ডা. সানজিদা শাহ্রিয়া
প্রেম একটি মাধুর্যপূর্ণ সম্পর্ক। এই সম্পর্ক যখন একজন ব্যক্তির সঙ্গে থাকে তখন তা মধুর। কিন্তু বারবার উদ্দেশ্যহীনভাবে যদি একাধিক মানুষের সঙ্গে প্রেম হয়, তখন সেটা আর মধুর থাকে না। ‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকা একটি জরিপ করেছিল। বিষয় ছিল, করোনার আগে ও পরে একাধিক সম্পর্কে জড়ানোর হার কেমন। দেখা গেছে, করোনা মহামারির আগে প্রতি পাঁচজনের একজন উদ্দেশ্যহীনভাবে এই সম্পর্কে জড়াতেন। কিন্তু গত দেড় বা দুই বছর লকডাউন-পরবর্তী পৃথিবীতে এই সংখ্যা এক লাফে দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে।
প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্ক কেন
এই প্রেক্ষাপটে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, বারবার উদ্দেশ্যহীন বা প্রতিশ্রুতিহীন প্রেমের সম্পর্কে জড়ানো কেন? উদ্দেশ্যহীনভাবে বারবার প্রেমে পড়ার এই ব্যাপারটাকে দুভাবে দেখা যায়—মানসিক দিক থেকে এবং অন্যটি নিউরোসায়েন্সের প্রেক্ষাপটে। মানসিক দিক থেকে যদি বলি, তাহলে বারবার এই প্রেম-প্রেম ব্যাপারটা কোনো বাস্তবজ্ঞানসম্পন্ন দিক থেকে আসে না। এটা বেশ জটিল বিষয়। নির্দিষ্ট কারও জন্য প্রেম বিষয়টি অনুভূত হয়। আবার পরবর্তী সময়ে অন্য আরও অনেকের জন্য অনুভূত হতে পারে। বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বললে বুঝতে সহজ হবে।
ধরা যাক, কোনো অনুষ্ঠানে একটি ছেলের সঙ্গে একটি মেয়ের পরিচয় হলো। মুচকি হাসি দিয়ে কাছাকাছি বসে গল্প হলো। আর এই গল্পের ধরনটাও সাধারণ পরিচয়পর্ব নয়; বরং অন্যরকম। এটাকে অ্যাবসলিউট ফ্ল্যার্ট বলা হয়। প্রথম ধাপে এটা চলে। পরের ধাপে ফোন ও সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকল। এরপর একে অপরের সঙ্গে কোথাও দেখা করার এবং সময় কাটানোর ইচ্ছে জাগল। বলে রাখা ভালো, এই ভালো লাগা বা একে অপরের প্রতি আকাঙ্ক্ষা মনের সীমা অতিক্রম করে শরীর পর্যন্ত পৌঁছে যায় কখনো কখনো। তখন থেকেই ফলাফল শুরু হয়।
প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্কের ফলাফল
প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্কে জড়ানো দুজনের একজন দেখলেন বিপরীত দিকের মানুষটি তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলেন, ঘনিষ্ঠ হন। তখন একধরনের দ্বন্দ্ব ও যুক্তিতর্ক চলে। এটা দ্বিতীয় ধাপ। এরপর দ্বন্দ্ব-ঝগড়া চলতে থাকে। এর মধ্যে দুজনের একজনের জীবনসঙ্গী হয়তো ব্যাপারটা জেনে গেলেন বা আঁচ করলেন। অথবা দুজনের একজন বলে বসলেন, আমাকে বিয়ে করে ফেলো। কিন্তু অপর জন রাজি হচ্ছেন না। এখান থেকে তৃতীয় ধাপের শুরু। দুজনের একজন যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন, তবে তাঁদের বিচ্ছেদ হতে পারে, সংসারে অশান্তি হতে পারে। ক্রমেই সেটা শারীরিক নির্যাতনের দিকে গড়াতে পারে।
যা হতে পারে
উদ্দেশ্যহীনভাবে প্রেমে জড়ানোর ফলে সম্পর্কের সীমা না থাকার কারণে সেটি ভেঙে গেলে কেউ কেউ নিজেকে দোষী ভাবতে পারেন অথবা প্রচণ্ড হতাশা বোধ করতে পারেন। সম্পর্ক নিয়ে এ পর্যায়ে যাওয়ার আগে এটা ভাবা দরকার, সম্পর্কটি নিয়ে কত দূর যাবেন, কোথায় গিয়ে থামতে হবে ও কোথা থেকে ফেরত আসতে হবে।
এবার আসা যাক নিউরোসায়েন্সের প্রেক্ষাপটে। কিছুদিন আগেও তর্কের বিষয় ছিল, মানুষ প্রাকৃতিকভাবে একগামী না বহুগামী? এখন সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিচার করলে দেখা যায়, একগামী মানুষের পাল্লাটা ভারী। এখানে বলে রাখা ভালো, একগামী ও বহুগামীদের মস্তিষ্কের গঠন আলাদা। তাঁদের যৌন আচরণে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু রোমান্টিক সম্পর্কে যখন কোনো উদ্দীপনা আসে, তখন পার্থক্য দেখা যায়।
মানুষের মস্তিষ্কে বিভিন্ন এলাকা রয়েছে। লিমবিক সিস্টেম ও রিওয়ার্ড এরিয়া এই এলাকার অন্তর্ভুক্ত। একগামীদের লিমবিক সিস্টেম ও রিওয়ার্ড এরিয়া- দুই জায়গাতেই রোমান্টিক উদ্দীপনা বেশি হয় বহুগামী মানুষের চেয়ে। একগামীদের মস্তিষ্কের যৌন অনুভূতি ও রোমান্টিক উদ্দীপনার এলাকা কাছাকাছি থাকে। বহুগামীদের ক্ষেত্রে তা আলাদা ও বেশ দূরে।
বহুগামীদের কর্টেক্সও রোমান্টিক উদ্দীপনায় ফুটতে থাকে। ফলে তাঁরা যে সবার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, তা নয়। কিন্তু তাঁরা এই উদ্দীপনা পাওয়ার জন্য বারবার জড়াতে থাকেন প্রেমে।
সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, তাঁরা যদি বিবাহিত হন বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কে থাকেন, তাহলে প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্ক সঙ্গীর জন্য বিপর্যয় ডেকে আনে। এ ছাড়া বহুগামী পুরুষের মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস এলাকাটা বড়। ফলে তাঁরা এই সুখানুভূতির কথা বারবার মনে করতে পারেন এবং বারবার প্রেমে জড়ান।
উদ্দেশ্যহীনভাবে প্রেম-প্রেম খেলা অস্বাস্থ্যকর। সেটা শুধু নিজের জন্য নয়; বরং যাঁর সঙ্গে হচ্ছে তাঁর জন্য এবং নিজের সঙ্গীর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও বিষয়টি অস্বাস্থ্যকর।
লেখক: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ।
প্রেম একটি মাধুর্যপূর্ণ সম্পর্ক। এই সম্পর্ক যখন একজন ব্যক্তির সঙ্গে থাকে তখন তা মধুর। কিন্তু বারবার উদ্দেশ্যহীনভাবে যদি একাধিক মানুষের সঙ্গে প্রেম হয়, তখন সেটা আর মধুর থাকে না। ‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকা একটি জরিপ করেছিল। বিষয় ছিল, করোনার আগে ও পরে একাধিক সম্পর্কে জড়ানোর হার কেমন। দেখা গেছে, করোনা মহামারির আগে প্রতি পাঁচজনের একজন উদ্দেশ্যহীনভাবে এই সম্পর্কে জড়াতেন। কিন্তু গত দেড় বা দুই বছর লকডাউন-পরবর্তী পৃথিবীতে এই সংখ্যা এক লাফে দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে।
প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্ক কেন
এই প্রেক্ষাপটে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, বারবার উদ্দেশ্যহীন বা প্রতিশ্রুতিহীন প্রেমের সম্পর্কে জড়ানো কেন? উদ্দেশ্যহীনভাবে বারবার প্রেমে পড়ার এই ব্যাপারটাকে দুভাবে দেখা যায়—মানসিক দিক থেকে এবং অন্যটি নিউরোসায়েন্সের প্রেক্ষাপটে। মানসিক দিক থেকে যদি বলি, তাহলে বারবার এই প্রেম-প্রেম ব্যাপারটা কোনো বাস্তবজ্ঞানসম্পন্ন দিক থেকে আসে না। এটা বেশ জটিল বিষয়। নির্দিষ্ট কারও জন্য প্রেম বিষয়টি অনুভূত হয়। আবার পরবর্তী সময়ে অন্য আরও অনেকের জন্য অনুভূত হতে পারে। বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বললে বুঝতে সহজ হবে।
ধরা যাক, কোনো অনুষ্ঠানে একটি ছেলের সঙ্গে একটি মেয়ের পরিচয় হলো। মুচকি হাসি দিয়ে কাছাকাছি বসে গল্প হলো। আর এই গল্পের ধরনটাও সাধারণ পরিচয়পর্ব নয়; বরং অন্যরকম। এটাকে অ্যাবসলিউট ফ্ল্যার্ট বলা হয়। প্রথম ধাপে এটা চলে। পরের ধাপে ফোন ও সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকল। এরপর একে অপরের সঙ্গে কোথাও দেখা করার এবং সময় কাটানোর ইচ্ছে জাগল। বলে রাখা ভালো, এই ভালো লাগা বা একে অপরের প্রতি আকাঙ্ক্ষা মনের সীমা অতিক্রম করে শরীর পর্যন্ত পৌঁছে যায় কখনো কখনো। তখন থেকেই ফলাফল শুরু হয়।
প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্কের ফলাফল
প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্কে জড়ানো দুজনের একজন দেখলেন বিপরীত দিকের মানুষটি তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলেন, ঘনিষ্ঠ হন। তখন একধরনের দ্বন্দ্ব ও যুক্তিতর্ক চলে। এটা দ্বিতীয় ধাপ। এরপর দ্বন্দ্ব-ঝগড়া চলতে থাকে। এর মধ্যে দুজনের একজনের জীবনসঙ্গী হয়তো ব্যাপারটা জেনে গেলেন বা আঁচ করলেন। অথবা দুজনের একজন বলে বসলেন, আমাকে বিয়ে করে ফেলো। কিন্তু অপর জন রাজি হচ্ছেন না। এখান থেকে তৃতীয় ধাপের শুরু। দুজনের একজন যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন, তবে তাঁদের বিচ্ছেদ হতে পারে, সংসারে অশান্তি হতে পারে। ক্রমেই সেটা শারীরিক নির্যাতনের দিকে গড়াতে পারে।
যা হতে পারে
উদ্দেশ্যহীনভাবে প্রেমে জড়ানোর ফলে সম্পর্কের সীমা না থাকার কারণে সেটি ভেঙে গেলে কেউ কেউ নিজেকে দোষী ভাবতে পারেন অথবা প্রচণ্ড হতাশা বোধ করতে পারেন। সম্পর্ক নিয়ে এ পর্যায়ে যাওয়ার আগে এটা ভাবা দরকার, সম্পর্কটি নিয়ে কত দূর যাবেন, কোথায় গিয়ে থামতে হবে ও কোথা থেকে ফেরত আসতে হবে।
এবার আসা যাক নিউরোসায়েন্সের প্রেক্ষাপটে। কিছুদিন আগেও তর্কের বিষয় ছিল, মানুষ প্রাকৃতিকভাবে একগামী না বহুগামী? এখন সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিচার করলে দেখা যায়, একগামী মানুষের পাল্লাটা ভারী। এখানে বলে রাখা ভালো, একগামী ও বহুগামীদের মস্তিষ্কের গঠন আলাদা। তাঁদের যৌন আচরণে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু রোমান্টিক সম্পর্কে যখন কোনো উদ্দীপনা আসে, তখন পার্থক্য দেখা যায়।
মানুষের মস্তিষ্কে বিভিন্ন এলাকা রয়েছে। লিমবিক সিস্টেম ও রিওয়ার্ড এরিয়া এই এলাকার অন্তর্ভুক্ত। একগামীদের লিমবিক সিস্টেম ও রিওয়ার্ড এরিয়া- দুই জায়গাতেই রোমান্টিক উদ্দীপনা বেশি হয় বহুগামী মানুষের চেয়ে। একগামীদের মস্তিষ্কের যৌন অনুভূতি ও রোমান্টিক উদ্দীপনার এলাকা কাছাকাছি থাকে। বহুগামীদের ক্ষেত্রে তা আলাদা ও বেশ দূরে।
বহুগামীদের কর্টেক্সও রোমান্টিক উদ্দীপনায় ফুটতে থাকে। ফলে তাঁরা যে সবার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, তা নয়। কিন্তু তাঁরা এই উদ্দীপনা পাওয়ার জন্য বারবার জড়াতে থাকেন প্রেমে।
সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, তাঁরা যদি বিবাহিত হন বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কে থাকেন, তাহলে প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্ক সঙ্গীর জন্য বিপর্যয় ডেকে আনে। এ ছাড়া বহুগামী পুরুষের মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস এলাকাটা বড়। ফলে তাঁরা এই সুখানুভূতির কথা বারবার মনে করতে পারেন এবং বারবার প্রেমে জড়ান।
উদ্দেশ্যহীনভাবে প্রেম-প্রেম খেলা অস্বাস্থ্যকর। সেটা শুধু নিজের জন্য নয়; বরং যাঁর সঙ্গে হচ্ছে তাঁর জন্য এবং নিজের সঙ্গীর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও বিষয়টি অস্বাস্থ্যকর।
লেখক: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ।
সন্ধ্যার পর বাতি নিভিয়ে খোলা বারান্দায় পাটি বিছিয়ে বা টুল নিয়ে বসতে খারাপ লাগে না। একটু বড় জায়গা থাকলে বারান্দা বাগান তো বটেই, স্থায়ী বসার জায়গাও তৈরি করেন নেন অনেকে। আবার বাড়িতে অতিথি এলে হয়তো বারান্দাতেই জমে ওঠে দীর্ঘ আড্ডা। বারান্দাকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার মৌসুম কিন্তু চলে এসেছে।
৩ ঘণ্টা আগেপিসির ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা এক স্টোরিতে দেখা গেছে, এলইডি লাইট থেরাপি মাস্ক পরে উড়োজাহাজে দিব্যি আরাম করছেন। যেন রূপচর্চা আর আরামের একেবারে আদর্শ যুগলবন্দী!
২০ ঘণ্টা আগেসময়ের সঙ্গে পরিবেশ বদলায়, আর পরিবেশের সঙ্গে বদলায় চুলের যত্নের ধরন। চুলে নিয়মিত তেল-শ্যাম্পু ব্যবহার এবং মাসে দুদিন হেয়ারপ্যাক ব্যবহার এখন যথেষ্ট নয়। আগের তুলনায় গ্রীষ্মকালে গরম আরও বেড়েছে, বেড়েছে দূষণ। সেই সঙ্গে বেড়েছে চুল আর মাথার ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাও।
২ দিন আগেশিশুর বয়স ছয় মাস হওয়া পর্যন্ত তেমন ভাবনা নেই। নরম সুতির ফিতে দেওয়া নিমা পরেই দিন পার হয় ছেলে কিংবা মেয়েশিশুর। কিন্তু সে যখন বসে বসে খেলতে শেখে বা একটু হেঁটে বেড়ায়, যখন পুরো ঘরই তার জন্য এক বিস্ময়ের জগৎ। সারা বাড়ি ঘুরে দেখা, এটা-ওটা ধরে খেলা করতে গিয়ে ঘাম হয়...
২ দিন আগে