রজত কান্তি রায়, ঢাকা
ঘরের মেঝেতে সপটি ফেলায়ে বিছায়ে নক্সী-কাঁথা, সেলাই করিতে বসিল যে সাজু একটু নোয়ায়ে মাথা।...নক্সী-কাঁথায় আঁকিল যে সাজু অনেক নক্সী-ফুল,...আঁকিল তাদের বিয়ের বাসর, আঁকিল রূপার বাড়ি, এমন সময় বাহিরে কে দেখে আসিতেছে তাড়াতাড়ি। [নক্সী কাঁথার মাঠ, জসীমউদ্দীন]
জীবন ও স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কাঁথার ঐতিহ্য আমাদের এই জনপদে যে বহু প্রাচীন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রায় সাড়ে চার শ বছর আগে কৃষ্ণদাস কবিরাজের লেখা শ্রীশ্রী চৈতন্য চরিতামৃত বইয়ে প্রথম কাঁথার কথা পাওয়া যায়। লহরি, সুজনি, লেপ-কাঁথা, রুমাল-কাঁথা, আসন-কাঁথা, বস্তানী বা গাত্রী ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের নকশিকাঁথা আছে আমাদের। এই কাঁথাগুলো সেলাইয়ের জন্য বিভিন্ন নকশা রয়েছে। চাটাই সেলাই, কাইত্যা সেলাই, যশুরে সেলাই, রিফু সেলাই, কাশ্মীরি সেলাই, শর সেলাই, হেরিংবোন সেলাই, সাটিন সেলাই, ব্যাক সেলাই কিংবা ক্রস সেলাই ব্যবহার করে এ নকশাগুলো তোলা হয়।
সূর্য, চাঁদ, গাছ, পাখি, মাছ, লতা, ফল, ফুল, বরফিসহ বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা দেখা যায় নকশিকাঁথায়। বলা বাহুল্য, এখন আরও আধুনিক মোটিফ যুক্ত হয়েছে এতে। নকশায় নয়, নকশিকাঁথার গুরুত্ব মূলত এর সেলাইয়ের ধরনে। এর সেলাইকে বলা হয় ফোঁড়।
এই ফোঁড় দিয়েই তৈরি করা হয় বিভিন্ন মোটিফের নকশা। ঐতিহ্যবাহী এসব নকশা এখন আর শুধু কাঁথাতেই ব্যবহার করা হচ্ছে না; ফ্যাশন হাউসে পোশাকের নকশাকার কিংবা ডিজাইনাররা এখন সেগুলো ব্যবহার করে নতুন পোশাক বানাচ্ছেন। এসব পোশাকের বিশাল ক্রেতাশ্রেণি তৈরি হয়েছে দেশে।
এমনই একটি প্রতিষ্ঠান ‘অবনি’। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে লেখাপড়ার সুবাদে পোশাকের নকশা করার প্রতি আগ্রহ ছিল
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী নাজিয়া বিনতে হারুনের। করোনাকালে চাকরিতে সমস্যা হলে নিজেই উদ্যোগ নেন পোশাক তৈরির। শুরু হয় অবনির যাত্রা, ২০২০ সালে। শোরুম উদ্বোধন করা হয় ২০২৩ সালে।
মূলত জামদানি দিয়ে ফিউশনধর্মী পোশাক তৈরি করতে গিয়ে দেশীয় শিল্পের মোটিফের প্রেমে পড়ে যান নাজিয়া।
ফলে তিনি খোঁজা শুরু করেন, আর কোন ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে পোশাকের মোটিফ হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। এ পর্যায়ে তিনি নকশিকাঁথার মোটিফ এবং এর উজ্জ্বল রঙে আকৃষ্ট হন। যোগাযোগ করেন জামালপুরের নকশিকাঁথা তৈরি করা নারীদের সঙ্গে। এরপর যশোরে। মোটিফ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা আর খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন।
সুতি কাপড়ের কোটি বা জ্যাকেট, শ্রাগ, কো-অর্ডস ইত্যাদি ফিউশন পোশাক তৈরি করে অবনি। মোটিফ সংগ্রহ করে সেখান থেকে বেছে বেছে পোশাকে ব্যবহার করেন নাজিয়া। নকশিকাঁথায় বিভিন্ন প্রাণীর মোটিফ থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করা হয় না। পোশাকের জন্য ব্যবহার করা হয় ফুল, লতা, বিমূর্ত সূর্য, বরফিসহ বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিল রেখে কিংবা বিপরীত রঙের সুতা ব্যবহার করা হয়।
নাজিয়া জানান, দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক তরুণ-তরুণী পছন্দ করেছেন তাঁর কাঁথা মোটিফের কাজ। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ফেসবুক পেজ
কিংবা শোরুম থেকে অবনির পোশাক কেনার প্রবণতা দেখে। এ ছাড়া দেশের বাইরে থেকেও অনেকে অনলাইনে অর্ডার করেন অবনির ফিউশন পোশাক। নাজিয়া জানালেন, শুধু দেশের মানুষেরাই নন; বিদেশি নারীরাও তাঁর কাঁথা মোটিফের পোশাকের ভক্ত; বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন আউটফিটের সঙ্গে যেসব পোশাক পরিধান করা যায়, সেগুলো বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ফিউশনের মাহাত্ম্যই এখানে। শুধু পোশাকে নয়, বিভিন্ন আসবাবেও জামদানি মোটিফের সফল ব্যবহার দেখেছি আমরা। এখন দেখছি ওয়েস্টার্ন আউটফিটে নকশিকাঁথা মোটিফের ছোঁয়া।
নকশিকাঁথায় জয় হোক বিশ্ব।
ঘরের মেঝেতে সপটি ফেলায়ে বিছায়ে নক্সী-কাঁথা, সেলাই করিতে বসিল যে সাজু একটু নোয়ায়ে মাথা।...নক্সী-কাঁথায় আঁকিল যে সাজু অনেক নক্সী-ফুল,...আঁকিল তাদের বিয়ের বাসর, আঁকিল রূপার বাড়ি, এমন সময় বাহিরে কে দেখে আসিতেছে তাড়াতাড়ি। [নক্সী কাঁথার মাঠ, জসীমউদ্দীন]
জীবন ও স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কাঁথার ঐতিহ্য আমাদের এই জনপদে যে বহু প্রাচীন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রায় সাড়ে চার শ বছর আগে কৃষ্ণদাস কবিরাজের লেখা শ্রীশ্রী চৈতন্য চরিতামৃত বইয়ে প্রথম কাঁথার কথা পাওয়া যায়। লহরি, সুজনি, লেপ-কাঁথা, রুমাল-কাঁথা, আসন-কাঁথা, বস্তানী বা গাত্রী ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের নকশিকাঁথা আছে আমাদের। এই কাঁথাগুলো সেলাইয়ের জন্য বিভিন্ন নকশা রয়েছে। চাটাই সেলাই, কাইত্যা সেলাই, যশুরে সেলাই, রিফু সেলাই, কাশ্মীরি সেলাই, শর সেলাই, হেরিংবোন সেলাই, সাটিন সেলাই, ব্যাক সেলাই কিংবা ক্রস সেলাই ব্যবহার করে এ নকশাগুলো তোলা হয়।
সূর্য, চাঁদ, গাছ, পাখি, মাছ, লতা, ফল, ফুল, বরফিসহ বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা দেখা যায় নকশিকাঁথায়। বলা বাহুল্য, এখন আরও আধুনিক মোটিফ যুক্ত হয়েছে এতে। নকশায় নয়, নকশিকাঁথার গুরুত্ব মূলত এর সেলাইয়ের ধরনে। এর সেলাইকে বলা হয় ফোঁড়।
এই ফোঁড় দিয়েই তৈরি করা হয় বিভিন্ন মোটিফের নকশা। ঐতিহ্যবাহী এসব নকশা এখন আর শুধু কাঁথাতেই ব্যবহার করা হচ্ছে না; ফ্যাশন হাউসে পোশাকের নকশাকার কিংবা ডিজাইনাররা এখন সেগুলো ব্যবহার করে নতুন পোশাক বানাচ্ছেন। এসব পোশাকের বিশাল ক্রেতাশ্রেণি তৈরি হয়েছে দেশে।
এমনই একটি প্রতিষ্ঠান ‘অবনি’। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে লেখাপড়ার সুবাদে পোশাকের নকশা করার প্রতি আগ্রহ ছিল
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী নাজিয়া বিনতে হারুনের। করোনাকালে চাকরিতে সমস্যা হলে নিজেই উদ্যোগ নেন পোশাক তৈরির। শুরু হয় অবনির যাত্রা, ২০২০ সালে। শোরুম উদ্বোধন করা হয় ২০২৩ সালে।
মূলত জামদানি দিয়ে ফিউশনধর্মী পোশাক তৈরি করতে গিয়ে দেশীয় শিল্পের মোটিফের প্রেমে পড়ে যান নাজিয়া।
ফলে তিনি খোঁজা শুরু করেন, আর কোন ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে পোশাকের মোটিফ হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। এ পর্যায়ে তিনি নকশিকাঁথার মোটিফ এবং এর উজ্জ্বল রঙে আকৃষ্ট হন। যোগাযোগ করেন জামালপুরের নকশিকাঁথা তৈরি করা নারীদের সঙ্গে। এরপর যশোরে। মোটিফ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা আর খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন।
সুতি কাপড়ের কোটি বা জ্যাকেট, শ্রাগ, কো-অর্ডস ইত্যাদি ফিউশন পোশাক তৈরি করে অবনি। মোটিফ সংগ্রহ করে সেখান থেকে বেছে বেছে পোশাকে ব্যবহার করেন নাজিয়া। নকশিকাঁথায় বিভিন্ন প্রাণীর মোটিফ থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করা হয় না। পোশাকের জন্য ব্যবহার করা হয় ফুল, লতা, বিমূর্ত সূর্য, বরফিসহ বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিল রেখে কিংবা বিপরীত রঙের সুতা ব্যবহার করা হয়।
নাজিয়া জানান, দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক তরুণ-তরুণী পছন্দ করেছেন তাঁর কাঁথা মোটিফের কাজ। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ফেসবুক পেজ
কিংবা শোরুম থেকে অবনির পোশাক কেনার প্রবণতা দেখে। এ ছাড়া দেশের বাইরে থেকেও অনেকে অনলাইনে অর্ডার করেন অবনির ফিউশন পোশাক। নাজিয়া জানালেন, শুধু দেশের মানুষেরাই নন; বিদেশি নারীরাও তাঁর কাঁথা মোটিফের পোশাকের ভক্ত; বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন আউটফিটের সঙ্গে যেসব পোশাক পরিধান করা যায়, সেগুলো বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ফিউশনের মাহাত্ম্যই এখানে। শুধু পোশাকে নয়, বিভিন্ন আসবাবেও জামদানি মোটিফের সফল ব্যবহার দেখেছি আমরা। এখন দেখছি ওয়েস্টার্ন আউটফিটে নকশিকাঁথা মোটিফের ছোঁয়া।
নকশিকাঁথায় জয় হোক বিশ্ব।
সকাল সকাল স্মার্টফোনে অ্যালার্ম বাজতেই তড়িঘড়ি করে গোসল করতে দৌড়। এরপর আলমারি খুলে হাতের কাছে যা পাওয়া যায়, তাই পরে ব্যাগটা কাঁধে নিয়েই চম্পট। পাঁচ মিনিট দেরি হলেই বাস পাওয়া যাবে না। মেট্রো তো না-ই। যে মেয়েটার রোজ ক্লাস বা অফিস ধরতে এমনভাবে সকালটা যায়, বিশেষ দিনগুলোয় তার হালটা বোঝেন...
১ দিন আগেগরম মানেই প্রচণ্ড তাপ আর ঘাম। কিন্তু রোদে বের হলে ত্বক কেমন যেন শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। আঙুলের ডগা, গোড়ালি এমনকি ঠোঁটও ফাটে এখনকার গ্রীষ্মকালে। ভাবা যায়? এর কারণ হলো, গরম পড়লেও বাতাসে আর্দ্রতা কম, ফলে ত্বকে টান টান অনুভব হয়, অতিরিক্ত শুষ্কতাও দেখা দেয়। গরমে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে বাড়তি যত্ন নেওয়া চাই।
১ দিন আগেএখন কাঁচা আমের সময়। নববর্ষের প্রথম দিন বানাতে পারেন কাঁচা আমের কয়েক রকমের পদ। রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন আফরোজা খানম মুক্তা।
১ দিন আগেআমার গলা, ঘাড়ে ও পিঠে কিছু কালো ছোপ রয়েছে। দাগমুক্ত ত্বকের জন্য কী করতে পারি? নুসরাত জাহান, জয়পুরহাট
১ দিন আগে