Ajker Patrika

ডায়াবেটিস রোগীদের ৬টি অপরিহার্য সঙ্গী

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত খাওয়া, শরীরচর্চা, ঘুমানো—এসবের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত খাওয়া, শরীরচর্চা, ঘুমানো—এসবের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

সকালবেলায় রক্তে শর্করার মাত্রা দেখে দিনের শুরু। অনেকের কাছে এটি কঠিন মনে হলেও যাঁদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাঁদের কাছে এটি স্বাভাবিক অভ্যাস। টাইপ-২ ডায়াবেটিস ক্ষণস্থায়ী অসুখ নয়। ডায়াবেটিস হলে জীবনযাপনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত খাওয়া, শরীরচর্চা, ঘুমানো—এসবের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। এ ছাড়া কয়েকটি জিনিস জীবনের সঙ্গে জুড়ে যাবে অনিবার্যভাবে। চিন্তার কিছু নেই, সেগুলো ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনাকে সহজ করে তুলবে। এতে ভুল কম হবে এবং দৈনন্দিন জীবনে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

সহায়ক ও মনোযোগী চিকিৎসক

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন এমন একজন চিকিৎসকের, যিনি রোগীকে যথেষ্ট সময় দেবেন এবং সমস্যাগুলোর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। অনেক সময় অনেকে শরীরের ওজন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করবেন, যা রোগীর মনোবল কমিয়ে দেয়। তাই এসব বিষয়ে সচেতন এমন কোনো চিকিৎসক ঠিক করা উচিত দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসার জন্য। রোগী কী অনুভব করছেন, কোন খাবার বা অভ্যাসে কী পরিবর্তন হচ্ছে, এসব বিষয়ে চিকিৎসকের নজর থাকতে হবে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পরামর্শ পাওয়া যাবে চিকিৎসকের কাছ থেকে।

গ্লুকোজ মনিটর

শুরুতে ডায়াবেটিস হলে রক্তের শর্করা মাপার জন্য দিনে কয়েকবার আঙুলে সুচ ফোটাতে হয়। তবে এতে বুঝে ওঠা কঠিন, কোন খাবার শর্করা বাড়াচ্ছে আর কোনটি কমাচ্ছে। কিন্তু এখন গ্লুকোজ মনিটর বা সিজিএম ব্যবহারের কারণে পুরো বিষয়টিই সহজ হয়ে গেছে। এতে ২৪ ঘণ্টা রক্তের শর্করার ওঠানামা দেখা যায়। হঠাৎ কোন খাবার শর্করা বাড়াচ্ছে, কোন খাবার কমাচ্ছে—সবকিছু একনজরে বোঝা যায়। মনে রাখতে হবে, সঠিক তথ্য রোগ নিয়ন্ত্রণের বড় সহায়ক।

পানি পানের অভ্যাস গড়ার বোতল

ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানি শরীর থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ বের করতে সাহায্য করে বলে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ রোগের রোগীরা সঙ্গে সব সময় পানির বোতল রাখতে পারেন। এ ছাড়া যাঁরা ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন, তাঁরা সঙ্গে ইলেকটোলাইটযুক্ত ট্যাবলেট বা পানি পরিষ্কার করার পাউডারও রাখতে পারেন। এতে যেকোনো পরিস্থিতিতেই নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পানি পান করা যেতে পারে।

গরমে ঠান্ডা রাখার পোর্টেবল ফ্যান

ডায়াবেটিস থাকলে অনেকের গরমে দ্রুত ক্লান্তি ও অস্বস্তি বোধ হয়। বিশেষ করে আর্দ্র আবহাওয়া বা গরম দেশ ভ্রমণের সময় এটি আরও প্রকট হয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ছোট চার্জেবল ফ্যান অনেক উপকারে আসে। এসব ফ্যান সহজে ব্যাগে রাখা যায়। তাই এর ব্যবহারও সহজ।

নিয়ম ধরে রাখার জন্য পিল কেস

ওষুধ ঠিক সময়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা অনেকের জন্য কঠিন। একটি ভালো মানের পিল কেস তাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিনের ওষুধ আলাদা করে রাখা থাকলে ভুল হওয়ার আশঙ্কা কমে। কেউ কেউ ভ্রমণের সময় ছোট আকারের পিল কেস ব্যবহার করেন। এখন আবার টাইমার যুক্ত কেস পাওয়া যায়। সেগুলো ওষুধ খেতে ভুলে গেলেই সতর্ক করে।

পায়ের জন্য সঠিক জুতা

ডায়াবেটিসে পায়ের যত্ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি। রক্তে শর্করার মাত্রা অনিয়মিত থাকলে পায়ে ক্ষত বা ফোসকা হতে পারে সহজে। এসব ক্ষত দ্রুত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় যত্ন না নিলে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। অনেকেই প্রথমে জুতার নকশা বা স্টাইল দেখে কেনেন। কিন্তু পরে বোঝেন, পায়ের আরামই জরুরি। পডিয়াট্রিস্টরা পরামর্শ দেন এমন জুতা পরার, যা পা স্থির রাখে, হাঁটায় চাপ কমায় এবং ফোসকা হওয়ার আশঙ্কা কমায়। সঠিক মোজা নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তার জন্য জরুরি ফার্স্ট এইড কিট বা ব্যান্ডেজ সঙ্গে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। যদি ফোসকা বা ক্ষত তৈরি হয়, সঙ্গে থাকা ব্যান্ডেজ দিয়ে তা দ্রুত ঢেকে দেওয়া যায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষদের জন্য সবচেয়ে জরুরি নিজের শরীর বোঝা, নিয়মিত নজর রাখা এবং নিজের জন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা।

সূত্র: হেলথ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভ্রমণ করুন শিশুদের সঙ্গে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
মার্কিন ভ্রমণ লেখক জেমি ডেভিস স্মিথ ও তাঁর দুই সন্তান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
মার্কিন ভ্রমণ লেখক জেমি ডেভিস স্মিথ ও তাঁর দুই সন্তান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

পরিবার নিয়ে ভ্রমণ অনেকের কাছেই বড় চ্যালেঞ্জ। শিশুরা সঙ্গে থাকলে মা-বাবারা সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলেন। এ নিয়মগুলো মানলে ভ্রমণ উপভোগ্য ও নিয়ন্ত্রিত রাখা সম্ভব বলে মনে করেন অভিভাবকেরা। কিন্তু কখনো কখনো সে সব না মানলেও ভ্রমণ উপভোগ্য করে তোলা সম্ভব।

মার্কিন ভ্রমণ লেখক জেমি ডেভিস স্মিথ। তাঁর দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যে ২৪টি দেশ ঘুরেছেন। শিশুদের নিয়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে গতানুগতিক কিছু ধারণা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ‘বিজনেস ইনসাইডার’-এর জন্য লেখা এক নিবন্ধে ডেভিস স্মিথ তাঁর নিজস্ব ভ্রমণ দর্শন তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে, অন্যদের পরামর্শ নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করে, প্রচলিত প্রথাগুলো ভেঙে নিজস্ব পথে চলাই শিশুদের সঙ্গে আনন্দময় ও চাপমুক্ত ভ্রমণের চাবিকাঠি। তাঁর অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে সে সব মা-বাবার জন্য অনুপ্রেরণামূলক, যাঁরা ছোট থাকার কারণে শিশুদের ভ্রমণ থেকে বিরত রাখেন।

এক জায়গায়ই থাকবেন এমন নয়

শিশুদের নিয়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে গতানুগতিক কিছু ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন জেমি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
শিশুদের নিয়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে গতানুগতিক কিছু ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন জেমি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

শিশুদের নিয়ে ভ্রমণে গেলে সাধারণত একটি জায়গাতেই থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন অভিভাবকেরা। শিশুদের অভ্যাসের জন্য এক হোটেলে বা এয়ারবিএনবিতে দীর্ঘ সময় থাকাটা অনেক অভিভাবকের কাছে আদর্শ বলে মনে হয়। কিন্তু জেমির মতে, একটি নির্দিষ্ট জায়গায় থাকার বাধ্যবাধকতা পরিহার করুন। তিনি এ রীতির বিরোধী। জেমি জানান, তাঁদের ইউরোপ সফরের মূল লক্ষ্য ছিল, সর্বাধিকসংখ্যক জায়গায় ঘোরা। তাই তাঁরা কয়েক দিন অন্তর থাকার জায়গা পরিবর্তন করেছেন। ফলে ভ্রমণটি আরও অনেক বেশি মজাদার ও বৈচিত্র্যময় হয়েছে। আপনি যদি কম সময়ে বেশি কিছু দেখতে চান, তবে ঘন ঘন জায়গা পরিবর্তন করার সাহস দেখান। শিশুদের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত হওয়াও ভ্রমণের একটি অংশ।

দেরিতে শুরু, শান্তিতে শেষ

ভিড় এড়াতে বা দিনের আলো পুরোপুরি কাজে লাগাতে অনেকে ভোরে ওঠার পরামর্শ দেন। কিন্তু জেমি ডেভিস স্মিথ ছুটিকে ছুটির মতোই উপভোগ করতে চান। ভোরে ওঠার প্রথা এড়িয়ে চললেও সমস্যা নেই। জেমি লেখেন, ‘ছুটিতে থাকা অবস্থায় অ্যালার্ম ঘড়ির ওপর নির্ভর না করতে আমার ভালো লাগে।’ ভোরে ওঠার চাপ না থাকায় রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার তাড়া থাকে না। ফলে দিনের কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত করার প্রয়োজন হয় না। তাঁর পরিবার থিম পার্ক বা আকর্ষণীয় জায়গাগুলো থেকে সবচেয়ে শেষে বের হয়। তিনি দেখেছেন, বন্ধ হওয়ার আগের ঘণ্টাটায় ভিড় কমে যাওয়ায় আকর্ষণগুলো আরও শান্তভাবে উপভোগ করা যায়।

গন্তব্য নির্বাচনে বৈচিত্র্য আনুন

অনেক মা-বাবা কেবল তথাকথিত ‘শিশুবান্ধব’ বা ফ্যামিলি-ফ্রেন্ডলি জায়গাগুলোই বেছে নেন। ডেভিস স্মিথ তাঁর সন্তানদের শুধু বিনোদন নয়; বরং ইতিহাস ও সংস্কৃতিও দেখাতে চেয়েছেন। তিনি চান তাঁর সন্তানেরা বিশ্বের জটিল ইতিহাস সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করুক। তিনি তাঁর সন্তানদের পোল্যান্ডের আউশভিটস বির্কেলাউ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের স্থানে, জাপানের হিরোশিমায় এবং আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রে নিয়ে গেছেন। ভারত বা জর্ডানের মতো যেসব দেশ নিয়ে নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্যগত সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল, সে সব দেশেও তাঁরা ভ্রমণ করেছেন। এমনকি কোনো সমস্যা ছাড়াই দারুণ সময় কাটিয়েছেন। নিরাপত্তা সতর্কতা নিয়ে বেশি চিন্তা না করে, নিজের পরিকল্পনা ও গবেষণার ওপর ভরসা রাখুন। এ ক্ষেত্রে ভ্রমণের আগে নিরাপত্তা নিয়ে একটি শক্ত গবেষণা করে আপনাকে ভ্রমণে বের হতে হবে।

অল্প জিনিস নিয়ে ভ্রমণ

শিশুদের জন্য আরাম নিশ্চিত করতে অনেকে ঘরোয়া আরামদায়ক জিনিসপত্র ও খেলনায় স্যুটকেস ভর্তি করে ফেলেন। কিন্তু ডেভিস স্মিথ না হলেই নয়, এমন জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী। বড় টেডি বিয়ার বা বিশাল খেলনার বদলে তিনি কেবল একটি ছোট জিনিস রাখেন, যা শিশুদের মানসিক নিরাপত্তা দেয়। তাঁর পরামর্শ হলো, অপ্রয়োজনীয় ভার বহন না করে, যা আছে তা দিয়েই মানিয়ে নেওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। এতে লাগেজ বহন করার ঝামেলা কমে এবং ভ্রমণ আরও সহজ হয়।

নিরাপত্তা সতর্কতা নিয়ে বেশি চিন্তা না করে, নিজের পরিকল্পনা ও গবেষণার ওপর ভরসা রাখতে বলেন জেমি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
নিরাপত্তা সতর্কতা নিয়ে বেশি চিন্তা না করে, নিজের পরিকল্পনা ও গবেষণার ওপর ভরসা রাখতে বলেন জেমি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

নিজস্ব ভ্রমণ-দর্শন তৈরি করুন

ডেভিস স্মিথ স্বীকার করেন, তিনি ট্রাভেল ফোরামসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচুর গবেষণা করে শেষ পর্যন্ত তাঁর নিজস্ব পথ খুঁজে বের করেছেন। তারপরই তিনি প্রচলিত নিয়ম ভাঙার সাহস দেখান। সব মা-বাবার জন্য একই নিয়ম কার্যকর নাও হতে পারে। আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ এনে দেবে, এমন পদ্ধতিটি খুঁজে বের করুন। পূর্বনির্ধারিত নিয়ম বা শুনে আসা জ্ঞানের দাসত্ব না করে, নিজের পছন্দ অনুযায়ী ছুটি কাটানোর স্বাধীনতা উপভোগ করুন।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার, ডেইলি মেইল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকালে ৫ উপায়ে গাছের যত্ন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ঘরের ভেতর, বারান্দা বা ছাদের টবে থাকা গাছগুলোর তাই শীতে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। ছবি: ফ্রিপিক
ঘরের ভেতর, বারান্দা বা ছাদের টবে থাকা গাছগুলোর তাই শীতে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। ছবি: ফ্রিপিক

শীত শুধু আমাদের জীবনযাপনেই প্রভাব ফেলে না, এর প্রভাব প্রকৃতির প্রতিটি স্তরে পৌঁছে যায়। গাছপালাও এর বাইরে নয়। তাপমাত্রা কমে গেলে টবের মাটি আর্দ্রতা হারাতে থাকে। কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে পাতায় জমে থাকা পানি রাতভর শুকায় না। ফলে পানি, আলো ও পুষ্টি এই তিন মূল উপাদানের সরবরাহে পরিবর্তন আসে। ঘরের ভেতর, বারান্দা বা ছাদের টবে থাকা গাছগুলোর তাই শীতে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। সঠিক সময় ও সঠিক পদ্ধতিতে যত্ন নিলে গাছ সুস্থ থাকবে এবং বসন্তের শুরুতেই নতুন কুঁড়ি ও পাতা নিয়ে আরও সতেজ হয়ে উঠবে।

পানি, মাটি ও সূর্যের আলোর সঠিক ভারসাম্য

অতিরিক্ত পানি শীতকালে গাছের বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক
অতিরিক্ত পানি শীতকালে গাছের বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক

শীতে গাছের যত্নে প্রথম যে বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে তা হলো, গাছে পানি দেওয়া। অনেকেই ভাবেন ঠান্ডায় গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, তাই বেশি পানি দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে অতিরিক্ত পানি শীতকালে গাছের বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে পানি সহজে শুকায় না। ফলে টবের মাটি স্যাঁতসেঁতে হয়ে গাছের গোড়া পচে যেতে পারে। তাই পানি দেওয়ার আগে টবের মাটি আঙুল দিয়ে দেখে নিন। যদি ওপরের স্তরটি শুকনো হয়, তবেই পানি দিন। সূর্যের আলো শীতে তুলনামূলক কম পাওয়া যায়। তাই গাছগুলোকে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে সকালের রোদ পড়বে। কিছু সময় পরপর টব সরিয়ে গাছে আলো পড়ার সুযোগ দিন। তবে মনে রাখতে হবে, শুধু আলো ও পানি নয়, গাছের বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর মাটিও জরুরি। শীতের শুরুতে টবের মাটি একটু নরম করে দিন, প্রয়োজনে ওপরের ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার পুরোনো মাটি সরিয়ে নতুন সমৃদ্ধ মাটি দিন।

নতুন গাছ, টব ও পাতার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা

অনেকে নতুন গাছ কিনে এনে সঙ্গে সঙ্গে টবে রোপণ করেন। কিন্তু সদ্য কেনা গাছ পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য খুব সংবেদনশীল থাকে। টবে চারা বসানোর সময় আগে অর্ধেক মাটি দিন, যাতে শিকড় বেশি নড়াচড়া না করে। গাছটিকে আগের মাটিসহ খুব আলতো করে সেই টবের মাঝখানে বসিয়ে দিন। নতুন আলো, আর্দ্রতা আর তাপমাত্রায় মানিয়ে নিতে গাছকে কয়েক দিন একই অবস্থায় রাখুন। কয়েক দিন পর চাইলে টবের মাটি বাড়িয়ে বা প্রয়োজন অনুযায়ী বদলে নিতে পারেন। শীতে পাতায় ধুলাবালু জমে আলো পেতে বাধা সৃষ্টি করে। এটি গাছের খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া কমিয়ে দেয়। তাই পানি দেওয়ার সময় পাতায় জমা ধুলাও ধুয়ে দিন। গাছ যদি বড় হয়, তাহলে ভেজা কাপড় দিয়ে পাতাগুলো আস্তে করে মুছে দিতে পারেন।

পর্যাপ্ত পুষ্টির জোগান নিশ্চিত করুন

গাছের শক্তি বাড়ানোর জন্য শীতে জৈব সার খুব উপকারী। মাটিতে ভার্মি কম্পোস্ট, খৈল, জৈব সার বা গোবর সার মিশিয়ে দিতে পারেন। এগুলো ধীরে ধীরে গাছে পুষ্টি সরবরাহ করে। যাঁরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে সার তৈরি করতে চান, তাঁরা সহজেই বাড়ির রান্নাঘরের কিছু বর্জ্য দিয়ে সার বানাতে পারেন। যেমন কলার খোসা, ডিমের খোসা, পেঁয়াজ বা রসুনের খোসা, লেবুর খোসা এবং সবজির খোসা কয়েক দিন পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পচা পানি সরাসরি গাছের গোড়ায় দিতে পারেন।

টবের মাটিতে ভার্মি কম্পোস্ট, খৈল, জৈব সার বা গোবর সার মিশিয়ে দিতে পারেন। ছবি: ফ্রিপিক
টবের মাটিতে ভার্মি কম্পোস্ট, খৈল, জৈব সার বা গোবর সার মিশিয়ে দিতে পারেন। ছবি: ফ্রিপিক

পানি কম দিন এবং আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখুন

শীতের রাতে কুয়াশা টবের মাটি ভেজা রাখে। তাই অনেক গাছের ক্ষেত্রে দিনে একবার পানি দেওয়াই যথেষ্ট। গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকা বা দীর্ঘ সময় মাটি ভিজে থাকা গাছের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত আর্দ্রতায় শিকড় পচে যায় এবং ছত্রাক জন্মায়। তাই টবের নিচের ড্রেনেজ হোল যেন খোলা থাকে, সেটা প্রতিবার পানি দেওয়ার আগে দেখে নিন। শীতে রোদ কম পাওয়া গেলে গাছ যতটা সম্ভব রোদে রাখুন। সকালে রোদ উঠলেই টবগুলোকে বারান্দা বা ছাদের এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে কিছু সময় রোদ লাগবে। রোদ গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং পাতা উজ্জ্বল রাখে।

পোকামাকড় ও ছত্রাক দূর করতে

ঠান্ডা মৌসুমে গাছের পাতায় ছত্রাক, মিলিবাগ, মাকড়সা কিংবা ছোট ছোট পোকা বাসা বাঁধতে পারে। তাই নিয়মিত পাতার নিচের অংশ, ডাঁটা ও গোড়া পরীক্ষা করুন। পোকামাকড় দূর করতে প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করা নিরাপদ ও কার্যকর। যেমন রসুনের রস, হলুদের গুঁড়া, নিমের তেল, ভিনেগার, কমলা বা লেবুর খোসা ভেজানো পানি ইত্যাদি।

এই পানির সঙ্গে আরও কিছু পানি মিশিয়ে পাতলা করে স্প্রে করলে পোকামাকড় কমে যায় এবং ছত্রাক ছড়াতে পারে না। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন বাগানবিষয়ক গ্রুপে এখন নিয়মিত টিপস, রোগবালাই শনাক্তকরণ এবং পরিচর্যার পরামর্শ পাওয়া যায়। প্রয়োজনে সেসব থেকেও সহায়তা নিতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রেমিকাকে মেসেজ নাকি কল—সিদ্ধান্ত নিতেই দিন পার, জীবনের অর্থ খুঁজে হয়রান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৪
আজকের রাশিফল: প্রেমিকাকে মেসেজ নাকি কল—সিদ্ধান্ত নিতেই দিন পার, জীবনের অর্থ খুঁজে হয়রান

মেষ

আজ আপনার মধ্যে বিদ্যুৎ-গতিতে কাজ করার প্রবণতা দেখা দেবে। সকাল সকাল এক মিনিটে তিনটি নতুন প্রকল্প শুরু করবেন, চারজনকে ই-মেইল করবেন, আর পাঁচজনের সঙ্গে ঝগড়া করবেন। তারপর বুঝতে পারবেন, আপনি প্যান্ট পরতে ভুলে গেছেন, শর্টস পরে আছেন! উত্তেজনা আজ এতটাই বেশি যে শনি গ্রহ পর্যন্ত আপনার কাছ থেকে ধার করা এক কাপ কফি চাইবে। সন্ধ্যায় দ্রুত ঘুমাতে যান, না হলে ঘুমের মধ্যেও অফিসের কাজ করার স্বপ্ন দেখবেন।

বৃষ

শুক্র গ্রহ বলছে, আজ আপনার পকেট ভর্তি থাকবে। কিন্তু সেই টাকা কোথায় যাবে? সোজা আপনার পেটে। দুপুর থেকেই মধ্যে বিশ্বসেরা শেফের আত্মা ভর করবে। হয়তো অফিসের গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে বসে বিরিয়ানির রেসিপি নিয়ে ভাববেন। আর্থিক লাভের সম্ভাবনা আছে, কিন্তু লাভ হওয়া মাত্রই সেটা কোনো ‘স্পেশাল মিষ্টি’র দোকানে বিনিয়োগ করে ফেলবেন।

মিথুন

মস্তিষ্ক আজ ওয়াইফাই হটস্পট। এত দ্রুত চিন্তা করবেন এবং কথা বলবেন যে কাছের মানুষজন ক্যাচ করতে পারবে না। ভেতরের দুটি সত্তা আজ একসঙ্গে কথা বলবে। ফলস্বরূপ আপনি এক ব্যক্তিকে দুটো বিপরীত প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেবেন। সন্ধ্যায় যখন ভুল-বোঝাবুঝি চরমে, তখন সেটাকে ডার্ক কমেডি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। একটি গভীর দার্শনিক চিন্তা, যা শেষ পর্যন্ত একটি হাসির জোকসে পরিণত হয়—এটিই আপনাকে আজ বাঁচিয়ে দিতে পারে। কাউকে মেসেজ করার আগে তিনবার চেক করুন, নইলে অফিসের গ্রুপে কবিতা পোস্ট হয়ে যেতে পারে।

কর্কট

আজ চাঁদ আপনার ওপর বিশেষ কৃপা বর্ষণ করেছে—যার মানে, ছোট ছোট বিষয়ে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হবেন। ফ্রিজে খাবার কম দেখলে এমনভাবে মুষড়ে পড়বেন, যেন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেছে। কর্মক্ষেত্রে কোনো সহকর্মী যদি আপনার দিকে না তাকায়, তাহলে ধরে নেবেন সে আপনাকে ঘৃণা করে। আপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, আজ টিস্যু বক্স ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া। পছন্দের আরামদায়ক কম্বল আজ আপনার বিশ্বস্ত ও প্রিয় সঙ্গী। দিনে অন্তত একবার বাস্তব দুনিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করুন, না হলে অনেক কিছুই ভেস্তে যাবে।

সিংহ

জ্যোতিষশাস্ত্রের ভবিষ্যদ্বাণী বলছে, আজ আপনি যেখানেই যাবেন, সেখানেই যেন একটি অদৃশ্য স্পটলাইট আপনাকে অনুসরণ করবে। হয়তো বাথরুমের আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই অটোগ্রাফ চাইতে পারেন। অফিসে যদি আপনার আইডিয়াকে কেউ উপেক্ষা করে, তবে একটি নাটকীয় ‘কুইট’ লেটার লিখবেন, যা পরের পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবার ছিঁড়ে ফেলবেন। আজ কড়া মেকআপ লাগানোর দিন। বিশ্বকে মনে করিয়ে দিন, আপনিই সেরা।

কন্যা

আজ আপনার ডিএনএতে পারফেকশনিস্ট ভাইরাস আক্রমণ করবে। বাড়ির মেঝেতে একটি কাল্পনিক দাগ দেখতে পাবেন এবং সেটা পরিষ্কার করতে পুরো দিন ব্যয় করবেন। যখন কাউকে কোনো উপদেশ দেবেন, তখন সেটা এতটাই বিস্তারিত হবে যে শ্রোতা আর কাজটা শুরুই করবে না। চিন্তা করবেন না, এই খুঁতখুঁতে স্বভাবের কারণে আপনি দুবার লাভবান হবেন। একবার কাজে, একবার মানসিক চাপে! এমন স্বভাবের বিপদ হলো, ভুল ক্রম অনুযায়ী বই সাজিয়ে ফেললে, গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যেতে পারে।

তুলা

ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করতে গিয়ে দিনটি কাটবে চরম ভারসাম্যের অভাবে। সকালে উঠেই ঠিক করতে পারবেন না, আগে চা খাবেন নাকি কফি। এই নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ বিতর্ক সভা ডাকবেন। ফলস্বরূপ ঠিক সময়ে অফিসে পৌঁছাতে পারবেন না। প্রেম জীবনেও একই সমস্যা—সঙ্গীকে টেক্সট করবেন নাকি কল? উত্তর খুঁজতে গিয়ে রাত কাবার। সুতরাং আজ কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভালো। কোনো দোকানে গিয়ে দুটো জিনিস পছন্দ হলে, দুটোই না কিনে খালি হাতে বেরিয়ে আসুন।

বৃশ্চিক

আজ চারপাশের পরিবেশ রহস্যে ভরে থাকবে। সন্দেহ বাতিক এমন পর্যায়ে যাবে যে নিজের ছায়া দেখেই ভাববেন, আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে এমন এক সহকর্মীকে সন্দেহ করবেন, যে গত সপ্তাহে আপনার থেকে একটি পেনসিল ধার নিয়েছিল। আপনার তীব্র দৃষ্টি আজ এতই শক্তিশালী যে, লোকে আপনার চোখের দিকে তাকাতে ভয় পাবে। ফলে বাইরে তো বটেই, ঘরেও কালো রোদচশমা পরা আজ বাধ্যতামূলক।

ধনু

বৃহস্পতির প্রভাবে আজ আপনার মন উড়ু উড়ু, দূরে কোথাও অ্যাডভেঞ্চারে যেতে চাইবেন। হয়তো এখনই আমাজন অথবা অ্যান্টার্কটিকা ভ্রমণের প্ল্যান করে ফেলবেন। সমস্যা হলো, এই প্ল্যান করতে গিয়ে অফিসের জরুরি ফাইল বা বাড়ির চাবিটি কোথায় রেখেছেন, তা সম্পূর্ণ ভুলে যাবেন। দর্শন শাস্ত্রে আপনি পারদর্শী, কিন্তু বাস্তব জগতে পা পিছলে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। জীবনের অর্থ খুঁজুন। যদিও নিয়মিত মোবাইলটা হারিয়ে ফেলছেন, আবার পেয়েও যাচ্ছেন।

মকর

আজ নিজেকে এতটাই সিরিয়াস করে তুলবেন যে আপনার হাসিও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টের মতো মনে হবে। ছুটির দিনগুলোকেও একটি ‘দক্ষতা উন্নয়ন সেশন’ হিসেবে দেখবেন। রাশি বলছে, আজ আপনি বড় সাফল্য পাবেন। কিন্তু সহকর্মীরা ভাববে, আপনি হয়তো কোনো গভীর ষড়যন্ত্র করছেন। কারণ, হাসি মুখে তাদের দিকে তাকিয়েছেন! আজ সবার আগে আগে কাজ, তারপর ঘুম। রাত ২টা ১০ মিনিট থেকে ২টা ১৫ মিনিটে বিশ্রামে যান।

কুম্ভ

মাথায় আজ এমন অদ্ভুত সব আইডিয়া আসবে, যা শুনে লোকে আপনাকে চিড়িয়াখানার প্রাণী ভাবতে পারে। হয়তো মানবজাতির সমস্যার সমাধান নিয়ে ভাবছেন, অথচ নিজের জুতা জোড়া এখনো খুঁজে পাননি। কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলে, মানুষজন আপনার দিকে তাকিয়ে ভাববে—এই ব্যক্তি কোন গ্রহ থেকে এল? এটাই আপনার সুপার পাওয়ার—আলাদা থাকা! পকেট থেকে দুটা এক টাকার নোট খুঁজে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হবেন। আপনার উদ্ভট আইডিয়াগুলো লিখে রাখুন। ২০ বছর পর হিট হবে, শিওর!

মীন

আজকের দিনটি আধা ঘুম, আধা স্বপ্ন আর আধা কফির মধ্যে দিয়ে কাটবে। ভাববেন আপনি সমুদ্রের গভীরে মুক্তা খুঁজছেন, অথচ বাস্তবে বিছানার নিচে রিমোট খুঁজছেন। সৃজনশীলতা আজ চরম পর্যায়ে থাকবে। হয়তো একটি মাস্টারপিস তৈরি করবেন, অথবা অফিসের রিপোর্ট পুরোটাই ভুলে ভরা থাকবে। দয়া করে আজ গুরুত্বপূর্ণ কোনো চুক্তি সই করবেন না। যতই কফি খান, মাথা আজ কাজ করবে না। কাল রাতে কী স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটা ভুলে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বারবার ময়শ্চারাইজার মেখেও ত্বকের শুষ্ক ভাব যাচ্ছে না? মেনে চলুন এই নিয়মগুলো

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
শীতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারই শেষ কথা নয়। নিতে হবে বাড়তি যত্ন। ছবি: পেক্সেলস
শীতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারই শেষ কথা নয়। নিতে হবে বাড়তি যত্ন। ছবি: পেক্সেলস

গোসলের পর পুরো শরীরে ময়শ্চারাইজার মাখার কিছুক্ষণ পরই আবার টান ধরছে? হাত, পা, ঘাড় ও পিঠে টান টান অনুভূত হচ্ছে? ঠোঁটও শুষ্ক হয়ে উঠছে বারবার? শীতকালে এমন অনেক প্রশ্ন সামনে আসবে। সেগুলোর সমাধানও করতে হবে। কারণ, শীতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারই শেষ কথা নয়। অনেক সময় গোসলের নিয়মে কিছু বিষয় মেনে না চললেও ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে।

গোসলের আগে পুরো শরীরে তেল মেখে নিন

শীত মৌসুমে ত্বক আর্দ্রতা হারাতে শুরু করে। ফলে অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠার পাশাপাশি ত্বকে প্রচুর মরা কোষ জমে। এই মরা কোষের কারণেও মযশ্চারাইজার ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে না। ত্বকের খসখসে ভাব দূর করতে, মসৃণতা বজায় রাখতে এবং ত্বকের উপরিভাগের মরা কোষ ঝরাতে গোসলের আগে শরীরে নারকেল বা অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন। ব্যবহারের আগে তেলটা সামান্য় গরম করে নিলে আরও ভালোভাবে ত্বক সেই তেল শুষে নিতে পারবে। তেল ম্যাসাজের আধা ঘণ্টা পর গোসলের সময় লুফা দিয়ে ত্বক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। এতে সহজে মরা কোষ ঝরে গিয়ে ত্বক চকচকে হয়ে উঠবে। এরপর গোসল সেরে ত্বকে ভালো মানের ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। তফাতটা নিজেই টের পাবেন।

পানির উষ্ণতা ঠিক আছে কি না দেখুন

শীতে ঠান্ডা পানির পরিবর্তে অধিকাংশ মানুষ কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে। তবে পানি যেন খুব বেশি গরম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা চাই। খানিকটা গরম পানি দিয়ে শীতের দিনে আরামে গোসল করা যায় ঠিকই, তবে বেশি গরম পানি ব্যবহার করলে ত্বকের পিএইচের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। সেই সঙ্গে র‍্যাশ, চুলকানি, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সমস্যা তো রয়েছেই। তাই কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। তাহলে সব দিক রক্ষা হয়। গোসলের পানিতে কখনো কখনো নারকেল তেল দিয়ে দিতে পারেন। এতেও ত্বক নরম ও কোমল থাকবে।

শীতে সাবানের পরিবর্তে শাওয়ার জেল ব্যবহার করুন। সাবানের তুলনায় শাওয়ার জেলে কম ক্ষার থাকে। ছবি: পেক্সেলস
শীতে সাবানের পরিবর্তে শাওয়ার জেল ব্যবহার করুন। সাবানের তুলনায় শাওয়ার জেলে কম ক্ষার থাকে। ছবি: পেক্সেলস

সাবানের পরিবর্তে শাওয়ার জেল ব্যবহার করুন

শীতে সাবান ব্যবহার না করাই বরং ভালো। সাবানের পরিবর্তে শাওয়ার জেল ব্যবহার করুন। শীতে ত্বক এমনিতেই শুষ্কতার সমস্যায় ভোগে। এই অবস্থায় সাবান ব্যবহার করলে আরও বেশি রুক্ষ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাবানের তুলনায় শাওয়ার জেলে কম ক্ষার থাকে। তাই ত্বক অতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। রোজ ব্যবহার করলেও ত্বক রুক্ষ হয় না। শীতে এমন শাওয়ার জেল বেছে নিন, যাতে আরগান অয়েল, হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন বা সেরামাইডের মতো ময়শ্চারাইজিং উপাদান রয়েছে। কেনার সময় খেয়াল করুন তা অ্যালকোহল বা প্যারাবেনমুক্ত কি না।

ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের আগে জেনে নিন

গোসল করার পর আমাদের ত্বক সামান্য ভেজা ভেজা থাকে। এ সময়টাই ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের সেরা সময়। গোসলের পর ৩ মিনিটের মধ্যে ত্বকে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক খুব ভালোভাবে তা শুষে নিতে পারে। শুকনো ত্বকে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করলে সেই সুবিধা পাওয়া যায় না। ফলে ময়শ্চারাইজারের সুফল পাওয়া সম্ভব হয় না। ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হলে পেট্রোলিয়াম জেলির সঙ্গে গ্লিসারিন বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করুন। দীর্ঘ সময় ধরে ত্বক আর্দ্র থাকবে।

পায়ের শুষ্কতা দূর করতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম

পা ধোয়ার পর ত্বক কিছুটা ভেজা থাকে, তখনই ময়শ্চারাইজার লাগান। এতে ত্বক আর্দ্র থাকবে। গোড়ালি, পায়ের তলা ও আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে একটু বেশি ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত শুষ্কতা এড়াতে শিয়া বাটার, নারকেল তেল বা গ্লিসারিন আছে এমন ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রাতে পায়ে ভারী ময়শ্চারাইজার ব্যবহার শেষে মোজা পরে ঘুমান। এতে পা সুন্দর থাকবে। এখন বাজারে সিলিকনের মোজা পাওয়া যায়। এসব মোজার ভেতর অলিভ অয়েল ও ময়শ্চারাইজার একসঙ্গে ঢেলে পা গলিয়ে নিন। সারা রাত এ মোজা পরেই ঘুমান। সকালে দেখবেন, পায়ের ত্বক অনেক বেশি সুস্থ লাগছে।

সূত্র: হেলথ লাইন ও ভ্যালি ডার্মাটোলজি স্পেশালিস্টস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত