Ajker Patrika

শরীর ও মনের সুস্থতায় যোগব্যায়াম

এলিজা চৌধুরী
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪০
শরীর ও মনের সুস্থতায় যোগব্যায়াম

আজ ২১ জুন, বিশ্ব যোগ দিবস। ‘নিজের এবং সমাজের জন্য যোগব্যায়াম’ প্রতিপাদ্যে এবার পালিত হচ্ছে ১০ম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রতিবছর ২১ জুনকে বিশ্ব যোগ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় হাইকমিশন ও বাংলাদেশের বিভিন্ন যোগ সংগঠন, যোগ অনুরাগীরা মিলে পালন করছে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। যেখানে প্রতিবারই মিলিত হয় হাজারো যোগ অনুরাগী।

যোগব্যায়াম আমাদের শারীরিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, মানসিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আরও সহজ করে বললে, যোগব্যায়াম আমাদের দেহ এবং মন এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে জীবনকে অনেক আনন্দময় এবং রোগমুক্ত করে তোলে। পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গেও যোগব্যায়ামের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরেও নানা ধরনের সুবিধা-অসুবিধা দেখা দেয়। যেমন ঠান্ডা আবহাওয়ায় নানা ধরনের রোগবালাই কমবেশি সবার মধ্যেই দেখা যায়। আবার গরমকালেও শরীরকে শীতল রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের যোগাসন করা যায়। নিয়মিত যোগচর্চার মাধ্যমে সহজেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা থেকে আমরা মুক্ত থাকতে পারি।

যোগব্যায়াম যেকোনো বয়সে যেকোনো পরিবেশে করা যায়। শারীরিক সক্ষমতা না থাকলেও প্রাণায়াম বা ধ্যানের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখা যায়। সেই সঙ্গে যোগব্যায়াম আমাদের শেখায় নিয়মানুবর্তিতা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিদ্রাসহ সুস্থ থাকার অন্যান্য উপায়।

প্রতিদিন সকাল বা সন্ধ্যায় নিয়মিত যোগব্যায়াম শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। এতে ওজন কমে, শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে, হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি যোগব্যায়ামের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ে মনের ওপর। গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও আতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে যোগব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকর। নিয়মিত যোগব্যায়াম শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা অনেকটা রুখে দিতে পারে।

এবার জেনে নেওয়া যাক কয়েকটি প্রচলিত যোগব্যায়াম সম্পর্কে:

প্রাণায়াম
এই ব্যায়াম মানসিক অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে। এটিকে ফুসফুসের ব্যায়ামও বলতে পারেন। প্রাণায়াম করতে প্রথমে সোজা হয়ে বসে নিন। তারপর ধীরে ধীরে নাক দিয়ে লম্বা শ্বাস নিন। একইভাবে ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ বার প্রাণায়াম করতে পারেন। যোগব্যায়ামে ওজন কমে, শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে, হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় অফিসের কাজে চোখ, ঘাড়, কাঁধ, পিঠ এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে যে ব্যথা হয়, সেগুলো থেকে মুক্তি দিতে পারে যোগব্যায়াম। নিদ্রাহীনতা দূর, মানসিক শান্তি বৃদ্ধি, স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় করে দেহের বিশ্রাম ও হজম-প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থেকে মুক্তি, হাঁচি-কাশি নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতিসহ উদ্বেগ দূর করতে, অতিরিক্ত ওজন কমাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এবং শক্তিশালী শরীর গঠনে যোগব্যায়ামের বিকল্প নেই।

সানস্যালুটেশন আসন
সাধারণত ১ থেকে ১২টি আলাদা আলাদা আসন নিয়ে সানস্যালুটেশনের ১টি সার্কেল বা ১ রাউন্ড ধরা হয়। এটি একেকজন একেকভাবে করে থাকেন। যেমন ১-৬, ১-১০, ১-১২, ১-১৬, ১-১৮টি আসনের মধ্যে করে থাকেন। তবে সহজ হিসাবে ধরা হয় ১-১২-এর যে রাউন্ড, সেটকে। ১-১২-এর আসনগুলো হলো অঞ্জলিমুদ্রা, হস্ত উত্থানাসন, পদহস্তাসন, অশ্ব-সঞ্চালনাসন, পর্বতাসন, অষ্টাঙ্গ নমস্কার, ভুজুঙ্গাসন, পর্বতাসন, অশ্ব-সঞ্চালনাসন, পদহস্তাসন, ব্যাক বেন্ডিং ও অঞ্জলিমুদ্রা। এই ১২টি আসন একটানা শেষ করলে ১ রাউন্ড হয়।

ইয়োগা ম্যাটে দাঁড়ান। দুই পায়ের পাতা একসঙ্গে রেখে দুই হাতের তালু কোমরের দুই পাশে সমানভাবে রাখুন। স্বাভাবিক শ্বাস নিন। দুই হাতের তালু একসঙ্গে করে নমস্কার মুদ্রা করুন। এবার শ্বাস নিতে নিতে ব্যাক বেন্ডিং করুন। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পদহস্তাসনে যান। শ্বাস নিতে নিতে অশ্ব-সঞ্চালনাসন করুন। এবার পর্বতাসনে যান এবং শ্বাস আটকে রাখুন। এবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে অষ্টাঙ্গ নমস্কারে চলে যান। শ্বাস নিতে নিতে ভুজুঙ্গাসন করুন। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পর্বতাসনে চলে যান এবং অপেক্ষা না করে শ্বাস নিতে নিতে অশ্ব-সঞ্চালনাসনে চলে যান। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পদহস্তাসনে যান। এবার শ্বাস নিতে নিতে ব্যাক বেন্ডিং করুন। তারপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নমস্কার মুদ্রা করুন ও শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক করুন।

একই নিয়মে ৩ থেকে শুরু করে ৩০ বা তারও বেশি যতবার পারবেন করুন। প্রতি ৩ বা ৪ রাউন্ড পর পর দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ আরাম করুন। তারপর আবার সানস্যালুটেশন শুরু করুন। সম্পূর্ণ শেষ হলে শবাসনে বিশ্রাম করুন।

মেডিটেশন
মেডিটেশন উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। এটি নিয়মিত করলে আত্মবিশ্বাস ও স্থিরতা ফিরে আসে। মেডিটেশন ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। ফলে শরীরের মতো মনেরও যত্ন নেওয়া হয়। মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে মনকে শান্ত রাখতে মেডিটেশন করতে পারেন।

লেখক: প্রশিক্ষক ও স্বত্বাধিকারী এলিজা’স ইয়োগার্ট-ইয়োগা ও ওয়েলবিং সেন্টার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে পানিশূন্যতা দূর করবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
শীতেও সহজ কিছু অভ্যাসে শরীরে পানির ভারসাম্য রাখা সম্ভব। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
শীতেও সহজ কিছু অভ্যাসে শরীরে পানির ভারসাম্য রাখা সম্ভব। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

শীত এলে অনেকের পানি পানের পরিমাণ কমে যায়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় তৃষ্ণা কম অনুভূত হওয়ায় আমরা বুঝতেই পারি না, শরীর ধীরে ধীরে পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। অথচ শুষ্ক শীতের বাতাস শরীর থেকে পানি আরও বেশি বের করে নেয়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়, শক্তি কমে যায় এবং হজমেও সমস্যা দেখা দেয়। পর্যাপ্ত পানি পান শীতে বিপাকক্রিয়া ঠিক রাখে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীর সুস্থ রাখে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, শীতেও সহজ কিছু অভ্যাসে শরীরে পানির ভারসাম্য রাখা সম্ভব।

গরম লেবুপানি দিয়ে দিন শুরু

শীতের সকালে ঠান্ডা পানি পান অনেকের কাছে অস্বস্তিকর। এর বদলে দিন শুরু করুন এক কাপ গরম লেবুপানি দিয়ে। পুষ্টিবিদ পূজা কেডিয়ার মতে, এতে শরীর ধীরে সতেজ হয়ে ওঠে এবং দিনের শুরুতে পানি পানের অভ্যাস তৈরি হয়। লেবুপানি হজমে সহায়তা করে, শরীরে ভিটামিন সি জোগায় এবং মনও ভালো রাখে। গরম পানি গলাও আরাম দেয়।

এর সহজ রেসিপি হলো, পানি ফুটিয়ে অর্ধেক লেবুর রস মেশান, চাইলে সামান্য মধু যোগ করতে পারেন। এতে সকালেই প্রায় আধা লিটার পানি শরীরে যায়।

চায়ের কাপেও থাকুক হাইড্রেশন

প্রতি কাপ হারবাল চা থেকে শরীর পায় বাড়তি তরল, যা শীতে বিশেষভাবে উপকারী। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
প্রতি কাপ হারবাল চা থেকে শরীর পায় বাড়তি তরল, যা শীতে বিশেষভাবে উপকারী। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

শীতে চা শুধু তৃষ্ণা মেটানোর পানীয় নয়, অনেকের কাছে এটি আনন্দের সঙ্গী। তবে এই সময়ে অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত চা বারবার পান করলে শরীরে পানির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। তাই সাধারণ দুধ-চা বা মসলা চায়ের বদলে হারবাল চা বেছে নেওয়া বেশি স্বাস্থ্যসম্মত। পুদিনা, ক্যামোমাইল কিংবা তুলসী অথবা আদা চা শরীরে পানির ভারসাম্য রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় উষ্ণতাও দেয়। প্রতিটি কাপ হারবাল চা থেকে শরীর পায় বাড়তি তরল, যা শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় বিশেষভাবে উপকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যামোমাইল চা মানসিক প্রশান্তি আনে এবং ভালো ঘুমে সহায়তা করে, যা শীতকালে অনেকের অনিদ্রা কমাতে সহায়ক। অন্যদিকে আদা ও তুলসী শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর, বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লুর মৌসুমে।

স্যুপ ও মৌসুমি ফল খান

শীতকাল স্যুপ খাওয়ার সেরা সময়। টমেটো স্যুপ, সবজি বা চিকেন স্যুপ শরীর উষ্ণ রাখার পাশাপাশি পানির ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতের খাবারের সঙ্গে হালকা স্যুপ যোগ করলে আলাদা করে বেশি পানি পান করতে হয় না। এতে হজমেও সুবিধা হয় এবং শীতের সময় ভারী খাবার খাওয়ার ফলে যে অস্বস্তি তৈরি হয়, তা কমে।

স্যুপ ও মৌসুমি ফল খান। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
স্যুপ ও মৌসুমি ফল খান। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

পানিশূন্যতা এড়াতে শীতকালে মৌসুমি ফল খাওয়ার দিকেও নজর দেওয়া জরুরি। কমলা, মৌসুমি লেবু ও লাল গাজরের মতো রসাল ফল স্বাভাবিকভাবে শরীরে পানি জোগায় এবং একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে। এসব ফল খেলে একদিকে যেমন শরীরে পানির ভারসাম্য থাকে, অন্যদিকে তেমনই অপ্রয়োজনীয় ক্ষুধা কমে এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস গড়ে ওঠে।

ইলেকট্রোলাইটের দিকেও নজর দিন

শুধু পানি পান করাই যথেষ্ট নয়, শরীরে তরলের ভারসাম্য ঠিক রাখতে দরকার সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো ইলেকট্রোলাইট। শীতে আমরা অনেক সময় বিষয়টি ভুলে যাই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রয়োজনে ইলেকট্রোলাইট পাউডার বা ট্যাবলেট পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এতে ক্লান্তি কমে এবং কর্মক্ষমতা বাড়ে।

পানির জন্য রিমাইন্ডার সেট করুন

কাজের চাপ, ছুটির ব্যস্ততা বা সপ্তাহের অলস ছুটির দিন পানি পান ভুলে যাওয়া খুব স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে রিমাইন্ডার বা অ্যালার্ম সেট করা বেশ কাজে দেয়। পুষ্টিবিদ পূজা কেডিয়া বলেন, মজার নাম দিয়ে অ্যালার্ম সেট করলে সেটি মনে করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মনও ভালো করে। দিনে নির্দিষ্ট সময়ে অ্যালার্ম দিলে অজান্তেই পানি পানের লক্ষ্য পূরণ হয়ে যায়।

শীতের ঠান্ডায় তৃষ্ণা কম লাগলেও শরীরের পানির প্রয়োজন কমে না। গরম পানীয়, স্যুপ, ফল আর সামান্য সচেতনতার মাধ্যমেই শীতজুড়ে সুস্থ ও সতেজ থাকা সম্ভব।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্ব স্বাদের মঞ্চে সেরা ১০০ রন্ধনশৈলী, বাংলাদেশের স্থান কততম

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা 
টেস্ট অ্যাটলাসের সেরা ১০০ রন্ধনশৈলীর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষাটতম। এই তালিকায় ‘মাস্ট ট্রাই’ খাবারের তকমা পেয়েছে চমচম। ছবি: উইকিপিডিয়া
টেস্ট অ্যাটলাসের সেরা ১০০ রন্ধনশৈলীর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষাটতম। এই তালিকায় ‘মাস্ট ট্রাই’ খাবারের তকমা পেয়েছে চমচম। ছবি: উইকিপিডিয়া

পরোটা-কিমা কিংবা সন্ধ্যাবেলার চায়ের সঙ্গী গরম-গরম বাকরখানি। কখনো ভেবে দেখেছেন, আপনার প্রতিদিন খাওয়া এই খাবারগুলো বৈশ্বিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে? টেস্ট অ্যাটলাসের ‘বিশ্বের সেরা ১০০ রন্ধনশৈলী ২০২৫-২০২৬’ এর র‍্যাঙ্কিং সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। র‍্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বজুড়ে খাদ্যরসিকদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রন্ধনশৈলী।

টেস্ট অ্যাটলাসের সেরা ১০০ রন্ধনশৈলীর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষাটতম। এই তালিকা শুধু একটি র‍্যাঙ্কিং নয়, এটি একটি দেশের প্রাচীন, মসলাদার এবং আবেগঘন খাবারের গল্প। যে গল্পগুলো এশিয়া মহাদেশের ভারত থেকে জাপান হয়ে ভিয়েতনাম পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে এই গল্পের একটি বিশেষ অংশজুড়ে আছে আমাদের নিজস্ব খাদ্যসংস্কৃতি, যা বহুকালের ইতিহাস ও বৈচিত্র্য বহন করে। আন্তর্জাতিক সমালোচকদের চোখে কেমন ছিল আমাদের এই স্বাদের যাত্রা এবং কোন কোন খাবার পেল ‘মাস্ট ট্রাই’ তকমা? চারটি খাবারকে মাস্ট ট্রাই তকমা দেওয়া হয়েছে। তালিকার প্রথমে আছে চমচম, এরপর কিমা, তারপর টিক্কা, আরও আছে পরোটা এবং শেষে বাকরখানি।

টেস্ট অ্যাটলাসের সেরা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ঢাকার বাকরখানি। ছবি: আজকের পত্রিকা
টেস্ট অ্যাটলাসের সেরা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ঢাকার বাকরখানি। ছবি: আজকের পত্রিকা

তালিকায় পুরো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খাবারের নাম ও বৈশিষ্ট্য উল্লেখ্য করা হয়েছে। সেখানে স্থান পেয়েছে এশিয়া মহাদেশের ২১টি দেশের খাবার। বাংলাদেশসহ তালিকায় স্থান পাওয়া দেশগুলো হলো জাপান, ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, লেবানন, ফিলিপাইন, ইরাক, ফিলিস্তিন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, আফগানিস্তান, মালয়েশিয়া, সিরিয়া, জর্জিয়া, কাতার, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান।

পূর্ব এশীয়র জাদু

চীনের খাবার ঝেংজিয়াও। ছবি: টেস্ট অ্যাটলাস
চীনের খাবার ঝেংজিয়াও। ছবি: টেস্ট অ্যাটলাস

এই অঞ্চলে সুস্বাদু ‘উমামি’ ফ্লেভার এবং ভাত-নুডলসের ব্যবহার প্রধান। জাপান ও চীনের রন্ধনশৈলী বিশ্বজুড়ে খাদ্যপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত সমাদৃত। তালিকায় প্রথম এশীয় দেশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে জাপানিজ রন্ধনশৈলী। তালিকায় তাদের অবস্থান ষষ্ঠ। স্বাদের সূক্ষ্মতা এবং উপকরণের বিশুদ্ধতা জাপানি খাবারের মূল আকর্ষণ। দেশটির ‘মাস্ট ট্রাই’ খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়াগিউ, আকামি টুনা, হামামাৎসু গিয়োজা, নেগিতোরোডন ও ওতোরো নিগিরি সুশি। বিস্তৃত বৈচিত্র্য এবং আঞ্চলিক বিশেষত্বের জন্য পরিচিত চীনা রন্ধনশৈলীর স্থান অষ্টম। তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো হলো ঝেংজিয়াও, লানঝো লামিয়ান, শেং চৌ, ইয়ুশিয়ং ও সিউ মেই। গাঁজানো বা ফার্মেন্টেড খাবার, মসলাদার সস এবং গ্রিলড মাংসের জন্য কোরিয়ান খাবার পরিচিত। উনিশতম অবস্থানে থাকা এই দেশের রন্ধনশৈলীতে বিখ্যাত পদগুলো হলো গেজাং, চিকেন, বানচান, গালবি ও ইয়ুকহো।

কারি, ডাল এবং রুটিনির্ভর দক্ষিণ এশীয়

এই অঞ্চলের খাবারগুলো মসলার জটিল মিশ্রণ ও গভীর স্বাদের জন্য বিখ্যাত। তালিকায় ১৩তম অবস্থানে থাকা ভারতীয় রন্ধনশৈলীর অঞ্চলভেদে বৈচিত্র্য থাকলেও তাদের মূল বৈশিষ্ট্য হলো সুগন্ধি মসলার ব্যবহার। দেশটির মাস্ট ট্রাই খাবারের তালিকায় রয়েছে বাটার গার্লিক নান, অমৃতসরি কুলচা, গরমমসলা, পরোটা ও মুথিয়া। ৬২তম স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কার রন্ধনশৈলী নারকেল দুধ, সামুদ্রিক খাবার এবং শ্রীলঙ্কার নিজস্ব মসলার জন্য জনপ্রিয়। তাদের সেরা পদগুলোর মধ্যে রয়েছে সিলন সিনামন, বাত কুলু বাধো, কার্ড অ্যান্ড ট্রেকেল, কারি লিভস (বা কারি পাতা) ও কুকুল মাস কারি। ৭৩তম স্থানে থাকা পাকিস্তানি রন্ধনশৈলী ভারী গ্রিলড মাংস, রুটি এবং সুগন্ধি বিরিয়ানির জন্য পরিচিত। মাস্ট ট্রাই খাবার হলো কিমা, মুরগ কারাহি, বাসমতী, পরোটা ও চাপলি কাবাব।

দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়

এই অঞ্চলের রন্ধনশৈলীতে তাজা গুল্ম, লেমন গ্রাস এবং টক-মিষ্টি-ঝাল স্বাদের একটি নিখুঁত ভারসাম্য দেখা যায়। তালিকায় দশম স্থানে আছে ইন্দোনেশিয়ান রন্ধনশৈলী। দেশটির বিভিন্ন দ্বীপের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম নাসি পাডাং, বাওয়াং গোরেং, সাতে কাম্বিং, সিওমাই ও সতো বেতাউই। এদিকে টাটকা উপকরণ এবং হালকা স্বাদের জন্য ভিয়েতনামের খাবার জনপ্রিয়। ১৬তম স্থানে থাকা এই দেশের সেরা পদগুলো হলো বো নুং জ্যাম, বান মি, চা কা লা ভং, মি কোয়াং ও থিত খো টাউ।

ভিয়েতনামের খাবার বান মি। ছবি: টেস্ট অ্যাটলাস
ভিয়েতনামের খাবার বান মি। ছবি: টেস্ট অ্যাটলাস

তালিকার ২৪তম স্থানে আছে থাই রন্ধনশৈলী। এর পরেই আছে ফিলিপাইন। এরপর ২৯তম স্থানে আছে মালয়েশিয়া, ৯০তম স্থানে সিঙ্গাপুর ও ৯৬তম স্থানে আছে লাওসের খাবার। থাই খাবারের মূল আকর্ষণ হলো এর সুষম স্বাদের মিশ্রণ। টক ও নোনতা স্বাদের প্রাধান্য দেখা যায় ফিলিপাইনের খাবারে। মালয়, চীনা ও ভারতীয় স্বাদের মিশ্রণ পাওয়া যায় মালয়েশিয়ান রন্ধনশৈলীতে। সিঙ্গাপুরের রন্ধনশৈলীতে বহুজাতিক প্রভাব স্পষ্ট। লাওসের খাবার প্রধানত স্টিকি রাইস, তাজা ভেষজ এবং লাব নামক মাংসের সালাদের জন্য পরিচিত।

মধ্যপ্রাচ্য ও লেভান্টাইন

কাবাব, রুটি, দই এবং বিশেষ মসলার মিশ্রণের জন্য এই অঞ্চলের খাবার বিখ্যাত। তালিকায় ৩৭তম স্থানে আছে ফিলিস্তিন রন্ধনশৈলী। যেখানে প্রায়শই দানাশস্য, জলপাই তেল এবং স্থানীয় মসলার ব্যবহার দেখা যায়। তালিকায় ৪২তম স্থানে থাকা ইরানি রন্ধনশৈলীর মূল বৈশিষ্ট্য ভাত—বিশেষত জাফরান দেওয়া চেলো, মাংসের স্টু এবং শুকনো ফলের ব্যবহার। লেভান্টাইন স্বাদের এক চমৎকার উদাহরণ সিরিয়ান খাবার। তালিকায় তাদের স্থান ৪৫তম। ৭১তম স্থানে থাকা ইরাকি রন্ধনশৈলী প্রাচীন মেসোপটেমীয় সভ্যতার উত্তরাধিকার বহনকারী ভারী ও পুষ্টিকর খাবার। মধ্য এশীয় এবং ভারতীয় প্রভাবের মিশ্রণ আছে আফগান রন্ধনশৈলীতে। তালিকায় তাদের স্থান ৭৪তম। তালিকার ৯৯তম দেশটির নাম কাতার।

মধ্য এশিয়া ও ককেশাস

ঐতিহ্যবাহী গ্রিলড খাবার, ডাম্পলিং এবং দুধ দিয়ে তৈরি খাবারের ব্যবহার এই অঞ্চলের রন্ধনশৈলীতে গুরুত্বপূর্ণ। তালিকায় ৮৭তম স্থানে আছে আর্মেনিয়ান রন্ধনশৈলী। ককেশাস অঞ্চলের প্রাচীন এই রন্ধনশৈলীতে রুটি, কাবাব এবং ডাম্পলিং উল্লেখযোগ্য। ৯৮তম স্থানে আছে কাজাখস্তানি রন্ধনশৈলী। মধ্য এশীয় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মাংস, দুধ দিয়ে তৈরি খাবার এবং মাংসের পদ দেশটির প্রধান আকর্ষণ। তাদের সেরা পদগুলোর মধ্যে রয়েছে সামসা, শুজিক, লাগমান, কেসপে ও বাউরসাক।

সূত্র: টেস্ট অ্যাটলাস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৯
আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

মেষ

আপনার তেজ আজ এতটাই বেশি থাকবে যে অফিসে আপনার টেবিলের কাছে এলেই সহকর্মীরা নিজেদের অজান্তে ‘পানি খাব’ বলে পিছিয়ে যাবেন। কিন্তু বিপদ অন্য জায়গায়: আপনার নিজের লোক (কর্মচারী) আজ আপনার ব্যবসার কড়াইয়ের তলা ফুটো করে দেবে। মনের কথা বোঝাতে পারবেন না বিশেষত সেই পুরোনো বন্ধুর কাছে, যে আপনার থেকে টাকা ধার করে আর ফিরিয়ে দেয় না। রাগ হলে এক গ্লাস লেবু জল খান। তাতেও না কমলে প্রতিবেশীর ওয়াইফাই হ্যাক করার চেষ্টা করুন।

বৃষ

আজ আপনি কোনো কাজের পরিকল্পনা করবেন, আর গ্রহ বলবে, ‘না না, ওটা কাল হবে।’ অর্থাৎ আপনার সব পরিকল্পনা আজ ডাহা ফেল মারবে। অন্য কারোর ওপর ভরসা না করে আপনার উপায় থাকবে না। যেহেতু আপনি স্বভাবতই একটু ‘হাঁকিয়ে’ লোক, তাই কাউকে সাহায্য চাইতে গেলে এমন একটা মুখ করবেন, যেন আপনি বিরাট দাতা, আর সে আপনার করুণার পাত্র। ঋণের জন্য দরবার করতে যাবেন না। বরং আলমারির পেছনে পড়ে থাকা পুরোনো একটা পাঁচ টাকার কয়েন খুঁজে দেখুন, ওটাই আজ আপনার শুভ অর্থ।

মিথুন

আপনার মাথায় আজ দুটি মস্তিষ্ক সমানে ঝগড়া করবে: একজন বলবে ‘এটা করো!’, অন্যজন বলবে, ‘করলে কিন্তু ফেঁসে যাবে!’ এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে আপনি এমন এক সংযমী মনোভাব নেবেন যে কোনো কাজই ঠিক সময়ে শেষ হবে না। বসের কাছে আজ কোনো আবদার করলে উত্তর আসবে, ‘আগে পুরোনো কাজগুলো শেষ করো।’ সরকারি কর্মচারীরা কাজের চাপে নাজেহাল হবেন, মনে হবে ফাইলগুলো আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছে। পার্টনার আপনার এই ‘কনফিউশন’ দেখে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাবে। সিঙ্গেল থাকলে আজ দ্রুত প্রোফাইল পিকচার বদলান, না হলে রাতারাতি কেউ ভুলেও মেসেজ করবে না।

কর্কট

বিবাহিতদের জন্য দিনটি মিষ্টি, মধুর, মাখনের মতো কাটবে। কিন্তু সমস্যা হলো, সেই মিষ্টি মেজাজ দুপুর ১২টার পর হঠাৎ টক হয়ে যেতে পারে। অফিসে বস আজ আপনার কাজের মধ্যে খুঁত ধরবেন (হয়তো আপনার চায়ের কাপের রং নিয়ে)। মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হবেন এবং সামান্য কিছুতেই ফেসবুকে লম্বা স্ট্যাটাস দিয়ে দেবেন। আবেগের বশে ভুল করে পুরোনো প্রেমিক/প্রেমিকার ছবিতে লাইক দিয়ে দেবেন না। আজ আপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, মেজাজ খারাপ হলেও মিষ্টি হাসি বজায় রাখা।

সিংহ

আজ কোনো দায়িত্ব কাঁধে নেবেন না। কারণ, গ্রহরাজ বলছে, নিলেও সেই কাজ অন্যের ঘাড়েই চাপাবেন। বাড়িতে রাখা আপনার প্রিয় দামি জিনিসটি আজ ভেঙে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা। হতে পারে সেটা সেই অ্যান্টিক ফুলদানিটা, যেটা নিয়ে সবার কাছে গল্প করতেন। আর হ্যাঁ, আজ বাড়িতে যে অতিথি আসবে, সে পেছনে আপনার সমালোচনা করবে। আজ বাড়ির সোফায় হেলান দিয়ে কেবল আদেশ জারি করুন। রান্নাঘরে ঢোকার চেষ্টা করবেন না। কারণ, সামান্য ডিম ভাজতেও আপনি হাত পুড়িয়ে ফেলবেন।

কন্যা

পরিপাটি স্বভাব আজ আপনাকে প্রবল বিদেশ যাত্রার দিকে ঠেলে দেবে। তবে সেটি কাজের জন্য নয়, শুধু উচ্চশিক্ষার জন্য। আজ একটা সূক্ষ্ম খুঁত খুঁজে বের করার জন্য সমস্ত মনোযোগ ব্যয় করবেন। ধরুন, এক মাস ধরে একটি ডিনার পার্টি প্ল্যান করেছেন, আর আজ আবিষ্কার করবেন যে টেবিল ক্লথটা দুই মিলিমিটার বাঁকা হয়ে আছে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। পেট পরিষ্কার রাখুন, গ্রহের দোষ কমবে।

তুলা

আজ আপনার দিনটা শুরু হবে ‘ইশ, আর পারছি না’ এই অনুভূতির সঙ্গে। মনে হবে যেন কাঁধে একটা বিরাট বোঝা চাপানো হয়েছে (যাকে আমরা ‘জীবনের বোঝা’ বলি)। সারা দিন শুধু ভাববেন, ‘ডান দিকে যাব, নাকি বাঁ দিকে?’ এই দোটানায় দুপুরের খাবার কখন খাবেন, তা-ই ঠিক করতে পারবেন না। কিন্তু দুপুরের পর হঠাৎ অপ্রত্যাশিতভাবে ওয়ালেটে একটি পুরোনো টাকা পাবেন, যেটা খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। আজ দরাদরি করার সময় ভুল করে নিজের স্যালারিটা বলে দেবেন না যেন!

বৃশ্চিক

কর্মক্ষেত্রে আজ অগ্রগতি হবে, কিন্তু গ্রহ বলছে—ফাঁকি দেওয়া একদম চলবে না! সাধারণত খুব গভীর ও রহস্যময় হতে পছন্দ করেন, কিন্তু আজ ছোট ভাগনে-ভাগনিরা আপনার সমস্ত রহস্য ফাঁস করে দিতে পারে। সন্ধ্যার দিকে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়ে আপনি হতাশ হতে পারেন (যেমন সবাই শুধু নিজের ফটো তুলছে)। রাতের বেলায় চাঁদ এবং বৃহস্পতি আপনার রাশিতে এমন ‘নাচানাচি’ করবে যে একা একা ঘরে একটা অদ্ভুত আনন্দে হাসবেন। কেউ দেখলে পাগল ভাববে।

ধনু

অতিরিক্ত আশাবাদ আজ আপনাকে কিছুটা বেহিসাবি করে তুলবে। আজ প্রত্যেকটা সিদ্ধান্ত খুব চিন্তাভাবনা করে নেবেন, যার ফলস্বরূপ সব সিদ্ধান্তই ভুল হবে। কোনো চেনা শত্রু আজ ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। আপনার শখের জিনিস কাউকে দান করে পরে মন খারাপ হবে। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে কম খরচ করুন। না হলে কালকে ভেজিটেবল চপ খেয়ে দিন পার করতে হবে। পরিচালকের ভূমিকায় থাকলে আপনি দুর্দান্ত কাজ করবেন। মানে পরেরবার বন্ধুদের আড্ডার ডিরেক্টর আপনি।

মকর

আপনি সাধারণত খুব দায়িত্বশীল ও গম্ভীর স্বভাবের। কিন্তু আজ হঠাৎ মা-বাবার কাছে পুরোনো দিনের মতো আবদার করতে ইচ্ছা করবে। করে দেখুন! পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ষোলো আনা। তবে আজ কারও সঙ্গে তর্কে যাবেন না। কারণ, সেটা কেবলই সময় নষ্ট করবে। সন্ধ্যায় কোনো এক অদ্ভুত বন্ধু বা গ্রুপের সদস্য আপনার মনকে হালকা করে দেবে। হতে পারে আপনার সেই বন্ধুটি, যে এখনো ‘টিকটক’ করে।

কুম্ভ

আজ এতটাই অন্যমনস্ক থাকবেন যে চলাফেরায় খুব বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। না হলে সিঁড়ির ধাপ গোনার সময় ভুল করে চারটির জায়গায় পাঁচটা ধাপ গুনে ফেলবেন। নতুন কিছু করার ইচ্ছা মনে জাগবে, আর আপনার জীবনসঙ্গী সেই কাজে সহায়তা করবেন, বিশেষ করে আপনি যদি চাঁদে আলু চাষের প্ল্যান করেন। আজ কেউ আপনাকে টাকা বা সাহায্য দিতে চাইবে না। তাই ধার চাইতে গেলে এমনভাবে যান, যেন আপনি লটারিতে ফার্স্ট প্রাইজ জিতেছেন—স্রেফ কৌতূহল মেটানোর জন্য জিজ্ঞেস করছেন। আপনার ইমেজ আজ সফল এবং ধনী মানুষের মতো দেখাবে।

মীন

আজ চিরাচরিত আলস্য ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইবেন, কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য বাঁধায় আটকে যাবেন। মনে হবে যেন সব অথরিটি ফিগার (যেমন বাড়ির বড়রা, অফিসের বস, বা মুদিদোকানের বকেয়া) আপনার স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে। মনটা আজ বেশ খারাপ লাগতে পারে। তবে শেষ হাসি আপনার: দিনের শেষে ভ্রমণ বা শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলার সুযোগ আনন্দ দেবে। যদি ভ্রমণ সম্ভব না হয়, তবে ছাদে গিয়ে আকাশ দেখতে দেখতে মহাকাশ যাত্রার কল্পনা করুন—ওটাই আপনার আজকের বিদেশ যাত্রা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের লাল-সবুজ খাবার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
লাল-সবুজ ফলে চিড়ার ডিশ
লাল-সবুজ ফলে চিড়ার ডিশ

বিজয় দিবস ছুটির দিন। তাই খাবার টেবিলেও থাকে রোজকার খাবারের পরিবর্তে বিশেষ খাবার। বিজয়ের লাল-সবুজ রং থাকুক খাবার টেবিলেও। তবে খাবারে কোনো ধরনের রং ব্যবহার না করে বরং প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করুন। আপনাদের জন্য এ রকম কয়েকটি খাবারের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা

মাংসের লাল-সবুজ সালাদ

উপকরণ

পাতলা করে কাটা গরু, খাসি বা মুরগির মাংস ২ কাপ, সয়াসস ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, সয়াবিন তেল ২ টেবিল চামচ, কিউব করে কাটা শসা ও গাজর আধা কাপ করে, লাল ও সবুজ রঙের ক্যাপসিকাম কিউব করে কাটা আধা কাপ করে, টমেটো কাটা ১ কাপ, কাজু বাদাম আধা কাপ, লেবু রস ও কুচি করে কাটা কাঁচা মরিচ ১ টেবিল চামচ করে, ৩টি পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা এবং পুদিনাপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ করে।

মাংসের লাল-সবুজ সালাদ
মাংসের লাল-সবুজ সালাদ

প্রণালি

প্রথমে মাংসের টুকরোগুলো সয়াসস ও সামান্য লবণ মিশিয়ে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন। এবার শসা, গাজর, টমেটো, লাল ও সবুজ ক্যাপসিকাম, কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা, পুদিনাপাতা ও পেঁয়াজ কুচি করে কেটে আলাদা করে রাখুন। ফ্রাই প্যানে তেল দিয়ে মাংসের টুকরোগুলো ভেজে নিন। বাটিতে সব সবজি, লেবুর রস, লবণ, কাজুবাদাম দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে ভাজা মাংসগুলোর মধ্যে দিয়ে নেড়ে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে আবারও মিশিয়ে নিন।

স্ট্রবেরির লাল পুডিং

উপকরণ

স্ট্রবেরি ২৫০ গ্রাম, চায়না গ্রাস ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, তরল দুধ আধা লিটার, কনডেন্সড মিল্ক আধা কাপ, স্ট্রবেরি এসেন্স ২ ফোঁটা এবং পানি ৪ কাপ।

স্ট্রবেরির লাল পুডিং
স্ট্রবেরির লাল পুডিং

প্রণালি

স্ট্রবেরি ৮ থেকে ১০ পিস টুকরো করে কেটে নিন। বাকিগুলো জুস করে নিন। এবার একটা হাঁড়িতে পানি দিয়ে তাতে চায়না গ্রাস ফুটিয়ে নিন। এরপর তাতে স্ট্রবেরির জুস এবং চিনি দিয়ে রান্না করুন। এরপর এই মিশ্রণ দুই ভাগ করে রাখুন। এবার তরল দুধ, কনডেন্সড মিল্ক ও এক ভাগ জুস একসঙ্গে রান্না করুন। পরে পছন্দের মোল্ডে স্ট্রবেরি চার টুকরো করে কেটে রেখে দিয়ে আলাদা করে রাখা জুসের অর্ধেক মিশ্রণ ঢালুন। দুধ ও জুস দিয়ে তৈরি মিশ্রণটি ঢেলে নরমাল ফ্রিজে রাখুন। ব্যস তৈরি হয়ে গেল সুস্বাদু স্ট্রবেরি পুডিং।

পেঁপের সবুজ হালুয়া

উপকরণ

সুজি ১ কাপ, পেঁপে গ্রেট করা ২ কাপ, চিনি ৩ কাপ, ঘি ১ কাপ, এলাচি ও দারুচিনি ২ থেকে ৩টি করে, কাঠবাদাম কুচি ২ টেবিল চামচ এবং পানি পরিমাণমতো।

পেঁপের সবুজ হালুয়া
পেঁপের সবুজ হালুয়া

প্রণালি

কড়াইয়ে ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে সুজি সামান্য ভেজে নিন। এরপর কড়াইয়ে ঘি দিয়ে ভাজা সুজি, গ্রেট করা পেঁপে, এলাচি ও দারুচিনি, চিনি ও পানি দিয়ে নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে এলে কাঠবাদাম কুচি দিন। মোল্ডের গায়ে ঘি ব্রাশ করে হালুয়া চেপে চেপে ভরে শেপ এলে বের করে নিন। নয়তো হাতেই আস্ত পেঁপের শেপ দিন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল সুস্বাদু পেঁপের হালুয়া।

লাল-সবুজ ফলে চিড়ার ডিশ

উপকরণ

চিড়া ২ কাপ, আখের গুড় ৪ টেবিল চামচ, কলা ২টি, ডালিমের দানা ৪ টেবিল চামচ, কুচি করা আপেল ১টি, স্ট্রবেরি ৬টি, সবুজ আঙুর ২ টেবিল চামচ, ঘন দুধ ২ কাপ, মধু ২ চা-চামচ।

লাল-সবুজ ফলে চিড়ার ডিশ
লাল-সবুজ ফলে চিড়ার ডিশ

প্রণালি

চিড়া ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার লিকুইড দুধ চুলায় জ্বাল দিয়ে সামান্য ঘন করে নিন। এবার ফল ধুয়ে কেটে রাখুন। বাটিতে চিড়া দিন। এরপর দুধ ঢালুন। ফল ছড়িয়ে দিয়ে মধু ও গুড় ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত