কাশফিয়া আলম ঝিলিক
ফিলিস্তিনের ফ্যাশন ব্র্যান্ড বেবিফিস্ট। ‘ভোগ’ অবলম্বনে আন্তর্জাতিক এই ফ্যাশন ব্র্যান্ড নিয়ে লিখেছেন কাশফিয়া আলম ঝিলিক।
ধ্বংস আর মৃত্যুর উপত্যকায় কখনো কখনো ফুল ফোটে। আর তার রঙে রঙিন হয় চারপাশ। ফিলিস্তিনের অবস্থা এখন সে রকম। চারদিকে ধ্বংসের চিহ্ন, মৃত্যু আর ক্ষয়। এরই মাঝে তৈরি হয়েছে মেইড ইন প্যালেস্টাইন ফ্যাশন ব্র্যান্ড বেবিফিস্ট। এর মূল ডিজাইনার ও মালিক ইয়াসমিন মজালি নামের এক তরুণী। অথচ ফ্যাশন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন কোনো কালেই ছিল না তাঁর।
ফিলিস্তিনে বিদ্রোহ আর প্রতিবাদ ছাড়া তারুণ্য কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব। মজালির ফ্যাশন-ভাবনা সেখান থেকেই অনুপ্রাণিত। শুরুটা একেবারে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে। সেই গল্প বেশ চমকপ্রদ। সবাই যখন উন্নত জীবনের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়, ইয়াসমিন মজালির পরিবার তখন সেখান থেকে ফিলিস্তিনে ফিরে যায়! তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রেই। সেখানেই লেখাপড়া। কিন্তু পরিবারের সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনে ফিরে যাওয়া।
দেশে ফিরে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হন মজালি। সিদ্ধান্ত নেন, প্রতিবাদ জানাবেন পোশাকের মাধ্যমে। হয়রানির প্রতিবাদে মজালি নিজের চামড়ার জ্যাকেটে লিখে দেন ‘নট ইওর হাবিবতি’। ‘হাবিবতি’ শব্দের অর্থ বেবি। তাঁর লেখাটার অর্থ দাঁড়ায়, নট ইওর বেবি। এই প্রতিবাদ থেকেই জন্ম নেয় ইয়াসমিন মজালির ফ্যাশন ব্র্যান্ড বেবিফিস্ট। সময়টা ২০১৭ সাল।
‘তারাই সুন্দর, যারা শক্তিশালী’ ফিলিস্তিনের কবি মাহমুদ দানেশের কবিতার লাইন প্রায়ই মজালির পোশাকে উঠে আসে। এমন লাইন দিয়েই তিনি জ্যাকেট ও টি-শার্টের ডিজাইন করেন। তাঁর ফ্যাশন ব্র্যান্ডের টি-শার্টগুলোর মাধ্যমে বিশ্বদরবারে নিজ দেশে চলমান যুদ্ধ ও অত্যাচার বন্ধের দাবি জানান তিনি।
‘নট ইওর বেবি’ ডিজাইনের মাধ্যমে মজালি নারীদের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিজের আওয়াজ তোলেন। নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলের মাধ্যমে পোশাকের প্রচার শুরু করেন তিনি। তাঁর পণ্যের বিজ্ঞাপনের মডেল হন ফিলিস্তিনের তরুণ-তরুণীরা। একটি ছবিতে দেখা যায়, এক নারী একটি জ্যাকেট পরে আছেন। তাতে আরবিতে লেখা, ‘প্রতিটি গোলাপে কাঁটা থাকে’। সেখানেই আরও একজনের পরনের একটি কালো লং স্লিভ টি-শার্টে লেখা, ‘সমতার ধারণা হলো যৌনতা, লিঙ্গ, জাতি বা ধর্মনির্বিশেষে আমরা সবাই সমান’। ছবির মডেলদের কারও মাথায় হিজাব পরা, কেউ আবার খুলে রেখেছেন চুল। তাঁদের অনেকের হাতেই ট্যাটু আছে।
মজালি জানান, ফিলিস্তিনে মেয়েদের মাসিকের বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যক্রমের অংশ নয়। এ তথ্য জেনে প্রথমে তিনি স্কুলে স্যানিটারি প্যাড দান করেন এবং শিক্ষামূলক কর্মশালার আয়োজন করেন। পরে শেষ পর্যন্ত একটি টি-শার্ট তৈরি করেন, যাতে লেখা ছিল ‘বেলা থ্রি ইবি’। এর অর্থ বেলাজ। শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হয় নারীদের উদ্দেশে। শব্দটি তখনই ব্যবহার করা হয়, যখন নারীরা মতপ্রকাশ করে, জোরে হাসে বা মেয়েলি ভঙ্গিতে বসে না।
নিজের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মজালিকে। বর্তমানে তাঁর সব ডিজাইন গাজায় তৈরি হয়। ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনকে মজালি জানান, তাঁর কাজ ফিলিস্তিনিদের কাজের সুযোগ করে দেয়। তবে পণ্য ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থেকেই যায়। গাজা থেকে রামাল্লায় পাঠানো হলে ব্যাপক তল্লাশির মধ্যে পড়তে হয়। কখনো কখনো সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চালান আটকে যায়। যদিও এটি সাধারণ ধারণা যে গাজা পুরোপুরি বন্ধ। কিন্তু জানতে হবে যে বাণিজ্যিক ট্রাক ওই এলাকা থেকে চলাচল করে। তবে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা থাকলে চেকপয়েন্টগুলো বন্ধ হয়ে যায়। একবার একটি ট্রাকভর্তি জ্যাকেট এক মাস আটকে ছিল বলে জানান মজালি।
ফিলিস্তিনের অন্যান্য জায়গায় সুযোগ থাকলেও মজালি গাজায় থেকেই কাজ করতে চান, যাতে সেখানে কর্মসংস্থান তৈরিতে একটু হলেও অবদান রাখতে পারেন। চমকপ্রদ বিষয় হলো, মজালির দল গাজায় দুই বছর ধরে কাজ করলেও তাদের সব ধরনের যোগাযোগ হয় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। মজালি কখনো গাজায় নিজের কারখানা পরিদর্শন করতে পারেননি!
ফিলিস্তিনের ফ্যাশন ব্র্যান্ড বেবিফিস্ট। ‘ভোগ’ অবলম্বনে আন্তর্জাতিক এই ফ্যাশন ব্র্যান্ড নিয়ে লিখেছেন কাশফিয়া আলম ঝিলিক।
ধ্বংস আর মৃত্যুর উপত্যকায় কখনো কখনো ফুল ফোটে। আর তার রঙে রঙিন হয় চারপাশ। ফিলিস্তিনের অবস্থা এখন সে রকম। চারদিকে ধ্বংসের চিহ্ন, মৃত্যু আর ক্ষয়। এরই মাঝে তৈরি হয়েছে মেইড ইন প্যালেস্টাইন ফ্যাশন ব্র্যান্ড বেবিফিস্ট। এর মূল ডিজাইনার ও মালিক ইয়াসমিন মজালি নামের এক তরুণী। অথচ ফ্যাশন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন কোনো কালেই ছিল না তাঁর।
ফিলিস্তিনে বিদ্রোহ আর প্রতিবাদ ছাড়া তারুণ্য কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব। মজালির ফ্যাশন-ভাবনা সেখান থেকেই অনুপ্রাণিত। শুরুটা একেবারে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে। সেই গল্প বেশ চমকপ্রদ। সবাই যখন উন্নত জীবনের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়, ইয়াসমিন মজালির পরিবার তখন সেখান থেকে ফিলিস্তিনে ফিরে যায়! তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রেই। সেখানেই লেখাপড়া। কিন্তু পরিবারের সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনে ফিরে যাওয়া।
দেশে ফিরে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হন মজালি। সিদ্ধান্ত নেন, প্রতিবাদ জানাবেন পোশাকের মাধ্যমে। হয়রানির প্রতিবাদে মজালি নিজের চামড়ার জ্যাকেটে লিখে দেন ‘নট ইওর হাবিবতি’। ‘হাবিবতি’ শব্দের অর্থ বেবি। তাঁর লেখাটার অর্থ দাঁড়ায়, নট ইওর বেবি। এই প্রতিবাদ থেকেই জন্ম নেয় ইয়াসমিন মজালির ফ্যাশন ব্র্যান্ড বেবিফিস্ট। সময়টা ২০১৭ সাল।
‘তারাই সুন্দর, যারা শক্তিশালী’ ফিলিস্তিনের কবি মাহমুদ দানেশের কবিতার লাইন প্রায়ই মজালির পোশাকে উঠে আসে। এমন লাইন দিয়েই তিনি জ্যাকেট ও টি-শার্টের ডিজাইন করেন। তাঁর ফ্যাশন ব্র্যান্ডের টি-শার্টগুলোর মাধ্যমে বিশ্বদরবারে নিজ দেশে চলমান যুদ্ধ ও অত্যাচার বন্ধের দাবি জানান তিনি।
‘নট ইওর বেবি’ ডিজাইনের মাধ্যমে মজালি নারীদের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিজের আওয়াজ তোলেন। নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলের মাধ্যমে পোশাকের প্রচার শুরু করেন তিনি। তাঁর পণ্যের বিজ্ঞাপনের মডেল হন ফিলিস্তিনের তরুণ-তরুণীরা। একটি ছবিতে দেখা যায়, এক নারী একটি জ্যাকেট পরে আছেন। তাতে আরবিতে লেখা, ‘প্রতিটি গোলাপে কাঁটা থাকে’। সেখানেই আরও একজনের পরনের একটি কালো লং স্লিভ টি-শার্টে লেখা, ‘সমতার ধারণা হলো যৌনতা, লিঙ্গ, জাতি বা ধর্মনির্বিশেষে আমরা সবাই সমান’। ছবির মডেলদের কারও মাথায় হিজাব পরা, কেউ আবার খুলে রেখেছেন চুল। তাঁদের অনেকের হাতেই ট্যাটু আছে।
মজালি জানান, ফিলিস্তিনে মেয়েদের মাসিকের বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যক্রমের অংশ নয়। এ তথ্য জেনে প্রথমে তিনি স্কুলে স্যানিটারি প্যাড দান করেন এবং শিক্ষামূলক কর্মশালার আয়োজন করেন। পরে শেষ পর্যন্ত একটি টি-শার্ট তৈরি করেন, যাতে লেখা ছিল ‘বেলা থ্রি ইবি’। এর অর্থ বেলাজ। শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হয় নারীদের উদ্দেশে। শব্দটি তখনই ব্যবহার করা হয়, যখন নারীরা মতপ্রকাশ করে, জোরে হাসে বা মেয়েলি ভঙ্গিতে বসে না।
নিজের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মজালিকে। বর্তমানে তাঁর সব ডিজাইন গাজায় তৈরি হয়। ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনকে মজালি জানান, তাঁর কাজ ফিলিস্তিনিদের কাজের সুযোগ করে দেয়। তবে পণ্য ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থেকেই যায়। গাজা থেকে রামাল্লায় পাঠানো হলে ব্যাপক তল্লাশির মধ্যে পড়তে হয়। কখনো কখনো সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চালান আটকে যায়। যদিও এটি সাধারণ ধারণা যে গাজা পুরোপুরি বন্ধ। কিন্তু জানতে হবে যে বাণিজ্যিক ট্রাক ওই এলাকা থেকে চলাচল করে। তবে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা থাকলে চেকপয়েন্টগুলো বন্ধ হয়ে যায়। একবার একটি ট্রাকভর্তি জ্যাকেট এক মাস আটকে ছিল বলে জানান মজালি।
ফিলিস্তিনের অন্যান্য জায়গায় সুযোগ থাকলেও মজালি গাজায় থেকেই কাজ করতে চান, যাতে সেখানে কর্মসংস্থান তৈরিতে একটু হলেও অবদান রাখতে পারেন। চমকপ্রদ বিষয় হলো, মজালির দল গাজায় দুই বছর ধরে কাজ করলেও তাদের সব ধরনের যোগাযোগ হয় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। মজালি কখনো গাজায় নিজের কারখানা পরিদর্শন করতে পারেননি!
আমরা সবাই কখনো না কখনো রেগে যাই। কারও ওপর, নিজের ওপর, পরিস্থিতির ওপর, কিংবা কখনো এমনকি অজানা এক শূন্যতার ওপরও। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষ কেন রেগে যায়? রাগ কি কেবলই একটি আবেগ, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে থাকে বহুস্তর বিশ্লেষণ, অতীত অভিজ্ঞতা, অসহায়ত্ব, অপূর্ণতা এবং একধরনের মানসিক প্রতিক্রিয়া?
২ ঘণ্টা আগেঅনেকে কাঁকড়া খেতে ভালোবাসেন। তবে যাঁরা এই প্রথম বাজার থেকে কাঁকড়া কিনে এনেছেন রাঁধবেন বলে, তাঁদের জন্য কাঁকড়া ভুনার রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী ওমাম রায়হান।
১৭ ঘণ্টা আগেশহরটির বয়স প্রায় ১১০ বছর। ‘ম্যাড ম্যাক্স বিয়ন্ড থান্ডারডোম’, ‘প্রিসিলা’, ‘ডেজার্ট কুইন’ ও ‘রেড প্ল্যানেট’ চলচ্চিত্র যাঁরা দেখেছেন, বিস্তারিত না জানলেও তাঁরা এই শহর এবং তার পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত। কারণ, এই চলচ্চিত্রগুলো শতবর্ষী শহরটিতেই চিত্রায়িত হয়েছিল।
১৭ ঘণ্টা আগেপৃথিবীতে কেউই নিজেদের মিথ্যাবাদী ভাবতে চায় না। কিন্তু সত্যি বলতে, সবাইকে কখনো না কখনো মিথ্যা বলতে হয়। ছোট ছোট সাদা মিথ্যা থেকে শুরু করে অনিয়ন্ত্রিত মিথ্যা। এ ধরনের কথা বলার ধরন অনেক রকম। শিশুরাও বুঝে না বুঝে মিথ্যা বলে। তাই মিথ্যা বলা হয়তো একটি প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি।
১৭ ঘণ্টা আগে