পেক্সেলস

বান মি: এই খাবার মূলত ভিয়েতনামের স্যান্ডউইচ। লম্বা করে কাটা ও হালকা টোস্ট করা একটি মুচমুচে বানে ক্রিম ও মেয়নেজ মাখানো হয়। এরপর দেওয়া হয় বিভিন্ন ধরনের সবজি, আচারের সঙ্গে মেশানো গাজর ও ডাইকন মুলা, তাজা শসার টুকরো, ধনেপাতা ও কাঁচা মরিচ। বাইরের মুচমুচে রুটি আর ভেতরে কচকচে সবজি দিয়ে তৈরি বান মি মুখের ভেতরে ক্রিমি, টক ও দারুণ স্বাদের সমন্বয় ঘটায়।

বান মি। ছবি: পেক্সেলস
বান মি। ছবি: পেক্সেলস

খোয়াই: এটি আসলে আঠালো ভাত। এই খাবার নারকেলের দুধে বাষ্পে সেদ্ধ চাল দিয়ে তৈরি করা হয়। একে নরম ও আঠালো না হওয়া পর্যন্ত তাপে রাখা হয়। এটিকে প্রায়ই মিষ্টি মটর ডাল, মুচমুচে ভাজা পেঁয়াজ, নারকেলের কুচি বা চায়নিজ সসেজ ইত্যাদি টপিংস দিয়ে পরিবেশন করা হয়। খোয়াই মিষ্টি ও নোনতা স্বাদের সংমিশ্রণে তৈরি খাবার।

সূত্র: ভি এন এক্সপ্রেস, ট্রাভেলোকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে দলিত পুলিশ কর্মকর্তার আত্মহত্যায় তোলপাড়, সুইসাইড নোটে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ

বাংলাদেশ-হংকং ফুটবল ম্যাচ টিভিতে দেখাবে না, তাহলে দেখার উপায়

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত