Ajker Patrika

মহেশখালীর মিডা পান

মহিউদ্দীন জুয়েল, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১৭: ০৪
মহেশখালীর মিডা পান

‘যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম…
মইশখালীর পানের খিলি তারে
বানাই খাবাইতাম...’

শিল্পী শেফালী ঘোষের জনপ্রিয় এ গানের কথা মনে আছে নিশ্চয়? মইশখালী বা মহেশখালীর মিষ্টিপান সে যুগেও যেমন, এই যুগেও তেমনি মন কেড়ে নেয় মানুষের।

বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর মাটি ও আবহাওয়ায় জন্মে মিষ্টিপান। স্থানীয় পানচাষিদের অনেকে মনে করেন, সম্রাট আকবরের আমল থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে পানের জনপ্রিয়তা বাড়ে। আঠারো শতকের শেষে চট্টগ্রামে আসা ড. ফ্রান্সিস বুকানন মহেশখালী দ্বীপে পানের বরজ দেখতে পান। সেই গল্প রয়েছে তাঁর ভ্রমণকাহিনিতে।

মুখে মিশে যায়, ঝাল নেই
মুখে দিয়ে চিবোলে দ্রুত মিশে যাওয়ার পর রেশ লেগে থাকে অনেকক্ষণ, কোনো ঝাল নেই, এটিই মহেশখালীর পানের বৈশিষ্ট্য। এই পান খাওয়া হয় হরেক পদের মসলা দিয়ে। মসলার স্বাদের ওপর নির্ভর করে পানের স্বাদ। নুরানি, শাহি, বেনারসি, এলাচি, জাফরান কত নাম যে আছে এ পানের, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মানুষমাত্রই তা জানেন।

চট্টগ্রাম নগরের লাভ লেন, রেয়াজুদ্দিন বাজার, বহদ্দারহাট, কক্সবাজার ও মহেশখালীতে রয়েছে মিষ্টি খিলিপানের অসংখ্য দোকান। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে পান বিক্রি করেন আবদুর রাজ্জাক। এক সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি সড়কে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। আবদুর রাজ্জাক জানান, বিয়ে-শাদিতে কয়েক শ পিস খিলিপান অর্ডার হয়। অনুষ্ঠানের দিন সকালে ক্লাবে কিংবা বাড়িতে গিয়ে প্যাকেট সাজিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয় এসব পান।

পান-মসলা
৭০-৮০ ধরনের মসলা দিয়ে খাওয়া হয় মহেশখালীর মিষ্টিপান। এতে মসলার বৈচিত্র্য বাড়লে স্বাদ বেড়ে যায় অনেক। এই পানের প্রধান মসলা কস্তুরি। পানে এটি দেওয়া হয় জর্দার মতো করে। চুন-সুপারির পরিমাণ অনেক কম।

অনেকে আলুবোখারা আর মিষ্টি জিরা ছিটিয়ে দিতে বলেন। শরীর ভালো রাখার জন্য বয়োজ্যেষ্ঠরা পানে পছন্দ করেন কালিজিরা। পান বানানোর আগে দোকানদারকে বলে দিতে হবে পানে কোন মসলা খাবেন।

দরদাম
৩ পদের মসলা মেশানো ভালো মানের পানের দাম ৫০ টাকা। মসলাভেদে এর দাম সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত