Ajker Patrika

চাকরিতে যোগদানের পর করণীয়-বর্জনীয়

শিক্ষা ডেস্ক
চাকরিতে যোগদানের পর করণীয়-বর্জনীয়

নতুন কর্মস্থলে যোগদান মানেই একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। এটি যেমন আপনার পেশাগত জীবনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, তেমনি নিজেকে প্রমাণ করার একটি সুবর্ণ সুযোগ। এই সূচনাপর্বটি যদি যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে ভবিষ্যতের পথ অনেকটাই সুগম হয়। তাই প্রথম দিন থেকেই আপনার আচরণ, মনোভাব ও কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি হতে হবে পেশাদার, নম্র এবং শেখার প্রতি উন্মুক্ত। নিচে কিছু করণীয় ও বর্জনীয় দিক তুলে ধরা হলো, যা আপনাকে নতুন অফিসের পরিবেশে দ্রুত মানিয়ে নিতে সহায়তা করবে।

নতুন অফিসে করণীয় বিষয়গুলো

  • প্রফেশনাল আচরণ বজায় রাখুন: সময়নিষ্ঠা আপনার কর্মজীবনের ভিত্তি। অফিসে নির্ধারিত সময়ে প্রবেশ ও নির্ধারিত কাজ যথাসময়ে শেষ করার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া, আপনার পোশাকে পেশাদারত্ব বজায় রাখুন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ড্রেসকোড বা পোশাকসংক্রান্ত রীতি অনুসরণ করে—সেটি মেনে চলাই উত্তম।
  • শেখার মানসিকতা রাখুন: নতুন চাকরিতে শুরুর সময়টা মূলত শেখার সময়। যেকোনো প্রশিক্ষণ বা কাজ শেখার প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দিন। কিছু না বুঝলে প্রশ্ন করতে দ্বিধা করবেন না। শেখার আগ্রহই আপনাকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলবে।
  • কার্যকর যোগাযোগ গড়ে তুলুন: সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সঙ্গে পেশাদার ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলুন। মিটিং বা আলোচনার সময় মনোযোগ দিন এবং প্রয়োজনে গঠনমূলক মতামত দিন। এটি আপনাকে একজন সক্রিয় ও আগ্রহী কর্মী হিসেবে পরিচিত করবে।
  • দলগত কাজকে গুরুত্ব দিন: একক সাফল্যের চেয়ে টিমওয়ার্ক এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সহকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে শিখুন এবং প্রয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। একটি সফল টিমের অংশ হতে পারলে আপনি আরও দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হবেন।
  • লক্ষ্য ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করুন: আপনার ম্যানেজার বা সুপারভাইজারের কাছ থেকে স্পষ্টভাবে জানার চেষ্টা করুন, তাদের কী প্রত্যাশা রয়েছে আপনার কাছে। নিজের কাজের লক্ষ্যগুলো বুঝে সেই অনুযায়ী কাজ করুন এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠানের বৃহৎ উদ্দেশ্যের সঙ্গে মিলিয়ে নিন।

যা করা থেকে বিরত থাকা উচিত

  • ‘আমি জানি’ মনোভাব দেখাবেন না: আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলেও সেটি অহংকারের জায়গা নয়। বরং নম্রভাবে শেয়ার করুন এবং শিখতে আগ্রহী থাকুন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরন আলাদা—তা বুঝতে সময় দিন।
  • অফিস পলিটিক্স এড়িয়ে চলুন: গসিপ, দলাদলি বা ব্যক্তিগত সমালোচনায় জড়ানো উচিত নয়। অফিস পলিটিক্স আপনার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে।
  • দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া অনুচিত: ‘এটা আমার কাজ না’ ধরনের মনোভাব কর্মদক্ষতার প্রতি নেতিবাচক বার্তা দেয়। বরং কাজ শিখে নিতে আগ্রহ দেখান।
  • অতিরিক্ত মোবাইল/সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নয়: অফিস সময়কালে মোবাইল ব্যবহারে সংযমী থাকুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত সময় ব্যয় না করে কাজের প্রতিমনোযোগ দিন।
  • অফিসসংক্রান্ত তথ্য বাইরে প্রকাশ নয়: প্রতিষ্ঠানের তথ্য, পরিকল্পনা বা অভ্যন্তরীণ আলোচনার বিষয়গুলো গোপন রাখা পেশাদারত্বের পরিচায়ক। এই গোপনীয়তা রক্ষা করাই দায়িত্বশীলতার প্রতীক।

নতুন চাকরিতে প্রথম ৯০ দিনকে বলা হয় ‘প্রবেশন পিরিয়ড’—এটি কেবল মূল্যায়নের সময় নয়, বরং শেখা, মানিয়ে নেওয়া এবং নিজেকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠার সময়। এই সময়টুকুতে আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত নিজেকে একজন পেশাদার, দায়িত্বশীল ও দলমুখী কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত